ফিলিস্তীনের গাজায় গত মে মাসে ইসরাঈলের সামরিক বাহিনী ‘সুস্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ’ সংঘটিত করেছে বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’। তারা জানায়, ফিলিস্তীনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতের সময় ইসরাঈলী সামরিক বাহিনীর তিনটি বিমান হামলায় যে ৬২ জন বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি হয়েছে তার আশপাশে কোথাও সামরিক লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও হানাদাররা বলেছে, গাজায় তারা শুধু সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। ১১ দিনের লড়াইয়ে গাজায় কমপক্ষে ২৬০ জন এবং ইসরাঈলে ১৩ জন নিহত হয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১২৯ জন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। ইসরাঈলী সেনাবাহিনী বলেছে, ২০০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি ছিল। তবে গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা হামাস বলেছে, তাদের ৮০ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তদন্তে ইসরাঈলের চালানো তিনটি হামলার উপরই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ওই হামলাতেই সবচেয়ে বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহতের ঘটনা ঘটে। প্রথমত, ১০ মে, বেইত হানুনে ইসরাঈলের ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র চারটি বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে পড়লে সেখানে আট জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়। ইসরাঈলী সেনাবাহিনী বলছে যে ফিলিস্তীনী একটি রকেটের কারণে ওই বিস্ফোরণ হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, শাতি শরণার্থী শিবিরে ১৫ মে তারিখে একটি বোমা আঘাত হানলে একটি তিন তলা ভবন ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। সেসময় ইসরাঈলী সেনাবাহিনী বলেছিল, ভেতরে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা এরকম কারো উপস্থিতি সম্পর্কে জানতেন না। তৃতীয়ত, গাজা সিটিতে ১৬ মে তারিখে আল-ওয়াহদা স্ট্রিটের কাছে সিরিজ বিমান হামলায় তিনটি বহুতল ভবন ধ্বংস করা হয়। এতে অন্তত ৪৪ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়। ইসরাঈলী সেনাবাহিনী বলেছে, তারা জঙ্গিদের ব্যবহৃত সুড়ঙ্গকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল এবং ভবন ধসে পড়ার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনটি ঘটনাস্থলের কোনোটির আশেপাশেই স্পষ্টত কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তু ছিল না এবং যে হামলা নির্দিষ্ট কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে উদ্দেশ্য করে করা হয় না তা বেআইনী।