কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

সাক্ষাৎকার

post title will place here

২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার অনন্য বার্তা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল মাসিক আল-ইতিছাম। আল-হামদুলিল্লাহ, দীর্ঘ এই পথচলায় পত্রিকাটি অগ্রগতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আল-ইতিছাম-এর শততম সংখ্যা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ইনশা-আল্লাহ।

এই বিশেষ মুহূর্তে আমরা ফিরে তাকিয়েছি পত্রিকাটির ক্রমবিকাশ ও অগ্রগতির ধারার দিকে—কীভাবে এটি ধাপে ধাপে উচ্চ স্থানে পৌঁছে যাচ্ছে এবং দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাড়া ফেলেছে। এ উপলক্ষ্যে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন আল-ইতিছাম-এর সম্মানিত প্রধান পৃষ্ঠপোষক শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ হাফিযাহুল্লাহ এবং প্রধান সম্পাদক শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক হাফিযাহুল্লাহ। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন পত্রিকার সহকারী সম্পাদক আব্দুল বারী বিন সোলায়মান।

সুধী পাঠক, মাসিক আল-ইতিছাম-এর এই দীর্ঘ পথচলার আলোকে আমাদের দুজন সম্মানিত শায়েখ তাঁদের অভিজ্ঞতা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরামর্শ তুলে ধরবেন। বিশেষ করে কীভাবে পত্রিকাটি ক্রমাগত উন্নতি করে পাঠকপ্রিয়তায় উচ্চ স্থান দখল করেছে—এই সব গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করবেন। শুরুতেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি মাসিক আল-ইতিছাম-এর সম্মানিত প্রধান পৃষ্ঠপোষক শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ হাফিযাহুল্লাহ-কে।

উপস্থাপক: সম্মানিত শায়খ! ২০১৬ সালে মাসিক আল-ইতিছামের যাত্রা শুরু হয় এবং প্রতিষ্ঠা হয়। কোন লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এর প্রতিষ্ঠার কথা ভেবেছিলেন?

শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ: আস-সালামু আলাইকুম। الحمد لله وحده، والصلاة والسلام على من لا نبي بعده সম্মানিত দ্বীনী মুসলিম ভাই ও বোন! আপনারা অবগত আছেন আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহর মুখপত্র পত্রিকা আল-ইতিছাম। আল-হামদুলিল্লাহ ইতিছাম পড়ে শরীআতের বিভিন্ন বিষয়গুলো ভালোভাবে অবগত হচ্ছেন বিশেষভাবে প্রশ্নোত্তর আপনাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যাতে আপনারা প্রমাণ সহকারে উত্তর পেয়ে থাকেন। ২০১৩ সালে আমরা যখন রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ জামি‘আহ সালাফিয়্যাহ প্রতিষ্ঠা করি, তখন থেকে ভাবছিলাম জামি‘আহ সালাফিয়্যাহ’-এর একটি মুখপত্র থাকা দরকার; যার মাধ্যমে মানুষ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবে। ২০১৬ সালে ডাঙ্গীপাড়া, পবা, রাজশাহীতে আমরা যখন জামি‘আহ সালাফিয়্যাহ প্রতিষ্ঠা করলাম, তখন বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি অনুভূত হতে লাগল। দ্বীন প্রচারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় গেলে প্রোগ্রাম শেষে মানুষ বহু বিষয়ে তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসা করে থাকে; তখন অনুভব করি এসব মানুষের জন্য একটি লিখিত প্রমাণ সহকারে প্রশ্নোত্তর থাকা দরকার। মূলত মানুষের কাছে এই কুরআন ও ছহীহ হাদীছভিত্তিক প্রশ্নোত্তরগুলো জানানোর লক্ষ্যে এবং বিষয়ভিত্তিক শরীআতের বাণী প্রচারের উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে আমরা ‘মাসিক আল-ইতিছাম’ পত্রিকার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করি।

উপস্থাপক: পত্রিকাটির নাম ‘আল-ইতিছাম’ চয়ন করার পিছনে সমসাময়িক কিংবা ঐতিহাসিক কোনো প্রেক্ষাপট ছিল কিনা? যদি বলতেন!

শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ: এই জিজ্ঞাসাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো এবং দলে দলে পৃথক হয়ে যেও না’ (আলে ইমরান, ৩/১০৩)। এই আয়াতটি এই নামটি নির্বাচন করার জন্য একটি বিশেষ প্রেরণা প্রদান করেছে। সুতরাং, এই আয়াতটি আমাদের পত্রিকার স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়া, হাদীছের বিভিন্ন কিতাবে ‘কুরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা’ বিষয়ক অধ্যায়ও রচনা করা হয়েছে। পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত আহলেহাদীছদের একটি প্রভাবশালী পত্রিকা ‘আল-ইতিছাম’-এর উদাহরণও রয়েছে। এই সমস্ত দিক বিবেচনায়, ‘আল-ইতিছাম’ নামটি যথাযথভাবে চয়ন করা হয়েছিল।

উপস্থাপক: এই পর্যায়ে আসি, মাসিক আল-ইতিছামের সম্মানিত প্রধান সম্পাদক শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাকের কাছে। আপনার দৃষ্টিতে পত্রিকাটি কীভাবে ইসলামী মূল্যবোধ ও সমাজ সংস্কারে ভূমিকা পালন করছে?

আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক: আল-হামদুল্লিলাহ খুবই চমৎকার প্রশ্ন। আমরা একটা সুন্দর আয়োজনে উপস্থিত হতে পেরে আল্লাহর প্রশংসা করছি। মাসিক আল-ইতিছামের ‘শততম সংখ‌্যা’ একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত এবং একটি মাইলফলক বলে আমরা মনে করি। মাসিক আল-ইতিছামে দীর্ঘযাত্রায় আমাদের অবশ‌্যই অবশ‌্যই যে বিষয়গুলো দৃষ্টিগোচর হয়েছে তাদের মধ‌্যে অন‌্যতম হচ্ছে, সমাজ সংস্কারে এবং মানুষের আক্বীদা ও আমলের সংশোধনে মাসিক আল-ইতিছামের ভূমিকা। মানুষ হিসেবে শুধু আমাদের দাওয়াতী কাজের জন‌্য সকল জায়গায় ভ্রমণ করা সম্ভব নয় এবং প্রতিনিয়ত সংযুক্ত থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়; কিন্তু মাসিক আল-ইতিছামের মাধ‌্যমে আমাদের দাওয়াত নিয়মিত তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।

মাসিক আল-ইতিছামের প্রশ্নোত্তর জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে মানুষের অনেক বেশি সহযোগিতা করে। অনেক ইমাম খত্বীবের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে, যারা জুমআর খুৎবার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে থাকে মাসিক আল-ইতিছামের বিভিন্ন প্রবন্ধ থেকে। আমরা মনে করি, জ্ঞানের জগতে গবেষণার জগতে ও দ্বীনের দাওয়াত জনগণের মাধ‌্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ‌্যমে মাসিক আল-ইতিছাম একটি নীরব বিপ্লব ঘটাচ্ছে। যেহেতু আমাদের নিজস্ব অনলাইন প্লাটফর্ম ও ওয়েবসাইট আছে, ফলে যারা সরাসরি হার্ড কপি সংগ্রহ করতে পারছেন না, তারা অনলাইনে গিয়ে পিডিএফ পড়ার মাধ‌্যমে তাদের একটি জ্ঞান অর্জনের সুযোগ থাকে। তাই আমি মনে করি অবশ‌্যই অবশ‌্যই মাসিক আল-ইতিছাম বাংলাদেশের সমাজ সংস্কারের এবং সঠিক দ্বীনের দাওয়াত প্রচারের ব‌্যাপক ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

উপস্থাপক: ধ‌ন‌্যবাদ জানাচ্ছি, শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাককে। সমাজ সংস্কারের আল-ইতিছাম পত্রিকার ভূমিকা নিয়ে চমৎকার তথ‌্য দিলেন। চলে যাচ্ছি প্রধান পৃষ্ঠপোষকের কাছে- আল-ইতিছাম পত্রিকার ১০০তম সংখ্যায় পৌঁছানো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই যাত্রাকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ: সম্মানিত দ্বীনী ভাই-বোন! আপনারা আল-ইতিছাম পত্রিকার ভূমিকা ও ফলাফলের কথা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন। আল-হামদুলিল্লাহ আমরা এতে আল্লাহর অগণিত শুকরিয়া আদায় করি এবং জাতির কাছে এটা পৌঁছাতে পারছি বলে আমরা আনন্দবোধ করছি। আমরা পত্রিকাটিকে জাতির সামনে আরও সুন্দর করে পেশ করার জন্য যেসব চিন্তাভাবনা আমাদের সামনে আসবে, আপনাদের পরামর্শ আসবে, সে ভাবনা ভবিষ্যতে পত্রিকাটিকে নিয়ে ভাবব ইনশা-আল্লাহ। আমরা মুসলিম পুরুষ-নারী এর মাধ্যমে যে উপকার পাচ্ছি, আমরা আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে দু‘আ করি এবং আপনাদেরকেও অন্তর থেকে দু‘আ করার দাবি জানাচ্ছি যে, আল্লাহ যেন কুরআন ও ছহীহ হাদীছভিত্তিক চলা মাসিক আল-ইতিছামকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত বহাল রাখেন।

উপস্থাপক: শায়খ, ‘মাসিক আল-ইতিছাম’ ৯ বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে। এই দীর্ঘ যাত্রায় আপনাদের কি এমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে, যা পত্রিকাটি আরও শক্তিশালী ও উন্নত করেছে? সেই অভিজ্ঞতাগুলো কি আমাদের পত্রিকাকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা দিতে পারে?’

শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ: আমি মনে করি এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আল-ইতিছাম পত্রিকা নিয়ে বিভিন্ন সময়েই আমরা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। তারপরও আল-হামদুলিল্লাহ আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করে শক্তভাবে ধরে আছি। আমরা দুই একটা সমস‌্যা আপনাদের সামনে পেশ করলে ভালোভাবে অবগত হবেন। করোনাকালীন রাস্তাঘাট বন্ধ, চলাচল বন্ধ, মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারে না; তখনও আমরা আল-ইতিছাম পত্রিকার সার্বিক কাজ করেছি এবং সেটা নিয়মিত বের করার চেষ্টা করেছি আল-হামদুলিল্লাহ। সাথে সাথে আল-ইতিছাম পত্রিকার রেজিস্ট্রেশন না থাকায় আমরা আর্থিকভাবে বিভিন্ন সময়ে অনেক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছি। অনেক জায়গায় যোগাযোগ না থাকার কারণে বা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে পত্রিকাটি আমাদের স্থানে যাওয়ার পরও ব‌্যক্তির কাছে পৌঁছায়নি। কেউ কেউ আবার পত্রিকাটি মানুষের কাছে পৌঁছাতে বাধার সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বা পত্রিকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ বা চাপ দেওয়ার মতো ছোট কাজও করেছেন।

এভাবে বিভিন্ন সময়ে আমরা কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি, তথাপি মহান আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মাসিক আল-ইতিছামকে সুন্দর ভালোভাবে বহাল রেখেছেন আল-হামদুলিল্লাহ।

উপস্থাপক: মাসিক আল-ইতিছাম এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যাচ্ছে। দেশ-বিদেশের পাঠকদের কাছ থেকে আপনি কি ধরনের প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন- এ বিষয়ে যদি কিছু বলতেন!

শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ: আল-হামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে আমি বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশে সফরের সুযোগ পেয়েছি। গত বছর লন্ডন ভ্রমণের সময় আমি লক্ষ্য করেছি যে, সেখানে আল-ইতিছাম পত্রিকার প্রতি পাঠকদের আগ্রহ ও ভালো চাহিদা রয়েছে। অনেকেই আগ্রহভরে জানতে চেয়েছেন, কীভাবে তাদের কাছে নিয়মিত পত্রিকাটি পাঠানো সম্ভব। এমনকি কয়েকজন অনুরোধ করেছিলেন, দেশে ফিরে যেন তাদের নামে পত্রিকাটি পাঠানোর ব্যবস্থা করি। তারা বলেছেন, ‘আমরা আল-ইতিছাম পড়ে শরীআহ সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান লাভ করি’।

অনুরূপ অভিজ্ঞতা আমি ওমান, দুবাই এবং কাতার সফরেও পেয়েছি। সেখানে অনেক পাঠক বলেছেন, আল-ইতিছাম পত্রিকার প্রশ্নোত্তর বিভাগ থেকে তারা খুব উপকৃত হন এবং ইসলামী জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে এটি তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এভাবে দেশ-বিদেশে আল-ইতিছাম পত্রিকার ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করেছি আল-হামদুলিল্লাহ।

উপস্থাপক: শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক! আপনি তো দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় চলাফেরা করেন, এই বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞতা কী, আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন, সেটা যদি বলতেন!

শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক: আল-হামদুলিল্লাহ, মাসিক আল-ইতিছাম একটি ব্যতিক্রমী এবং গবেষণাধর্মী পত্রিকা, যা আমাদের মন, হৃদয় এবং জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে। এর প্রতিটি প্রকাশনা পাঠের মাধ্যমে আমরা নিজে উপকৃত হই। আর যখন আমরা উপকৃত হই, তখন আমাদের বিশ্বাস যে, সাধারণ জনগণও এর মাধ্যমে উপকার লাভ করে। আমার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বিদেশের বিভিন্ন স্থানে সফরের অভিজ্ঞতায় আমি এই পত্রিকার শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুর কার্যকারিতা ও প্রভাব অনুভব করেছি।

বিশেষ করে, যেহেতু মাসিক আল-ইতিছাম অনলাইন ভার্সন ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়া যায়, তো দেশের বাইরে থেকে যারা পড়েন তারা বেশিরভাগই অনলাইনে পড়েন আল-হামদুলিল্লাহ এবং তারা মাসিক আল-ইতিছামের বিভিন্ন প্রবন্ধ, সম্পাদকীয় ও প্রশ্নোত্তরকে খুব গুরুত্বের সাথে মূল‌্যায়ন করেন।

উপস্থাপক: আল-ইতিছাম পত্রিকাটির প্রবন্ধ বা নিবন্ধ ও সম্পাদকীয় ইত‌্যাদি বিষয়ের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষগুলোর প্রাধান‌্য পায়, কোন কোন বিষগুলোকে সামনে রেখে পত্রিকাটি সাজানোর কথা ভাবা হয়?

শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক: মাশাআল্লাহ, অত্যন্ত চমৎকার একটি প্রশ্ন। মাসিক আল-ইতিছাম পত্রিকাকে যদি কয়েকটি বিভাগে বিভক্ত করি, তবে প্রথমেই আসে সম্পাদকীয়। এই বিভাগটি পত্রিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আমরা সমসাময়িক এবং আলোচিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করি এবং পাঠকদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করি।

আমাদের সম্পাদকীয় বিভাগ সবসময় বর্তমান বিশ্বের ঘটনাপ্রবাহ এবং দেশের পরিস্থিতির সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা গত তিন-চার মাসের সম্পাদকীয়গুলো পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাব- আগস্ট মাসের গণহত্যা-বিপ্লব ও এর প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা, বাংলাদেশে কীভাবে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সে বিষয়ে বিশ্লেষণ, সিরিয়ায় মুসলিমদের সাম্প্রতিক বিজয় এবং এর তাৎপর্য। এগুলো ছাড়াও, চলমান যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে আলোকপাত করে আসছি, আল-হামদুলিল্লাহ।

দ্বিতীয় যে বিষয়টি আসে প্রবন্ধের ক্ষেত্রে। প্রবন্ধের ক্ষেত্রে আল-হামদুলিল্লাহ কিছু নির্ধারিত যোগ‌্য গবেষক ও লেখক আছেন, যারা আমাদের পত্রিকার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। যেমন আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, আমাদের সম্পাদক মুহাম্মদ মুস্তফা কামাল এবং আমাদের নির্বাহী সম্পাদক মহোদয় শায়খ আব্দুল আলীম ইবনে কাওছার মাদানী- তারা নিয়মিত লেখালেখি করেন। গবেষণা ও লেখনীর জগতে তাদের যে জ্ঞান এবং তাদের যে যোগ্যতা তাদের লেখনী পড়লে আমরা বুঝতে পারি; পাশাপাশি বাহির থেকে যদি কোনো লেখনী আসে তো আমরা সেটির ক্ষেত্রে বেশ যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিই। বিশেষ করে আমাদের পত্রিকার যে মানদণ্ড আছে সে মানদণ্ডে তাদের লেখা উত্তীর্ণ হচ্ছে কি না এবং প্রকাশের যোগ‌্য কি না এটির ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় নির্ধারণ করি। যেমন- বিষয়ের নতুনত্ব, বিষয়টি অন্যে কোনো জায়গা থেকে কপি করা না কি লেখকের নিজস্ব গবেষণা, বিষয়টি লেখার ক্ষেত্রে কি ধরনের দলীল-প্রমাণ নিয়ে এসেছেন এবং লেখার যে সার্বিক মান- বাক‌্যগঠন, শব্দ চয়ন, যতিচিহ্ন ইত্যাদি বিষয়কে সামনে রেখে; সর্বোপরি যদি ইলমী লেখা হয় সেক্ষেত্রে আরবী ইবারতের সাথে বাংলা অনুবাদের সামঞ্জস্যের বিষয়কে সামনে রেখে আমরা প্রবন্ধগুলোকে চয়ন করে থাকি।

পাশাপাশি আমরা সর্বদা চেষ্টায় থাকি, যে সকল জ্ঞান-গবেষণামূলক বইপত্র ও লেখনীর বর্তমানে চাহিদা আছে, কিন্তু অনুবাদ হয়নি- আমরা সেই ধরনের মনি-মুক্তাগুলো খুঁজে খুঁজে আমাদের গবেষকদের মধ‌্যে দায়িত্ব প্রদান করে সেই লেখনীগুলো আমরা মাসিক আল-ইতিছামে উঠিয়ে আনার চেষ্টা করি।

সর্বোপরি, মাসিক আল-ইতিছামের প্রশ্নোত্তর। মাসিক আল-ইতিছামের সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম যে অংশটার পিছনে যায়, সেটি হচ্ছে প্রশ্নোত্তর। আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এর হক্ব আদায়ের চেষ্টা করি। পাঠকগণ ই-মেইল বা পোস্টের মাধ‌্যমে অথবা সরাসরি প্রশ্ন করে। সেগুলোকে আমরা বিষয়ভিত্তিক ভাগ করে আক্বীদা, আহকাম, তালাক, হালাল-হারাম ইত‌্যাদি বিভাগে ভাগ করে থাকি। আর সর্বোচ্চ চেষ্টা করি যে, এমন কোনো প্রশ্ন অতীতের সংখ‌্যাগুলোর উত্তর যায়নি। এই বাছাইকৃত প্রশ্নগুলো আমাদের সম্মানিত মুফতীদের নিকটে পাঠানো হয়। তাঁরা প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখেন। উত্তরগুলো লিখিত আকারে নিয়ে ফতওয়া বোর্ডে উপস্থিত হন। এখানে উপস্থিত থাকেন দেশ-বিদেশের যোগ‌্য আলেমগণ। বোর্ডে সভাপতিত্ব করেন পত্রিকার সম্মানিত প্রধান পৃষ্ঠপোষক শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ হাফিযাহুল্লাহ। তাদের পর্যালোচনার ভিত্তিতে প্রধান মুফতী ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। সংশোধনী যুক্ত করার পর পুনরায় শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ নিজে সেটি পড়ে দেখেন এবং আমরাও যারা দায়িত্বশীল আছি আমরাই সেটা পড়ে দেখার চেষ্টা করি। তারপরে প্রশ্নোত্তরগুলো আপনাদের কাছে যায়।

এছাড়াও থাকে আমাদের দেশের সংবাদ, মুসলিমবিশ্ব সংবাদ, চলমান বিশ্বের সংবাদ, আমাদের জামি‘আহ ও দাওয়াহ সংবাদ, দাওয়াতী কার্যক্রম, ত্রাণ বিতরণ সংবাদ ইত্যাদি এইগুলো আপনাদের সাথ আমাদের যোগাযোগ রাখতে সুন্দর সহযোগিতা করে। আর ইতিছামের জন্য নির্বাচিত প্রবন্ধগুলো যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন সম্পাদকের কাছে পর্যায়ক্রমে চলে যায়। তারা দেখার পর সবশেষে আমি একবার পড়ে দেখার চেষ্টা করি। তারপর প্রবন্ধগুলো চূড়ান্ত হয়। একটা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পত্রিকাটি আপনাদের হাতে আসে। তো এই ছিল আমাদের মাসিক আল-ইতিছামের সম্পাদকীয়, প্রবন্ধ ও প্রশ্নোত্তর যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া এবং পাঠকের কাছে যাওয়ার যে ধাপ, সেটি এইভাবে নির্ধারিত হয়। সুতরাং এই পত্রিকাটি খুব গুরুত্ব দেওয়া চেষ্টা করবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের এই পরিশ্রমকে কুবল করুন!

উপস্থাপক: নতুন যারা পত্রিকায় লিখতে চান, তাদের বিষয়ে কিছু বলবেন কি না?

শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক: নতুন যারা মাসিক আল-ইতিছামে লিখতে আগ্রহী, আমরা তাদের উদ্দেশ্যে এটিই বলব- আপনারা আমাদের পূর্বের লেখাগুলো পড়বেন। বিশেষ করে আমাদের যারা সম্পাদক, সহকারী সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক, প্রধান সম্পাদক এবং প্রদান পৃষ্ঠপোষক তাদের যে লেখনীগুলো পত্রিকায় গেছে তাদের লেখনীগুলো পড়ে ধারণা নিতে পারবেন যে, কী ধরনের লেখনীগুলো যায় এবং লেখার মান কেমন থাকে। এটি যখন নিজে অনুধাবন করতে পারবেন, তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে, কী ধরনের লেখা লিখতে হবে। লেখক হওয়ার একটি সূত্র সারা পৃথিবীব‌্যাপী প্রসিদ্ধ। তিনটি কাজ করতে হয়- এক নম্বর কাজ পড়তে হয়, দুই নম্বর কাজ পড়তে হয় এবং তিন নম্বর কাজ পড়তে হয়। লেখক হতে হলে পড়তে হবে। অত‌্যধিক পড়ার মাধ‌্যমে গবেষণার মাধ‌্যমে আমরা ভালো লেখক হয়ে গড়ে উঠি।

উপস্থাপক: আল-ইতিছামের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? আপনি কীভাবে এটি আরও সমৃদ্ধ করার কথা ভাবছেন?

শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক: মাশাআল্লাহ খুবই চমৎকার প্রশ্ন! আসলে আমরা দেখছি খুব দ্রুত সবাই অনলাইনমুখী হয়ে যাচ্ছে এবং মানুষ বেশি অনলাইনে পেতে চাই। সেকারণে আমরা পরিবর্তিত পৃথিবীর সাথে আমাদের পত্রিকাগুলোকে আমরাও খাপ খায়ে নেওয়ার চেষ্টায় আছি। এটি সারা পৃথিবীব্যাপী একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জের মুখামুখি সকল প্রতিষ্ঠান। তো এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে আমাদের অনলাইন বিভাগকে আরও বেশি ডেভেলপ করার প্রয়োজন আছে। আমাদের ওয়েবসাইটকে আরও উন্নত করার প্রয়োজন আছে। ই-বুক পড়ার ব‌্যবস্থা উন্নত করার প্রয়োজন আছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের ভবিষৎ পরিকল্পনা আছে- আমরা মাসিক আল-ইতিছামে ওয়েবসাইট, মাসিক আল-ইতিছামের অনলাইন ব‌্যবস্থাপনা যত সহজভাবে পাঠকবান্ধব করে গ্রাহক ও পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।

উপস্থাপক: আল-হামদুলিল্লাহ! আমরা আলোচনার একেবারে শেষ মুহূর্তে চলে এসেছি। এই পর্যায়ে মাসিক আল-ইতিছামের সম্মানিত প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও প্রধান সম্পাদক! উভয়ের উদ্দেশ‌্য আমরা বলব, যারা মাসিক আল-ইতিছাম নিয়মিত পড়েন, যারা প্রচারের দায়িত্ব পালন করেন, প্রচারে সহযোগিতা করেন, তাদের সকলের ব‌্যাপারে আপনি কী বার্তা দিতে চান?

আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ: আল-হামদুলিল্লাহ আমরা মাসিক আল-ইতিছাম পত্রিকা প্রকাশ ও জাতির কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে কত চেষ্টা করছি তা আপনাদের সামনে পেশ করলে অবগত হবেন। ‘নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ প্রতি মাসেই আল-ইতিছামের পিছনে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তারপরও আল্লাহ তাআলার প্রতি ভরসা করে জাতির কাছে জনগণের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। তার একটাই লক্ষ্য যাতে করে সবাই দ্বীন-ধর্মটা সঠিকভাবে বুঝতে পারে। তাই আমি আশা করি, আপনারাও এর প্রচারে কাজ করবেন। নিজেরা পড়বেন, আরও পাঁচজনকে পড়ার জন্য বলবেন। নিজেরা ক্রয় করবেন এবং অন্যকে ক্রয় করার জন‌্য বলবেন। যদি সম্ভব হয় কোনো প্রতিষ্ঠানে বা কোনো জায়গায় হাদিয়া হিসাবে দেওয়া- ছাত্র অবস্থায় হোক, ছাত্রী অবস্থায় হোক, শিক্ষক অবস্থায় হোক, শিক্ষার্থী অবস্থায় হোক বা ব‌্যবসা-বাণিজ্যের মধ‌্যে হোক, হাদিয়া দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে এটা ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ (চলমান দান) হিসাবে নেকীর কাজ হয়ে যাবে। সঠিক আক্বীদা ও আদর্শের এই মুখপত্রকে জাতির কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কোনো দুর্বলতা যেন কাজ না করে।

উপস্থাপক: শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক, পাঠকদের উদ্দেশ‌্য উক্ত বার্তার সাথে আপনি আর কিছু যুক্ত করতে চান কি না?

শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক: আমরা শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ হাফিযাহুল্লাহ-এর মুখ থেকে শুনলাম যে, আমাদের মাসিক আল-ইতিছাম পত্রিকা কোনো লাভজনক প্রজেক্ট নয়। এখানে থেকে আমরা কোনো লভ‌্যাংশ আমরা পাই, এমনটা নয়। বরং নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ দ্বীনী দাওয়াতী কাজের স্বার্থে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে জন‌্য মাসিক আল-ইতিছামের পিছনে প্রতি মাসে ভর্তুকি বহন করে থাকে। তো আমি মনে করি এই জাযবা আমাদের এই আগ্রহ ও আমাদের এই নিয়্যত প্রত‌্যেক পাঠকের থাকা উচিত, প্রত‌্যেক এজেন্টের থাকা উচিত। তারা মাসিক আল-ইতিছাম নেওয়ার মাধ‌্যমে শুধু যে তাদের জ্ঞান অর্জন হচ্ছে এমনটা নয়, বরং মাসিক আল-ইতিছাম নেওয়া এবং প্রচারের মাধ‌্যম তারা ব‌্যাপক দাওয়াতী ছাদক্বায়ে জারিয়ায় অংশগ্রহণ করছে এই নিয়্যত যেন তাদের থাকে। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক পাঠক ও গ্রাহককে একটি পরামর্শ দিব যে, এই পত্রিকার দাম অত্যন্ত স্বল্প। আপনাদের একবেলার নাস্তার খরচও নয়। সুতরাং চেষ্টা করি প্রতি মাসে ১টি, ৫টি বা ১০টি মানুষের কাছে হাদিয়া দিব। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার অঞ্চলের যারা মোটামুটি শিক্ষিত মানুষ, যারা মোটামুটি বই পড়া পছন্দ করে, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক হতে পারে, কলেজের শিক্ষক হতে পারে, মেডিক্যালের ডাক্তার হতে পারে, সাংবাদিক হতে পারে; এরকম যারা সমাজে শিক্ষিত শ্রেণি তাদেরকে বাছাই করে করে যদি প্রতি মাসে আপনি ৫টি বা ১০টি পত্রিকা হাদিয়া দেন এবং তাদেরকে যদি বলেন আপনি একবার পড়ে দেখেন ভালো লাগলে জানান। দেখবেন যে, এভাবে আপনি ৫০টি পত্রিকা হাদিয়া দিলে সেখান থেকে আপনি ৫ জন গ্রাহক অবশ্যই পাবেন, যিনি আপনাকে বলবে যে, ভাই আমাকে প্রতি মাসে দিয়ে যেও। পত্রিকা পড়ে আমাকে খুবই ভালো লেগেছে। আমার জ্ঞানার্জনে সহযোগিতা হচ্ছে। আমি প্রত্যেক গ্রাহক ও এজেন্টকে উদাত্ত আহ্বান জানাব যে, আপনারা ছাদাক্বায়ে জারিয়ার নিয়্যতে আপনি এখন যা নেন, অন্তত তার সাথে আর ১টি, আর ৫টি, আর ১০টি পত্রিকা বেশি নিয়ে ছাদাক্বায়ে জারিয়া ও দাওয়াতী কাজের নিয়্যতে আপনার আশেপাশের পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে, ছাত্রদের মধ্যে পত্রিকাটি হাদিয়া দিন এবং এই পত্রিকাটি ছড়িয়ে দিতে এই ছাদাক্বায়ে জারিয়ায় আপনারা অংশগ্রহণ করুন।

পাশাপাশি আরও একটি পরামর্শ- আমি বিশেষভাবে ছাত্রদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, আমি অনেক স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি এবং ছাত্রদের মাঝে মাসিক আল-ইতিছাম পত্রিকার গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যদি কোনো ছাত্র ভাই আমাদের এই পত্রিকার গ্রাহক হন এবং তার স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কোনো পাঠচক্রের আয়োজন করেন, তবে আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় হবে। আমি তাদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি, পত্রিকার সম্পাদকীয়, প্রবন্ধ এবং প্রশ্নোত্তর বিভাগের ওপর আলোচনা ও পর্যালোচনা করতে।

এভাবে, পারস্পরিক আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে যেমন তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে, তেমনি আমাদের কাছ থেকে আরও মূল্যবান ফিডব্যাক এবং পরামর্শ পাওয়া যাবে। এই পরামর্শগুলোর আলোকে আমরা আরও ভালভাবে কাজ করতে পারব, নতুন নতুন আইডিয়া উদ্ভাবন করতে সক্ষম হব এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

এই দুটি দাবি ও পরামর্শ সামনে রেখে আমরা আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার দরবারে দু‘আ করি। যারা এই পত্রিকার সঙ্গে লেখক, পাঠক, সম্পাদক, ব্যবস্থাপক বা গ্রাহক হিসেবে যেভাবেই যুক্ত আছেন এবং যারা দাওয়াতী কাজের এই মহান উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন, তাদের সকলের প্রচেষ্টাকে আল্লাহ তাআলা কবুল করুন।

আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন সকলের এই অংশগ্রহণকে একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে গ্রহণ করেন এবং আমাদের এই পত্রিকাকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত দাওয়াতী কাজের একটি স্থায়ী ও কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কবুল করেন। আমীন!

উপস্থাপক: ধন্যবাদ জানাচ্ছি মাসিক আল-ইতিছামের সম্মানিত প্রধান পৃষ্ঠপোষক শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ হাফিযাহুল্লাহ-কে, ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রধান সম্পাদক শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক হাফিযাহুল্লাহ-কে; আজকে মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য। আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাদের উভয়কে ইহকালে ও পরকালে জাযায়ে খায়ের দান করুন!

সুধী পাঠকগণ! জীবনঘনিষ্ঠ ৫০টি প্রশ্নের উত্তর এবং সামাজিক ও ইসলামিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রবন্ধসম্বলিত মাসিক আল-ইতিছাম নিয়মিত পড়ুন। এছাড়া, অন্যদের পড়তে উৎসাহিত করুন! আপনার আশেপাশের মসজিদ, স্কুল-কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ এমন যেকোনো জায়গায় যেখানে জনসমাগম হয়, সেখানে মাসিক আল-ইতিছাম প্রয়োজনে ফ্রি বিতরণের চেষ্টা করুন। আমরা চাই, মাসিক আল-ইতিছামের মাধ্যমে ইসলামের অমীয় বাণী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, আনাচেকানাচে ছড়িয়ে পড়ুক। আল্লাহ রব্বুল আলামীনের কাছে এই প্রয়াসের সফলতা কামনা করি। আল্লাহ আমাদের সেই তাওফীক্ব দান করুন! আল্লাহুমা আমীন! মহান রব্বুল আলামীনের কাছে এই দু‘আ ও দরখাস্ত রেখে আজকের এই সাক্ষাৎকার পর্ব এখানেই শেষ করছি।

Magazine