বিশ্বের মধ্যে বায়ুদূষণের শহর হিসেবে প্রায়ই শীর্ষে থাকা ঢাকা এবার উষ্ণতার কারণে বিশ্বের শীর্ষ চরম তাপমাত্রার শহরের তালিকায় উঠে এসেছে। একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় এমন আশঙ্কাজনক এ তথ্য উঠে এসেছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে শহরগুলোতে জনসংখ্যা বাড়ছে। এ দুটির প্রভাবে মারাত্মক হয়ে উঠছে সেখানকার তাপমাত্রা। এই চরম উষ্ণতার কারণে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস’-এ ওই গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। চরম তাপমাত্রায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা প্রসঙ্গে গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ১৯৮৩ সালে এ শহরের জনসংখ্যা ছিল ৪০ লাখ। কিন্তু এখন ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ বসবাস করছে এ রাজধানী শহরটিতে। চরম তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় উপরের দিকে ঠাঁই হয়েছে বাংলাদেশের। এ তালিকায় শীর্ষস্থানে ভারত, এরপরই বাংলাদেশ। চরম উষ্ণতার কারণে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলোতে বসবাসরত দরিদ্র মানুষ নাগরিক সুবিধার অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত। গবেষকরা ১৯৮৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ৩৩ বছর বিশ্বের ১৩ হাজার শহরে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ করেছেন। যেসব শহরে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর থাকে, তাদেরই চরম তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এরপর অন্য শহরগুলোর বাসিন্দাদের তথ্যের সঙ্গে সেগুলো তুলনা করা হয়। চরম তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত শহরের তালিকায় ঢাকার পরই ভারতের দিল্লী, কলকাতা, মুম্বাই ও থাইল্যান্ডের ব্যাংকক। রয়েছে চীনের সাংহাই, গুয়াংজু, মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর দুবাই। এসব শহরে গত ৩২ বছরে উষ্ণতা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব ৩৭ শতাংশ, বাকি ৬৩ শতাংশের জন্য দায়ী স্থানীয় কারণ।