কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৪২) : আমি জনৈক ব্যক্তিকে ইটের দাদনের ব্যবসার জন্য কিছু টাকা দিয়েছি। তিনি ৬-৮ মাস পর ইট বিক্রি করে যাই লাভ হোক না কেন আমাকে প্রতি ইটের বিনিময়ে ১ টাকা করে লাভ দেন। গত বছর ব্যবসা কম হওয়াতে ৫০ পয়সা লাভ দিয়েছেন। তবে এখানে ঝুঁকির বিষয় হলো, যদি ব্যক্তিটি মারা যান তাহলে আমার মূল টাকাটা না পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এখন প্রশ্ন হলো, ১. আমার জন্য এই ব্যবসা হালাল কি-না? ২. আমি যে টাকা ইনভেস্ট করেছি তার যাকাত দিতে হবে কি-না?

উত্তর : একজনের পরিশ্রম অপর জনের মূলধন লভ্যাংশ উভয়ের মাঝে শতকরা হারে বণ্টিত হবে মর্মে যে ব্যবসা করা হয় তাকে শরীয়তের পরিভাষায় মুদারাবা বলা হয়। এই ব্যবসা বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে- ১. লাভ নির্ধারিত করা যাবে না ২. লাভ-লোকসানের ভাগিদারী হতে হবে (দারাকুৎনী, হা/৩০৭৭, মুয়াত্তা, হা/২৫৩৫; ইরওয়া, হা/১৪৭২; ‘বুলুগুল মারাম মওকুফ ছহীহ’)। যেহেতু প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে লাভ-লোকসানের হিসাব না করে লাভ নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে তাই এই দাদন ব্যবসা বৈধ হবে না। বরং এই লাভের টাকা সূদ হিসাবে বিবেচিত হবে (মুসলিম, হা/ ১৫৯৮; মিশকাত, হা/ ২৮০৭ ‘ক্রয় বিক্রয় অধ্যায়’)। তাছাড়াও মূলধন ফেরত না পাওয়ার আশঙ্কা থাকায় ধোকার সম্ভবনার কারণে এই ব্যবসা জায়েয নয়। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, الْخَدِيعَةُ فِى النَّارِ ‘ধোকাবাজ জাহান্নামে যাবে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/ ১৫৯৮; মিশকাত, হা/ ২৮০৭ ‘ক্রয় বিক্রয় অধ্যায়’)। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমা সূত্রে বর্ণিত, এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উল্লেখ করলেন যে, তাকে ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকা দেওয়া হয়। তখন তিনি বললেন, যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলে নিবে কোনো প্রকার ধোঁকা নেই (ছহীহ বুখারী, ২৪০৭; মিশকাত, হা/২৮০৩)।

-হিলালুদ্দীন

উখিয়া, কক্সবাজার।

Magazine