কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৪): আমি আয়নায় তাকালে অনেক সময় নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে। সেক্ষেত্রে নিজের প্রতি নিজের কি নযর লাগতে পারে? কোনো দু‘আ আছে কি যা পড়লে নিজের প্রতি নিজের বদনযর লাগবে না? আয়না দেখার কোনো দু‘আ আছে কি? আর অন্যের বদনযর থেকে বাঁচার দু‘আ কী?

উত্তর: প্রয়োজন অনুযায়ী আয়না দেখা জায়েয। নাফে‘ ইবনু উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে বলেন, তিনি মুহরিম অবস্থায় আয়না দেখতেন (সুনানে কুবরা লিল বায়হাক্বী, হা/৯১৪৪)। বিজোড় সংখ্যায় সুরমা দেওয়া, মাঝে মাঝে তেল দেওয়া, আয়না দেখা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা উত্তম কাজ (মুগনী, ১/১২৮; শারহুল উমদা, পৃ. ২৩২)। তবে এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি বা সীমালঙ্ঘন করা উচিত না। আর আয়নায় দেখে যদি ভালো লাগে তাহলে আল্লাহর শুকর ও বরকতের দু‘আ করা উচিত। কেননা বদনযর সত্য। নিজের ক্ষেত্রেও বদনযর লাগতে পারে। আবূ হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘বদনযর লাগা সত্য’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৭৪০)। আমের বিন রাবিয়া বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যদি তোমাদের কারো নিজেকে বা তার সম্পদ বা অন্য ভাইয়ের কোনো কিছু ভালো লাগে, তাহলে সে যেন তার জন্য বরকতের দু‘আ করে। কেননা নযর লাগা সত্য’ (ছহীহুল জামে, হা/৫৫৭)। আর আয়না দেখার কোনো দু‘আ নির্দিষ্ট নেই। যেগুলো বর্ণনা এসেছে সেগুলো মাওযূ (জাল)। তবে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি দু‘আ সবসময় করতেন। এটা আয়না দেখার সাথে নির্দিষ্ট না। ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,‌اللهُمَّ ‌حَسَّنْتَ ‌خَلْقِي، فَحَسِّنْ خُلُقِي ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার গঠন ও আকৃতি যে রকম সুন্দর করেছ, আমার চরিত্রকেও অনুরূপ সুন্দর করো’ (ছহীহুল জামে, হা/১৩০৭)। বদনযর থেকে বাঁচার জন্য নিম্নোক্ত দু‘আগুলো পড়া যেতে পারে- أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ ‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ঠ হতে পানাহ চাচ্ছি’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩৩৭১)। আরও বলা যেতে পারে- بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ‘আল্লাহর নামে, যার নামের বরকতে আসমান ও যমিনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী’। উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবে, সকাল হওয়া পর্যন্ত তার উপর হঠাৎ কোনো বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার উপর হঠাৎ কোনো বিপদ আসবে না’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/৫২৮)। আর বদনযর লাগলে দু‘আ হলো, আবূ সাঈদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার কোনো এক রোগে আক্রান্ত হলেন। তখন জিবরীল আলাইহিস সালাম নবীজি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া মুহাম্মাদ! আপনি কি অসুস্থতা বোধ করছেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’। জিবরীল আলাইহিস সালাম তখন এ দু‘আটি পড়লেন, بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ. ‘আল্লাহর নামে আপনাকে ফুঁক দিচ্ছি; যেসব জিনিস আপনাকে কষ্ট দেয়, সেসব প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদনযর থেকে আল্লাহ আপনাকে শিফা দিন; আল্লাহর নামে আপনাকে ফুঁক দিচ্ছি’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৮৬)।

প্রশ্নকারী : মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান

সরকারি হাসপাতাল রোড, দাগনভূঞা, ফেনী।


সাওয়াল জওয়াব

প্রশ্ন (১): যাদের সন্তান হয় না, তাদেরকে নিয়ে সমাজে হাসিঠাট্টা করা হয়। এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?

প্রশ্ন (২): জিনদের মাঝে কেউ কি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ছাহাবী ছিলেন?

প্রশ্ন (৩): মৃত্যুর সময় যমযমের পানি খাওয়ালে সেই ব্যক্তি কি জান্নাতী হবে?

প্রশ্ন (৪): আমি আয়নায় তাকালে অনেক সময় নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে। সেক্ষেত্রে নিজের প্রতি নিজের কি নযর লাগতে পারে? কোনো দু‘আ আছে কি যা পড়লে নিজের প্রতি নিজের বদনযর লাগবে না? আয়না দেখার কোনো দু‘আ আছে কি? আর অন্যের বদনযর থেকে বাঁচার দু‘আ কী?

প্রশ্ন (৫): অন্যায়ভাবে কেউ যদি কোনো মুসলিম ভাইকে হত্যা করে আর সেই মুসলিম ভাই (যিনি মারা গিয়েছেন) যদি বেনামাযী হয়, তাহলে কি সে (নিহত) জান্নাতে যাবে?

প্রশ্ন (৬): আহলে কুরআন যারা আল্লাহ ও কুরআনকে বিশ্বাস করে। মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নবী হিসেবে মানে কিন্তু রাসূল হিসেবে অন্য ব্যক্তিকে মানে। ছাহাবীদেরও সম্মান করে না। জানি না কোনো ওযর আছে কি-না। এমন মেয়েকে বিয়ে করা কি জায়েয?

প্রশ্ন (১০): কোন কোন অবস্থায় দুই ওয়াক্ত ছালাত (যোহর-আছর ও মাগরিব-এশা) জমা করে পড়া জায়েয আছে?

প্রশ্ন (১১): তাহিয়্যাতুল মাসজিদ ছালাত আদায় করা সুন্নাত, ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব?

প্রশ্ন (১২): অমুসাফির বা স্থানীয় ইমামের পিছনে মুসাফির কি পুরো ৪ রাকআত ছালাত পড়বে নাকি শুধু কছর ২ রাকআত পড়ে সালাম ফিরিয়ে নিবে?

প্রশ্ন (১৩): হাসপাতালে চলাচলের সময় বোরকায় ময়লা লাগতে পারে। এই বোরকা পরে ছালাত হবে কি?

প্রশ্ন (১৪): কোনো এক যুবক পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করে কিন্তু দাড়িও কাটে। এখন এই যুবকের ছালাত কি কবুল হবে?

প্রশ্ন (১৫): বিতর ছালাত কি ১ রাকআত পড়া যাবে? পড়ার নিয়ম কী?

প্রশ্ন (১৬): সিজদায় এই দু‘আটি পড়তে পারব কিনা? আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নাকা আংতাল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদ, আল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ, ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।

প্রশ্ন (১৭): ছালাত জান্নাতের চাবি,এহাদীছ কি সঠিক?

প্রশ্ন (১৮): ফরয, নফল প্রত্যেক ছালাতের শুরুতেই কি ছানা পড়া লাগবে?

প্রশ্ন (১৯): ছালাত ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কী কী?

প্রশ্ন (২০): জানাযার ছালাতে ইমামকে মাইয়েতের কোন বরাবর দাঁড়াতে হবে?

প্রশ্ন (২১): বায়ু আটকিয়ে ছালাত আদায় করলে ছালাত হবে কি?

প্রশ্ন (২২): বিড়ি বা তামাক কারখানায় কাজ করলে ছালাত হবে কি?

প্রশ্ন (২৩): বগলের লোম কি কাটতে হবে না টেনে উঠাতে হবে? দাড়ি ছাঁটার বিধান কী?

প্রশ্ন (২৪): ফসলের জমি ইজারা দেওয়া কি শরীআতসম্মত?

প্রশ্ন (২৫): ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কমার্শিয়াল যানবাহন কেনা যাবে কি না?

প্রশ্ন (২৬): আমি পৃথিবীর যেকোনো দেশে গিয়ে ব্যবসা কিংবা চাকরি করার জন্য কোন কোন বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে চললে আমি হালাল উপায়ে ব্যবসা কিংবা চাকরি করতে পারব?

প্রশ্ন (২৭): বাড়িতে কবুতর, বিড়াল, ও কুকুর পালন করা যাবে কি?

প্রশ্ন (২৮): অনেক এলাকায় মৎস্য শিকারী পুকুরে টিকিট কেটে মাছ ধরে। এই টিকিট কেটে মাছ ধরা হালাল নাকি হারাম?

প্রশ্ন (২৯): আমার ফুফু জীবিত থাকা অবস্থায় ভিডিও করে রেখেছিলাম। আমার ফুফু বর্তমানে মারা গেছে। এখন কি আমার ফুফুর ভিডিওটা দেখতে পারব?

প্রশ্ন (৩০): ইসলামী আলোচনায় আলাদা কোনো মিউজিক লাগানো যাবে কি?

প্রশ্ন (৩১): আমি গার্মেন্টসে চাকরি করি। এ চাকরি করা কি বৈধ?

প্রশ্ন (৩২): মহিলাদের মাথার চুলকে প্রক্রিয়াজাত করে মাথার ক্যাপ তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে কি?

Magazine