কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

গাছ নিজেদের মধ্যে কথা বলে, পাঠায় বিপদের সংকেতও

post title will place here

গাছেদের প্রাণ আছে, এই আবিষ্কার করেছিলেন ভারতীয় বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু। এবার গবেষণায় উঠে এলো আরও আশ্চর্য তথ্য। ‘গাছেরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে’ জানালেন জাপানের একদল গবেষক। জাপানের সাইতামা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই প্রথম পর্যবেক্ষণ করেছেন গাছেরা নিজেদের মধ্য কথা বলে। এর উপর একটি প্রতিবেদন নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশ পেয়েছে। গবেষক জানাচ্ছেন কখন, কোথায় ও কীভাবে গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত বা বিপদগ্রস্ত উদ্ভিদের কাছ থেকে বায়ুবাহিত ‘সতর্কবার্তা’ পায় এবং তাতে সাড়া দেয়, তার জটিল প্রক্রিয়া উন্মোচন করেছে এই গবেষণা। গাছেরা কীটপতঙ্গের হাত থেকে বাঁচতে সংকেত প্রেরণ করে পাশে থাকা উদ্ভিদদের সতর্ক করে, তেমনি বৈদ্যুতিক সংকেতের মাধ্যমেও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। অনেকটা মানবদেহের মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে। ‘সায়েন্স অ্যালার্ট’ জানিয়েছে, বাতাসে ভাসমান যৌগগুলো উদ্ভিদকে সূক্ষ্ম কুয়াশার মতো ঘিরে থাকে। এই যৌগগুলোই যোগাযোগ রক্ষার কাজে সাহায্য করে। এই যৌগগুলো গন্ধের মতো এবং কাছে থাকা গাছপালাকে তারা সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়। উদ্ভিদজগৎ কীভাবে এই ‘এরিয়াল অ্যালার্ম’ গ্রহণ করে এবং তাতে প্রতিক্রিয়া জানায়, সেই সংক্রান্ত ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন জাপানী বিজ্ঞানীরা। গাছের যোগাযোগ বিষয়ে ১৯৮৩ সালের একটি গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে নতুন গবেষণাটি করা হয়েছে। সঠিক সময়ে আসন্ন হুমকির বিষয়ে সতর্ক করতে গাছপালার এই যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উদ্ভিদজগতের মধ্যে জটিল ও সূক্ষ্ম মিথস্ক্রিয়াগুলোর ওপর আলোকপাত করে এই গবেষণা। যেখানে পরিবেশগত সম্পর্ক ও উদ্ভিদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। গবেষকেরা বলেন, আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া বা তৃণভোজী কোনোও প্রাণীর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশী উদ্ভিদ যখন ভিওসি নিঃসরণ করে, তখন অন্য গাছগুলো সেটি গ্রহণ এবং বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই ধরনের যোগাযোগ বিভিন্ন হুমকি থেকে গাছপালাকে রক্ষা করে। এই গবেষণা পরিচালনার জন্য বায়ুপাম্পযুক্ত একটি পাত্রে বেশ কিছু গাছের পাতা এবং শুঁয়াপোকা রাখা হয়। অন্য পাত্রে অন্য চেম্বারে রাখা হয় অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা (সরিষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত) নামের একটি সাধারণ আগাছা। জিনগতভাবে অ্যারাবিডোপসিস গাছগুলো ক্যালসিয়াম আয়ন পেলে সবুজ রঙের প্রতিপ্রভা (ফ্লুরোসেন্স) বিকিরণ করে। এটি স্ট্রেস বা কষ্টের অনুভূতির বার্তাপ্রেরক হিসেবে কাজ করে। রাসায়নিক সংকেত, আলোভিত্তিক বার্তা, বৈদ্যুতিক স্পন্দন ও নেটওয়ার্কভিত্তিক জটিল ভাষার মাধ্যমে গাছেরা নিজেদের জগতে যোগাযোগ করে। এ ধরনের যোগাযোগ গাছের বেঁচে থাকা ও মিথস্ক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গাছের রাসায়নিক ভাষা গাছ বিপদে পড়লে ভোলাটাইল অরগানিক কম্পাউন্ড (ভিওসি) বাতাসে নিঃসরণ করে। ভিওসি প্রতিবেশী গাছে বার্তা পৌঁছায়। এটি খরা বা পোকার আক্রমণের মতো পরিবেশগত বিভিন্ন অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পাঠায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যখন একটি উদ্ভিদ কোনোও তৃণভোজীর (পোকামাকড় বা প্রাণী) আক্রমণের শিকার হয়, তখন এটি নির্দিষ্ট ভিওসি নির্গত করে, যা কাছাকাছি গাছপালাগুলো শনাক্ত করে। এই প্রতিবেশী গাছগুলো তখন অনুরূপ আক্রমণের শঙ্কায় তাদের নিজস্ব রাসায়নিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে।


Magazine