জীবাশ্ম জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। এ থেকে নিঃসৃত কার্বন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের বহুমুখী করার দিকে নজর দিচ্ছে বিশ্ব। তাই সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুশক্তির পাশাপাশি হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়ার মতো অপ্রচলিত জ্বালানির দিকেও নজর দিতে হবে। বিশেষ করে হাইড্রোজেন হতে পারে আগামীর জ্বালানি, যা কার্বন দূষণ থেকে বিশ্বকে মুক্তি দিতে পারে। গত জুন মাসে জাপানের রাজধানী টোকিওতে অনুষ্ঠিত তিন দিনের আন্তর্জাতিক জ্বালানি সম্মেলন অুনষ্ঠিত হয়। সামিটে বিশ্বের ৩০ দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকরা অংশ নিয়েছেন। প্রদর্শনীতে অংশ নেয় দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান। এই আসরে ভবিষ্যৎ জ্বালানি এবং পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এলএনজি গ্যাস, হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য কার্বন নিঃসরণ কমানোর ওপর জোর দিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। জাপান ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্য করতে চায়। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে দেশটির খরচ হতে পারে ১ ট্রিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি জাপান প্রযুক্তি ও আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে এশিয়াকেও এ কাজে নেতৃত্ব দিতে চায়। এরই মধ্যে এশিয়া জিরো এমিশন কমিউনিটির (এজেডইসি) সদস্য ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, ব্রুনাই, মিয়ানমার ও লাওসের সঙ্গে জাপান নানা রকম সহযোগিতায় যুক্ত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিরাপত্তা কাঠামো গঠনে জাপান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে এলএনজির ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যতে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২৮ সাল থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ওপর কর আরোপ করা হবে। বায়ুশক্তি থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে জাপান ১০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। হাইড্রোজেনসহ দূষণমুক্ত জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও উদ্যোক্তাদের এসব উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সম্পর্কে হাতে-কলমে জ্ঞান নিতে দেখা গেছে।