কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ছাদাক্বাতুল ফিত্বর

post title will place here

ফিত্বর বা ফিত্বরা (ِفِطْرَةٌ) আরবী শব্দ। ইসলামে এটি যাকাতুল ফিত্বর (ফিত্বরের যাকাত) বা ছাদাক্বাতুল ফিত্বর (ফিত্বরের ছাদাক্বা) নামে পরিচিত। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।

ছাদাক্বাতুল ফিত্বর কী?

ছাদাক্বাতুল ফিত্বর মূলত দুটি আরবী শব্দের সমষ্টি। একটি হলো ছাদাক্বা, অন্যটি ফিত্বর। ছাদাক্বা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো দান এবং ফিত্বর শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো উন্মুক্তকরণ বা ছিয়াম ভঙ্গকরণ বা ছিয়াম সমাপন। ইসলামের বিধান অনুযায়ী রামাযান মাসব্যাপী ছিয়াম সাধনার পর গরীব-মিসকীন এবং উপযুক্ত দরিদ্র ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্ধারিত খাদ্যদ্রব্য বা কোনো জনপদের প্রধান খাদ্যশস্য প্রদান করার নিয়মকে শরীআতের পরিভাষায় ছাদাক্বাতুল ফিত্বর বলা হয়। দীর্ঘ এক মাস ছিয়াম পালন করার পর যেহেতু তা ভঙ্গ করা হয় এবং এ উপলক্ষ্যে শরীআত কর্তৃক আরোপিত এই দান দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়, তাই একে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর বলে আখ্যায়িত করা হয়।

আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যেসব দান বান্দার উপর অপরিহার্য, ছাদাক্বাতুল ফিত্বর তার অন্যতম। আর্থিক ইবাদত হিসেবে যাকাতের কাছাকাছি পর্যায়ে এর অবস্থান। অধিকাংশ ফিক্বহী গ্রন্থে যাকাত অধ্যায়েই ছাদাক্বাতুল ফিত্বরের আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় হিজরীতে রামাযানের ছিয়াম ফরয করা হয়। একই বছরে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর ফরয করা হয়। তাই সামর্থ্যবান প্রতিটি ব্যক্তিকে রামাযানের ছিয়াম সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এ মাসের শেষে শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ঈদুল ফিত্বরের ছালাতের পূর্বেই ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায়েও আমাদেরকে যত্নবান হতে হবে।

ফিত্বরা আদায় করা আবশ্যক কেন?

রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বহু বাণীর আলোকে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করা আবশ্যক হবার বিষয়টি প্রমাণিত। কুতুবে সিত্তাহর প্রায় সবগুলো গ্রন্থে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর অবধারিত হওয়া প্রসঙ্গে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের উপর রামাযান মাসে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর অবধারিত করেছেন।[1] অন্য আরেকটি হাদীছে এসেছে, ক্বয়স ইবনু সা‘দ রযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হবার আগে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর যাকাতের বিধাঅবতীর্ণ হবার পর আমাদেরকে তা পালন করার নির্দেশও দিতেন না এবং বারণও করতেন না। তবুও আমরা তা পালন করতাম।[2] রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ পালনার্থে ছাহাবায়ে কেরামও যথাযথভাবে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করতেন। আবূ সাঈদ খুদরী রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এক ছা‘ খাদ্যদ্রব্য বা এক ছা‘ খেজুর কিংবা এক ছা‘ যব অথবা এক ছা‘ কিশমিশ দিয়ে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করতাম।[3]

কাদের উপর ফিত্বরা অপরিহার্য?

সামর্থ্যবান নারী-পুরুষ, স্বাধীন-পরাধীন, শিশু-বৃদ্ধ ও ছোট-বড় সকল মুসলিমের উপর ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করা ওয়াজিব। যে সব লোকের উপর ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করা ওয়াজিব, তাদের বিবরণ হাদীছে উল্লেখিত হয়েছে।

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اُللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى الْعَبْدِ وَالْحُرِّ وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى وَالصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ.

ইবনু উমার রযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, প্রত্যেক গোলাম, আযাদ, পুরুষ-নারী, প্রাপ্তবয়স্ক, অপ্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের উপর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাদাক্বাতুল ফিত্বর হিসেবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক ছা‘ পরিমাণ আদায় করা অবধারিত করেছেন। আর ঈদের ছালাতের জন্য বের হবার আগেই লোকজনকে তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।[4]

কী দিয়ে ফিত্বরা দিতে হবে?

প্রত্যেক দেশের প্রধান খাদ্য দ্বারা ফিত্বরা আদায় করতে হবে। এটিই সুন্নাত। হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَبِى رَجَاءٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَخْطُبُ عَلَى مِنْبَرِكُمْ يَعْنِى مِنْبَرَ الْبَصْرَةِ يَقُولُ صَدَقَةُ الْفِطْرِ صَاعٌ مِنْ طَعَامٍ.

আবূ রজা রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি ইবনু আব্বাস রযিয়াল্লাহু আনহুমা-কে তোমাদের মিম্বরে অর্থাৎ বাছরার মিম্বরে খুৎবারত অবস্থায় বলতে শুনেছি, ছাদাকাতুল ফিত্বরের পরিমাণ হলো এক ছা‘ খাদ্যদ্রব্য।[5] এই হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ফিত্বরা আদায় করতে হবে প্রধান খাদ্য দ্বারা। তাই আমাদেরকে আমাদের যার যেটি প্রধান খাদ্যদ্রব্য, সেটি দিয়েই ফিত্বরা আদায় করতে হবে। এদেশে টাকা দ্বারা ফিত্বরা আদায় করার যে প্রথা প্রচলিত আছে, তা সম্পূর্ণ সুন্নাত পরিপন্থী আমল। বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য যেহেতু চাল, তাই এদেশের মুসলিমদের চাল দ্বারাই ছাদাক্বাতুল ফিত্বরা আদায় করা সুন্নাহসম্মত।

ছাহাবীগণ কী দিয়ে ফিত্বরা দিতেন?

ছাহাবীগণ পাঁচ ধরনের খাদ্যদ্রব্য তথা গম, যব, খেজুর, পনির ও কিশমিশের মাধ্যমে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করতেন। এ ব্যাপারে হাদীছে এসেছে, আবূ সাঈদ খুদরী রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে বর্তমান থাকা অবস্থায় আমরা ছাদাক্বাতুল ফিত্বর বাবদ এক ছা‘ খাদ্য (গম) বা এক ছা‘ খেজুর অথবা এক ছা‘ যব কিংবা এক ছা‘ পনির অথবা এক ছা‘ কিশমিশ দান করতাম।[6]

কখন ফিত্বরা আদায় করতে হবে?

ঈদুল ফিত্বরের দিন ছুবহে ছাদেক্ব উদয় হবার পর সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তির উপর ছাদাক্বাতুল ফিত্বর ওয়াজিব হয়। তাই ঈদুল ফিত্বরের ছালাত আদায়ের জন্য ঈদগাহে যাবার আগে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করা উত্তম। হাদীছে ছালাত আদায়ের আগেই ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে যাবার আগেই ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করার নির্দেশ প্রদান করে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈদের ছালাতের আগে ছাদাক্বা আদায় করল, তা-ই গ্রহণযোগ্য ছাদাক্বাতুল ফিত্বর। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ছালাতের পর তা আদায় করল, তা সাধারণ দানের অন্তর্ভুক্ত হলো’।[7]

অবশ্য কেউ যদি ঈদুল ফিত্বর আসার কয়েকদিন আগেই ছাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করে দেয়, তাহলে এরও অবকাশ রয়েছে। হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু ছা‘লাবা রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ঈদুল ফিত্বরের দুদিন আগে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমরা দুজনের মাঝে এক ছা‘ গম কিংবা এক ছা‘ খেজুর অথবা যব আদায় করো। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক সবার পক্ষ থেকেই তা আদায় করতে হবে’।[8]

ছাদাক্বাতুল ফিত্বর কাদের দেবেন?

এ বিষয়ে ইসলামী বিদ্বানগণের মাঝে দুটি মত রয়েছে। প্রথমত, ইমাম শাফেঈ, ইমাম ইবনু কুদামা, ইমাম কারখী, হাফেয ইবনু হাযম আর হানাফী মাযহাবের বিদ্বানগণের উক্তি এবং শায়খ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভীর সাক্ষ্য অনুসারে চার মাযহাবের প্রকাশ্য ফাতওয়া সূত্রে ফিত্বরার যাকাত

সম্পদের যাকাতের নিয়মানুযায়ী বণ্টন করতে হবে।[9] অর্থাৎ সূরা আত-তওবায় বর্ণিত যাকাতের হক্বদার আট শ্রেণির সকলেই ফিত্বরা পাওয়ার হক্ব রাখে।

দ্বিতীয়ত, ছাদাক্বাতুল ফিত্বর বা ফিত্বরা পাওয়ার হক্বদার কেবল ফকীর ও মিসকীন। সূরা আত-তওবায় বর্ণিত অন্য ছয় শ্রেণি ফিত্বরার হক্বদার নয়। হাদীছে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ فَرَضَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ.

ইবনু আব্বাস রযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাদাক্বাতুল ফিত্বর ফরয করেছেন অশ্লীল কথা ও বেহুদা কাজ হতে (রামাযানের) ছওমকে পবিত্র করতে এবং মিসকীনদের খাদ্যের ব্যবস্থার জন্য।[10]

এ মতকে সমর্থন করেছেন ইমাম আহমাদ, ইমাম ইবনু তায়মিয়্যা, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম, ইমাম শাওকানী, আল্লামা শামসুল হক্ব আযীমাবাদী, ইবনু উছায়মীন প্রমুখ রহিমাহুমুল্লাহ।[11]

ফিত্বরা প্রাপ্তির হক্বদার সম্পর্কিত দ্বিতীয় মতটি অধিক বিশুদ্ধ। কেননা এ মতের পক্ষে স্পষ্ট দলীল বিদ্যমান।

ছাদাক্বাতুল ফিত্বরের তাৎপর্য : হাদীছে নববীর আলোকে ছাদাক্বাতুল ফিত্বর অবধারিত করার দুটি তাৎপর্য স্পষ্ট। সেগুলোর একটি হলো, ছিয়ামের অপূর্ণতা দূরীকরণ। স্বভাবজাত দুর্বলতার কারণে ছিয়াম রাখা অবস্থায়ও প্রতিটি ব্যক্তি তার কথায় ও কাজে ভুলভ্রান্তির শিকার হয়ে থাকে। পূর্ণ চেষ্টা করা সত্ত্বেও কোনো না কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি হয়ে যায়। ছাদাক্বাতুল ফিত্বর ওয়াজিব করার একটি বড় উদ্দেশ্য সেই ত্রুটিবিচ্যুতি ও অপূর্ণতা দূর করা। আর দ্বিতীয় উদ্দেশ্য, ঈদের আনন্দে অভাবী ও অসচ্ছল লোকদের অংশীদার করা। তাদের খাবার বা অন্যান্য প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা করা।

সৃষ্টিকুল আল্লাহর পরিবার। তাঁর পরিবারের শ্রেষ্ঠ সদস্য মানুষ। তাদের সেবা করার অর্থ প্রকারান্তরে আল্লাহ তাআলারই সেবা করা। মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে বাযযার ও শুআবুল ঈমানের একটি বর্ণনায় এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সৃষ্টিকুল আল্লাহর পরিবার। আর আল্লাহর কাছে প্রিয় সৃষ্টি হলো সেই ব্যক্তি, যে তাঁর পরিবাবের প্রতি অনুগ্রহ করে’।[12]

তাই ছাদাক্বাতুল ফিত্বরসহ সর্বপ্রকার দান-খয়রাতে অংশ গ্রহণ করে সৃষ্টির সেবায় এগিয়ে আসা চাই। সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্র, অসহায় ও আর্তমানবতার পাশে দাঁড়িয়ে স্রষ্টার কৃপাদৃষ্টি লাভ করে তার সন্তুষ্টি অর্জন করা প্রতিটি মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য।

আল্লাহ আমাদের সকল মুসলিমদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝার এবং সঠিক পদ্ধতিতে ছাদাক্বাতুল ফিত্বরা আদায় করার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!

অধ্যাপক ওবায়দুল বারী বিন সিরাজউদ্দিন

পিএইচডি গবেষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

[1]. নাসাঈ, হা/২৫০৩, হাদীছ ছহীহ।

[2]. নাসাঈ, হা/২৫০৭, হাদীছ ছহীহ।

[3]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫০৮।

[4]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫০৩।

[5]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫০৩।

[6]. নাসাঈ, হা/২৫১০, সনদ ছহীহ।

[7]. আবূ দাঊদ, হা/১৬০৯, হাদীছ হাসান।

[8]. মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক সানআনী, হা/৫৭৮৫।

[9]. ইমাম শাফেঈ, কিতাবুল উম্ম, ২/৫৯; আল-মুহাল্লা, ৬/১৪৪; দুররে বহিইয়া (রওযাসহ), পৃ. ১৪২; আল-বাহরুর রায়েক, ২/২৭৫; উমদাতুর রিআয়া, ১/২২৭; শরহে সিফরুস সাআদা, পৃ. ৩৬৯; মুগনী, পৃ. ৭৮।

[10]. আবূ দাঊদ, হা/১৬০৯; ইবনু মাজাহ, ‘যাকাত’ অধ্যায়, হা/১৮২৭; দারাকুত্বনী, হাকেম, ১/৪০৯; ইরওয়াউল গালীল, হা/৮৪৩; ইমাম হাকেম বলেন, বুখারীর শর্তে ছহীহ। ইমাম যাহাবী তার সাথে একমত হয়েছেন।

[11]. মাসায়েলে ইমাম আহমদ, পৃ. ৮৬; মাজমূউল ফাতাওয়া, ২৫/৭৩; যাদুল মাআদ, ২/২২; নায়লুল আওত্বার, ৩-৪/৬৫৭; আওনুল মা‘বূদ, ৫-৬/৩; শারহুল মুমতে, ৬/১৮৪।

[12]. শুআবুল ঈমান, হা/৭০৪৮।

সাওয়াল জওয়াব

প্রশ্ন (১) : ইবনুসাইয়্যেদ কি দাজ্জাল? আর দাজ্জাল না হলে সে আসলে কে বিস্তারিত জানতে চাই?

প্রশ্ন (২) : জাবের রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি সা‘দ ইবনু মু‘আয রযিয়াল্লাহু আনহু-এর মৃত্যুতে আল্লাহ তাআলার আরশ কেঁপে উঠেছিল। এখানে আরশ কাঁপা বলতে কি বুঝানো হয়েছে?

প্রশ্ন (৩) : যে ব্যক্তি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালি দেয় তার বিধান কি? আর তাকে আয়ত্তে আনার আগেই যদি সে তওবা করে, তাহলে তার সেই তওবা গ্রহণ করা হবে কি?

প্রশ্ন (৪) : আমার প্রশ্ন হল নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মি‘রাজে গিয়ে সকল নবী আলাইহিস সালাম-কে নিয়ে ছালাতের ইমামতি করে ছিলেন। তাহলে কি সকল নবী আলাইহিস সালাম কি আসমানে জীবিত আছেন?

প্রশ্ন (৫) :মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি গায়েব নাই জানতেন, তাহলে তিনি কীভাবে বদরের যুদ্ধের ফলাফল, আবূ-জাহেলের মৃত শরীর পতিত হওয়ার স্থান আগে থেকেই চিহ্নিত করেছিলেন?

প্রশ্ন (৬) : কোনো দিবস পালন করা বা এ উপলক্ষে বৈধ কোনো আয়োজন করা যাবে কি?

প্রশ্ন (৭) : আদম আলাইহিস সালাম ভারত থেকে ষাট হাজার বার হজ্জ্ব করতে গিয়েছিলেন। এই ঘটনা কি সত্য?

এপ্রিল ফুল : মুসলিম নিধনের করুণ ইতিহাস

পহেলা বৈশাখ : ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

প্রশ্ন (৮) : আমার বড় ভাই গত ১০ বছর যাবত অসুস্থ। তার সুস্থতার জন্য আমার বাবা-মা ডাক্তার ও জীন ছাড়ানোর কবিরাজ দেখিয়েছে। তাদের বেশির ভাগই তাবিজ ও তেল পড়া দিয়ে থাকে। মাঝে মাঝে কিছুদিন ভালো থাকে।প্রশ্ন হলো, জীন ছাড়ানোর জন্য কবিরাজ দেখানোর ইসলামিক বিধান কী?

প্রশ্ন (৯) : মানুষ মারা গেলে তার কবরের উপর চার পাঁচ দিন রাতে পানি ঢালে। আর তারা বলে যে, এটা ভালো কাজ। এখন প্রশ্ন হলো, এমন কাজ করা কি শরী‘আতসম্মত?

প্রশ্ন (১০) : রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবরে যাওয়া ও যিয়ারত করা হজ্জ্বের অংশ মনে করলেকি বিদআত হবে?

প্রশ্ন (১১) : ছালাতে মহিলাদের সতর কতটুকু? জনৈক আলেম বলেন, মহিলাদের সতর হচ্ছে— ‘দুই হাত ও মুখমণ্ডল ব্যতীত পুরো শরীর, এমনকি দুই পায়ের পাতাও’। তিনি আরও বলেন, ‘কোনো মহিলা যদি অন্ধকার ঘরে একাকী ছালাত আদায়ের সময় তার হাত এবং মুখমণ্ডলের বাইরে অন্যকিছু অনাবৃত হয়ে যায়, তাহলে তার ছালাত বাতিল হয়ে যাবে’।উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?

প্রশ্ন (১২) : ইমাম যদি রাফঊল ইয়াদাইন না করে,তাহলে মুক্তাদী কি রাফঊল ইয়াদাইন করতে পারবে?

প্রশ্ন (১৩) : ছালাতের প্রথম রাকাআতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা মাঊন পড়ে দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ফীল পড়লাম। আমার জিজ্ঞাসা হলো, সূরার ধারাবাহিকতা ঠিক না থাকলে সাহু সিজদা দিতে হবে কী?

প্রশ্ন (১৪) : এশার ছালাতের পর বিতর ছালাত আদায় করলে, রাতে কি আবার তাহাজ্জুদ আদায় করা যাবে?

প্রশ্ন (১৫) : ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পরও বিতর ছালাত পড়া যাবে কী?

প্রশ্ন (১৬) : আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি, অফিস চলাকালিন সময়ে আমরা অফিসেআযান দিয়ে সবাই একসাথে জামাতে ছালাত আদায় করি। আমার প্রশ্ন হলো মসজিদে আদায় করতে না পারায় আমাদের ছালাত হবে কি?

প্রশ্ন (১৭) : ছালাতে একাধিক ছানা একসাথে পড়া যাবে কি? যেমন- (সুবহানাকা আল্লাহুমা...) পড়ে এরপর (আল্লাহুম্মা বাইদ বাইনি...) পড়া।

তবু যারা ক্ষমা পেল না...

রামাযান এবং আমাদের প্রচলিত ভুলত্রুটি

যেমন ছিল সালাফদের রামাযান

লায়লাতুল ক্বদর : গুরুত্বও ফযীলত

প্রশ্ন (২১) : ঘুমিয়ে থাকার কারণে ইফতারির সময় ৩০ মিনিট পার হয়ে গেছে। এখন করণীয় কী?

উত্তর: প্রশ্ন (২২) :অসুস্থতার কারণে গত বছর সব ছিয়াম রাখতে পারিনি। বর্তমানেও শারীরিকভাবে অসুস্থ। এখন করণীয় কী?

প্রশ্ন (২৩) : মানুষকে সাহারীর সময় জাগানোর জন্য মাইকে আযান দেওয়া, গজল গাওয়া, কুরআন তেলাওয়াত করা, বক্তব্য দেওয়া ও সাইরেন বাজানো যাবে কি?

প্রশ্ন (২৪) : কোনো ব্যক্তি যদি রামাযানের রাত্রিতে স্ত্রী সহবাস করে ঘুমিয়ে যায় এবং অপবিত্র অবস্থায় সাহারী খেয়ে ছিয়াম রাখে, তাহলে উক্ত ছিয়াম শুদ্ধ হবে কি?

প্রশ্ন (২৫) : ক্বদরের রাতে সারা রাত ছালাত আদায় করা যাবে কি?

প্রশ্ন (২৬) : ছিয়াম অবস্থায় মুখের লালা খাওয়া যাবে কি?

প্রশ্ন (২৭) : যারা বাচ্চাকে দুধ পান করাবে এবং যারা গর্ভবতী তাদের ছিয়ামের হুকুম কী?

প্রশ্ন (২৮) : রামাযান মাসে নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করায় শারঈ কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি?

প্রশ্ন (২৯) : সাহারীর পূর্বে জাগতে পারেনি। এমতাবস্থায় না খেয়েই ছিয়াম রাখতে হবে? না-কি তার ক্বাযা আদায় করতে হবে?

প্রশ্ন (৩০) : ছিয়াম অবস্থায় দিনের বেলা স্বপ্নদোষ হলে ছিয়াম ভঙ্গ হবে কি?

প্রশ্ন (৩১) : পরীক্ষার কারণে উক্ত দিনে ছিয়াম না রেখে তার ক্বাযা আদায় করা যাবে কি?

প্রশ্ন (৩২) : ই‘তিকাফে বসার সময় কখন? মহিলারাকিবাড়িতেই‘তিকাফকরতেপারে?

প্রশ্ন (৩৩) : রামাযান মাসে দিনের বেলা সহবাসের কাফফারা হিসেবে ৬০ দিন ছিয়াম পালন না করে ৬০ জন মিসকীনকে খাওয়ানো যাবে কি? নাকিএক্ষেত্রে একটানা ৬০টি ছিয়াম রাখতেই হবে?

প্রশ্ন (৩৪) : মৃত্যু ব্যক্তির নামে রামাযান মাসে ইফতারের দাওয়াতে সকলের অংশ গ্রহণ করা যাবে কি ?

প্রশ্ন (৩৫) : জনৈক আলেম বলেন, আরাফার দিন ছিয়াম রাখলে ১০০০০দিন ছিয়ামের সমান নেকী পাওয়া যাবে। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?

প্রশ্ন (৩৭) : শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম কি একা ধারে আদায় করতে হবে, না-কিবিচ্ছিন্নভাবে ও আদায় করা যাবে? আর এই দুটির মধ্যে কোনটি করা উত্তম।

প্রশ্ন (৩৬) : শাওয়ালের ছয়টি ছিয়ামের ফযীলত কি?

প্রশ্ন (৩৮) : আমি একজন প্রবাসী। আমার কাজ খুব কঠিন হওয়ার জন্য অনেক সময় ছিয়াম থাকতে পারি না। যদি আমি দেশে ৩০ জন ছিয়াম পালনকারীকে ইফতার করাই তাহলে কি আমার ছিয়ামের নেকী হবে ?

প্রশ্ন (৪১): যমযমের পানি সুস্থতার আশায় মুখে মাথায় মাসাহ করা যাবে কি?

প্রশ্ন (৪২): আমি বিকাশের এজেন্ট। বিকাশের মাধ্যমে অনেক কাস্টমার আসে এনজিও কিস্তি দেওয়ার জন্য। ইসলামিক দৃষ্টিতে এভাবে কিস্তি প্রদান করা যাবে কি?

প্রশ্ন (৪৩): সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গাপূজায় যদি কোনো মুসলিম তাদের সহযোগিতা করে, তাদের পূজা উপলক্ষে যদি আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে,জামা কাপড়ের জন্য ও খাবারের জন্য টাকা দেয়, তাহলে কি সেটা পাপ বলে গণ্য হবে?

প্রশ্ন (৪৪): যে সব প্রতিষ্ঠানে নিজেকে সূদের হিসাব করতে হয়, সে সব প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করে উপার্জিত অর্থ হালাল হবে কি?

প্রশ্ন (৪৫): ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য দালালকে ঘুষ দেওয়া ছাড়া কোনোভাবেই লাইসেন্স করা যাচ্ছে না। যারা দালাল ধরে ঘুষ দিচ্ছে শুধু তাদেরই লাইসেন্স করে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের ঘুষ দেওয়া জায়েয হবে কি না?

প্রশ্ন (৪৬): নিকটাত্মীয় কেউ যদি কোনো উপহার (টাকা, পোশাক, খাবার) দেয় এবং তার উপার্জনে যদি হারামের মিশ্রণ থাকতে পারে বলে সন্দেহ থাকে, তবে সেটা কি গ্রহণ করা যাবে?

প্রশ্ন (৪৭): আমি চীনে থাকি। চীন থেকে আমি প্রোডাক্ট কিনে বাংলাদেশে পাঠিয়ে লাভ করি। এরূপ ব্যবসা কি জায়েয?

Magazine