কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

নিজ দেশে নির্বাসিত জীবন

post title will place here

অসংখ্য পয়গম্বরকে হত্যাকারী অভিশপ্ত যাযাবর ইয়াহূদী জাতি। জার্মান হলোকাস্টের পর বেঁচে যাওয়া ইউরোপীয় অর্ধনগ্ন বুভুক্ষু ইয়াহূদীরা নানা দেশ ও বন্দরে বন্দরে ঘুরতে থাকে। কেউ তাদের আশ্রয় দেয়নি। আরবরা দয়াপরবশ হয়ে তাদের থাকার জন্য ঠাঁই দিল। শুরু হলো ফিলিস্তীনে তাদের বসবাস। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জায়নবাদীরা এসে জমা হলো সেখানে। পশ্চিমা বিশ্বের সহায়তায় এবং জাতিসংঘের এক নাটকীয় সিদ্ধান্তে জন্ম হলো ইসরাঈল নামক এক অবৈধ রাষ্ট্রের, যা বর্তমানে মুসলিমদের মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। অবৈধ দখলদারত্ব ও একের পর এক ফিলিস্তীনীদের বসতি উচ্ছেদ তাদের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়। গাযার মসলিমগণ নিজ দেশে দীর্ঘ দেড় যুগপ্রায় নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। জাতিসংঘ তাদের খাঁচার মধ্যে বন্দী রেখে বানরের মতো কলা খাওয়াচ্ছে (সামান্য খাদ্য-পানীয় দিয়ে বাঁচিয়ে রাখছে) আর মজা দেখছে। যখন ইসরাঈলের দোসর পশ্চিমা দেশগুলো আরবরাষ্ট্রগুলোকে কবজায় নিয়ে সুকৌশলে ইসরাঈলকে স্বাধীনরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে নিজ নিজ দেশে দূতাবাস খোলার উৎসবে মত্ত তখন গাযার মুসলিমদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় অনন্যোপায় হয়ে ফিলিস্তীনী মুক্তিযোদ্ধাগণ গত ৭ই অক্টোবর অভিনব কায়দায় ইসরাঈলের অভ্যন্তরে অভিযান পরিচালনা করতে বাধ্য হয় এবং তাদের কতিপয় নাগরিককে যিম্মী করে যাতে তারা তাদের আগ্রাসন বন্ধ করে। কিন্তু ইসরাঈল এই নিরীহ নিরস্ত্র জনগোষ্ঠীর উপর বিশ্বের সর্বাধুনিক সমরাস্ত্রসমৃদ্ধ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী দিয়ে হাজার হাজার টন মুহুর্মুহু বোমা নিক্ষেপ করে ঘর-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল সবকিছুকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং গাজার সমস্ত পরিকাঠামো (বিদ্যুৎ, পানি, সকল ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা) বিনষ্ট করে দিয়েছে। গাযার ভেতর ঢুকে ইসরাঈলী সেনাবাহিনী বর্ধিত হারে যে ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তার কোনো খবর সামনে আসতে পারছে না। গাযাকে ইসরাঈল সমগ্র বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে তাদের হলোকাষ্ট চালিয়ে যাচ্ছে নারী-পুরুষ-শিশুদের উপর। এতে ইসরাঈল নানা ধরনের নিষিদ্ধ বোমা ও বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহার করছে। এই হত্যাযজ্ঞে ঘৃত ঢালতে বিশ্বমানবতার (?) ফেরিওয়ালা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক নৌবহর পাঠাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরো সৈন্য প্রেরণের প্রস্তুতি রেখেছে। আবার তারা মুসলিম মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ত্রাসী তকমা দিচ্ছে আর আগ্রাসনবাদীদের পক্ষে সাফাই গাইছে! যেখানে রাশিয়া, চীন, কানাডাসহ বেশ কিছু ক্ষমতাধর রাষ্ট্র ইসরাঈলী বর্বরতম হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে সেখানে আরববিশ্বের রাজা-বাদশাহ ও সামরিক জেনারেলগণ ইসরাঈল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বশংবদের ভূমিকা পালন করছে। স্বয়ং ইয়াহূদীদের একাংশ ইসরাঈলের অভ্যন্তরে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ইসরাঈলী আগ্রাসন বন্ধের জন্য প্রতিবাদসভা ও র‌্যালি করছে। তবে হামাস মুজাহিদরা প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছে। তাদের সহায়তা দিচ্ছে উত্তরের হিজবুল্লাহর মুজাহিদ ভাইয়েরা। গত কয়েক সপ্তাহে গাযায় প্রায় আট সহস্রাধিক ফিলিস্তীনী এবং জাতিসংঘের নিহত কর্মীর সংখ্যা অর্ধ-শতাধিক। জাতিসংঘের ফিলিস্তীনী শরণার্থীদের সহায়তা বিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ ওয়ার্ক এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজির এক বিবৃতি মতে, ইসরাঈলী বিমানবাহিনীর বিগত কয়েক সপ্তাহের বোমাবর্ষণে গাযায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ১৪ লক্ষ ফিলিস্তীনী ও তাদের মধ্যে প্রায় ৬ লক্ষ ৪০ হাজার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা পরিচালিত ১৫০টি উপত্যকার শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

Magazine