কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ইসলামে বায়‘আত (পর্ব-২)

post title will place here

বায়‘আত গ্রহণ ও ভঙ্গের বিধান: শাসক ছাড়া জনগণের কী ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে, তা আমরা ভূমিকায় দেখে এসেছি! মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন বিষয়াদি সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে চলার জন্য শাসক মনোনয়ন, তাঁর শাসন ও নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; বরং এর বিকল্প নেই। আর শাসক ও বায়‘আত ওতপ্রোতভাবে জড়িত; একটি ছাড়া আরেকটি কল্পনাতীত। সেজন্য শাসক থাকা যেমন জরুরী, তেমনি বায়‘আতও জরুরী। তবে সকলের বায়‘আত গ্রহণের ধরন এক রকম নয়। যাহোক, ইসলামের দৃষ্টিতে বায়‘আত ওয়াজিব[1] এবং শরী‘আত অনুমোদিত কারণ ছাড়া বায়‘আত ভঙ্গ করা হারাম। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, مَنْ خَلَعَ يَدًا مِنْ طَاعَةٍ، لَقِيَ اللهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَا حُجَّةَ لَهُ، وَمَنْ مَاتَ وَلَيْسَ فِي عُنُقِهِ بَيْعَةٌ، مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً ‘যে ব্যক্তি (শাসকের) আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নিবে, সে ক্বিয়ামতের দিন দলীলবিহীন অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে। আর যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে যে, তার ঘাড়ে কোনো বায়‘আত নেই, তার মৃত্যু জাহেলিয়াতের মৃত্যু হবে’।[2]

নাফে‘ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, যখন মদীনার লোকেরা ইয়াযীদ ইবনু মু‘আবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর বায়‘আত ভঙ্গ করল, তখন ইবনু উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমা তার বিশেষ ভক্তবৃন্দ ও সন্তানদের সমবেত করে বললেন, আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, يُنْصَبُلِكُلِّغَادِرٍلِوَاءٌيَوْمَالْقِيَامَةِ ‘ক্বিয়ামতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য একটি করে ঝান্ডা উত্তোলন করা হবে’। আর আমরা এ লোকটির (ইয়াযীদের) প্রতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শর্তানুযায়ী বায়‘আত গ্রহণ করেছি। বস্তুত কারো প্রতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শর্তানুযায়ী বায়‘আত গ্রহণ করার পর তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের চেয়ে বড় কোনো বিশ্বাসঘাতকতা আছে বলে আমি জানি না। আর আমি যেন কারো সম্পর্কে জানতে না পাই যে, সে ইয়াযীদের বায়‘আত ভঙ্গ করেছে কিংবা সে আনুগত্য করছে না; অন্যথা তার ও আমার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।[3]

উক্ত হাদীছের উপর মন্তব্য করতে গিয়ে হাফেয ইবনু হাজার আল-আসক্বালানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, وَفِي هَذَا الْحَدِيثِ وُجُوبُ طَاعَةِ الْإِمَامِ الَّذِي انْعَقَدَتْ لَهُ الْبَيْعَةُ وَالْمَنْعُ مِنَ الْخُرُوجِ عَلَيْهِ وَلَوْ جَارَ فِي حُكْمِهِ وَأَنَّهُ لَا يَنْخَلِعُ بِالْفِسْقِ ‘এ হাদীছে প্রমাণিত হয়, যে রাষ্ট্রনায়কের বায়‘আত সম্পন্ন হয়েছে, তার আনুগত্য করা ওয়াজিব। তিনি তার বিচারে যুলম করে বসলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা যাবে না। কোনো ফাসেক্বী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার কারণে তার বায়‘আতের বন্ধন ছিন্ন করা চলবে না’।[4]

ইমাম আজুর্রী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,مَنْ أُمِّرَ عَلَيْكَ مِنْ عَرَبِيٍّ أَوْ غَيْرِهِ أَسْوَدَ أَوْ أَبْيَضَ أَوْ عَجَمِيٍّ فَأَطِعْهُ فِيمَا لَيْسَ لِلَّهِ فِيهِ مَعْصِيَةٌ، وَإِنْ حَرَمَكَ حَقًّا لَكَ، أَوْ ضَرَبَكَ ظُلْمًا لَكَ، أَوِ انْتَهَكَ عِرْضَكَ، أَوْ أَخَذَ مَالَكَ، فَلَا يَحْمِلُكَ ذَلِكَ عَلَى أَنْ تَخْرُجَ عَلَيْهِ بِسَيْفِكَ حَتَّى تُقَاتِلَهُ، وَلَا تَخْرُجْ مَعَ خَارِجِيٍّ يُقَاتِلُهُ، وَلَا تُحَرِّضْ غَيْرَكَ عَلَى الْخُرُوجِ عَلَيْهِ، وَلَكِنِ اصْبِرْ عَلَيْهِ ‘আরব-অনারব, সাদা-কালো যাকেই আপনার শাসক নিযুক্ত করা হোক না কেন, মহান আল্লাহর নাফরমানি হবে না এমন সব ব্যাপারেই আপনি তার আনুগত্য করবেন— যদিও তিনি আপনাকে আপনার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন বা অন্যায়ভাবে আপনাকে মারেন বা আপনার সম্মানহানি করেন অথবা আপনার মাল নিয়ে নেন। এসব অন্যায় যেন তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করতে এবং অবশেষে তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করতে আপনাকে প্ররোচিত না করে। আর তাঁর বিরুদ্ধে লড়াইরত কোনো চরমপন্থী খারেজীর সাথেও আপনাকে বিদ্রোহে অংশ নিবেন না। অনুরূপভাবে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অন্যকে উত্তেজিত করবেন না। বরং তাঁর ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করবেন’।[5]

ইমাম ত্বহাবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, وَلَا نَرَى الْخُرُوجَ عَلَى أَئِمَّتِنَا وَوُلَاة أُمُورِنَا، وَإِنْ جَارُوا، وَلَا نَدْعُو عَلَيْهِمْ، وَلَا نَنْزِعُ يَدًا مِنْ طَاعَتِهِمْ، وَنَرَى طَاعَتَهُمْ مِنْ طَاعَة اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فَرِيضَة، مَا لَمْ يَأْمُرُوا بِمَعْصِيَة، وَنَدْعُوا لَهُمْ بِالصَّلَاحِ وَالْمُعَافَاة ‘আমাদের রাষ্ট্রনায়ক ও শাসকগণ যুলম করলেও আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ঠিক মনে করি না। তাদের বিরুদ্ধে বদদু‘আ করি না। তাদের আনুগত্য থেকে আমরা হাত গুটিয়ে নেই না। আমরা মনে করি, তাদের আনুগত্য মহান আল্লাহর আনুগত্যের অন্তর্ভুক্ত, ফরয— যতক্ষণ না তারা পাপের আদেশ করেন। আমরা তাদের সংশোধন এবং সুস্থতা ও নিরাপত্তার জন্য দু‘আ করি’।[6]

কুয়েতভিত্তিক ফিক্বহী বিশ্বকোষ ‘আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যাহ’-তে বলা হয়েছে,يَحْرُمُ عَلَى الْمُسْلِمِ إِذَا بَايَعَ الإِْمَامَ أَنْ يَنْقُضَ بَيْعَتَهُ أَوْ يَتْرُكَ طَاعَتَهُ، إِلاَّ لِمُوجِبٍ شَرْعِيٍّ يَقْتَضِي انْتِقَاضَ الْبَيْعَةِ، كَرِدَّةِ الإِْمَامِ وَنَحْوِ ذَلِكَ مِنَ الأَسْبَابِ .... إِنْ نَقَضَ الْبَيْعَةَ لِغَيْرِ ذَلِكَ فَهُوَ حَرَامٌ ‘কোনো মুসলিম যখন শাসকের বায়‘আত গ্রহণ করবে, তখন সেই বায়‘আত ভঙ্গ করা বা সেই শাসকের আনুগত্য পরিত্যাগ করা তার উপর হারাম। তবে শরী‘আত সম্মত কোনো কারণ যদি থাকে, যার কারণে বায়‘আত ভঙ্গ করা যায়, তাহলে বায়‘আত ভঙ্গ করা হারাম নয়। যেমন- শাসকের মুরতাদ হয়ে যাওয়া বা এরকম অন্য কোনো কারণ। এগুলো ছাড়া অন্য কোনো কারণে বায়‘আত ভঙ্গ করা হারাম’।[7]

শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে ইবরাহীম আত-তুওয়াইজিরী বলেন, ‘অঙ্গীকার ও চুক্তি পূরণ করা ওয়াজিব— সেই চুক্তি মুসলিমদের পরস্পরের মধ্যে হোক বা মুসলিম ও কাফেরদের মধ্যে হোক অথবা ব্যক্তি পর্যায়ে পরস্পরের মধ্যে হোক। আর সর্বপ্রকার বায়‘আত এসব চুক্তি ও অঙ্গীকারের আওতাভুক্ত। প্রথমত, ইসলাম রক্ষার বায়‘আত যদি বায়‘আত গ্রহণকারী ভঙ্গ করে, তাহলে সে ইসলামচ্যুত হয়ে কাফের হয়ে যাবে। তবে, ইসলাম রক্ষার এই বায়‘আত কেবল রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর জন্য খাছ।… দ্বিতীয়ত, হিজরত করার বায়‘আত। এ প্রকারের বায়‘আত মক্কা বিজয়ের পর শেষ হয়ে গেছে। তৃতীয়ত, সাহায্যের, জিহাদের বা আনুগত্যের বায়‘আত যদি কেউ শরী‘আত অনুমোদিত কারণ ছাড়া ভঙ্গ করে, তবে সে কাবীরা গোনাহগার হবে। তবে আনুগত্যের বায়‘আত ভঙ্গ করা তুলনামূলকভাবে বেশি মারাত্মক’।[8]

বায়‘আত সম্পর্কিত কতিপয় আয়াত ও হাদীছ এবং সেগুলোর উদ্দিষ্ট ব্যাখ্যা: কুরআন মাজীদ ও হাদীছে বায়‘আতের ব্যাপারে বহু দলীল পাওয়া যায়, যার সবগুলো সংকলন এখানে উদ্দেশ্য নয়। বরং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটির দিকে ইঙ্গিত দেওয়া উদ্দেশ্য, যার কয়েকটি গত হয়ে গেছে এবং নিচে আরো কয়েকটি ব্যাখ্যাসহ উল্লেখ করা হলো—

() কুরআন থেকে:

১. মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّهَ يَدُ اللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ فَمَنْ نَكَثَ فَإِنَّمَا يَنْكُثُ عَلَى نَفْسِهِ وَمَنْ أَوْفَى بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا ‘নিশ্চয় যারা আপনার বায়‘আত গ্রহণ করে, তারা তো আল্লাহরই বায়‘আত গ্রহণ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর। সুতরাং যে ভঙ্গ করে, তা ভঙ্গ করার পরিণাম তাকেই ভোগ করতে হবে এবং যে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ করে, তিনি তাকে মহাপুরস্কার দেন’ (আল-ফাতহ, ৪৮/১০)

ইবনু আত্বিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ উক্ত আয়াতের তাফসীরে ‘বায়‘আতুর রিযওয়ান’ বা ‘বায়‘আতুশ শাজারাহ’-এর কথা উল্লেখ করার পর বলেন, وَبَقِيَ اسْمُ الْبَيْعَةِ بَعْدُ مُعَاقَدَةَ الْخُلَفَاءِ وَالْمُلُوْكِ ‘তারপর থেকে বায়‘আত বিষয়টি খলীফা ও রাজাগণের সাথে বিশেষ চুক্তি হিসেবে রয়ে গেছে’।[9]

ইমাম সুয়ূত্বী রাহিমাহুল্লাহ আয়াতটির তাফসীরে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ছাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম–এর মধ্যকার উক্ত বায়‘আতের প্রসঙ্গ টেনে আবূ বকর, উমার ও উছমান রাযিয়াল্লাহু আনহুম–এর বায়‘আতের কথা তুলে ধরেন এবং তাঁদের সকলের বায়‘আত যে হক্ব ও আল্লাহর আনুগত্যের ছিল, সে কথা স্পষ্ট করেন।[10] আর একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, উপর্যুক্ত তিনজনই হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফা ছিলেন, যাদের পরিচয় নতুন করে দেওয়ার কিছু নেই। সুতরাং বায়‘আতের বিষয়টি কেবল খলীফা ও রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কিত।

২. মহান আল্লাহ আরো বলেন, لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنْزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا-وَمَغَانِمَ كَثِيرَةً يَأْخُذُونَهَا وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا ‘অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন, যখন তাঁরা গাছের নিচে আপনার নিকট বায়‘আত গ্রহণ করেছিলেন। আল্লাহ জানতেন তাদের অন্তরে কী আছে। ফলে তিনি তাঁদের উপর প্রশান্তি অবতীর্ণ করলেন এবং পুরস্কৃত করলেন আসন্ন বিজয় দিয়ে ও বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ দিয়ে, যা তারা গ্রহণ করবেন। আল্লাহ মহা পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়’ (আল-ফাতহ, ৪৮/১৮-১৯)। এই আয়াতটিও উপরের বায়‘আতুর রিযওয়ান প্রসঙ্গে।

৩. অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلَى أَنْ لَا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا وَلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِينَ وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَادَهُنَّ وَلَا يَأْتِينَ بِبُهْتَانٍ يَفْتَرِينَهُ بَيْنَ أَيْدِيهِنَّ وَأَرْجُلِهِنَّ وَلَا يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ فَبَايِعْهُنَّ وَاسْتَغْفِرْ لَهُنَّ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ ‘হে নবী! ঈমানদার নারীরা যখন আপনার নিকট এসে বায়‘আত করে এই মর্মে যে, তারা আল্লাহর সাথে কোনো শরীক স্থির করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের হত্যা করবে না, তারা সজ্ঞানে কোনো অপবাদ রচনা করে রটাবে না এবং সৎকর্মে আপনাকে অমান্য করবে না, তখন তাদের বায়‘আত গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (আল-মুমতাহিনাহ, ৬০/১২)। এই বায়‘আতটিকে ‘বায়‘আতুন নিসা’ বলা হয়, যা মক্কা বিজয়ের বছরে সংঘটিত হয়েছিল।[11]

(খ) হাদীছ থেকে:

১. উবাদাহ ইবনুছ ছামেত রাযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা কোনো এক বৈঠকে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। তিনি বললেন, تُبَايِعُونِي عَلَى أَنْ لَا تُشْرِكُوا بِاللهِ شَيْئًا، وَلَا تَزْنُوا، وَلَا تَسْرِقُوا، وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ ‘তোমার আমার কাছে এ মর্মে বায়‘আত করো যে, তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না এবং কাউকে হত্যা করবে না, যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন। কিন্তু ন্যায়সংগতভাবে (হলে ভিন্ন কথা)...’।[12] এই বায়‘আত ছিল প্রথম আক্বাবার বায়‘আত, যা জিহাদের বিধান আসার পূর্বে মক্কায় সংঘটিত হয়েছিল।[13]

২. আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَنْ خَلَعَ يَدًا مِنْ طَاعَةٍ، لَقِيَ اللهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَا حُجَّةَ لَهُ، وَمَنْ مَاتَ وَلَيْسَ فِي عُنُقِهِ بَيْعَةٌ، مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً ‘যে ব্যক্তি আনুগত্য থেকে হাত সরিয়ে নিবে, সে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে যে, তার কোনো দলীল থাকবে না। আর যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা যাবে যে, তার কাঁধে কোনো বায়‘আত নেই, তার মৃত্যু হবে জাহেলী মৃত্যু’।[14]

মুহাম্মাদ ইবনু আল্লান আছ-ছিদ্দীক্বী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, أَيْ خَرَجَ عَنْهَا بِالْخُرُوْجِ عَلَى الْإِمَامِ وَعَدَمِ الْاِنْقِيَادِ لَهُ فِيْ غَيْرِ مَعْصِيَةٍ بِأَيِّ وَجْهٍ كَانَ ‘পাপকাজের ক্ষেত্র ছাড়াই সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং তার বশ্যতা স্বীকার না করে আনুগত্য থেকে বের হয়ে গেল, সেই বের হওয়া যে কোনো উপায়েই হোক না কেন’।[15] ইবনুল জাওযী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, (فِيْهِ) الْإِشَارَة إِلَى طَاعَة الْأُمَرَاء ‘এই হাদীছে আমীর-উমারার আনুগত্যের ইঙ্গিত রয়েছে’।[16]

হাদীছে ‘জাহেলী মৃত্যু’ বলতে কাফের অবস্থায় মারা যাওয়া উদ্দেশ্য নয়। বরং পাপী অবস্থায় মারা যাওয়া; জাহেলী যুগের মানুষের একটি স্বভাবের উপর মারা যাওয়া।[17]

৩. আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনিল ‘আছ রাযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, مَنْ بَايَعَ إِمَامًا فَأَعْطَاهُ صَفْقَةَ يَدِهِ، وَثَمَرَةَ قَلْبِهِ، فَلْيُطِعْهُ إِنِ اسْتَطَاعَ، فَإِنْ جَاءَ آخَرُ يُنَازِعُهُ فَاضْرِبُوا عُنُقَ الْآخَرِ ‘যে ব্যক্তি কোনো রাষ্ট্রনায়কের হাতে বায়‘আত করল এবং এতে তাকে নিজ প্রতিশ্রুতি ও অন্তর থেকে অঙ্গীকার প্রদান করল, সে যেন যথাসাধ্য তার আনুগত্য করে। এরপর যদি অন্য কেউ তার ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাহলে ঐ দ্বিতীয় জনের গর্দান উড়িয়ে দাও’।[18]

মুহাম্মাদ ইবনু আল্লান আছ-ছিদ্দীক্বী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, (فَإِنْ جَاءَ آخَرُ يُنَازِعُهُ) أَيْ: خَرَجَ عَنْ طَاعَتِهِ وَنَازَعَهُ فِي الْمُلْكِ ‘এরপর যদি অন্য কেউ তার ক্ষমতা দখল করতে চায়, অর্থাৎ তার আনুগত্য থেকে বের হয়ে যায় এবং তার রাজত্ব ও শাসনক্ষমতার ব্যাপারে তার সাথে কোন্দলে জড়ায়’।[19]

লক্ষ করুন, ব্যাখ্যায় উল্লিখিত الْمُلْك শব্দটি কিন্তু কেবল রাষ্ট্র ও প্রশাসনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য; অন্য কোনো সাংগঠনিক ও দলীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে শব্দটি ব্যবহৃত হয় না। তাছাড়া ইমাম মুসলিম রাহিমাহুল্লাহ উক্ত হাদীছটি كِتَابُ الْإِمَارَةِ বা ‘প্রশাসন ও নেতৃত্ব’ অধ্যায়ের আওতাধীনبَابُ الْأَمْرِ بالْوَفَاءِ بِبَيْعَةِ الْخُلَفَاءِ، الْأَوَّلِ فَالْأَوَّلِ অনুচ্ছেদে এনেছেন, যার অর্থ— ‘অনুচ্ছেদ: খলীফাগণের অগ্রজ-অনুজের ভিত্তিতে তাদের বায়‘আতের শর্ত মেনে চলার আদেশ’।[20] এখানে الْخُلَفَاء শব্দটিও রাষ্ট্রনেতা ছাড়া অন্য কারো বায়‘আত সম্পূর্ণরূপে নাকচ করে।

৪. আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,مَنْ رَأَى مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلْيَصْبِرْ عَلَيْهِ فَإِنَّهُ مَنْ فَارَقَ الجَمَاعَةَ شِبْرًا فَمَاتَ، إِلَّا مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً ‘যে ব্যক্তি তার শাসকের মধ্যে অপছন্দনীয় কিছু দেখতে পায়, সে যেন ধৈর্যধারণ করে। কেননা যে কেউ ইসলামী জামা‘আত থেকে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে যায় এবং এ অবস্থায় মারা যায়, সে জাহলেী যুগের ন্যায় মৃত্যুবরণ করে’।[21]

ইবনু আবী জামরা রাহিমাহুল্লাহ বলেন,الْمُرَادُ بِالْمُفَارَقَةِ السَّعْيُ فِي حَلِّ عَقْدِ الْبَيْعَةِ الَّتِي حَصَلَتْ لِذَلِكَ الْأَمِيرِ وَلَوْ بِأَدْنَى شَيْءٍ ‘এখানে জামা‘আত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অর্থ হচ্ছে, সামান্য কিছুর মাধ্যমে হলেও রাষ্ট্রনেতার বায়‘আতের বন্ধন খুলে ফেলার চেষ্টা চালানো, যে বায়‘আত ইতোমধ্যে সেই রাষ্ট্রনেতার জন্য সম্পন্ন হয়েছে’।[22]

ইবনু বাত্ত্বাল রাহিমাহুল্লাহ বলেন,فِي الْحَدِيثِ حُجَّةٌ فِي تَرْكِ الْخُرُوجِ عَلَى السُّلْطَانِ وَلَوْ جَارَ وَقَدْ أَجْمَعَ الْفُقَهَاءُ عَلَى وُجُوبِ طَاعَةِ السُّلْطَانِ الْمُتَغَلِّبِ وَالْجِهَادِ مَعَهُ ‘এই হাদীছে সরকার যুলম করলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করার প্রমাণ রয়েছে’। ফক্বীহগণ ইজমা পোষণ করেছেন যে, জোর করে ক্ষমতা দখলকারী সরকারেরও আনুগত্য করা এবং তার সাথে সঙ্গ দিয়ে জিহাদ করা ওয়াজিব’।[23]

৫. উবাদাহ ইবনুছ ছামেত রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,دَعَانَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَايَعْنَاهُ، فَكَانَ فِيمَا أَخَذَ عَلَيْنَا: «أَنْ بَايَعَنَا عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِي مَنْشَطِنَا وَمَكْرَهِنَا، وَعُسْرِنَا وَيُسْرِنَا، وَأَثَرَةٍ عَلَيْنَا، وَأَنْ لَا نُنَازِعَ الْأَمْرَ أَهْلَهُ»، قَالَ: «إِلَّا أَنْ تَرَوْا كُفْرًا بَوَاحًا عِنْدَكُمْ مِنَ اللهِ فِيهِ بُرْهَانٌ» ‘রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ডাকলেন এবং আমরা তাঁর নিকট বায়‘আত গ্রহণ করলাম। তিনি আমাদেরকে যেসব ব্যাপারে বায়‘আত করান, তার মধ্যে ছিল— আমরা শুনব ও মেনে চলব আমাদের খুশী অবস্থায় ও বিরক্ত অবস্থায়, আমাদের সংকটে ও স্বাচ্ছন্দ্যে এবং আমাদের উপর অন্যকে প্রাধান্য দিলেও। আর আমরা সুযোগ্য ব্যক্তির সাথে নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল করব না। তিনি বলেন, যে পর্যন্ত না তোমরা তার মধ্যে প্রকাশ্য কুফর দেখতে পাবে এবং তোমাদের কাছে এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে আল্লাহর সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকবে’।[24]

ইমাম মুসলিম রাহিমাহুল্লাহ উক্ত হাদীছটি كِتَابُ الْإِمَارَةِ বা ‘প্রশাসন ও নেতৃত্ব’ অধ্যায়ের আওতাধীনبَابُ وُجُوبِ طَاعَةِ الْأُمَرَاءِ فِي غَيْرِ مَعْصِيَةٍ، وَتَحْرِيمِهَا فِي الْمَعْصِيَةِ অনুচ্ছেদে এনেছেন, যার অর্থ— ‘পাপকাজ ছাড়া অন্য সব ব্যাপারে শাসকের আনুগত্য করা আবশ্যক এবং পাপকাজে আনুগত্য করা হারাম’।[25] হাদীছের وَأَنْ لَا نُنَازِعَ الْأَمْرَ أَهْلَهُ বাক্যাংশের ব্যাখ্যায় ভাষ্যকারগণ বলেন, وَالْمُرَادُ بِالْأَمْرِ الْمُلْكُ وَالْإِمَارَةُ ‘এখানে ‘আমর’ (اَلْأَمْرُ) দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, রাজত্ব ও শাসনক্ষমতা’।[26]

৬. আবূ হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ যামানায় একসাথে অনেক খলীফা হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, وَسَيَكُونُ خُلَفَاءُ فَيَكْثُرُونَ ‘অচিরেই খলীফা হবে এবং অনেক সংখ্যক হবে’। তখন ছাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম সেই সময়ে করণীয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, فُوا بِبَيْعَةِ الأَوَّلِ فَالأَوَّلِ، أَعْطُوهُمْ حَقَّهُمْ، فَإِنَّ اللَّهَ سَائِلُهُمْ عَمَّا اسْتَرْعَاهُمْ ‘তোমরা অগ্রজ-অনুজের ভিত্তিতে তাদের বায়‘আত পূর্ণ করবে। তোমরা তাদের হক্ব দিয়ে দাও। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন সেসব বিষয়ে, যেগুলোর দায়িত্ব তিনি তাদের উপর অর্পণ করেছিলেন’।[27]

এখানে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খলীফা প্রসঙ্গ টেনে তাদের বায়‘আত পূর্ণ করার কথা বলেছেন। সুতরাং মুসলিম জাহানের একক খলীফা অথবা রাষ্ট্রভিত্তিক সরকার ছাড়া অন্য কারো জন্য বায়‘আত প্রযোজ্য হতে পারে না। ইমাম শাওকানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,فِيهِ دَلِيلٌ عَلَى أَنَّهُ يَجِبُ عَلَى الرَّعِيَّةِ الْوَفَاءُ بِبَيْعَةِ الْإِمَامِ الْأَوَّلِ، ثُمَّ الْأَوَّلِ وَلَا يَجُوزُ لَهُمْ الْمُبَايَعَةُ لِلْإِمَامِ الْآخَرِ قَبْلَ مَوْتِ الْأَوَّلِ ‘উক্ত হাদীছে প্রমাণিত হয়, জনগণের উপর শাসকের বায়‘আত পূর্ণ করা ওয়াজিব অগ্রজ-অনুজের ভিত্তিতে। আগের রাষ্ট্রনায়ক মারা যাওয়ার আগে পরের অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের বায়‘আত গ্রহণ করা জনগণের জন্য জায়েয নেই’।[28]

সম্মানিত পাঠক! লক্ষ করুন—

(১) কুরআন মাজীদের উপর্যুক্ত আয়াত ও হাদীছগুলোর ব্যাখ্যায় মুফাসসির ও ভাষ্যকারগণ আল-মুলক, আস-সুলতান, আল-ইমারাহ, আল-ইমাম, আল-আমীর, আল-খুলাফা, আল-উমারা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করেছেন, যেগুলো পরস্পর মোটেও সাংঘর্ষিক নয়; বরং সমার্থক। আর শব্দগুলোর মূল মর্মার্থ নিশ্চিতভাবে শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথেই সম্পর্কিত।

(২) ভাষ্যকারগণের পক্ষ থেকে উক্ত ব্যাখ্যার বিপরীতে ভিন্ন কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। অর্থাৎ কেউই উক্ত আয়াত ও হাদীছগুলোর ব্যাখ্যায় রাষ্ট্রীয় বায়‘আত ছাড়া অন্য কোনো বায়‘আতের বৈধতার কথা উল্লেখ করেননি।

(৩) বায়‘আত সম্পর্কিত হাদীছগুলোকে অনেক মুহাদ্দিছ ও ফক্বীহ ‘প্রশাসন ও নেতৃত্ব’ অধ্যায়ের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের এই কর্ম প্রমাণ করে, বায়‘আত শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অনুষঙ্গ, অন্য কোনো পাত্রে যার অপব্যবহার হতে পারে না।

(৪) বায়‘আতের ব্যাপারটি রাষ্ট্রযন্ত্র ছাড়া অন্য কোনো দল, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত করার কোনো নজির সালাফে ছালেহীন থেকে পাওয়া যায় না।

(৫) রাষ্ট্রীয় বায়‘আত ছাড়া অন্য বায়‘আতকে উলামায়ে কেরাম নাকচ করেছেন; বরং বিদ‘আত ও অবৈধ বলেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আমরা উলামায়ে কেরামের বক্তব্য দেখবো ইনশাআল্লাহ।

(৬) দলীয় বায়‘আতের পক্ষে যা কিছু বলা হয়, তার সবগুলোই শুবুহাত তথা সংশয় ও বিভ্রাট। পরবর্তীতে আমরা এসব সংশয় ও বিভ্রাট সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

(৭) তাছাড়া শারঈ নানাবিধ দণ্ডবিধি বাস্তবায়নের বিষয়টি কেবল রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে সম্পর্কিত, যার সাথে বায়‘আতের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।

সুতরাং মুসলিম জাহানের একক খলীফা বা রাষ্ট্রবিভক্তির পর রাষ্ট্রনেতা ছাড়া অন্য কারো জন্য বায়‘আত বৈধ হতে পারে না। ওয়াল্লাহু তা‘আলা আ‘লাম।

(ইনশা-আল্লাহ চলবে)

আব্দুল আলীম ইবনে কাওছার মাদানী

বি. এ. (অনার্স), উচ্চতর ডিপ্লোমা, এম. এ. এবং এম.ফিল., মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,
সঊদী আরব; অধ্যক্ষ, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।


[1]. দ্রষ্টব্য: আহমাদ মাহমূদ আলে মাহমূদ, আল-বায়‘আতু ফিল ইসলাম, পৃ. ৫৮।

[2]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৫১।

[3]. ছহীহ বুখারী, হা/৭১১১।

[4]. ফাতহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১৩/৭১-৭২।

[5]. আল-আজুর্রী, আশ-শারী‘আহ, ১/৩৮০।

[6]. ত্বহাবী, আল-আক্বীদাতুত ত্বহাবিয়্যাহ (আলবানীর টীকাসহ), পৃ. ৬৮-৬৯।

[7]. আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যাহ, ৯/২৮০।

[8]. মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিল ইসলামী, ৫/৩০৯-৩১০।

[9]. ইবনু আত্বিয়্যাহ, আল-মুহার্রারুল ওয়াজীয ফী তাফসীরিল কিতাবিল আযীয, ৫/১২৯।

[10]. সুয়ূত্বী, আদ-দুর্রুল মানছূর ফিত-তাফসীরি বিল-মা’ছূর, ৭/৫১৭।

[11]. দ্রষ্টব্য: ইবনু আত্বিয়্যাহ, আল-মুহার্রারুল ওয়াজীয ফী তাফসীরিল কিতাবিল আযীয, ৫/২৯৯; আবূ বকর আল-জাযায়েরী, আয়সারুত তাফাসীর লিকালামিল আলিয়্যিল কাবীর, ৫/৩৩৩।

[12]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭১৭০, ২১৫৬১; সুনানে আবূ দাঊদ, হা/৪৭৫৮; সুনানে তিরমিযী, হা/২৮৬৩।

[13]. ইবনু বাত্ত্বাল, শারহু ছহীহিল বুখারী, ৮/২৮১।

[14]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭১৭০, ২১৫৬১; সুনানে আবূ দাঊদ, হা/৪৭৫৮; সুনানে তিরমিযী, হা/২৮৬৩, হাদীছটি ‘ছহীহ’।

[15]. দালীলুল ফালিহীন লিতুরুক্বি রিয়াযিছ ছালেহীন, ৫/১৩২।

[16]. কাশফুল মুশকিল মিন হাদীছিছ ছহীহাইন, ৩/৫৯৫-৫৯৬।

[17]. দ্রষ্টব্য: ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১৩/৭; নববী, আল-মিনহাজ শারহু মুসলিম ইবনিল হাজ্জাজ, ১২/২৩৮।

[18]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৪৪।

[19]. দালীলুল ফালিহীন লিতুরুক্বি রিয়াযিছ ছালেহীন, ৫/১৩২।

[20]. ছহীহ মুসলিমের ৩৪ নং অধ্যায়ের ৮ নং অনুচ্ছেদ দ্রষ্টব্য।

[21]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৪৪।

[22]. শাওকানী, নায়লুল আওতার, ৭/২০৩।

[23]. ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১৩/৭।

[24]. ছহীহ বুখারী, হা/৭০৫৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭০৯।

[25]. ছহীহ মুসলিমের ৩৪ নং অধ্যায়ের ৮ নং অনুচ্ছেদ দ্রষ্টব্য।

[26]. দ্রষ্টব্য: ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী, ১৩/৮; ক্বসত্বল্লানী, ইরশাদুস সারী লিশারহি ছহীহিল বুখারী, ১০/১৬৯; বাদরুদ্দীন আল-আইনী, উমদাতুল ক্বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ২৪/১৭৯।

[27]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৫৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৪২।

[28]. নায়লুল আওতার শারহু মুনতাকাল আখবার, ৭/২০৩।

Magazine