২০২১ সালে দেশের সেবা খাতে জাতীয় পর্যায়ে প্রাক্কলিত মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। যা ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এই ঘুষের পরিমাণ বাংলাদেশে জিডিপির শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (TIB) দেশের আটটি বিভাগকে ১৬টি স্তরে বিভাজন করে জনসংখ্যার আনুপাতিক ক্রমে শহর-গ্রামসহ মোট ১৩২০টি খানার ওপর জরিপ করে এই হিসাব দিয়েছে। জরিপে উঠে আসা দুর্নীতির মধ্যে রয়েছে ঘুষ, জোরপূর্বক অর্থ আদায়, প্রতারণা, দায়িত্বে অবহেলা, স্বজনপ্রীতি, সময়ক্ষেপণসহ বিভিন্ন হয়রানি। খানাপ্রধানের প্রতিবন্ধিতা থাকলে দুর্নীতি ও ঘুষের শিকার হওয়ার প্রবণতা বেশি। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীরা কম দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৫৬ থেকে ৬৫ বছর বয়সীরা। টিআইবি জানায়, সেবা খাতে দুর্নীতি-২০২১ জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায় ২০২১ সালে ১৭টি খাত বিবেচনায় সার্বিকভাবে ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত সাতটি খাত হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (৭৪.৪%), পাসপোর্ট (৭০.৫%), বিআরটিএ (৬৮.৩%), বিচারিক সেবা (৫৬.৮%), স্বাস্থ্যসেবা (৪৮.৭%), স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান (৪৬.৬%) এবং ভূমি সেবা (৪৬.৩%)। ২০২১ সালে সার্বিকভাবে ঘুষের শিকার হওয়া খানার হার ৪০ দশমিক ১ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ঘুষ গ্রহণকারী তিনটি খাত হচ্ছে পাসপোর্ট, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও বিআরটিএ। জরিপে অন্তর্ভুক্ত ঘুষদাতা খানার ৭২.১% ঘুষ দেওয়ার কারণ হিসেবে ‘ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না’ এ কথা বলেছে, অর্থাৎ ঘুষ আদায়ের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ অব্যাহত রয়েছে। ২০২১ সালে সার্বিকভাবে খানাপ্রতি গড়ে ৬৬৩৬ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে এবং সর্বোচ্চ ঘুষ আদায়ের তিনটি খাত হলো বীমা, বিচারিক ও গ্যাস সেবা। জনপ্রতি ঘুষ দেওয়ার পরিমাণ ৬৭১ টাকা। মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি পেয়েছেন ৫ শতাংশ। সার্বিকভাবে ২০১৭ সালের তুলনায় সেবাখাতে দুর্নীতির শিকার খানার হার বৃদ্ধি পেয়েছে।