কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ইলম অর্জনকারী ও প্রদানকারীর ফযীলত

post title will place here

আরবী ভাষায় ‘ইলম’ শব্দটি দ্বারা অনুধাবন ও উপলব্ধি করাকে বুঝানো হয়। ইসলামী দৃষ্টিকোণে ইলম একটি সর্বাত্মক শব্দ যা জ্ঞান, অনুধাবন ও উপলব্ধি করাকে নির্দেশ করে থাকে। আজ আমরা জানবো জ্ঞান অর্জন ও শিক্ষাদানের মর্যাদা সম্পর্কে।

ইলম অর্জন :

ইসলামে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব এত বেশি যে, প্রিয়নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর অবতীর্ণ প্রথম অহী হলো,﴿اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ﴾ ‘পড়ুন! আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন’ (আল-আলাক্ব, ৯৬/১)। এই আয়াতটি প্রথম নাযিল হয়।[1] অর্থাৎ এখানে প্রথম কথা বলা হয়েছে— পড়ুন! আপনার প্রতিপালকের নামে। মহান প্রতিপালকের নামে পড়ার তাগিদ দেওয়ার মাধ্যমে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাযিলের সূচনা। এ থেকেই জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,﴿قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ﴾ ‘বলুন, যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান? নিশ্চয়ই বোধশক্তি সম্পন্ন মানুষই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে’ (আয-যুমার, ৩৯/৯)

উক্ত আয়াত দ্বারা জানা এবং অজানা মানুষের মধ্যে পার্থক্য বুঝানো হয়েছে। জানতে হলে পড়তে হবে অর্থাৎ ইলম অর্জন করতে হবে। প্রত্যেককে ইলম অর্জন করতে হবে। এ ব্যাপারে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমের উপর জ্ঞানার্জন করা ফরয’।[2]

ইলম অর্জনের ফযীলত :

আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ ‘যে ব্যক্তি জ্ঞান অন্বেষণের জন্য কোনো পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তাআলা এর বিনিময়ে তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন’।[3] এই হাদীছে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জ্ঞান অর্জনের জন্য কেউ যদি কোনো পথ চলে তার বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দিবেন। জান্নাতের মালিক যিনি, তিনি যদি নিজেই জান্নাতের পথ সহজ করে দেন, তাহলে জান্নাতে প্রবেশ করতে বাধা থাকবে না। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত জ্ঞান অর্জন করা। তবে জ্ঞান সর্বদা আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। অন্যথা সম্ভব নয়।

আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِى الدِّينِ ‘আল্লাহ যার কল্যাণ সাধন করতে চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন’।[4] এই হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ যার ভালো চান, তাকে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দান করেন। তিনি যদি না চান, তাহলে ইলম অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই বলে বসে থাকলে হবে না। আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ﴿وَقُلْ رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا﴾ ‘বলুন, হে আমার রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন’ (ত্ব-হা, ২০/১১৪)। অর্থাৎ জ্ঞান অর্জন করতে, জ্ঞান বৃদ্ধি করতে সর্বদায় আল্লাহর কাছে চাইতে হবে, যা উক্ত আয়াত থেকে বুঝা যায়।

কাছীর ইবনু ক্বায়স রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দামেশকের মসজিদে আবূ দারদা রযিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে বসেছিলাম। তখন এক ব্যক্তি তার নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, হে আবূ দারদা! আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শহর মদীনা থেকে আপনার নিকট একটি হাদীছ শোনার জন্য এসেছি। আমি জানতে পেরেছি যে, আপনি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তুমি কোনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আসোনি তো? সে বলল, না। তিনি বলেন, অন্য কোনো উদ্দেশ্যেও তুমি আসোনি? সে বলল, না। তিনি বলেন, আমি অবশ্যই রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের কোনো পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের দিকে পথ সুগম করে দেন। ফেরেশতাগণ জ্ঞানান্বেষীর প্রতি তাঁদের সন্তুষ্টি হিসেবে তাদের পাখাসমূহ অবনমিত করেন। আর জ্ঞানান্বেষীর জন্য আসমান ও যমীনের অধিবাসী আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি পানির মাছও (তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে)। নিশ্চয়ই আবেদের (ইবাদতকারীর) উপর আলেমের শ্রেষ্ঠত্ব তারকারাজির উপর চাঁদের শ্রেষ্ঠত্বের ন্যায়। আলেমগণ নবীগণের ওয়ারিশ। আর নবীগণ উত্তরাধিকার হিসেবে দীনার ও দিরহাম রেখে যাননি। বরং তাঁরা উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গেছেন ইলম (জ্ঞান)। কাজেই যে ব্যক্তি তা গ্রহণ করল, সে একটি বিশাল অংশ গ্রহণ করল’।[5]

উক্ত হাদীছে বলা হয়েছে যে, জ্ঞান অর্জনের জন্য কোনো পথ অবলম্বন করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সুগম করে দেন। এমনকি জ্ঞান অন্বেষণকারীর জন্য আসমান এবং যমীনের অধিবাসীরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আপনি এমনিতে মানুষের কাছ থেকে দু‘আ চাইলে দু‘আ করবে কি-না তার ঠিক নেই। কিন্তু ইলম অর্জন করলে সকলেই আপনার জন্য দু‘আ করবে। এছাড়াও বলা হয়েছে যে, আলেমগণ নবীগণের ওয়ারিশ আর নবীগণ দীনার ও দিরহাম (নগদ অর্থ) উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে যাননি। বরং তাঁরা উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গেছেন ইলম (জ্ঞান)। সুতরাং আমাদের ইলম অর্জন করতে হবে।

আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةٍ إِلاَّ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ ‘যখন মানুষ মারা যায়, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তিনটি আমল ব্যতিত— (১) ‘ছাদাক্বায়ে জারিয়া, (২) এমন ইলম যার দ্বারা উপকার সাধিত হয় এবং (৩) এমন সৎ সন্তান যে তার জন্য দু‘আ করে’।[6]

মৃত্যুর পরও যে আমলের ছওয়াব চলমান থাকবে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে ইলম। যার দ্বারা লোকের উপকার সাধিত হয়। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি ইলম অর্জন করল, অতঃপর সেই ইলম মানুষের মাঝে বিতরণ করল বা উৎসর্গ করে দিল। যেমন একটি বই লিখল, ইলমী দারস প্রদান করল, বক্তব্য-বিবৃতি প্রদান করল ইত্যাদি। তার এই ইলমের ছওয়াব চলমান থাকবে। সুতরাং জ্ঞান অর্জন করতে হবে, তদনুযায়ী আমল করতে হবে এবং মানুষকে দাওয়াত দিতে হবে। 

জ্ঞান অর্জনে লজ্জা না করা :

লজ্জা ঈমানের অঙ্গ।[7] কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে লজ্জা করা যাবে না। যেমন ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে। ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে কখনও লজ্জাবোধ করলে তা অর্জন করা সম্ভব হবে না। কোনো কিছু অজানা থাকলে তা অবশ্যই জ্ঞানীদের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। লজ্জা করে বসে থাকলে চলবে না। উম্মু সালামাহ রযিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উম্মু সুলায়ম রযিয়াল্লাহু আনহা এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ হক্ব কথা প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। মহিলাদের স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করতে হবে? নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখতে পাবে’। উম্মু সালামাহ রযিয়াল্লাহু আনহা (লজ্জায়) তাঁর মুখ ঢেকে নিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! মহিলাদের স্বপ্নদোষ হয় কি? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তোমার ডান হাত কল্যাণে ভরে যাক! তা না হলে সন্তান তার মায়ের মতো হয় কীভাবে?’[8]

উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, জ্ঞান অর্জনে লজ্জাবোধ করা যাবে না। যদি উম্মু সালামাহ রযিয়াল্লাহু আনহা লজ্জা করে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস না করতেন, তাহলে তিনি সে বিষয়ে জানতে পারতেন না। অনুরূপভাবে আমরাও লজ্জা করে বসে থাকলে ইলম অর্জন করতে পারব না। সুতরাং ইলম (জ্ঞান) অর্জনের ক্ষেত্রে লজ্জাবোধ করা উচিত নয়।

ইলম শিক্ষাদানকারীর ফযীলত :

আল্লাহ তাআলা বলেন,﴿وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ﴾ ‘ঐ ব্যক্তির চাইতে কথায় উত্তম আর কে আছে যে, (মানুষকে) আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয় আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত’ (ফুছছিলাত, ৪১/৩৩)। এই আয়াতে মহান আল্লাহ ঐ সকল ব্যক্তিকে উত্তম বলেছেন, যারা মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে ও নিজে সৎকর্ম করে। মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকতে প্রয়োজন হয় ইলম তথা জ্ঞানের।

আল্লাহ তাআলা বলেন,﴿ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ﴾ ‘তুমি তোমার রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান করো এবং সর্বোত্তম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করো। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে আর তিনি হেদায়াতপ্রাপ্তদের সম্পর্কেও সবিশেষ অবহিত’ (আন-নাহল, ১৬/১২৫)। এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হিকমত, সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে সুন্দর পন্থায় মানুষকে দাওয়াত দিতে হবে। এছাড়াও যদি বিতর্ক পর্যায়ে চলে যায়, তাহলে সুন্দর পন্থায় বিতর্ক করতে বলা হয়েছে। কাজেই দাওয়াত দানের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্কতা অবলম্বল করতে হবে। হিকমত অবলম্বন করে, নম্রভাষী হয়ে ও উত্তম আচরণের মাধ্যমে দাওয়াত প্রদান করতে হবে।

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,بَلِّغُوا عَنِّى وَلَوْ آيَةً وَحَدِّثُوا عَنْ بَنِى إِسْرَائِيلَ وَلاَ حَرَجَ ، وَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘আমার কথা পৌঁছিয়ে দাও, যদি তা একটি আয়াতও হয়। আর বানী ইসরাঈলের ঘটনা বর্ণনা করো, এতে কোনো দোষ নেই। কিন্তু যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে যেন জাহান্নামে তার বাসস্থান প্রস্তুত করে নেয়’।[9] সুতরাং কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে আমাদের জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং অন্যকে জ্ঞান অর্জনে সহযোগিতা করতে হবে। তবে অনেক সময় নিজের স্বার্থে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামে এমন কথা আমরা বলে ফেলি, যা তিনি বলেননি। আর এরকম ঘটলে সে তার নিজের ঠিকানা জাহান্নামে করে নিবে, যা উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায়।

আবূ উমামা রযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ لَا يُرِيدُ إِلَّا أَنْ يَتَعَلَّمَ خَيْرًا أَوْ يُعَلِّمَهُ كَانَ كَأَجْرِ حَاجٍّ تَامًّا حَجُّهُ ‘যে ব্যক্তি প্রত্যুষে মসজিদে গমন করে শুধু এই উদ্দেশ্যে যে, সে কল্যাণ শিক্ষা করবে অথবা শিক্ষা দিবে সে পরিপূর্ণরূপে হজ্জ পালনকারীর ন্যায় ছওয়াব পাবে’।[10] এই হাদীছ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, কল্যাণ শিক্ষা গ্রহণ বা প্রদানের উদ্দেশ্যে মসজিদে গেলে তাকে কবুল হজ্জের প্রতিদান দেওয়া হবে। অন্যত্র আছে, আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি শুনেছি, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার এই মসজিদে আসবে শুধু কল্যাণ শিক্ষা করা বা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে, সে আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের মতো মর্যাদার অধিকারী হবে। আর যে ব্যক্তি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আগমন করবে, সে এমন ব্যক্তির ন্যায় যে অন্যের সম্পদের দিকে চেয়ে থাকে’।[11] অর্থাৎ শিক্ষাগ্রহণ বা শিক্ষাপ্রদান যে কোনো একটি করলেই আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের মতো মর্যাদা পাওয়া যাবে। আর অন্য কোনো উদ্দেশ্যে গেলে অন্যের সম্পদের দিকে তাকিয়ে থাকার মতো অবস্থা হবে।

আবূ উমামা আল-বাহিলী রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট দুই ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। এদের একজন ছিলেন আবেদ (ইবাদতকারী) আর অপরজন ছিলেন আলেম। তিনি বললেন, ‘আবেদের ওপর আলেমের মর্যাদা হলো যেমন আমার মর্যাদা তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে নগণ্য ব্যক্তির উপর’। অতঃপর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা, তার ফেরেশতাগণ, আকাশমণ্ডল ও যমীনের অধিবাসীরা এমনকি পিঁপড়া তার গর্তে ও মাছ পর্যন্ত ইলম শিক্ষাকারীর জন্য ছালাত পেশ করে’।[12] এই হাদীছে একজন ইলম প্রদানকারী ও একজন আবেদ এর মর্যাদার তারতম্য বুঝানো হয়েছে। বলা হয়েছে, একজন আলেমের মর্যাদা সবসময় উপরে। তাই আমাদের জ্ঞান অর্জন করতে হবে, সে অনুযায়ী আমল করতে হবে ও প্রচার করতে হবে। কারণ একজন আলেমের জন্য ফেরেশতাসহ দুনিয়ার সকল কিছু এমনকি গর্তে থাকা পিঁপড়াও দু‘আ করে। আবূ মাসঊদ আনছারী রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ ‘যে ব্যক্তি কোনো কল্যাণের পথ দেখাবে সে ঐ ব্যক্তির সমপরিমাণ ছওয়াব পাবে, যে ঐ কল্যাণ অনুযায়ী আমল করবে’।[13] এই হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, কেউ যদি কোনো ব্যক্তিকে কোনো একটি ভালো আমলের কথা বলে আর সে ব্যক্তি যদি ঐ আমলটি করে তাহলে যে আমলটি করার কথা বলল, সে ঐ ব্যক্তির সমপরিমাণ ছওয়াব পাবে। তাহলে একদিকে দাওয়াতের ছওয়াব এবং অপরদিকে আমলের ছওয়াব সে ব্যক্তি পাচ্ছে।

আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের দাওয়াত দেয়, সে ব্যক্তি ঐ ভালো আমল অনুসরণকারীদের সমপরিমাণে ছওয়াব পাবে এবং এতে তাদের (আমলকারীদের) ছওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কম করা হবে না। আর যে ব্যক্তি গোমরাহীর দিকে মানুষকে ডাকে, সে ব্যক্তি ঐ ভ্রান্ত আমল অনুসরণকারীদের সমপরিমাণে গোনাহ পাবে। আর এতে তাদের (আমলকারীদের) গোনাহ থেকে বিন্দুমাত্র কম করা হবে না।’।[14] এই হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, সঠিক পথে দাওয়াত দিলে আমলকারীর যে ছওয়াব রয়েছে আহ্বানকারীরও অনুরূপ ছওয়াব রয়েছে। আর ভ্রান্ত পথে দাওয়াত দিলে ভ্রান্ত পথের আমলকারীর যেরূপ গুনাহ হয় সে পথে আহ্বানকারীরও অনুরূপ গুনাহ হয়। সুতরাং দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যা অজানা তা বলা যাবে না।

উছমান রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ ‘তোমাদের মাঝে সবচেয়ে উত্তম ঐ ব্যক্তি, যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়’।[15] এই হাদীছেও জ্ঞান শিক্ষা করার ও শিক্ষা প্রদান করার ফযীলত বর্ণিত হয়েছে।

আবূ আবস রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَا اغْبَرَّتْ قَدَمَا عَبْدٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَمَسَّهُ النَّارُ ‘কোনো বান্দার দুই পা আল্লাহর পথে ধূলিমলিন হলে, তা জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না’।[16] জাবের রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শহীদদের সর্দার হচ্ছেন আব্দুল মুত্তালিবের ছেলে হামযা রযিয়াল্লাহু আনহু এবং ঐ ব্যক্তি যে ব্যক্তি স্বৈরাচারী শাসকের কাছে যায়, অতঃপর তাকে ভালো কাজের আদেশ করে এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধ করে। ফলে সে (স্বৈরাচারী শাসক) তাকে হত্যা করে’।[17] আমরা আজকাল অনেকেই দাওয়াত দিতে ভয় করি। কী জানি কী হয়! কিন্তু এই হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দাওয়াত দিতে গিয়ে শাহাদাতবরণ করে সে শহীদের মর্যাদা পাবে।

আর সৎকর্মসমূহ সম্পাদন করার জন্য আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন। কারণ যারা সৎকর্ম করবে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার। আল্লাহ তাআলা বলেন,﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا - خَالِدِينَ فِيهَا لَا يَبْغُونَ عَنْهَا حِوَلًا﴾ ‘নিশ্চয় যারা ঈমান আনয়ন করেছে ও সৎকর্মসমূহ সম্পাদন করেছে, তাদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এবং সেখান থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে চাইবে না’ (আল-কাহফ, ১৮/১০৭-১০৮)। এই আয়াতে বলা হয়েছে যারা ভালো কাজ করে তাদের একমাত্র প্রতিদান হচ্ছে জান্নাতুল ফেরদাউস, যা তাদের জন্য প্রস্তুত করা আছে। জান্নাতের যে কয়েকটি স্তর রয়েছে তার মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে জান্নাতুল ফেরদাউস। যার অবস্থান আল্লাহর আরশে আযীমের নিচে।

সুধী পাঠক! এতক্ষণ যে ফযীলত সম্পর্কে আমরা জানলাম, সেগুলোকে ঠেকিয়ে দিবে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই বাণী। তিনি বলেন, وَمَنْ بَطَّأَ بِهِ عَمَلُهُ لَمْ يُسْرِعْ بِهِ نَسَبُهُ ‘আর যার আমল তাকে পিছিয়ে দেয়, তার বংশ তাকে এগিয়ে দিতে পারে না’।[18]

উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, আমল সম্পর্কে যে ফযীলত আমরা জানলাম সেই আমল করলে যে ছওয়াব আমাদের পাওয়ার কথা তা আমরা পাব না, যদি আমাদের অন্যান্য ফরয ইবাদত না থাকে। ফরয আমাদের আদায় করতেই হবে। ফরয হচ্ছে বাধ্যতামূলক বা আবশ্যিক, যা করতেই হবে। তাই সময় থাকতে আমাদের পরকালের ভাবনা ভেবে ইবাদত করতে হবে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ একটি প্রবাদ আছে ‘Safety first, work last’ অর্থাৎ নিরাপত্তা আগে, কাজ পরে। যাবতীয় ইবাদতকে সুরক্ষিত রাখতে চাইলে আগে ছালাত আদায় করতে হবে। ছালাত হচ্ছে সকল ইবাদতের নিরাপত্তা প্রহরী। তাই আমাদের সময় থাকতে সজাগ হতে হবে। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করতে হবে। দ্বীনের সকল ফরয সঠিকভাবে প্রতিপালনের সাথে সাথে দ্বীনী জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং সেই জ্ঞান সঠিক কাজে ব্যয় করতে হবে; তাহলেই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন- আমীন!

আবূ রায়হান বিন জাহিদুল ইসলাম

ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর. পি. আই।


[1]. ছহীহ বুখারী, হা/৩, ‘অহীর সূচনা’ অধ্যায়; তাফসীর ইবনু কাছীর, ১৮/২১৪।

[2]. ইবনু মাজাহ, হা/২২৪।

[3]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৯; ইবনু মাজাহ, হা/২২৫; মিশকাত, হা/২০৪।

[4]. ইবনু মাজাহ, হা/২২০, হাদীছ ছহীহ।

[5]. ইবনু মাজাহ, হা/২২৩, হাদীছ ছহীহ।

[6]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৩১।

[7]. ছহীহ বুখারী, হা/২৪; ছহীহ মুসলিম, ১/১২, হা/৩৬।

[8]. ছহীহ বুখারী, হা/১৩০; ছহীহ মুসলিম, হা/৩১৩; আহমাদ, হা/২৬৬৭৫।

[9]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৬১।

[10]. ছহীহ তারগীব ওয়াত-তারহীব, হা/৮৬; তাবারানী আওসাত্ব, হা/৭৪৭৩।

[11]. ছহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৮৭।

[12]. তিরমিযী, হা/২৬৮৫, হাদীছ ছহীহ; মিশকাত, হা/২১৩।

[13]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৭৭; মিশকাত, হা/২০৯।

[14]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৪; মিশকাত, হা/১৫৮।

[15]. ছহীহ বুখারী, হা/৫০২৭; মিশকাত, হা/২১০৯, ‘কুরআনের ফযীলত’ অধ্যায়।

[16]. ছহীহ বুখারী, হা/২৮১১; মিশকাত, হা/৩৭৯৪।

[17]. ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৩০৮।

[18]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৯; মিশকাত, হা/২০৪।

সাওয়াল জওয়াব

প্রশ্ন (২২) : মসজিদে প্রতিদিন ফজর ছালাতের পর ইমাম সূরা ইয়াসিন পড়েন এবং ইমাম সাহেব বাড়ি গেলে আমাকে পড়ার জন্য চাপ দেন৷ আমি জানতে চাই প্রতিদিন ফজর ছালাতের পর নিয়ম করে সূরা ইয়াসিন পড়ার বিধান কী?

প্রশ্ন (২৩) : নবীর প্রতি ছালাত ও সালাম পেশ না করলে দুআ কবুল হয় না। দুআ ঝুলন্ত থাকে। এই মর্মে বর্ণিত হাদীছ কি ছহীহ? নবী a-এর প্রতি ছালাত ও সালাম পেশ না করে দুআ করা যাবে কি?

প্রশ্ন (২৪) : বিপদ থেকে মুক্তি লাভের আমল কী?

প্রশ্ন (২৫) : কুরআনের এমন কোনো নির্দিষ্ট তেত্রিশ আয়াত আছে কি যার অনেক ফযীলত রয়েছে?

প্রশ্ন (২৬) : আমি মেয়ের অভিভাবকের সম্মতি না নিয়ে কোর্ট মেরেজ করেছি এবং সংসার করছি। কিছু আলেম বলছেন, বিবাহ হয়ে গেছে আর কিছু আলেম বলছেন, বিবাহ হয়নি। এখন মেয়ে আমার সাথে সংসার করবে না। প্রশ্ন হলো- এখন আমি যদি তাকে তালাক দিই তাহলে কি মোহরানা পরিশোধ করতে হবে? যদি বিবাহ না হয়ে থাকে তাহলে মোহরানা কেন পরিশোধ করবো?

প্রশ্ন (৩৬) : দিবস পালন করা কি শিরক নাকি বিদআত? জানিয়ে বাধিত করবেন।

প্রশ্ন (৩৭) : অন্য মানুষকে ভুল করে লাথি লেগে গেলে করণীয় কী?

প্রশ্ন (৩৮) : ভালোবাসা দিবস পালন করার বিধান কী?

প্রশ্ন (৩৯) : শবে বরাত ও শবে কদর উপলক্ষে বিভিন্ন মসজিদ ও দোকানপাটে আলোকসজ্জা করা হয়, পটকা ফুটানো হয় ও আতশবাজি করা হয়। সেই সাথে হালুয়া-রুটি, খিচুড়ি ইত্যাদি খাবারের আয়োজন করা হয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে এর হুকুম কী জানতে চাই?।

প্রশ্ন (৪২) : আমাদের এলাকায় প্রচলন আছে যে, কেউ ভয় পেলে কাসার থালা বা প্লেটে দুআ পড়ে ফুঁক দিয়ে তার পিঠের উপর লাগিয়ে দেয়। যদি সে ভয় পেয়ে থাকে তাহলে, প্লেট তার পিঠে লেগে থাকবে এবং সম্পুর্ণ ভয় না উঠা পর্যন্ত প্লেট পড়বে না। আর ভয় না পেলে পিঠে লাগবে না পড়ে যাবে। এটা করলে কি শিরক হবে?

লায়লাতুল মি‘রাজ : করণীয় ও বর্জনীয়

প্রশ্ন (১২) : যোহর ছালাতের সময় মসজিদে এমন সময় উপস্থিত হলাম যে, ফরযের পূর্বের চার রাকআত ছালাত আদায় করার সময় হচ্ছে না। কিন্তু দুই রাকআত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ার মতো সময় আছে। এমতাবস্থায় কি করবো?

প্রশ্ন (১৪) : বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর স্বামী এবং স্ত্রীর একত্রে যে দুই রাকআত নফল ছালাত আদায় করবে; সেই দুই রাকআত ছালাত কি স্বরবে হবে নাকি নিরবে হবে?

প্রশ্ন (১৫) : রাত জাগার কারণে ফজরের ছালাত প্রায়ই ক্বাযা হয়ে যায়। স্কুলে গিয়েও সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় যোহরের ছালাত ক্বাযা হয়। এমতাবস্থায় করণীয় কী?

প্রশ্ন (১৬) : আমাকে কেন আরবীতে ছালাত আদায় করতে হবে, যখন আমি সেই ভাষা বুঝিই না?। অনুগ্রহ করে যুক্তি না দিয়ে দলিল দিয়ে বুঝাবেন।

প্রশ্ন (১৭) : ১৫ শাবানের রাতকে কেন্দ্র করে জামাআত বদ্ধ হয়ে আবার একাকী বিশেষ পদ্ধতিতে ছালাত আদায় করে থাকে। ১৫ শাবান রাতে কি বিশেষ কোনো ছালাতের কথা কুরআন ও হাদীছে বর্ণিত হয়েছে?

ইলম অর্জনকারী ও প্রদানকারীর ফযীলত

বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার মূলনীতি : ইসলামী দৃষ্টিকোণ

কিছু হারিয়ে যাওয়া সুন্নাহ

প্রশ্ন (৪৫) : আমার বয়স সাতাশ বছর। আমি দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করার জন্য কুরআন, হাদীছের সাথে সাথে আরো কিছু কিতাব পড়ছি। এখন আমি বেকার। আমি কি এখন কাজ খুঁজবো নাকি আরো কিছু জ্ঞান অর্জন করবো? কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

প্রশ্ন (৪৬) : ‌মানুষের মত কি জিনদেরও সংসার জীবন ও হায়াত-মউত আছে?

প্রশ্ন (৪৮) : বর্তমানে বিপিএল ক্রিকেট খেলা অশ্লীলতা ও বেহায়াপনায় ভরপুর। এই খেলা দেখা জায়েয হবে কি?

প্রশ্ন (৪৯) : বিড়াল মেরে ফেললে তার ওযনের সমপরিমাণ লবণ ছাদাক্বা করে তাকে পুঁতে ফেলতে হবে- একথা কি ঠিক?

প্রশ্ন (৫০) : আমার মায়ের জমি আছে। সেই জমি আমার বাবা চাষ করেন। আমার মা যদি প্রয়োজনে বাবাকে না বলে সেই জমির অল্প কিছু ধান বিক্রি করে তাহলে পাপ হবে কি?

প্রশ্ন (১) : আমরা জানি যে ফেরেস্তা নূরের তৈরি। জিন আগুনের তৈরি। মানুষ মাটির তৈরি। তাহলে মাছ, গরু, ছাগল, উট, কিসের তৈরি? সঠিক ব্যাখ্যা জানতে চাই।

প্রশ্ন (২) : দুনিয়া থেকে জান্নাতের সুবাস পাওয়া সম্ভব কি? কোনো ছাহাবী কি দুনিয়াতে জান্নাতের সুবাস পেয়েছেন?

প্রশ্ন (৩) : মানহাজ কাকে বলে? মানহাজ কোন কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? জনৈক আলেম বলেন, প্রত্যেক মুসলিমের উপর সালাফী মানহাজ অনুসরণ করা আবশ্যক। প্রশ্ন হলো সালাফী মানহাজ বলতে কী বুঝায়?

প্রশ্ন (৪) : শহীদ ব্যক্তি মৃত্যুর সময় জান্নাত দেখতে পায়। কথাটি কি সঠিক?

প্রশ্ন (৫) : অছীলা কাকে বলে? শরী‘আতে কোন কোন অছীলা বৈধ আর কোন কোন অছীলা অবৈধ?

প্রশ্ন (৬) : (রাসূল (ছা.) বলেছেন) ‘আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’। উক্ত দাবী কি সঠিক?

প্রশ্ন (৭) : পবিত্র কুরআনের ভাষ্য হল, ‘মাতৃগর্ভে কোন সন্তান আছে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না’। কিন্তু বর্তমানে যন্ত্রের সাহায্যে তা দেখা সম্ভব হচ্ছে। তাহলে কুরআনের উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা কি?

প্রশ্ন (৮) : ইসলাম কি কোয়ান্টাম মেথড-এর অনুমোদন দেয়?

প্রশ্ন (৯) : সর্বপ্রথম তাওহীদের শ্রেণী বিন্যাস করেন কে?

প্রশ্ন (১৩) : যদি মিরাজের রাত্রিতে ছালাতের বিধান কার্যকর হয়ে থাকে, তাহলে ইবরাহীম (আঃ)–এর স্ত্রী সারা জালেম বাদশাহর অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য কিভাবে ছালাত আদায় করে ছিলেন?

Magazine