কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

স্বাধীনতার মাসে দেশের শান্তি-সমৃদ্ধির শপথ নিন

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ وَحْدَهُ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى مَنْ لَّا نَبِيَّ بَعْدَهُ

১৯৪৭ সালের কথা, ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে ভারত ও পাকিস্তান নামে দু’টি পৃথক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান। মূলত পূর্ব পাকিস্তান পূর্ব বাংলা হিসেবে গঠিত হয়। পশ্চিম পাকিস্তানের অধীনে থাকে সিন্ধু, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পশ্চিম পাঞ্জাব ও বেলুচিস্তান। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাঙালিদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ ও শোষণ পরিলক্ষিত হয় এবং বাঙালিরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে শুরু করে। উর্দূকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির অবজ্ঞা করার ব্যাপারটা তো রয়েছেই। ফলে এসবের বিরুদ্ধে বাঙালিরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়। বস্তুত ১৯৪৮-১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ১৯৬২-১৯৬৩ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ— এ সবই ছিল সেই প্রতিরোধের ধারাবাহিকতা। ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ বাংলার মানুষ সেসব শোষণ প্রতিহত করার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়; বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হয়।

কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরুলেও আমরা কি সত্যিকার অর্থে কাঙ্ক্ষিত সমৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি? আসলে প্রকৃত শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে হলে সরকার ও জনগণ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। পরস্পরের প্রতি পরস্পরের দায়িত্ব যথারীতি পালন করতে হবে। ইসলামের দৃষ্টিতে সরকারের জন্য জনগণের যেমন কিছু কর্তব্য রয়েছে, তেমনি জনগণের জন্যও সরকারের রয়েছে অনেক কর্তব্য। জনগণের কর্তব্যের মধ্যে রয়েছে- ১. সরকারের সাথে কৃত বায়আত রক্ষা করে চলা। রাষ্ট্রের শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার জন্য বায়আতে কৃত অঙ্গীকার পূরণ করা অতীব জরুরী (আল-মায়েদা, ৫/১; বুখারী, হা/৩৪৫৫;  মুসলিম, হা/১৮৪২)। ২. শরীআতের বিরোধিতা না হয়ে গেলে সরকারের আনুগত্য করতে হবে (আন-নিসা, ৪/৫৯)। ৩. সুখে-দুঃখে, কঠিন ও স্বাভাবিক অবস্থায় সর্বদা সরকারকে সাহায্য করতে হবে। ভেতরের বা বাইরের যে-ই রাষ্ট্রে ফেতনা করতে আসবে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষে কাজ করতে হবে (আল-হুজুরাত, ৪৯/৯; বুখারী, হা/২৯৫৭; মুসলিম, হা/১৮৪১)। ৪. শাসকশ্রেণিকে নছীহত করতে হবে। এটা বিশেষ করে দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাজ হলেও সাধারণ জনগণও এর আওতায় পড়তে পারে। বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে নছীহত করা, তাদের ভুল শুধরিয়ে দেওয়া জনগণের দায়িত্ব (মুসলিম, হা/৫৫)। ৫. সরকার কর্তৃক ঘটিত অপছন্দনীয় ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করতে হবে। এমনকি অত্যাচার ঘটে গেলেও জনগণকে ধৈর্যধারণ করতে হবে (বুখারী, হা/৭০৫৪ ও ৭১৪৩; মুসলিম, হা/১৮৪৯)। ৬. সরকার যাতে দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করে যেতে পারে, সেজন্য বায়তুল মাল বা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তার জন্য বেতন-ভাতা নির্ধারণ করতে হবে (তারীখু দিমাশক, ৩০/৩২১)। ৭. শাসকগোষ্ঠীকে গালমন্দ করা যাবে না। শাসক ও জনগণের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকা চাই। তাহলে শাসক যেমন জনগণের উপর আস্থা রাখতে পারবে, জনগণও তেমনি শাসকগোষ্ঠীর উপর আস্থা রাখতে পারবে। এভাবে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে সবাই মিলে ভূমিকা রাখতে পারবে। পক্ষান্তরে এর বিপরীত হলে সবকিছু পিছিয়ে যাবে। সেজন্য ইসলাম শাসকগোষ্ঠীর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে বলেছে (ইবনু আবী আছেম, আস-সুন্নাহ, হা/১০১৫)। ৮. শাসকগোষ্ঠীর সাথে প্রতারণা করা যাবে না। সাধারণভাবে এটা মারাত্মক অপরাধ; আর যদি তা সরকারের সাথে হয়, তাহলে তার ভয়াবহতা আরো বেশি। এতে দেশ ও জনগণের ক্ষতি হয়। সেকারণে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রকার প্রতারণা করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম, হা/১০২)। ৯. রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করা যাবে না। শাসকগোষ্ঠীর সাথে খেয়ানত করে বা অন্য কোনো উপায়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া হারাম এবং এটা বড় ধরনের খেয়ানত (বুখারী, হা/৩০৭৩;  মুসলিম, হা/১৮৩১ ও ১৮৩৩)। ১০. সরকারকে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে নছীহত করা যাবে না। সরকারের নছীহত হবে কোমলতার সাথে গোপনে; প্রকাশ্যে নয় (আহমাদ, হা/১৫৩৩৩; মুসলিম, হা/২৯৮৯)

অনুরূপভাবে জনগণের জন্য মুসলিম শাসকের কাঁধেও রয়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ের সংরক্ষণ ও তত্ত্বাবধান শাসকশ্রেণির দায়িত্বের মূল বিষয়। এতদুভয়ের নিরাপত্তা রক্ষায় তাদেরকে সামাজিক, সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বহু গুরু দায়িত্ব পালন করতে হয় সরকারকে। যেমন— ১. দ্বীনের হিফাযত মুসলিম সরকারের প্রধান দায়িত্ব। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসবে, সেটি হচ্ছে দ্বীনের মূলনীতিসমূহ সংরক্ষণ ও নির্ভেজাল আক্বীদা লালন। সরকারকে একদিকে যেমন আক্বীদা, আমল, আখলাক, হুকুম-আহকাম বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে, তেমনি দ্বীনের ব্যাপারে যাবতীয় ভ্রান্ত আক্বীদা-আমলকে দূরীভূত করতে হবে। ২. বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে ইনছাফের সাথে বিচার-ফয়সালা করে দেওয়া সরকারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, যাতে যালেম আর সীমালঙ্ঘন করতে না পারে এবং মাযলূম ধীরে ধীরে আরো দুর্বল না হয়ে যায়। সেজন্য, সরকারকে যোগ্য ও ন্যায়পরায়ণ বিচারক নিয়োগ দিতে হবে এবং বিচারকার্য তদারকি করতে হবে। তবে, অন্যায়ভাবে বিচারকার্যে হস্তক্ষেপ করার অধিকার সরকারের নেই। অনুরূপভাবে শরীআত পরিপন্থী কোনো ফয়সালা বিচারক দিতে পারবেন না। ৩. শরীআত নির্ধারিত দণ্ডবিধি সরকারকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে সমাজে অপরাধ একেবারেই কমে যাবে। ৪. সরকারকে আদর্শবান হতে হবে। চরিত্র, আমল-আখলাকে জনগণের জন্য মডেল হতে হবে। সরকার ভালো হলে জনগণও ভালো হতে সচেষ্ট হবে। পক্ষান্তরে সরকার এর বিপরীত হলে জনগণও সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করবে। ৫. সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। দ্বীন ও দেশ রক্ষায় এর বিকল্প নেই (দ্র. আলে ইমরান, ৩/১০৪)। অতএব, সরকার এমন কিছু লোক নিয়োগ দিবে, যারা এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করবেন। ৬. একটি জাগ্রত ইসলামী রাষ্ট্রের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে জ্ঞান-বিজ্ঞান। দেশের শান্তি-সমৃদ্ধিতে এর ভূমিকা অসামান্য। সুতরাং সরকারের উপর এর পৃষ্ঠপোষকতা করা অতীব জরুরী। পক্ষান্তরে যেসব জ্ঞান দ্বীন ও দেশের জন্য ক্ষতিকর, সেগুলো নিষিদ্ধ করাও সরকারের দায়িত্ব। ৭. সরকারকে জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে হবে। তাদের উপর তাদের সাধ্যাতীত বোঝা চাপানো যাবে না (মুসলিম, হা/১৮২৮)। ৯. জনগণের হিতাকাঙ্ক্ষী হওয়া এবং তাদের সাথে খেয়ানত না করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এক্ষেত্রে যদি সরকার সচেষ্ট হতে পারে, তাহলে সবাই সফলতার মুখ দেখতে পারবে। অন্যথা ফল ভালো হবে না (মুসলিম, হা/১৪২)। ১০. অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উভয় দিক থেকে সরকারকে দেশের নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে। যাতে দেশের মধ্যকার বা বাইরের কেউ শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে না পারে, সেজন্য কার্যকরী পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে। ১১. দেশের সীমান্ত রক্ষা করা সরকারের গুরু দায়িত্ব। সেকারণে, সরকারকে সীমান্ত রক্ষার জন্য বিশেষ সশস্ত্র বাহিনী গঠন করতে হবে, তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র সরবরাহ করতে হবে, যাতে বহিঃশত্রু কর্তৃক দেশ আক্রান্ত না হয় (আল-আনফাল, ৮/৬০)। ১২. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ পরিচালনা করা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি সামরিক দায়িত্ব। সরকারের নেতৃত্বে জনগণের উপর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা ফরয। ১৩. ইসলামী আইন ও বিধিবিধান ক্বায়েম করা সরকারের রাজনৈতিক দায়িত্ব। দ্বীন ও রাজনীতির মধ্যে বিভাজন করে দ্বীনকে মসজিদে বন্দী করা যাবে না। ১৪. পরামর্শভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব (আলে ইমরান, ৩/১৫৯)। ১৫. যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন সরকারের অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবে এমন আমানতদার ও শক্তিশালী দায়িত্বশীল নিয়োগ দেওয়া সরকারের কর্তব্য, যাতে তারা রাষ্ট্র পরিচালনায় রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন (আল-ক্বছাছ, ২৮/২৬)। ১৬. সরকারকে অবশ্যই রাষ্ট্র ও জনগণের বিষয়াদি নিজে তত্ত্বাবধান করতে হবে। শুধু দায়িত্বশীলদের উপর নির্ভর করলে চলবে না। ১৭. জনগণের মধ্যে ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করা সরকারের আরেকটি গুরু দায়িত্ব (আন-নিসা, ৪/৫৮)। ১৭. সরকারকে বৈধ পন্থায় রাষ্ট্রীয় তহবিল সমৃদ্ধির কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। যাকাত, ছাদাক্বা, খারাজ, জিযিয়া এবং রাষ্ট্রের অন্যান্য আয় রাষ্ট্রীয় তহবিলের বৈধ উৎস হতে পারে। যাকাত উত্তোলন ও নির্ধারিত খাতে বণ্টন মুসলিম সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব। ১৮. রাষ্ট্রীয় মালের সুষ্ঠু বণ্টন করা সরকারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা সহ অন্যান্য ব্যয়ের খাত যথারীতি হিসাব করে সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে মাল খরচ করতে হবে। কোনোভাবেই যেন মালের অপচয় ও অপব্যবহার না হয় সেদিকে সরকারকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। ১৯. সামাজিক সম্প্রীতি ও সংহতি গড়ে তুলতে হবে। একটি রাষ্ট্রের শান্তির জন্য জনগণের পারস্পরিক সম্প্রীতি, সংহতি, সৌহার্দ, সাহায্য-সহযোগিতা, আন্তরিকতার অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। সরকারকে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে। ২০. সমৃদ্ধি ও উন্নতির বিভিন্ন মাধ্যম সহজ করে দিতে হবে। এখানে অনেক দায়িত্ব সরকারের কাঁধে চাপে। যেমন— জনগণের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা ও উপযুক্ত বাসস্থানের বিষয়টি সহজলভ্য করে দেওয়া, কৃষিকাজের জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা, জনশক্তিকে কাজে লাগানো, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি উৎপাদন করা। যেগুলো কোনোভাবেই দেশে উৎপাদন সহজ নয়, সেগুলো আমদানী ও সরবরাহের পথ সুগম করা ইত্যাদি।

আসুন! আমরা সরকার ও জনগণ পরস্পরের দায়িত্ব যথারীতি পালনের মাধ্যমে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় নিই। এটাই হোক স্বাধীনতার মাসের অঙ্গীকার। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

সাওয়াল জওয়াব

প্রশ্ন (২) : বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র এবং উপার্জনের মধ্যে অধীনস্থতা বাধ্যতামূলক ও ইচ্ছাকৃত যে সকল শিরক ও হারাম মিশে আছে সেগুলো কী কী? তা স্পষ্ট করার জন্য অনুরোধ রইলো।

প্রশ্ন (৩) : শবে বরাত ইসলামী পরিভাষা না হলেও উপমহাদেশে শা‘বান মাসের মধ্যবর্তী রজনীকে বুঝানো হয়। এ মর্মে হাদীছগুলোকে ত্রুটিপূর্ণ বলা হলেও ইবনু মাজাহতে বর্ণিত (১৩৯০ নং) হাদীছকে আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাসান বলেছেন। তাহলে আহলেহাদীছগণ একে বিদ‘আত বলেন কেন?

প্রশ্ন (৪) : জুম’আর খুৎবায় অনেক খতীব বলে থাকেন যে, রমাযান মাস পর্যন্ত জীবিত থাকার জন্য এবং রামাযানের ফযীলত লাভের জন্য اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ এই দু’আটি বেশি বেশি পাঠ করা সুন্নাত। এই মর্মে সঠিক সমাধান জানতে চাই।

প্রশ্ন (২৫) : আমাদের এলাকায় মানুষ মারা গেলে বাড়ি থেকে জানাযার স্থানে নেওয়ার সময় চল্লিশ কদম পর্যন্ত গণনা করা হয়। প্রতি দশ কদম পর পর খাটিয়া বহনকারীদের পরিবর্তন করা হয়। ইহা কতটা শরীয়া সম্মত?

প্রশ্ন (২৬) : মৃত মহিলাকে গোসল দেওয়ার পর শরীরে আতর, করপুর, সুরমা লাগানো যাবে কি?

প্রশ্ন (২৭) : কোনো নারীকে যদি মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং তার কোনো অভিভাবক খুঁজে পাওয়া না যায়, তাহলে ঐ নারীকে আমরা কাফন-দাফন ও জানাযা পড়ে কবরস্থ করব না-কি আগুনে পুড়িয়ে কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলব? কেননা নারী হওয়ার কারণে মুসলিম না-কি অমুসলিম আমরা বুঝতে পারছি না।

প্রশ্ন (২৮) : আমরা জানি যে, মৃত ব্যক্তির বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান করা বিদ’আত। কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিবার ও দূর-দুরান্ত থেকে জানাযায় উপস্থিত হতে আসা লোকজন, আত্মী-স্বজনদের খাওয়া-দাওয়ার জন্য সমাজের পক্ষ থেকে নিজ অর্থায়নে ব্যবস্থা করা যাবে কি? বেঁচে যাওয়া টাকা কি করতে হবে?

প্রশ্ন (২৯) : মৃত ব্যক্তির ভিডিও কিংবা অডিও লেকচার শোনা যাবে কি?

প্রশ্ন (৩০) : মৃত ব্যক্তিকে কবরস্থ করার কয়েক মাস পর ধসে তা নিচু হয়ে যায়। ফলে সেখানে বিভিন্ন জীব-জন্তু বসবাস করতে আরম্ভ করে। আমরা কি কবরগুলি ভরাট করতে পারব? বা এ ক্ষেত্রে করণীয় কী? জানিয়ে বাধিত করবেন।

প্রশ্ন (৫) : রজব মাসের বিশেষ ছালাত ‘ছালাতুররাগায়েব’ বলতে কোনো ছালাত আছে কি? থাকলে তা পড়ার পদ্ধতি কী?

প্রশ্ন (৭) : হায়েয শেষ হওয়ার পর ছালাতের ওয়াক্ত রয়েছে। কিন্তু পবিত্রতা সম্পন্ন হওয়ার পূর্বে যদি ওয়াক্ত চলে যায়, তাহলে ঐ ছালাত কি ক্বাযা করতে হবে? যদি করতে হয় তাহলে নিয়ম কী?

প্রশ্ন (৮) : ‘রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর ছালাত বনাম প্রচলিত ছালাত ’বইয়ে জানাযার জন্য ২টি দু’আ দেওয়া রয়েছে। দু’আ ২টি একসাথে পড়া যাবে কি? দু’আগুলো একাধিকবার পড়া যাবে কি?

প্রশ্ন (৯) : যোহর, আছর, মাগরিব এবং এশার ফরয ছালাতে এক বা দুই রাকা‘আত ছুটে গেলে, ছুটে যাওয়া রাকা’আত আমি কিভাবে পড়ব?

প্রশ্ন (১০) : আমার বাবা পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত পড়েন। কিন্তু ছহীহ পদ্ধতিতে পড়েন না। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু তিনি বুঝার চেষ্টা করেন না। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী?

প্রশ্ন (১১) : আমি একজন মেয়ে। আমার বয়স ১৮ বছর। আমি একটি মেসে থাকি। আমি নিয়মিত ছালাত পড়ি। কিন্তু আমার রুমমেট হিন্দু। হিন্দু মহিলাটির সামনে আমার ছালাত ছহীহ হবে কি? আর হিন্দু মেয়েটার সাথে একই রুমে থাকা শরীয়তসম্মত হবে কি?

প্রশ্ন (১২) : ফজরের ২ রাকা’আত সু্ন্নাত ও ফরযের মধ্যে না-কি আর কোনো ছালাত আদায় করা যায় না। এখন কেউ যদি ফজরের ২ রাকা’আত সুন্নাত ছালাত বাসায় পড়ে মসজিদে যায়; তাহলে আবার মসজিদে বসার পূর্বে ২ রাকা’আত ছালাত আদায় করতে পারবে কি?

প্রশ্ন (১৩) : যে সমস্ত ইমাম মীলাদ-ক্বিয়াম করে এবং নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নূরের তৈরি বিশ্বাস করে। দলীল দেওয়ার পরও সে তার এই বিশ্বাস থেকে ফিরে আসে না। এমন ইমামের পিছনে ছালাত হবে কি?

প্রশ্ন (১৪) : যোহরের পূর্বের চার রাকা’আত সুন্নাত ছালাতের প্রত্যেক রাকা’আতেই কি সূরা ফাতেহার সাথে অন্য সূরা পড়তে হবে?

প্রশ্ন (১৫) : ছালাতে সিজদারত অবস্থায় সিজদার তাসবীহ পড়ার পর আল্লাহর কাছে নিজ মাতৃভাষায় কিছু চাওয়া যাবে কি?

প্রশ্ন (৪৭) : আমরা জানি যে, দু’আর শুরুতে হামদ ও দরূদ পাঠের কথা হাদীছে বর্ণিত হয়েছে (তিরমিযী, হা/৩৪৭৬)। দু’আর শেষে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু অনেক দু’আর বইয়ে দু’আর শেষে হামদ ও দরূদ পাঠের কথা লিখা আছে। প্রশ্ন হলো- হামদ ও দরূদ দ্বারা দু’আ শেষ করা কি শরীয়তসম্মত?

প্রশ্ন (৪৮) : আমি শুনেছি যে আল্লাহর ৯৯টি নাম পড়ে কেউ যদি হাত তুলে দু‘আ করে,তাহলে তার দু‘আ কবুল হয়, এ কথা কি ঠিক?

প্রশ্ন (৪৯) : এক প্রতিবেশি থেকে অপর প্রতিবেশি যদি খুবই সামান্য পরিমাণ (৫০, ১০০ গ্রাম) লবন ধার নেয় তাহলে সেটা ফেরত না নেওয়ার ব্যাপারে ইসলাম কিছু বলেছে কি? আমি শুনেছি লবন, পানি কাউকো দিলে তা ফেরত নিতে হয় না।

প্রশ্ন (৫০) : আমি কিছু অমুসলিমদের ইসলামের দাওয়াত দিয়েছি। ডা. জাকির নায়েকের লেকচার দেখে তারা ইসলাম সম্পর্কে জানতেঅনেকআগ্রহী। তারা পবিত্র কুরআন পড়তে চায়। তাদেরকে আমি কুরআন মাজীদউপহার দিতে চাচ্ছি। আমি কি তাদেরকে কুরআন মাজীদ দিতে পারব? যদি দিতেপারি তাহলে নির্ভরযোগ্য অনুবাদ গ্রন্থ কোনটি দয়া করে জানাবেন।

স্বাধীনতার মাসে দেশের শান্তি-সমৃদ্ধির শপথ নিন

হক্বের মানদণ্ড (পর্ব-৩)

প্রশ্ন (৩৯) : ছহীহ হাদীছে এক পাপাচারী মহিলা কর্তৃক তৃষ্ঞার্ত কুকুরকে কুয়া থেকে পানি উঠিয়ে পান করানোর প্রতিদানে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। আবার ছহীহ হাদীছে বলা হয়েছে, যে বাড়িতে কুকুর থাকে সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। বিষয়টির ব্যাখ্যা জানতে চাই। মুমিন ব্যক্তি কি কোনো অসুস্থ বিপন্ন কুকুরকে তার বাড়িতে আশ্রয় দিলে তা ক্ষতিকর হবে?

প্রশ্ন (৪০) : ‘কোনো বান্দার পাপ বেড়ে গেলে আল্লাহ তাকে বেশি সন্তান দিয়ে তার পাপ মোচন করে দেন’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫২৩৬)। অত্র হাদীছটি কি ছহীহ?

প্রশ্ন (৪১) : মেয়েরা কি রেস্টুরেন্টে গিয়ে শুধুমাত্র খাওয়ার সময় মুখ খুলতে পারবে?

প্রশ্ন (৪২) : আমরা ছহীহ হাদীছ থেকে জানতে পারি যে, অহংকারসহ ও অহংকার ছাড়া টাখনুর নিচে পুরুষদের জন্য কাপড় ঝুলানো জায়েয না। কিন্তু একটি নির্ভরোগ্য ফতওয়া ওয়েবসাইট-এ পড়লাম, চার মাযহাবের বেশির ভাগ আলেমের মতে অহংকার ছাড়া টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা মাকরুহ বা জায়েয। অথচ আমরা উমার রযিয়াল্লাহু আনহু-এর ঘটনা জানি, তিনি এক যুবককে কাপড় টাখনুর উপর উঠাতে বলেছিলেন। সঠিক সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।

প্রশ্ন (৪৩) : মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নির্দেশনা রয়েছেযে, রাস্তার ডান পাশ দিয়ে হাঁটতে হবে। কিন্তুসরকারি নিয়ম বাম পাশ দিয়ে হাঁটতে হবে। এখন আমাদের করণীয় কী?

প্রশ্ন (৪৪) : যে ব্যক্তি যাদু ও কুফুরীকালাম দ্বারা আক্রান্ত তারা কিভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করবে?

শা‘বান মাসে নফল ছিয়াম ও ছালাত

প্রশ্ন (১৮) : জনৈক আলেম বলেছেন, শা’বান মাসে মালাকুল মাউত বেশি পরিমাণ রূহ কবয করে থাকেন। অর্থাৎ বেশি মানুষ মারা যায়। এমন কোনো ছহীহ হাদীছ বা আছার আছে কি?

প্রশ্ন (১৯) : আমার বাবা মৃত্যুর পূর্বে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার কারণে রমাযানের কয়েকটি ছিয়াম পালন করতে পারেননি। এজন্য তিনি খুবই মর্মাহত হোন এবং দুঃখ প্রকাশ করেন। তাই আমি উনার সন্তান হিসেবে ছিয়ামগুলো পালন করবো মর্মে কথা দেই। কিন্তু কয়েকজন বলল যে, ছিয়ামগুলো আমি পালন করলে বাবার পক্ষ থেকে আদায় হবে না বরং ফিদিয়া দিতে হবে। এ বিষয়ে সঠিক সমাধান দানে বাধিত করবেন।

প্রশ্ন (২০) : ইয়াওমুশ-শাকবাসন্দেহের দিন বলতে কোন দিনকে বোঝানো হয়। এইদিনেকিগতবছরেরক্বাযাছিয়ামপালনকরাযাবে?

প্রশ্ন (২১) : শুনেছি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত যে, অন্যান্য মাসের তুলনায় রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা‘বান মাসে বেশি ছিয়াম পালন করতেন। তাহলে কি পুরোশা‘বানমাস ছিয়াম পালন করা যাবে?

প্রশ্ন (২৩) : আছরের ফরয ছালাতের পরে নফল ইবাদত করা যায় না। প্রশ্ন হলো-আছর ছালাতের পর জানাযা দেওয়া যাবে কি-না? আমাদের এলাকায় বেশির ভাগ জানাযা আছরের পর হয়।হাদীছসহ উত্তর প্রত্যাশা করি।

Magazine