বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, গুম, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাযতে নির্যাতন, নারী নির্যাতন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ (আসক)। ২০১৯ সালে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে তারা। তাদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০১৯ সালে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ৩৮৮ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। তাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রেফতারের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাযতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারের আগে নির্যাতনে মারা যান ৬ জন এবং গুলিতে নিহত হয়েছেন ১২ জন। ২০১৯ সালে সীমামেত্ম ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলি ও শারীরিক নির্যাতনে ৪৭ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। এবছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজ হয়েছেন ১৩ জন। এরমধ্যে ৫ জনের সন্ধান পাওয়া গেলেও ৮ জনের এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এবছর রাজনৈতিক সহিংসতায় ৩৯ জন নিহত ও ২৬৮৯ জন আহত হয়েছেন। এবছর গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৬৫ জন। বিষয়টি আইনের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতারই বহিঃপ্রকাশ।
২০১৯ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৪১৩ জন নারী। এরমধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন নারী। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৫৮ জন নারী। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৪৪ জন পুরুষ নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। উত্ত্যক্তে অতিষ্ঠ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ১৮ জন নারী। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে চারজন নারীসহ খুন হয়েছেন ১৭ জন। সালিশের নামে নির্যাতন করা হয়েছে চারজন নারীকে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৬৭ জন নারী। এর মধ্যে নির্যাতনের কারণে মারা গেছেন ৯৬ জন। আত্মহত্যা করেছেন তিনজন। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪২৩ জন নারী। গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩৪ জন। শিশু নির্যাতনের ঘটনাও ছিল উদ্বেগজনক। এবছর শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ৪৮৭ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ১০৮৭টি শিশু। ৩৭টি ছেলে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।