আরও তিন ইসরাঈলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তীনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মুক্তি পাওয়া বন্দিরা হলেন, আলেকজান্ডার ট্রুফানোভ, সাগুই ডেকেল-চেন এবং ইয়ার হর্ন। উভয় পক্ষের যোদ্ধাদের উপস্থিতিতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ইং রোজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে গাযার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে আলেকজান্ডার ট্রুফানোভ, সাগুই ডেকেল-চেন এবং ইয়ার হর্নকে সাদা রঙের গাড়িতে নিয়ে আসে হামাসের সামরিক বিভাগ আল কাসেম ব্রিগেডের একটি দল। সেখানে একটি অস্থায়ী মঞ্চ আগে থেকেই প্রস্তুত করা ছিল, আর সেই মঞ্চকে ঘিরে ছিল শতাধিক ফিলিস্তীনি জনতা। মঞ্চে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেডক্রসের প্রতিনিধিদের কাছে যিম্মীদের হস্তান্তর সম্পর্কিত নথিতে স্বাক্ষর করেন হামাসের এক সিনিয়র সদস্য। তারপর যিম্মীদের সেই মঞ্চে তোলা হয় এবং উপস্থিত ফিলিস্তীনিদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার অনুরোধ জানানো হয়। যিম্মীদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ হওয়ার পর রেডক্রসের গাড়িতে তাদেরকে রাফা ক্রসিং এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। আগে থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিলেন আইডিএফ এবং ইসরাঈলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের কর্মকর্তারা। রেড ক্রসের প্রতিনিধিরা কর্মকর্তাদের হাতে যিম্মীদের সোপর্দ করেন। তারপর আইডিএফের গাড়িতে চেপে ইসরাঈলে প্রবেশ করেন তিন যিম্মী। এ দিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় শনিবার ৩৬৯ ফিলিস্তীনি বন্দিকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাঈল। গাযা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল গত কয়েকদিনে, তা অবশেষে কেটে গেছে। হামাস জানিয়েছে যে, তারা আশা করছে গাযার যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ইসরাঈলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা আগামী সপ্তাহেই শুরু হবে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাঈলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। সে-সময় ইসরাঈলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়। এ ছাড়া আরও দুই শতাধিক মানুষকে যিম্মী হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরেই গাযায় পালটা আক্রমণ চালায় ইসরাঈল। গাযার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরাঈলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ২৩৯ ফিলিস্তীনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ১১ হাজার ৬৭৬ জন। তবে গাযার সরকারি মিডিয়া অফিস মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৬১ হাজার ৭০৯ জন বলে জানিয়েছে।