করোনাকালীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ৮১৮টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ৯৪টি শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৪ জন কন্যাশিশুকে। এ সময়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১১০টি শিশু। এর আগের বছর ২০২০ সালে শিশুধর্ষণের সংখ্যা ছিল ৬২৬টি। ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এর পর্যালোচনায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। দেশের ৫টি বাংলা দৈনিক ও ৩টি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত শিশু অধিকার বিষয়ক সংবাদ পর্যালোচনা করে এই তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গতবছর আত্মহত্যা করেছে ৭৮টি শিশু। এর মধ্যে ৫৭ জন ছেলে এবং ২১ জন মেয়ে শিশু। এই সময়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে গিয়ে আহত হয়েছে ২৩ জন শিশু। ২০২০ সালে আত্মহত্যাকারী শিশুর সংখ্যা ছিল ৩৪। মূলত পরীক্ষায় ফল-বিপর্যয়, পরিবারের ওপর রাগ, উত্ত্যক্ত হয়ে, ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টা, ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির বিচার না পাওয়া এবং সাইবার ক্রাইম ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতবছর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ১৮৩টি শিশু এবং হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১৩৫টি শিশুকে। ২০২০ সালে হত্যার শিকার হয়েছিল ১৪৫ জন শিশু। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিশুর সর্বনিম্ন বয়স ছিল ২ বছর। এর বাইরে নানা ধরনের নির্যাতনে আহত হয়েছে ২৫৪টি শিশু। নিখোঁজ হয় ৩৮ জন। পানিতে ডুবে মারা গেছে ৫৭০টি শিশু। ২০২০ সালে পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৬৫। ২০২০ সালে নিখোঁজ ও অপহরণের শিকার হয়েছে ২২। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২১ সালে নিহত হয়েছে ৬৯ শিশু। তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১৫৮। শিশু নির্যাতনের ৫৬টি ঘটনার মাধ্যমে ২৫৪টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। ২০২০ সালে শিশু নির্যাতনের ১৬টি ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ২০২১ সালে অপরাধে সংশ্লিষ্ট হওয়া শিশুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২০ যা ২০২০ সালে ছিল ২টি। শিশুদের নিয়ে ২৫টি বিষয়ের ওপর নেতিবাচক খবর ছাপা হয়েছে ১ হাজার ৯৩০টি। ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে ১২টি বিষয়ের উপর ১০৬টি। ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েশিশুর সংখ্যা ৩৮ এবং সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকায়। ৩৮ জন গৃহকর্মী ধর্ষণসহ নানা ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জন নিহত, ২৪ জন আহত ও ২ জন আত্মহত্যা করেছে। নিহত গৃহকর্মীদের মধ্যে ৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।