স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্ল্যানিং, মনিটরিং অ্যান্ড রিসার্চের (পিএমআর) সার্বিক তত্ত্বাবধানে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এক গবেষণা মতে, দেশের প্রায় ৩৯ শতাংশ মানুষ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ সেবন করছে। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত এই গবেষণা পরিচালিত হয়। এতে আটটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও চারটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৩ হাজার ৩৫০টি প্রাথমিক কালচার সংগ্রহ করা হয়েছে। গবেষণা কার্যক্রমের জন্য ক্ষতস্থান, মূত্র, রক্ত, মল, এন্ডোট্র্যাকিয়াল অ্যাসপিরেট পুঁজ এবং অন্যান্য মাধ্যম থেকে পাওয়া এক হাজার ১৪৯টি নমুনা গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, ৮.৬১ শতাংশ নমুনার জীবাণু সব ধরনের ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া ২০ বছরের নিচে রোগীর মধ্যে ওষুধপ্রতিরোধী জীবাণু পাওয়া গেছে ২৯.২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ রোগী ৫১.৪ শতাংশ। এসব রোগীর মধ্যে ৭১.৮ শতাংশের অ্যান্টিবায়োটিক বা জীবাণুপ্রতিরোধী ওষুধ গ্রহণ করার ইতিহাস রয়েছে। দেখা যায়, ফার্মেসিগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। তবে কিছু নির্দেশনা আছে। তদারকি না থাকায় এই নির্দেশনা ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই মানে না। আমাদের দেশে নিম্ন আয়ের মানুষ চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ফার্মেসি থেকে এখন অ্যান্টিবায়োটিক কিনে সেবন করে। অ্যান্টিবায়োটিকের নাম মুখস্থ থাকায় দোকানে গিয়ে ক্রয় করেন। এতে তার শরীর অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে যাচ্ছে এবং পরে কোনো সংক্রমণ হলে কোনো ওষুধে আর সারছে না। কারণ আমাদের হাতে তো ওষুধ নেই। সব প্রতিরোধী হয়ে যাচ্ছে। পল্লী চিকিৎসক ও ফার্মেসি দোকানদার রোগী এলেই অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দিচ্ছেন। এটা বন্ধ করতে হবে। কারণ এতে পুরো সমাজকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছেন। কোনোভাবেই অপ্রয়োজনে চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন না। দিলে সেটি সঠিক মাত্রার হতে হবে। একই সঙ্গে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া রোগীরা ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনবেন না। গবেষণায় সবচেয়ে বেশি জীবাণু পাওয়া গেছে সিউডোমোনাস। এর পরই ই-কোলাই। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট পাওয়া গেলে তাকে এমডিআরও এবং সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট পাওয়া গেলে তাকে পিডিআর বলা হয়।