কোনো শহরের মানুষের মনের উদারতা কিংবা সংকীর্ণতা পরিমাপ করা যায় সেই সে শহরের রাস্তাঘাট দেখে। এই তো এক দশক আগেও সিলেট নগরের রাস্তাঘাট ছিল অপ্রশস্ত ও সরু। কালের চাহিদার প্রেক্ষিতে নগরে যানবাহন বেড়েছে; কিন্তু সে তুলনায় বাড়েনি রাস্তা ও নর্দমার প্রশস্ততা। জনজীবনে ভোগান্তির অন্ত নেই। বর্তমান সিটি মেয়র এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে নর্দমা ও রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সমস্যা হলো রাস্তার পাশে সরকারের কোনো অতিরিক্ত জমি নেই। তাই বলে থেমে থাকেনি উদ্যোগ। তিনি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনগণের দোরগোড়ায় গিয়ে নানা সভা-সমাবেশের আয়োজন করেন। সেখানে তিনি নগরবাসীর সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং রাস্তা ও নর্দমা প্রশস্তকরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বাসিন্দাদের জমি দান করার জন্য অনুরোধ করেন। এতে ১৩ হাজার মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ বাড়ির সীমানাপ্রাচীর, কেউবা বাড়ির ফটকের কিয়দংশ ভেঙে ২ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত জমি বিনামূল্যে স্বেচ্ছায় দান করেন, যার বর্তমান আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। ৪২টি ওয়ার্ডে প্রায় ২০০টি রাস্তা ও নর্দমা প্রশস্ত করা হয়েছে। দুই পাশে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কারণে অনেক রাস্তা আগের তুলনায় দ্বিগুণ প্রশস্ত হয়েছে। এই নযীরবিহীন দান সিলেট নগরবাসীর বিশাল মনের উদারতার পরিচয়।