কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্ব

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللَّهَ وَضَعَ عَنْ أُمَّتِى الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ.

অনুবাদ : ইবনু আব্বাস রযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চই আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের ভুল করা, ভুলে যাওয়া ও জবরদস্তিমূলক কাজের শাস্তি ক্ষমা করে দিয়েছেন’।[1]

ব্যাখ্যা : মুসলিম উম্মাহর বিশেষ শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট এবং পরিষ্কার। এই পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলা বহু জাতি-গোষ্ঠী সৃষ্টি করেছেন। আদম থেকে মুহাম্মাদ পর্যন্ত অনেক নবী-রাসূলের আগমন ঘটেছে। তিনি প্রত্যেক জাতি ও গোত্রকে অবস্থান ও মর্যাদাগত ভিন্নতা দান করেছেন আর শেষ নবীর উম্মতের বিশেষ মর্যাদার কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদীর প্রশংসায় বলেন,وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا ‘এভাবেই আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মত বানিয়েছি যাতে করে তোমরা মানবমণ্ডলীর জন্য সাক্ষ্যদাতা হতে পারো এবং যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যদাতা হতে পারেন’ (আল-বাক্বারা, ২/১৪৩)

বর্ণিত প্রমাণের আলোকে মুসলিম উম্মাহ সমগ্র পৃথিবীতে কর্তৃত্বের আসনে থাকার কথা। ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, অর্থনৈতিক ক্ষমতার উৎস তাদের হাতে থাকার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এর কারণ আল্লাহ তাআলা বলেছেন,لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ ‘নিশ্চয়ই আমি মানুষকে উত্তম আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছি অতঃপর তাকে আমি সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়ে দিয়েছি’ (আত-তীন, ৯৫/৪-৫)। অর্থাৎ মানুষকে সুন্দর আকৃতি, গঠন ও অবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। অতঃপর তাকে সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলার মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দানের অর্থ এটা নয় যে, মানুষ জন্মগতভাবে আদর্শবান হয়ে জন্ম নিবে। প্রকৃত আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য তাকে সাধনা করতে হবে ও চেষ্টা করতে হবে। পাপ থেকে বিরত থাকার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا ‘যে নিজেকে পবিত্র করেছে, সেই সফলকাম’ (আশ-শামস, ৯১/৯)

পূর্ববর্তী উম্মতকে তাদের ভুলের জন্য জবাবদিহি করতে হতো, তাদেরকে প্রত্যেক কাজের জন্য হিসাব দিতে হতো, অজ্ঞতা অথবা ভুলবশত কোনো অন্যায় সংঘটিত হলে তাদের জন্য সুপারিশের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাদের সংঘটিত ভুলগুলো বিনা হিসাবে ছেড়ে দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু ভুলবশত কোনো পাপ সংঘটিত হলে বা ভুলে কোনো অন্যায় করে ফেললে বা জোরপূর্বক কোনো কাজ করতে বাধ্য হলে, এই উম্মতের জন্য ক্ষমা করে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কারণ, এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে এ উম্মতের প্রতি বিশেষ রহমত। যেমন মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বলা হয়েছে, ‘হে আল্লাহ! আমরা যদি ভুলবশত কোনো কাজ করি বা ভুলে যাই আপনি আমাদের পাকড়াও করবেন না, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের উপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিবেন না যেমন পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন আর আপনি আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না যা পালনের ক্ষমতা আমাদের নেই’ (আল-বাক্বারা, ২/২৮৬)। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا ‘ভুলবশত কোনো কিছু করলে তোমরা গোনাহগার হবে না, তবে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে করে তবে তার শাস্তি ভোগ করতে হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহশীল, দয়ালু’ (আল-আহযাব, ৩৩/৫)

আলোচ্য হাদীছটি শেষ নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মতের উপর থেকে ভুলত্রুটি ইত্যাদির শাস্তি উঠিয়ে নেওয়ার অন্যতম প্রমাণ। হাদীছটি শরীআতের অনেক বিধিবিধানকে শামিল করে। যেমন ইমাম নববী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, ‘হাদীছটি শরীআতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও মাসআলা-মাসায়েলকে অন্তর্ভুক্ত করে’।[2] এই হাদীছের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো একত্রিত করলে দেখা যায় হাদীছটি শরীআতের অর্ধেক মাসআলা-মাসায়েলকে অন্তর্ভুক্ত করে।

ইমাম নববী রহিমাহুল্লাহ এই ক্ষেত্রে যথার্থই বলেছেন। কেননা আমরা যখন মানুষের কাজকর্ম সম্পর্কে ভাবী তখন সেগুলোর দুইটি অবস্থা দেখতে পাই— ১. আদায়কারীর ইচ্ছা ও স্বাধীনতায় কাজটি সংঘটিত হয়েছে। এমন ইচ্ছাকৃত কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হিসাব নেওয়া হবে, তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। ২. কাজটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ইচ্ছা ও স্বাধীনতায় সংঘটিত হয়নি। এই প্রকার কাজ অনিচ্ছায়, ভুলবশত ও বাধ্যকৃত কাজের মধ্যে পড়ে। আর এগুলো এমন কাজ যার বর্ণনা এই হাদীছে এসেছে।

‘খাত্বা’-এর সংজ্ঞা : এমন কাজ যা করার ইচ্ছা করা হয়, কিন্তু কাজটি ইচ্ছার বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়। এমন অবস্থায় শরীআতের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পাকড়াও করার ক্ষেত্রে অবকাশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাকে জবাবদিহিতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত একটি সূক্ষ্ম দৃষ্টান্ত ছহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে। এটি বিখ্যাত ছাহাবী আমের ইবনু আকওয়া রযিয়াল্লাহু আনহু-এর খায়বার যুদ্ধের ঘটনা। তিনি জনৈক মুশরিকের সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হলেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ পরিচালনা করলেন। কিন্তু তরবারির আঘাত তাঁর নিজের উপর পতিত হলো। ফলে তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। একদল ছাহাবী বিষয়টি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবহিত করে বললেন, নিশ্চয়ই আমের নিজেই নিজেকে হত্যা করেছেন; কাজেই তাঁর সকল আমল বাতিল হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় তাঁর ভাই সালামা ক্রন্দনরত অবস্থায় আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলেন। আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী হয়েছে? তিনি আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, যে তারা (একদল ছাহাবী) বলেছেন, আমের এর সকল আমল বাতিল হয়ে গেছে। আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কে একথা বলেছে? তিনি আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, একদল ছাহাবী এই কথা বলেছেন। আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা মিথ্যা বলেছে। বরং সে দ্বিগুণ নেকী পাবে। ১. একজন মুশরিককে হত্যার ইচ্ছাপোষণ এবং ২. শহীদের মর্যাদা।[3] এই ঘটনায় এই ছাহাবী নিজেকে হত্যা করতে চাননি বরং তিনি মুশরিককে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভুলবশত তাঁর তরবারি নিজের উপর পতিত হলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন ভুলকে ক্ষমাযোগ্য ভুল বলে বর্ণনা করেছেন।

তবে এর অর্থ এটা নয় যে, ভুলকারী ব্যক্তির উপর থেকে ভুলের প্রায়শ্চিত্তের শাস্তি সম্পূর্ণরূপে উঠে যাবে। বিশেষ করে যেগুলো মানুষের অধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট। এই জন্য একজন মুসলিম ভুলবশত হত্যাকারী মুসলিমের নিকট রক্তমূল্য ও ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে। যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এসেছে, ‘কোনো মুমিনের জন্য উচিত নয় যে, কোনো মুমিনকে হত্যা করে; কিন্তু ভুলক্রমে। যে ব্যক্তি ভুলবশত কোনো মুমিনকে হত্যা করবে সে একজন মুমিন ক্রীতদাস আযাদ করবে এবং তার স্বজনদের নিকট রক্তমূল্য সমার্পণ করবে; তবে যদি তারা ক্ষমা করে দেয়। আর যদি নিহত ব্যক্তি তোমাদের শত্রু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় তবে (শুধু) কৃতদাস মুক্ত করবে আর যদি সে তোমাদের চুক্তিবদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়, তবে তার স্বজনদেরকে রক্তমূল্য প্রদান করবে এবং একজন মুমিন ক্রীতদাস আযাদ করবে। অতঃপর যে ব্যক্তি অক্ষম হবে, সে আল্লাহর নিকট তওবাস্বরূপ ধারাবাহিক দুই মাস ছওম পালন করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়’ (আন-নিসা, ৪/৯২)। আর ‘ভুলে যাওয়া’ সম্পর্কে শরীআত স্পষ্ট করে বলেছে, এটি ক্ষমাযোগ্য অপরাধ। এর প্রমাণে আল্লাহ আল্লাহ তাআলা বলেন, رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ‘হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না’ (আল-বাক্বারা, ২/২৮৬)

এছাড়াও অন্যান্য বিধান এর সাথে যুক্ত হবে। যেমন— কেউ ছালাত আদায় করতে ভুলে গেলে যখনই তার মনে পড়বে তখনই সে ক্বাযা আদায় করে নিবে। আর যদি কোনো ব্যক্তি ওযূ করতে ভুলে যায় অতঃপর ছালাত আদায় করে নেয়, তবে তাকে ওযূ করে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে।

এর তৃতীয় অবস্থা হচ্ছে কাউকে হারাম কাজ করতে বাধ্য করা। যেমন— মানুষকে এমন কাজ করতে বাধ্য করা যা সে করতে চায় না; এক্ষেত্রে উক্ত কর্মের প্রতিফল তার উপর বর্তাবে না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ ‘যে ব্যক্তি ঈমান আনার পরে আল্লাহকে অস্বীকার করবে (সে শাস্তি ভোগ করবে)। তবে ঐ ব্যক্তি নয়, যার উপর জবরদস্তি করা হয় অথচ তার অন্তর দৃঢ় বিশ্বাসে অটল থাকে’ (আন-নাহল, ১৬/১০৬)। এর উদাহরণ হলো আম্মার ইবনু ইয়াসির রযিয়াল্লাহু আনহু-এর ঘটনা। যখন মুশরিকরা তাঁকে আল্লাহকে অস্বীকার করতে বাধ্য করেছিল। এর কারণে তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। এমন অবস্থার সম্মুখীন হয়ে যদি কেউ ইসলামবিরোধী কাজ করতে বাধ্য হয়; তবে এই আয়াতের আলোকে তার অপরাধ ক্ষমাযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে বিদ্বানগণ কিছু বিধিবিধানকে এই ক্ষমার আওতার বাইরে রেখেছেন। যেমন— কাউকে যদি নিষ্পাপ শিশু হত্যা করতে অথবা ব্যভিচার করতে বাধ্য করা হয় তবে তার উচিত হবে তা পালন করা থেকে বিরত থাকা এবং জীবনের ঝুঁকি তথা মৃত্যুকে প্রাধান্য দেওয়া।

মোটকথা হলো, ইসলাম একটি উদার, সহজ, কল্যাণকর ও সার্বজনীন জীবনবিধান। ইসলামে অনেক বিধিবিধানকে হালকা ও সহজ করে দেওয়া হয়েছে যা অন্যান্য উম্মতের জন্য কঠিন ও কষ্টসাধ্য ছিল। আলোচ্য হাদীছে বর্ণিত সুযোগ-সুবিধা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। কেননা এই উম্মত মর্যাদার বিচারে অন্যান্য উম্মতের চাইতে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই মহান নেয়ামত দিয়ে ধন্য করেছেন। তাইতো সকল প্রশংসা একমাত্র তাঁর জন্য। আল্লাহ আমাদের তাঁর শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন! ছুম্মা আমীন!!

মুহাম্মদ মুস্তফা কামাল

প্রভাষক (আরবি), বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, বরিশাল।


[1]. ইবনু মাজাহ, হা/২০৪৩, হাদীছ হাসান; বায়হাক্বী কুবরা, হা/১৫৯০।

[2]. শারহু মাতনিল আরবাঈনান নাবাবিয়্যা লিন নাবাবী, পৃ. ১২৯।

[3]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১৪৮; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮০২।

সাওয়াল জওয়াব

প্রশ্ন (৪৭) : মূসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহ তাআলাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! জান্নাতে আমার সাথে কে থাকবে? জবাবে আল্লাহ বললেন, একজন কসাই! কসাইয়ের নাম শুনে তিনি খুবই আশ্চর্য হলেন। অনেক খোঁজ করার পর বাজারে গিয়ে দেখলেন, কসাই গোশত বিক্রিতে ব্যস্ত! সবশেষে কসাই এক টুকরো গোশত একটি কাপড়ে মুড়িয়ে নিলেন।অতঃপর বাড়ির দিকে রওয়ানা হলেন। মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর সম্পর্কে আরো জানার জন্য পিছুপিছু তাঁর বাড়ি গেলেন। কসাই বাড়ি পৌঁছে গোশত রান্না করলেন। অতঃপর রুটি বানিয়ে তা গোশতের ঝোলে মেখে নরম করলেন। তারপর ঘরের ভিতরের কামরায় প্রবেশ করে শয়নরত এক বৃদ্ধাকে উঠিয়ে বসালেন। তারপর তার মুখে টুকরো টুকরো রুটি পুরে দিতে লাগলেন। খাওয়ার পর বৃদ্ধা কি যেন কানেকানে বললেন। অমনি কসাই মুচকি হাসলেন। দূর থেকে মূসা আলাইহিস সালাম সবই দেখছিলেন। কিন্তু, কিছুই বুঝলেন না। মূসা আলাইহিস সালাম বৃদ্ধার পরিচয় এবং মুচকি হাসার বিষয়টি কসাইকে জিজ্ঞেস করলেন। কসাই বললেন, উনি আমার মা, আমি বাজার থেকে আসার পর সর্বপ্রথম আমার মাকে রান্না করে খাওয়াই। আরমা খাওয়ার পর খুশি হয়ে আমার কানের কাছে এসে আল্লাহ তাআলার কাছে এই বলে দু‘আ করেন, আল্লাহ তাআলা তোমাকে জান্নাত দান করুক এবং মূসা আলাইহিস সালাম-এর সাথে রাখুক’ আমি এই দু‘আ শুনে এই ভেবে মুচকি হাসি যে, কোথায় মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর নবী, আর কোথায় আমি একজন কসাই!! তখন মূসা আলাইহিস সালাম ভাবলেন একারণেই তুমি আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। উক্ত ঘটনা কি সত্য?

প্রশ্ন (৪৯) : দরিদ্র মুহাজিরগণ ধনীদের পাঁচশ বছর আগে জান্নাতে যাবে মর্মে বক্তব্য কি সঠিক?

প্রশ্ন (১৩) : একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় আমাকে অংশগ্রহণ করতে হয়। পরীক্ষার সময়সূচি এমনভাবে নির্ধারণ করা হয় যে, দেড়টা থেকে সন্ধ্যা পাঁচটা পর্যন্ত পরীক্ষা চলে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আছরের ওয়াক্ত প্রায় ১৫-২০ মিনিটের মতো অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু বাসায় ফিরতে ফিরতেই মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে যায়। একারণে যোহর ও আছরের ছালাত জামাআতের সাথে আদায় করা সম্ভব হয় না।এক্ষেত্রে ওয়াক্ত আসার পূর্বেই আমি যোহর এবং আছরের ছালাত একত্রে অগ্রিম জমা করে পড়তে পারব কি?

প্রশ্ন (১৪) : আমাদের মসজিদে ইমাম আরবী দিয়ে খুৎবা দেয়, আমি তো আরবী বুঝি না এইজন্য খুৎবার সময় আমি মনে মনে তাসবীহ, তাহলীল, যিকির, দু‘আ পড়তে পারব কি? নাকি আরবী খুৎবাটাই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে?

প্রশ্ন (১৫) : আমাদের মেস থেকে মসজিদ ৫ মিনিটের পথ। দৈনিক ৫ বার মসজিদে ছালাত আদায় করতে যাওয়া একটু কষ্টকর। তাই আমরা মেসেই জামাআতে ছালাত আদায় করি। আমাদের ছালাত আদায় হবে কি?

প্রশ্ন (১৬) : আমি যোহরের ১ রাকাআত ছালাত পাইনি। এখন কথা হচ্ছে- ইমাম সালাম ফিরানোর আগে আমি কি শুধু তাশাহহুদ পড়বনা দরূদসহ সকল দু‘আ পড়ব?

প্রশ্ন (১৭) : আমরা জানি যে, জুমআর দিন যে ব্যক্তি মসজিদে প্রথমে প্রবেশ করে তাকে উট কুরবানীর ছওয়াব দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো সময়টা কখন থেকে শুরু হয়? জুমআর আযানের পর থেকে? নাকি জুমআর ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে?

প্রশ্ন (১৮) : যে ইমামের সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত শুদ্ধ নয়, তার পিছনে কি ছালাত শুদ্ধ হবে? যদি না হয় তাহলে কি মুক্তাদীদেরকে পুনরায় আবার ছালাত আদায় করতে হবে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু : উন্নতির আরো এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্ব

হারামাইন শারীফাইনের দেশে হালাল উপার্জন এবং নিরাপত্তার প্রাচুর্য

প্রশ্ন (৪৬): কোনো কোনো সরকারি চাকরিজীবী সরকারি মাল (তেল, ওষুধ, খনিজপদার্থ ইত্যাদি) লুকিয়ে বিক্রি করে। সরকারি মাল চুরি করে বিক্রি করা কি বৈধ? সেই মাল কিনে নেওয়া কি বৈধ?

প্রশ্ন (৪৭) : মূসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহ তাআলাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! জান্নাতে আমার সাথে কে থাকবে? জবাবে আল্লাহ বললেন, একজন কসাই! কসাইয়ের নাম শুনে তিনি খুবই আশ্চর্য হলেন। অনেক খোঁজ করার পর বাজারে গিয়ে দেখলেন, কসাই গোশত বিক্রিতে ব্যস্ত! সবশেষে কসাই এক টুকরো গোশত একটি কাপড়ে মুড়িয়ে নিলেন।অতঃপর বাড়ির দিকে রওয়ানা হলেন। মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর সম্পর্কে আরো জানার জন্য পিছুপিছু তাঁর বাড়ি গেলেন। কসাই বাড়ি পৌঁছে গোশত রান্না করলেন। অতঃপর রুটি বানিয়ে তা গোশতের ঝোলে মেখে নরম করলেন। তারপর ঘরের ভিতরের কামরায় প্রবেশ করে শয়নরত এক বৃদ্ধাকে উঠিয়ে বসালেন। তারপর তার মুখে টুকরো টুকরো রুটি পুরে দিতে লাগলেন। খাওয়ার পর বৃদ্ধা কি যেন কানেকানে বললেন। অমনি কসাই মুচকি হাসলেন। দূর থেকে মূসা আলাইহিস সালাম সবই দেখছিলেন। কিন্তু, কিছুই বুঝলেন না। মূসা আলাইহিস সালাম বৃদ্ধার পরিচয় এবং মুচকি হাসার বিষয়টি কসাইকে জিজ্ঞেস করলেন। কসাই বললেন, উনি আমার মা, আমি বাজার থেকে আসার পর সর্বপ্রথম আমার মাকে রান্না করে খাওয়াই। আরমা খাওয়ার পর খুশি হয়ে আমার কানের কাছে এসে আল্লাহ তাআলার কাছে এই বলে দু‘আ করেন, আল্লাহ তাআলা তোমাকে জান্নাত দান করুক এবং মূসা আলাইহিস সালাম-এর সাথে রাখুক’ আমি এই দু‘আ শুনে এই ভেবে মুচকি হাসি যে, কোথায় মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর নবী, আর কোথায় আমি একজন কসাই!! তখন মূসা আলাইহিস সালাম ভাবলেন একারণেই তুমি আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। উক্ত ঘটনা কি সত্য?

প্রশ্ন (৫০) : সূরা ইউসুফ এর ১০৮ নং আয়াতের কোনো ফযীলত আছে কি?

প্রশ্ন (২২) : স্ত্রীর খালাকে বিবাহ করাতে কি শরীআতে বাধা আছে?

প্রশ্ন (২৩) : আমি অনেক বড় ভুল করেছি। ৫ বছর ধরে একটি মেয়ের সাথে আমার অবৈধ সম্পর্ক। আমি শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফের বক্তব্য শুনে তওবা করে নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করছি এবং মেয়েটির সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। কিন্তু বর্তমানে মেয়েটি আমাকে বিয়ের জন্য প্রচুর পরিমাণে চাপ দিচ্ছে। অপর দিকে আমার অভিভাবকগণ ঐ মেয়ের সাথে কোনভাবেই বিয়ে দিতে রাজি নয়। কিন্তু মেয়েটি একটি বক্তব্যের কিছু অংশ আমার কাছে পাঠিয়েছে। যেখানে বলা আছে- যার সাথে যেনা হয়েছে সে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ছেলে-মেয়ে যেনায় লিপ্ত হওয়ার পর যদি দুইজনের একজন বিবাহ করতে সম্মত না হয় তাহলেও কি পরস্পর বিবাহ করতে বাধ্য?

প্রশ্ন (২৪) : একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারবে এই কথাকি ঠিক? না-কি একই সঙ্গে সর্বোচ্চ চারটির বেশি স্ত্রী রাখতে পারবে না এ কথা ঠিক?

প্রশ্ন (২৫) : স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পরে কতদিন তার খরচ দিতে হবে?

প্রশ্ন (২৬) :আমার বিয়ের ১ মাস পরে আমার সাথে আমার স্ত্রীর মনোমালিন্য হয় এবং সে রাগকরে আমার সাথে থাকবে না জানায়। তারপরে সালিসের মাধ্যমে সে আমাকেখোলা তালাক দেয় এবং সে এখন তার ভুল বুঝতে পেরে আসতে চায় এখন আমিকী করতে পারি?

প্রশ্ন (২৭) : আমার মা মারা যাওয়ার পর আমার বাবা আমার বোনেরশ্বাশুড়িকে বিবাহ করেন। বিবাহের সময় তার ছেলে উপস্থিত ছিলেন না কিন্তু পরে সে এই বিবাহেস্বীকৃতি দেয়। তাহলে তার এই বিবাহ ঠিক হয়েছে কি?

প্রশ্ন (২৮) : অমুসলিমদের প্রদত্ত ইফতার গ্রহণ করা যাবে কি?

ঈমান ভঙ্গের কারণ

প্রশ্ন (২) : হাদীছে আছে, এই উম্মতের সত্তর হাজার মানুষ বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে। তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো, যারা ঝাড়ফুঁক এর আশ্রয় গ্রহণ করে না। কিন্তু আমরা জানি, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই ঝাড়ফুঁক করেছেন। তাহলে এই হাদীছের ব্যাখ্যা কী?

প্রশ্ন (৩) : জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করার পরে যেসব তাওহীদপন্থী বান্দাগণ জান্নাতে যাবে তারা কি আল্লাহকে দেখতে পাবে?

প্রশ্ন (৪) : অধিক সন্তান না নেওয়ার জন্য আযল করা অথবা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার করা সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

প্রশ্ন (৬): ‘বন্দে মাতরম’ বলা বৈধ কি?

প্রশ্ন (৭): মুসলিম দেশে মানবরচিত আইন দ্বারা পরিচালিত মুসলিম শাসককে সরিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র কীভাবে ক্বায়েম হবে?

প্রশ্ন (৮) : আমি মাঝে মাঝে অনেক খারাপ চিন্তাভাবনা করি। এমনকি কখনো কখনো শয়তান আমার আক্বীদাতেও সন্দেহ ঢুকাতে চেষ্টা করে। আমার প্রশ্ন হলো, এগুলোরও কি হিসাব নেওয়া হবে?

প্রশ্ন (৯) : জনৈক বক্তা বলেন, ক্বদরের রাতে মানুষের বার্ষিক রিযিক, হায়াত, মউত ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?

প্রশ্ন (২৯) : কেউ যদি এমন পাপ করে যার কারণে ঐ ব্যক্তি সরাসরি হত্যার যোগ্য হয়। এমন ব্যক্তির তওবার সুযোগ আছে কি?

প্রশ্ন (৩১) : শুধু সার্টিফিকেট পাওয়া অথবা চাকরি করার উদ্দেশ্যে দ্বীনের জ্ঞানার্জন করা কতটুকু শরীআতসম্মত?

প্রশ্ন (৩২) : পুরুষের জন্য কোন রং এর পোশাক পরিধান করা হারাম ?

প্রশ্ন (৩৩) : বগলের লোম তুলে ফেলতে হয়।কেটে ফেললে কি গুনাহ হবে?

প্রশ্ন (৩৪) :আমরা দুই ভাই বিদেশ থাকি, দুই ভাই একসাথে বাসায় টাকা পাঠাই।এখন আমার বাবা এবং ভাই মিলে তারা জমি বন্ধক রাখে। আমি শুনেছি বন্ধক রাখা জায়েয নয়, আমি তাদের মানা করেছি কিন্তু তারা শোনে না। এখন আমি কি ঐ গুনাহের অংশীদার হব?

প্রশ্ন (৩৫) : পর্দা করে না, ছালাত আদায় করে না, এমন ব্যক্তির বাড়িতে দাওয়াত গ্রহণ করা যাবে কি?

প্রশ্ন (৩৬) : খেলার সামগ্রীর (ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি) দোকান দিয়ে ইনকাম করা কি হালাল হবে?

প্রশ্ন (৩৭) : কোনো মেয়ে কি তার দাদা, দাদি অথবা নানা, নানির ভাইদের সাথে দেখা করতে পারবে নাকি তাকে তাদের থেকে পর্দা করতে হবে?

প্রশ্ন (৩৮) : বিকাশ, রকেট এবং ফ্লেক্সিলোড এর ব্যবসা করা যাবে কি? কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জানাবেন।

প্রশ্ন (৩৯) : তাবীয ব্যবহার শিরকজানা সত্ত্বেও একজন অসুস্থ মহিলা জিনের আছর থেকে মুক্তির জন্য তাবীয ব্যবহার করেন। এমতাবস্থায় তিনি মারা গেলে পরিণাম কী হবে? উল্লেখ্য যে, তিনি তাবীয ব্যবহারকালীন সময়ে সুস্থ থাকেন কিন্তু যখনই তা খুলে রাখেন তার দু-একদিন পরেই জিনেরা তাকে আছর করে এবং চরমভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

প্রশ্ন (৪০) : সহশিক্ষা আছে এমন কলেজে পর্দা করে মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারবে কি? যেমন- মেডিকেল কলেজ। আবার নারী পুরুষ একসাথে চাকরি করে এমন স্থানে মেয়েরা পর্দা করে চাকরি করতে পারবে কি?

প্রশ্ন (৪১) : আমার বাবা বিভিন্ন ধরনের বক পাখি শিকার করেএবং আমরা সবাই সেই পাখির গোশত খাই। আমি জানি যে, পাখি খাওয়া হালাল। কিন্তু কেউ কেউবলে যে, এখন পাখিদের বাচ্চা আছে সেই পাখির বাচ্চা নাকি অভিশাপ করবে তাই পাখি শিকার করা এবং খাওয়া হারাম হবে। দয়া করে পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বলবেন।

প্রশ্ন (৪২) : গরু/ছাগল দ্বারা শস্যের ক্ষতি করলে জরিমানা নেওয়া যাবে কি?

প্রশ্ন (৪৩) : শীতের দিনে আমরা শরীরে লোশন ব্যবহার করে থাকি। অনেকেই বলে থাকেন লোশনে শুকরের তেল ব্যবহার করা হয়। অযূ করে লোশন দেয়া অবস্থায় ছালাত হবে না। এমনকি শরীরে লোশন দিলে শরীর নাপাকি অবস্থায় থাকে। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।

Magazine