গাযায় পানীয় জলের সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। চলমান যুদ্ধের ধাক্কায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিকে রাষ্ট্রসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ ‘মানবসৃষ্ট খরা’ বলে অভিহিত করেছে। ২০২৫ সালের ২০ জুন, শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ইউনিসেফ মুখপাত্র জেমস এল্ডার সতর্ক করে বলেন, ‘শিশুরা তৃষ্ণায় মারা যেতে শুরু করবে’। বর্তমানে গাযায় মাত্র ৪০ শতাংশ পানীয় জল উৎপাদন কেন্দ্র কার্যকর রয়েছে।
এই সংকটের মধ্যেও ইসরাঈল দাবি করেছে, তারা গাযায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে না; বরং নিশ্চিত করছে যাতে তা হামাসের হাতে না পড়ে। তবে হামাস এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ইসরাঈল ‘ক্ষুধাকে অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
ফিলিস্তীনি শরণার্থীদের সহায়তায় নিয়োজিত রাষ্ট্রসংঘ সংস্থা UNRRW-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বর্তমান ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে ‘লজ্জাজনক এবং আমাদের সামষ্টিক বিবেকের ওপর কলঙ্ক’ বলে উল্লেখ করেছেন।
গাযার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাঈলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫,৬০০ ফিলিস্তীনি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও প্রায় পুরো অঞ্চলটির মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভয়াবহ খাদ্যসংকট।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, গত চার সপ্তাহে তারা গাযায় মাত্র ৯,০০০ মেট্রিক টন খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করতে পেরেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ‘ক্ষুধা ও অনাহারের আতঙ্কে মানুষ পরিবহণপথে ভিড় করছে— হয়তো কিছু সাহায্য ছিনিয়ে নিতে পারবে এই আশায়। জীবনরক্ষাকারী সহায়তা পেতে গিয়ে কেউ আহত বা নিহত হওয়া সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য’।
গাযায় চলমান মানবিক সংকট দিন দিন আরও গভীরতর হচ্ছে। বিশেষত শিশুদের জন্য পরিস্থিতি হয়ে উঠছে ভয়াবহ। এই পরিস্থিতি থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ও জরুরী হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।