কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

গাজায় ইসরাঈলী আগ্রাসন (মুসলিম বিশ্ব)


সম্প্রতি ইসরাঈল-ফিলিস্তীনের সংঘাতের সূত্রপাত মূলত গত ১৩ এপ্রিল। পবিত্র রামাযান মাসের প্রথম রাতে জেরুজালেমে দামেস্ক গেট বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় সেদিন পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাঈলী পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তীনী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এরপর থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকায় কয়েকটি ফিলিস্তীনী পরিবারকে উৎখাতের মাধ্যমে। ২ মে শেখ জাররাহ এলাকায় ইসরাঈলী পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ জাররাহ এলাকায় ফিলিস্তীনী পরিবারগুলোকে উৎখাতের বিষয়ে ইসরাঈলের সুপ্রিম কোর্ট ৯ মে শুনানি পিছিয়ে দেন। তবে এতে উত্তেজনা থামেনি। ১০ মে পবিত্র আল-আক্বছা মসজিদ প্রাঙ্গণে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এরপর হামাস রকেট হামলা চালালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন থেকে বিমান হামলা শুরু করে ইসরাঈলী বাহিনী। হামাসও পাল্টা জবাব দিতে থাকে। ইসরাঈল-ফিলিস্তীনের মধ্যে এই সংঘাতকে বলা হচ্ছে ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। ২০১৪ সালের ওই সংঘাতে ২২৫১ ফিলিস্তীনী নিহত হন। ইসরাঈলের পক্ষে প্রাণহানি ছিল ৭৪, যাদের অধিকাংশই সেনাসদস্য। এবারের সংঘাতে পশ্চিমাদের মদদে আর মুসলিম বিশ্বের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রক্তের নেশায় মেতে উঠেছিল ইসরাঈলী হানাদার বাহিনী সেই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২৬০ জনের লাশ পেয়েই অবশেষে খ্যান্ত দিলেন। অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলো ইসরাঈল এবং হামাস। রক্তাক্ত গাজা ভূখণ্ডে শেষ হলো ইসরাঈলের ১১ দিনের ধ্বংসযজ্ঞ। গাজা ভূখণ্ডে প্রায় দুই হাজার হাউজিং ইউনিট, ৭৪টি সরকারি ভবন, ৩টি মজসিদ পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাঈলী বাহিনী। এছাড়াও ১৬৮০০ হাউজিং ইউনিট, ৬৬টি স্কুল, ৪০টি মসজিদ আংশিক ধসে গেছে তাদের বোমার আঘাতে। সেখানকার পুলিশ হেড কোয়ার্টারও ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৩ তলাবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক মিডিয়া ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট সেবাদানকারী বহুতল ভবনটি বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে ইসরাঈলী হায়েনারা। গাজা ভূখণ্ডে বিশাল এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে এক লাখ ২০ হাজার মানুষ। অন্যদিকে ২৫৯ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। যাদের ৬৫ জন শিশু, ৩৯ জন নারী এবং ১৭ জন বয়স্ক মানুষ। সমূলে শেষ করে দেওয়া হয়েছে বহু পরিবারকে। আট হাজার লোক আহত হয়েছেন। হাসপাতালগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ইলেকট্রিক পাওয়ার সিস্টেম ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

Magazine