কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ঈমান ভঙ্গের কারণ

ঈমান হচ্ছে আল্লাহর উপর বিশ্বাস। এই বিশ্বাস বিভিন্ন কারণে বিভিন্নভাবে নষ্ট হয়ে যায়। আর ঈমান নষ্ট হওয়া মানেই ঈমান ভঙ্গ হওয়া। আজ আমরা কী কী কারণে ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তা জানার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। 

প্রাককথা :

ঈমান ভঙ্গের কারণ জানতে হলে আগে পরিপূর্ণ ঈমান কী, সেটা জানতে হবে। আর পরিপূর্ণ ঈমান কী জানার আগে ইসলাম কী সেটা জানা উচিত। ইসলাম হচ্ছে আল্লাহর পরিপূর্ণ বিধানে আনুগত্য করা। এই পরিপূর্ণ বিধানকে মুখে স্বীকৃতি, অন্তরে বিশ্বাস এবং কাজে পূর্ণ করাই হচ্ছে ঈমান। যার সহজ অর্থ হলো ইসলামের বিধানকে মুখে স্বীকার করা, অন্তরে বিশ্বাস করা এবং সেইমতে কাজ (আমল) করাই হচ্ছে ঈমান। যে এই কাজ অর্থাৎ ঈমান এনে ইসলামের প্রতি আনুগত্যশীল হয় তাকে বলা হয় মুসলিম।

সুতরাং ঈমানের অর্থ হলো আল্লাহ এবং আল্লাহ সম্পর্কিত সকল বিষয়ের উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস। এই বিশ্বাস মূলত তিনভাবে তথা বিশ্বাসগত, কর্মগত এবং উক্তিগতভাবে ভঙ্গ হয়ে থাকে। এখন আমরা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে প্রধানত কী কী কারণে ঈমান ভঙ্গ হয়ে যায় তা জানার চেষ্টা করব। 

(১) শিরক করা :

আল্লাহর সাথে শিরক করার কারণে যেকোনো ঈমানদার তার ঈমান হারিয়ে ফেলে। শিরক অর্থ হলো আল্লাহর সাথে অন্যান্য ইলাহ বা উপাস্য সাব্যস্ত করা। অর্থাৎ আল্লাহর সমকক্ষ অন্য কাউকে মনে করা, স্বীকার করা বা কাজে প্রমাণিত করা। বিভিন্নভাবে শিরক হয়ে থাকে। যেমন—

(ক) ইবাদতের শিরক : আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করে তার ইবাদত করা হচ্ছে ইবাদতের শিরক। অর্থাৎ আল্লাহর জন্য যেমন সিজদা, ছিয়াম, কুরবানী, তাওয়াফ ইত্যাদি করা হয়, ঠিক তেমনি অন্য কোনো উপাস্যকে যেমন : দেব-দেবী, আল্লাহর কোনো বান্দার (পীরের) জন্য বা অন্য কারও (ওলী, আউলিয়ার) উদ্দেশ্যে একইভাবে জীবিত বা কবরের ব্যক্তির জন্য সিজদা, ছিয়াম, মান্নত, কুরবানী, তাওয়াফ ইত্যাদি করা হচ্ছে সুস্পষ্ট শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর সাথে অন্য কোনো উপাস্য স্থির করো না। তাহলে নিন্দিত ও (আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে) বিতাড়িত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে’ (বানী ইসরাঈল, ১৭/৩৯)। অন্য আয়াতে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বলেন, ‘(হে নবী!) আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকবেন না। তাহলে আপনি শাস্তিতে নিপতিত হবেন’ (আশ-শুআরা, ২৬/২১৩)

আল্লাহ স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, আল্লাহর সাথে শরীক করা যাবে না। শুধু তাই নয়; আল্লাহ সরাসরি তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কেও নির্দেশ দিয়েছেন শরীক না করার জন্য। অথচ সকল নবী-রাসূলগণ হচ্ছেন নিষ্পাপ। আল্লাহ এটা এই জন্যই বললেন, যাতে মানুষ শিরকের ভয়াবহতা অনুধাবন করতে পারে। অথচ অনেকে শিরক সম্পর্কে না জানার কারণে বিভিন্ন পীর-ওলী-আউলিয়ার দরবারে গিয়ে সিজদা, মান্নত, তাওয়াফ, কুরবানী ইত্যাদি করছে- যদিও এইসব ইবাদত শুধু আল্লাহর জন্য।

(খ) আল্লাহর ছিফাতের সাথে শিরক : আল্লাহর গুণাবলিতে অন্য কাউকে গুণান্বিত করা। অর্থাৎ আল্লাহর যা করার ক্ষমতা আছে তা তাঁর অন্য কোনো বান্দা বা অন্য কেউ করতে পারে এমন বিশ্বাস রাখা হচ্ছে আল্লাহর ছিফাতের সাথে শিরক।

আল্লাহর ক্ষমতা হচ্ছে কাউকে জীবন দেওয়া, নেওয়া, সুখ, দুঃখ, সন্তান দেওয়া, বিপদে উদ্ধার করা ইত্যাদি। এখন কেউ যদি আল্লাহর কোনো বান্দার বা অন্য কারও এমন ক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করে, তাহলে তা হবে শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে নবী!) বলুন, তবে কি তোমরা আল্লাহ ব্যতীত এমন অভিভাবক স্থির করেছ, যারা ভালো ও মন্দের মালিকও নয়’ (আর-রা‘দ, ১৩/১৬)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা দান করেন পুত্র-কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা তাকে বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান’ (আশ-শূরা, ৪২/৪৯-৫০)। আল্লাহ আরও বলেন, ‘আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোনো দুর্দশা (দুঃখ-কষ্ট) দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা দূরকারী কেউ নেই। আর যদি কোনো কল্যাণ (সুখস্বাচ্ছন্দ্য) দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনিই তো সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান’ (আল-আনআম,৬/১৭)

উপরিউক্ত আয়াতগুলো দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, সবকিছুর উপরই আল্লাহর ক্ষমতা। তিনিই একক এবং একমাত্র ক্ষমতাবান। তিনিই মানুষকে দুঃখ, দুর্দশা, সুখ, শান্তি, সন্তান ইত্যাদি প্রদান করেন। তিনি তাঁর ক্ষমতা কাউকে প্রদান করেননি যে, অন্য কেউ তা দিতে পারবেন। সুতরাং কোনো বান্দা আল্লাহর জন্য খাছ, এমন কোনো কিছু তিনি ছাড়া আর কারো নিকট চাইলে তার ঈমান চলে যাবে।

(গ) আল্লাহর রাজত্বের সাথে শিরক : আল্লাহ মানুষ সৃষ্টির সাথে তাদের জীবনযাপন করার জন্য বিভিন্ন বিধিবিধানও তৈরি করে দিয়েছেন। ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন-বিধান। যে বিধান বা সংবিধান দিয়ে মুসলিমগণ তাদের সকল সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় কাজকর্ম পরিচালনা করবে।

এখন যদি কেউ আল্লাহর বিধানের পরিবর্তে নতুন কোনো দুনিয়াবী বিধান (বাধ্যতামূলক না হলে আপসে) মেনে নেয় বা প্রতিষ্ঠা করে বা করার জন্য সাহায্য করে, তাহলে তা হবে আল্লাহর রাজত্বের সাথে শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জেনে রেখো! সৃষ্টি যেহেতু তাঁর (আল্লাহর) সুতরাং সমগ্র সৃষ্টির উপর ক্ষমতাও একমাত্র (আল্লাহর) তাঁর’ (আল-আ‘রাফ, ৭/৫৪)। অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ ব্যতীত বিচার-ফয়সালা ও শাসন করার ক্ষমতা কারও নেই’ (আল-আনআম, ৬/৫৭)। 

উপরিউক্ত আয়াতে আল্লাহ সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য এই ঘোষণা দিচ্ছেন যে, সবকিছুর মালিক হচ্ছেন আল্লাহ। আর তাঁর সৃষ্টির উপর তাঁর বিধিবিধানেরই ক্ষমতা চলবে। দুনিয়ার কারও কোনো বিধান বা সংবিধান এখানে প্রযোজ্য নয়। যদি আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কিছু তালাশ করে, তবে তা হবে শিরক। 

(২) কারো মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চাওয়া :

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দেন যে, তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি তাঁর বান্দাদের শোনেন এবং দেখেন। তাঁর বান্দাদের যেকোনো প্রয়োজনে তিনি সাড়া দেন। তারপরও কেউ যদি আল্লাহর কাছে কিছু চাইতে বা বিপদে উদ্ধার হতে আল্লাহর কোনো বান্দাকে মাধ্যম ধরে বা অছীলা মনে করে, তবে তা হবে শিরক। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক তবে আল্লাহর উপর ভরসা করো’ (আল-মায়েদা, ৫/২৩)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘বলুন, (হে নবী!) আমার পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা যেন তাঁরই উপর নির্ভর করে’ (আয-যুমার, ৩৯/৩৮)

অর্থাৎ যারা ঈমানদার তারা সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করবে। যারা সরাসরি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে আল্লাহর কাছে মাধ্যম বানাবে তারা গোমরাহীতে লিপ্ত হয়ে ঈমানহারা হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা আল্লাহকে ব্যতীত যার ইবাদত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না; উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, ‘এইগুলো আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী’। বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিবে যা তিনি জানেন না? তিনি মহান, পবিত্র’ এবং তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি ঊর্ধ্বে’ (ইউনুস, ১০/১৮)। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘জেনে রেখো, আল্লাহর জন্যই বিশুদ্ধ ইবাদত-আনুগত্য। আর যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা কেবল এজন্যই তাদের ইবাদত করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেবে’। যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে নিশ্চয় আল্লাহ সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন। যে মিথ্যাবাদী কাফের, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে হেদায়াত দেন না’ (আয-যুমার, ৩৯/৩)। 

উপরিউক্ত আয়াত দ্বারা এটা সুস্পষ্ট প্রমাণিত যে, যারা আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়া বা পাওয়ার জন্য অন্য কাউকে মিডিয়া বা মাধ্যম বানাবে বা প্রয়োজন মনে করবে, তাহলে তা হবে আল্লাহর সাথে শিরক। অর্থাৎ যিনি আল্লাহর কাছে সুপারিশকারী হিসাবে কাউকে মাধ্যম মানবেন তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ আল্লাহর কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশায় তথাকথিত পীর-ওলী-আউলিয়া ইত্যাদির দরবারে গিয়ে তাদের নাম করে সিজদা, মান্নত, কুরবানী করা হচ্ছে শিরক। যা ঈমানদারের ঈমান নষ্ট করে শিরকে লিপ্ত করে। 

(৩) মুশরিক-কাফেরদের কাফের মনে না করা :

কেউ যদি স্বীকৃত মুশরিক-কাফেরদের কাফের মনে না করে, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে, তাদের খারাপ মনে না করে, তাহলে ঐ ব্যক্তির ঈমান চলে যাবে। আল্লাহ সুস্পষ্ট বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুশরিকরা অপবিত্র’ (আত-তওবা, ৯/২৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আহলে কিতাবদের (ইয়াহূদী, খ্রিষ্টানদের) মধ্যে যারা কুফরী করেছে এবং শিরক করে, তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং এরাই সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট সৃষ্টি’ (আল-বাইয়িনাহ,৯৮/৬)

অতএব আল্লাহর ঘোষণা চূড়ান্ত যে, ইয়াহূদী, নাছারা, মুশরিক (যারা আল্লাহর সাথে শিরক করে) তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী। তাদের ব্যাপারে কাফের নয় (তারাও আল্লাহর বান্দা তারাও ভালো কাজে নাজাত পাবে) এমন সন্দেহ করা যাবে না। কেউ এমন করলে তার ঈমান থাকবে না।

(৪) ইসলামের বিধানকে অচল মনে করা :

আল্লাহর দেওয়া বিধিবিধানকে প্রাগৈতিহাসিক পুরোনো অচল ইত্যাদি মনে করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা। অর্থাৎ আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেওয়া বিধিবিধান না মেনে অন্য কোনো দুনিয়াবী বিধিবিধান বা সংবিধান মেনে চলা এবং ঐটাকেই যথার্থ মনে করা।

যারা আপসে কোন বাধ্যবাধকতা ছাড়াই ইসলামী বিধিবিধান মানবে না এবং দুনিয়াবী বিধিবিধান প্রতিষ্ঠা করবে এবং মানবে তাদের ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো কাজের আদেশ করলে কোনো ঈমানদার নারী-পুরুষের সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার নেই। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে, সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হবে’ (আল-আহযাব, ৩৩/৩৬)। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘যে কেউ রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার কাছে সরল পথ (ইসলাম) প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলিমের অনুসৃত পথের (রাসূলের সুন্নাহর) বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থল’ (আন-নিসা, ৪/১১৫)

উপরিউক্ত আয়াত দ্বারা এটা সুস্পষ্ট যে, আল্লাহর কাছে ইসলাম ব্যতীত কোনো কিছুই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই কেউ যদি ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছু মানে, ভালো লাগে বা মানানোর জন্য অন্যকে উৎসাহিত বা চাপ দেয়, তাহলে তার ঈমান বাতিল হয়ে যাবে।

(আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

 পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।

সাওয়াল জওয়াব

প্রশ্ন (৪৭) : মূসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহ তাআলাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! জান্নাতে আমার সাথে কে থাকবে? জবাবে আল্লাহ বললেন, একজন কসাই! কসাইয়ের নাম শুনে তিনি খুবই আশ্চর্য হলেন। অনেক খোঁজ করার পর বাজারে গিয়ে দেখলেন, কসাই গোশত বিক্রিতে ব্যস্ত! সবশেষে কসাই এক টুকরো গোশত একটি কাপড়ে মুড়িয়ে নিলেন।অতঃপর বাড়ির দিকে রওয়ানা হলেন। মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর সম্পর্কে আরো জানার জন্য পিছুপিছু তাঁর বাড়ি গেলেন। কসাই বাড়ি পৌঁছে গোশত রান্না করলেন। অতঃপর রুটি বানিয়ে তা গোশতের ঝোলে মেখে নরম করলেন। তারপর ঘরের ভিতরের কামরায় প্রবেশ করে শয়নরত এক বৃদ্ধাকে উঠিয়ে বসালেন। তারপর তার মুখে টুকরো টুকরো রুটি পুরে দিতে লাগলেন। খাওয়ার পর বৃদ্ধা কি যেন কানেকানে বললেন। অমনি কসাই মুচকি হাসলেন। দূর থেকে মূসা আলাইহিস সালাম সবই দেখছিলেন। কিন্তু, কিছুই বুঝলেন না। মূসা আলাইহিস সালাম বৃদ্ধার পরিচয় এবং মুচকি হাসার বিষয়টি কসাইকে জিজ্ঞেস করলেন। কসাই বললেন, উনি আমার মা, আমি বাজার থেকে আসার পর সর্বপ্রথম আমার মাকে রান্না করে খাওয়াই। আরমা খাওয়ার পর খুশি হয়ে আমার কানের কাছে এসে আল্লাহ তাআলার কাছে এই বলে দু‘আ করেন, আল্লাহ তাআলা তোমাকে জান্নাত দান করুক এবং মূসা আলাইহিস সালাম-এর সাথে রাখুক’ আমি এই দু‘আ শুনে এই ভেবে মুচকি হাসি যে, কোথায় মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর নবী, আর কোথায় আমি একজন কসাই!! তখন মূসা আলাইহিস সালাম ভাবলেন একারণেই তুমি আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। উক্ত ঘটনা কি সত্য?

প্রশ্ন (৪৯) : দরিদ্র মুহাজিরগণ ধনীদের পাঁচশ বছর আগে জান্নাতে যাবে মর্মে বক্তব্য কি সঠিক?

প্রশ্ন (১৩) : একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় আমাকে অংশগ্রহণ করতে হয়। পরীক্ষার সময়সূচি এমনভাবে নির্ধারণ করা হয় যে, দেড়টা থেকে সন্ধ্যা পাঁচটা পর্যন্ত পরীক্ষা চলে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আছরের ওয়াক্ত প্রায় ১৫-২০ মিনিটের মতো অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু বাসায় ফিরতে ফিরতেই মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে যায়। একারণে যোহর ও আছরের ছালাত জামাআতের সাথে আদায় করা সম্ভব হয় না।এক্ষেত্রে ওয়াক্ত আসার পূর্বেই আমি যোহর এবং আছরের ছালাত একত্রে অগ্রিম জমা করে পড়তে পারব কি?

প্রশ্ন (১৪) : আমাদের মসজিদে ইমাম আরবী দিয়ে খুৎবা দেয়, আমি তো আরবী বুঝি না এইজন্য খুৎবার সময় আমি মনে মনে তাসবীহ, তাহলীল, যিকির, দু‘আ পড়তে পারব কি? নাকি আরবী খুৎবাটাই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে?

প্রশ্ন (১৫) : আমাদের মেস থেকে মসজিদ ৫ মিনিটের পথ। দৈনিক ৫ বার মসজিদে ছালাত আদায় করতে যাওয়া একটু কষ্টকর। তাই আমরা মেসেই জামাআতে ছালাত আদায় করি। আমাদের ছালাত আদায় হবে কি?

প্রশ্ন (১৬) : আমি যোহরের ১ রাকাআত ছালাত পাইনি। এখন কথা হচ্ছে- ইমাম সালাম ফিরানোর আগে আমি কি শুধু তাশাহহুদ পড়বনা দরূদসহ সকল দু‘আ পড়ব?

প্রশ্ন (১৭) : আমরা জানি যে, জুমআর দিন যে ব্যক্তি মসজিদে প্রথমে প্রবেশ করে তাকে উট কুরবানীর ছওয়াব দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো সময়টা কখন থেকে শুরু হয়? জুমআর আযানের পর থেকে? নাকি জুমআর ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে?

প্রশ্ন (১৮) : যে ইমামের সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত শুদ্ধ নয়, তার পিছনে কি ছালাত শুদ্ধ হবে? যদি না হয় তাহলে কি মুক্তাদীদেরকে পুনরায় আবার ছালাত আদায় করতে হবে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু : উন্নতির আরো এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্ব

হারামাইন শারীফাইনের দেশে হালাল উপার্জন এবং নিরাপত্তার প্রাচুর্য

প্রশ্ন (৪৬): কোনো কোনো সরকারি চাকরিজীবী সরকারি মাল (তেল, ওষুধ, খনিজপদার্থ ইত্যাদি) লুকিয়ে বিক্রি করে। সরকারি মাল চুরি করে বিক্রি করা কি বৈধ? সেই মাল কিনে নেওয়া কি বৈধ?

প্রশ্ন (৪৭) : মূসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহ তাআলাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! জান্নাতে আমার সাথে কে থাকবে? জবাবে আল্লাহ বললেন, একজন কসাই! কসাইয়ের নাম শুনে তিনি খুবই আশ্চর্য হলেন। অনেক খোঁজ করার পর বাজারে গিয়ে দেখলেন, কসাই গোশত বিক্রিতে ব্যস্ত! সবশেষে কসাই এক টুকরো গোশত একটি কাপড়ে মুড়িয়ে নিলেন।অতঃপর বাড়ির দিকে রওয়ানা হলেন। মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর সম্পর্কে আরো জানার জন্য পিছুপিছু তাঁর বাড়ি গেলেন। কসাই বাড়ি পৌঁছে গোশত রান্না করলেন। অতঃপর রুটি বানিয়ে তা গোশতের ঝোলে মেখে নরম করলেন। তারপর ঘরের ভিতরের কামরায় প্রবেশ করে শয়নরত এক বৃদ্ধাকে উঠিয়ে বসালেন। তারপর তার মুখে টুকরো টুকরো রুটি পুরে দিতে লাগলেন। খাওয়ার পর বৃদ্ধা কি যেন কানেকানে বললেন। অমনি কসাই মুচকি হাসলেন। দূর থেকে মূসা আলাইহিস সালাম সবই দেখছিলেন। কিন্তু, কিছুই বুঝলেন না। মূসা আলাইহিস সালাম বৃদ্ধার পরিচয় এবং মুচকি হাসার বিষয়টি কসাইকে জিজ্ঞেস করলেন। কসাই বললেন, উনি আমার মা, আমি বাজার থেকে আসার পর সর্বপ্রথম আমার মাকে রান্না করে খাওয়াই। আরমা খাওয়ার পর খুশি হয়ে আমার কানের কাছে এসে আল্লাহ তাআলার কাছে এই বলে দু‘আ করেন, আল্লাহ তাআলা তোমাকে জান্নাত দান করুক এবং মূসা আলাইহিস সালাম-এর সাথে রাখুক’ আমি এই দু‘আ শুনে এই ভেবে মুচকি হাসি যে, কোথায় মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর নবী, আর কোথায় আমি একজন কসাই!! তখন মূসা আলাইহিস সালাম ভাবলেন একারণেই তুমি আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। উক্ত ঘটনা কি সত্য?

প্রশ্ন (৫০) : সূরা ইউসুফ এর ১০৮ নং আয়াতের কোনো ফযীলত আছে কি?

প্রশ্ন (২২) : স্ত্রীর খালাকে বিবাহ করাতে কি শরীআতে বাধা আছে?

প্রশ্ন (২৩) : আমি অনেক বড় ভুল করেছি। ৫ বছর ধরে একটি মেয়ের সাথে আমার অবৈধ সম্পর্ক। আমি শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফের বক্তব্য শুনে তওবা করে নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করছি এবং মেয়েটির সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। কিন্তু বর্তমানে মেয়েটি আমাকে বিয়ের জন্য প্রচুর পরিমাণে চাপ দিচ্ছে। অপর দিকে আমার অভিভাবকগণ ঐ মেয়ের সাথে কোনভাবেই বিয়ে দিতে রাজি নয়। কিন্তু মেয়েটি একটি বক্তব্যের কিছু অংশ আমার কাছে পাঠিয়েছে। যেখানে বলা আছে- যার সাথে যেনা হয়েছে সে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ছেলে-মেয়ে যেনায় লিপ্ত হওয়ার পর যদি দুইজনের একজন বিবাহ করতে সম্মত না হয় তাহলেও কি পরস্পর বিবাহ করতে বাধ্য?

প্রশ্ন (২৪) : একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারবে এই কথাকি ঠিক? না-কি একই সঙ্গে সর্বোচ্চ চারটির বেশি স্ত্রী রাখতে পারবে না এ কথা ঠিক?

প্রশ্ন (২৫) : স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পরে কতদিন তার খরচ দিতে হবে?

প্রশ্ন (২৬) :আমার বিয়ের ১ মাস পরে আমার সাথে আমার স্ত্রীর মনোমালিন্য হয় এবং সে রাগকরে আমার সাথে থাকবে না জানায়। তারপরে সালিসের মাধ্যমে সে আমাকেখোলা তালাক দেয় এবং সে এখন তার ভুল বুঝতে পেরে আসতে চায় এখন আমিকী করতে পারি?

প্রশ্ন (২৭) : আমার মা মারা যাওয়ার পর আমার বাবা আমার বোনেরশ্বাশুড়িকে বিবাহ করেন। বিবাহের সময় তার ছেলে উপস্থিত ছিলেন না কিন্তু পরে সে এই বিবাহেস্বীকৃতি দেয়। তাহলে তার এই বিবাহ ঠিক হয়েছে কি?

প্রশ্ন (২৮) : অমুসলিমদের প্রদত্ত ইফতার গ্রহণ করা যাবে কি?

ঈমান ভঙ্গের কারণ

প্রশ্ন (২) : হাদীছে আছে, এই উম্মতের সত্তর হাজার মানুষ বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে। তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো, যারা ঝাড়ফুঁক এর আশ্রয় গ্রহণ করে না। কিন্তু আমরা জানি, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই ঝাড়ফুঁক করেছেন। তাহলে এই হাদীছের ব্যাখ্যা কী?

প্রশ্ন (৩) : জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করার পরে যেসব তাওহীদপন্থী বান্দাগণ জান্নাতে যাবে তারা কি আল্লাহকে দেখতে পাবে?

প্রশ্ন (৪) : অধিক সন্তান না নেওয়ার জন্য আযল করা অথবা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার করা সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

প্রশ্ন (৬): ‘বন্দে মাতরম’ বলা বৈধ কি?

প্রশ্ন (৭): মুসলিম দেশে মানবরচিত আইন দ্বারা পরিচালিত মুসলিম শাসককে সরিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র কীভাবে ক্বায়েম হবে?

প্রশ্ন (৮) : আমি মাঝে মাঝে অনেক খারাপ চিন্তাভাবনা করি। এমনকি কখনো কখনো শয়তান আমার আক্বীদাতেও সন্দেহ ঢুকাতে চেষ্টা করে। আমার প্রশ্ন হলো, এগুলোরও কি হিসাব নেওয়া হবে?

প্রশ্ন (৯) : জনৈক বক্তা বলেন, ক্বদরের রাতে মানুষের বার্ষিক রিযিক, হায়াত, মউত ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?

প্রশ্ন (২৯) : কেউ যদি এমন পাপ করে যার কারণে ঐ ব্যক্তি সরাসরি হত্যার যোগ্য হয়। এমন ব্যক্তির তওবার সুযোগ আছে কি?

প্রশ্ন (৩১) : শুধু সার্টিফিকেট পাওয়া অথবা চাকরি করার উদ্দেশ্যে দ্বীনের জ্ঞানার্জন করা কতটুকু শরীআতসম্মত?

প্রশ্ন (৩২) : পুরুষের জন্য কোন রং এর পোশাক পরিধান করা হারাম ?

প্রশ্ন (৩৩) : বগলের লোম তুলে ফেলতে হয়।কেটে ফেললে কি গুনাহ হবে?

প্রশ্ন (৩৪) :আমরা দুই ভাই বিদেশ থাকি, দুই ভাই একসাথে বাসায় টাকা পাঠাই।এখন আমার বাবা এবং ভাই মিলে তারা জমি বন্ধক রাখে। আমি শুনেছি বন্ধক রাখা জায়েয নয়, আমি তাদের মানা করেছি কিন্তু তারা শোনে না। এখন আমি কি ঐ গুনাহের অংশীদার হব?

প্রশ্ন (৩৫) : পর্দা করে না, ছালাত আদায় করে না, এমন ব্যক্তির বাড়িতে দাওয়াত গ্রহণ করা যাবে কি?

প্রশ্ন (৩৬) : খেলার সামগ্রীর (ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি) দোকান দিয়ে ইনকাম করা কি হালাল হবে?

প্রশ্ন (৩৭) : কোনো মেয়ে কি তার দাদা, দাদি অথবা নানা, নানির ভাইদের সাথে দেখা করতে পারবে নাকি তাকে তাদের থেকে পর্দা করতে হবে?

প্রশ্ন (৩৮) : বিকাশ, রকেট এবং ফ্লেক্সিলোড এর ব্যবসা করা যাবে কি? কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জানাবেন।

প্রশ্ন (৩৯) : তাবীয ব্যবহার শিরকজানা সত্ত্বেও একজন অসুস্থ মহিলা জিনের আছর থেকে মুক্তির জন্য তাবীয ব্যবহার করেন। এমতাবস্থায় তিনি মারা গেলে পরিণাম কী হবে? উল্লেখ্য যে, তিনি তাবীয ব্যবহারকালীন সময়ে সুস্থ থাকেন কিন্তু যখনই তা খুলে রাখেন তার দু-একদিন পরেই জিনেরা তাকে আছর করে এবং চরমভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

প্রশ্ন (৪০) : সহশিক্ষা আছে এমন কলেজে পর্দা করে মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারবে কি? যেমন- মেডিকেল কলেজ। আবার নারী পুরুষ একসাথে চাকরি করে এমন স্থানে মেয়েরা পর্দা করে চাকরি করতে পারবে কি?

প্রশ্ন (৪১) : আমার বাবা বিভিন্ন ধরনের বক পাখি শিকার করেএবং আমরা সবাই সেই পাখির গোশত খাই। আমি জানি যে, পাখি খাওয়া হালাল। কিন্তু কেউ কেউবলে যে, এখন পাখিদের বাচ্চা আছে সেই পাখির বাচ্চা নাকি অভিশাপ করবে তাই পাখি শিকার করা এবং খাওয়া হারাম হবে। দয়া করে পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বলবেন।

প্রশ্ন (৪২) : গরু/ছাগল দ্বারা শস্যের ক্ষতি করলে জরিমানা নেওয়া যাবে কি?

প্রশ্ন (৪৩) : শীতের দিনে আমরা শরীরে লোশন ব্যবহার করে থাকি। অনেকেই বলে থাকেন লোশনে শুকরের তেল ব্যবহার করা হয়। অযূ করে লোশন দেয়া অবস্থায় ছালাত হবে না। এমনকি শরীরে লোশন দিলে শরীর নাপাকি অবস্থায় থাকে। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।

Magazine