ইসলামী ব্যাংকিংয়ের তারল্য সংকট নিরসনে বড় পদক্ষেপ: ইসলামী ব্যাংকিং খাতের দীর্ঘদিনের তারল্য সংকট কাটাতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে ইসলামী মুদ্রা বাজার ও ইসলামী মূলধন বাজার। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এ দুটি নতুন আর্থিক উপকরণ চালু হলে শরীআহভিত্তিক ব্যাংকগুলো পরস্পরের মধ্যে সূদবিহীন ভিত্তিতে ধার-লেনদেন করতে পারবে, যা তাদের দ্রুত তারল্য সংকট নিরসনে সহায়তা করবে। বর্তমানে প্রচলিত কল মানি মার্কেট কিংবা প্রচলিত ব্যাংকগুলো থেকে ইসলামী ব্যাংকগুলো ধার নিতে পারে না, কারণ এসব লেনদেন সূদনির্ভর।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কেবল ব্যাংকিং খাতেই নয়, ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থার অন্যান্য শাখাগুলোর (যেমন ইসলামী পুঁজিবাজার, তাকাফুল বা ইসলামী বিমা, ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা) ক্ষেত্রেও নতুন গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বর্তমানে কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক পুঁজিবাজারে সক্রিয় এবং সীমিত পরিসরে ইসলামী বিমা চালু রয়েছে, তথাপি এসব খাতকে আরও সম্প্রসারণের সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা লাভ করছে। বর্তমানে মোট ব্যাংকিং আমানতের ২৪ শতাংশেরও বেশি এবং বিনিয়োগের ২৮ শতাংশেরও বেশি ইসলামী ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণে। তবে চাহিদা অনুযায়ী গ্রামীণ শাখা বিস্তৃত হয়নি। শহরের তুলনায় গ্রামে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের চাহিদা বেশি হলেও, সে অনুযায়ী সম্প্রসারণ হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাই ইসলামী ব্যাংকগুলোকে গ্রামীণ শাখা ও প্রচারণা বাড়াতে এবং কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসাহিত করছে। পাশাপাশি, মহিলা উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্রঋণ গ্রাহক ও সরকারি আর্থিক প্রকল্পে অংশগ্রহণের দিকেও ইসলামী ব্যাংকগুলোকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে চালু হওয়া সুকুক বন্ড ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে ইসলামী অর্থনীতির টেকসই ভিত্তি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।