কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

কেমন ছিলেন নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

post title will place here

নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণের দৃষ্টান্ত হলো এমন এক ব্যক্তির ন্যায়, যিনি একটি গৃহ নির্মাণ করলেন, তাকে সুশোভিত ও সুন্দর করলেন, কিন্তু এক কোণে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল। অতঃপর লোকজন এর চারপাশে ঘুরে আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল, যদি একটি ইট এই জায়গায় স্থাপন করা হতো (তবে সেটা আরো বেশি সুন্দর হতো)! নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমিই সেই ইট আর আমিই সর্বশেষ নবী’।[1]

তিনি সকল নবীর মাঝে শ্রেষ্ঠ নবী। তাঁর পরে আর কোনো নবী আসবেন না। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ, তাঁর দাদার নাম আব্দুল মুত্তালিব। মায়ের নাম আমেনা। তিনি বর্তমান সঊদী আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের সম্ভ্রান্ত বনূ হাশেম গোত্রে ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন।[2]

(১) নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : যেমনটি আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন,وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ ‘(হে নবী!) আমি আপনাকে জগদ্বাসীর জন্য কেবল রহমত করেই পাঠিয়েছি’ (আল-আম্বিয়া, ২১/১০৭)। ইমাম ত্ববারী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, أَنَّ اللَّهَ أَرْسَلَ نَبِيَّهُ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم ‌رَحْمَةً ‌لِجَمِيعِ ‌الْعَالَمِ، ‌مُؤْمِنِهِمْ ، ‌وَكَافِرِهِمْ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জগতের বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সকলের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন। মুমিনকে আল্লাহ তাআলা তাঁর মাধ্যমে হেদায়াত দান করবেন এবং তাঁর উপর ঈমান আনা এবং তিনি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যে পয়গাম নিয়ে এসেছেন, সে অনুযায়ী আমল করার কারণে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন আর এই উম্মতের অবিশ্বাসীকে তাঁর কারণে পূর্ববর্তী উম্মতের অবিশ্বাসীর মতো তড়িৎ শাস্তি দেওয়া থেকে রক্ষা করবেন’।[3]

(২) উম্মতের জন্য নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চিন্তা- আমার উম্মতের কী অবস্থা হবে? আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনিল আছ রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেছেন, ‘নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াত পাঠ করলেন, যাতে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর একথা উল্লেখ আছে, “হে আমার রব! এসব প্রতীমা বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে, সে আমার দলভুক্ত হবে”। আর সেই আয়াতও পড়লেন, যেখানে ঈসা আলাইহিস সালাম বলেন, “যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দেন, তবে তারা তো আপনারই বান্দা। আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন, তবে নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”। অতঃপর নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই হাত তুলে বললেন, اللهُمّ أُمّتِي أُمّتِي “হে আল্লাহ! আমার উম্মত! আমার উম্মত!” এবং তিনি কেঁদে ফেললেন। তখন আল্লাহ তাআলা বললেন, হে জিবরীল আলাইহিস সালাম! মুহাম্মাদ আলাইহিস সালাম-কে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন, তিনি কেন কাঁদেন? যদিও তোমার প্রতিপালক সর্বাধিক পরিজ্ঞাত। অতঃপর জিবরীল আলাইহিস সালাম নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে তা জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ইতোপূর্বে) যা বলেছিলেন, তা তিনি তাঁকে জানান; যদিও আল্লাহ তাআলা সব জানেন। অতঃপর আল্লাহ তাআলা বললেন, হে জিবরীল! মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গিয়ে বলুন, আমি অচিরেই আপনার উম্মতের ব্যাপারে আপনাকে সন্তুষ্ট করব; অসন্তুষ্ট করব না’।[4]

আরেক হাদীছে উদাহরণ টেনে নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের প্রতি তাঁর দরদকে এভাবে বুঝিয়েছেন,مَثَلِي وَمَثَلُكُمْ كَمَثَلِ رَجُلٍ أَوْقَدَ نَارًا فَجَعَلَ الْجَنَادِبُ وَالْفَرَاشُ يَقَعْنَ فِيهَا وَهُوَ يَذُبُّهُنَّ عَنْهَا وَأَنَا آخِذٌ بِحُجَزِكُمْ عَنِ النَّارِ وَأَنْتُمْ تَفَلَّتُونَ مِنْ يَدِي ‘আমার ও তোমাদের দৃষ্টান্ত সে ব্যক্তির ন্যায়, যে আগুন জ্বালাল, অতঃপর ফড়িং দল, পতঙ্গরাজি তাতে পড়তে লাগল। আর সে ব্যক্তি তাদেরকে তা থেকে তাড়াতে লাগল। অনুরূপভাবে আমিও আগুন থেকে রক্ষার জন্য তোমাদের কোমর ধরে টানছি আর তোমরা আমার হাত থেকে ছুটে যাচ্ছ’।[5]

উম্মতের প্রতি নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী পরিমাণ দরদি ছিলেন, তা জানার জন্য কুরআনুল কারীমের এই একটি আয়াতই যথেষ্ট,﴿فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَفْسَكَ عَلَى آثَارِهِمْ إِنْ لَمْ يُؤْمِنُوا بِهَذَا الْحَدِيثِ أَسَفًا﴾ ‘সম্ভবত আপনি ওদের পিছনে পরিতাপ করতে করতে স্বীয় প্রাণনাশ করে ফেলবেন, যদি ওরা এই বাণীর প্রতি ঈমান আনয়ন না করে’ (আল-কাহফ, ১৮/৬)

মক্কার অলিগলিতে ইসলামের দাওয়াত দিতে দিতে তিনি এক পর্যায়ে তায়েফবাসীর কাছে পৌঁছে গেলেন তাওহীদের বাণী নিয়ে। তাদেরকে দেখাতে চেয়েছিলেন মুক্তির পথ। কিন্তু তাদের অজ্ঞতা তাদের উপর চেপে বসল। চরম ধৃষ্টতা দেখিয়ে তারা নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর চড়াও হলো। পাথরের আঘাতে তাঁকে জর্জরিত করল। আঘাতে আঘাতে তাঁকে রক্তাক্ত করে ফেলল। আল্লাহ তাআলা পাঠালেন জিবরীল আলাইহিস সালাম-কে। জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন,إِنّ اللهَ عَزّ وَجَلّ قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَمَا رَدّوا عَلَيْكَ وَقَدْ بَعَثَ إِلَيْكَ مَلَكَ الْجِبَالِ لِتَأْمُرَهُ بِمَا شِئْتَ فِيهِمْ قَالَ فَنَادَانِي مَلَكُ الْجِبَالِ وَسَلّمَ عَلَيّ ثُمّ قَالَ يَا مُحَمّدُ إِنّ اللهَ قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَأَنَا مَلَكُ الْجِبَالِ وَقَدْ بَعَثَنِي رَبّكَ إِلَيْكَ لِتَأْمُرَنِي بِأَمْرِكَ فَمَا شِئْتَ إِنْ شِئْتَ أَنْ أُطْبِقَ عَلَيْهِمُ الْأَخْشَبَيْنِ ‘আপনার ক্বওম আপনার উদ্দেশ্যে যা বলেছে এবং আপনার সাথে তারা যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, আল্লাহ তা শ্রবণ করেছেন। তিনি আপনার কাছে, যাতে আপনি তাঁকে আপনার অভিপ্রায় অনুসারে আদেশ করতে পারেন। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তখন পাহাড়ের ফেরেশতা আমাকে সম্বোধন করে সালাম দিলেন এবং বললেন, আমি পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা, হে মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনার উদ্দেশ্যে আপনার ক্বওমের বক্তব্য আল্লাহ শুনেছেন। আমি পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা, তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন যাতে আপনি আপনার ইচ্ছার বিষয়ে আমাকে নির্দেশ করতে পারেন। আপনি যদি চান, তাহলে আমি দুই পাহাড়ের মাঝে এদেরকে চাপা দিব’। কিন্তু দয়ার সাগর নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন,بَلْ أَرْجُو أَنْ يُخْرِجَ اللهُ مِنْ أَصْلَابِهِمْ مَنْ يَعْبُدُ اللهَ وَحْدَهُ لَا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا ‘(না, আমি এটা চাই না) বরং আমি আশা রাখি, আল্লাহ তাআলা এদের বংশধরদের মাঝে এমন মানুষ সৃষ্টি করবেন, যারা এক আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কোনো কিছুকে শরীক করবে না’।[6]

নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ يَدْعُو بِهَا فَيُسْتَجَابُ لَهُ فَيُؤْتَاهَا وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لِأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَة ‘প্রত্যেক নবীকে এমন একটি বিশেষ দু‘আর অধিকার দেওয়া হয়েছে, যা কবুল করা হবে এবং তাঁকে তাঁর কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি প্রদান করা হবে। আর আমি আমার দু‘আ ক্বিয়ামতের দিন আমার উম্মতের শাফা‘আতের জন্য রেখে দিয়েছি’।[7] ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘এই হাদীছে উম্মতের প্রতি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পূর্ণ মায়া-মমতা, দরদ এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ কল্যাণ সাধনের প্রতি দৃষ্টিপ্রদানের ক্ষেত্রে তাঁর প্রয়াসের বিবরণ রয়েছে। তাই তো তিনি এই উম্মতের জন্য তাঁর বিশেষ দু‘আ তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য রেখে দিয়েছেন’।[8]

(৩) নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আচরণে বদলে গেল ইয়াহূদীর জীবন : ছোটদেরও ভুল হয়, বড়দেরও ভুল হয় আর তা ক্ষমা করে দেওয়াটাই নবীর আদর্শ। আমার নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে ক্ষমা করতে ভালোবাসতেন। একজন দুষ্ট ইয়াহূদী যার নাম যায়েদ ইবনু সা‘নাহ একবার নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে কিছু ধার নিয়েছিলেন। পরিশোধের সময় এখনো শেষ হয়নি। আরো তিন দিন বাকী আছে। নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁটছিলেন। সাথে ছিলেন উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু। এমন সময় হঠাৎ সেই ইয়াহূদী তেড়ে এসে নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাপড় গুটিয়ে ধরল। কণ্ঠে তার কর্কশ স্বর। গলায় বজ্রধ্বনি, তোমরা বনী আব্দুল মুত্তালিবের লোকেরা ঋণ পরিশোধে বড় টালবাহানা কর!

উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর মতো বীর-বাহাদুরের সামনে প্রিয় নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে এমন আচরণ! তিনি আর সহ্য করতে পারলেন না! গর্জে উঠলেন উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু। নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘উমার! আমি এবং সে দু’জনই তোমার কাছে অন্য কিছুর মুখাপেক্ষী ছিলাম, তুমি আমাকে সুন্দরভাবে ঋণ পরিশোধ করতে বলতে আর তাকে বলতে সুন্দরভাবে পাওনা তলব করতে’।

সুবহানাল্লাহ! কত সুন্দর উত্তর! একজন ছাহাবীকে বলছেন, নিজেকে সৎ উপদেশ দেওয়ার জন্য। কত বড় বিনয়! নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আসলে ঋণ পরিশোধের আরো তিন দিন বাকি আছে’। এরপর উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে বললেন, ‘তার পাওনা পরিশোধ করে দিন আর আপনি যে তাকে শাসিয়েছেন এজন্য তাকে আরো ২০ ছা‘ পরিমাণ বাড়িয়ে দিন!’ নবী করীম রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর মহানুভবতা ইয়াহূদীর মনে দাগ কাটল।

নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই অনুপম আচরণে বদলে গেল ইয়াহূদীর মন। অন্ধকার ছেড়ে সে পেল আলোর সন্ধান। আলোকিত জীবনের, আলোকিত ভুবনের সন্ধান। নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষমা ও মহানুভবতা দেখে ইসলাম গ্রহণ করে সে ধন্য হলো চিরজীবনের জন্য।[9]

রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চরিত্র :

(ক) যার চরিত্রে বিন্দু পরিমাণ দাগ নেই তিনি হলেন মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আল্লাহ তাআলা স্বয়ং তাঁর চরিত্র সম্পর্কে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, ﴿وَإِنكَ لَعَلى خُلُقٍ عَظِيم﴾ ‘নিঃসন্দেহে আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী’ (আল-ক্বলম, ৬৮/৪)

স্বভাব-চরিত্র, আচার-ব্যবহার উসওয়ায়ে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দুনিয়ার সকল আদর্শকে ছেড়ে তাঁর আদর্শে আদর্শিত হওয়া আবশ্যক। আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শে আদর্শিত হতে হবে। এমনকি ইবাদত-বন্দেগী, আক্বীদা-বিশ্বাস, আচার-ব্যবহার, আদব-আখলাক্ব, স্বভাব-চরিত্র সকল বিষয়ে তাঁর আদর্শে আদর্শিত হতে হবে। তাঁর আদর্শকে বাদ দিয়ে দুনিয়ার কোনো আদর্শ শান্তি বয়ে আনতে পারে না।

(খ) নবুঅতের পূর্বের ঘটনা : আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যখন প্রথম অহী অবতীর্ণ হলো এবং তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরলেন, ঐ সময় উম্মুল মুমিনীন খাদীজা রাযিয়াল্লাহু আনহা যে কথাগুলো বলে তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, তা তাঁর উন্নত কর্ম ও চরিত্রের এক অসাধারণ সার্টিফিকেট। ছহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মুল মুমিনীন খাদীজা রাযিয়াল্লাহু আনহা-এর কাছে আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছিলেন,لَقَدْ خَشِيتُ عَلَى نَفْسِى ‘আমি (আজ যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি, এতে) আমার প্রাণের আশঙ্কা করছি’। উম্মুল মুমিনীন তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন,كَلّا أَبْشِرْ فَوَاللهِ لاَ يُخْزِيكَ اللهُ أَبَدًا إِنّكَ لَتَصِلُ الرّحِمَ وَتَصْدُقُ الحَدِيثَ وَتَحْمِلُ الكَلّ وَتَقْرِي الضّيْفَ وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الحَقِّ ‘না, এ হতেই পারে না। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন! আল্লাহ তাআলা কখনো আপনাকে অপদস্থ করবেন না (আল্লাহ তাআলা তো আপনাকে সম্মানিত করবেন), কারণ আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করেন, সত্য কথা বলেন, নিরুপায় ব্যক্তির ভার বহন করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করেন’ (এই সকল গুণের অধিকারী যিনি, তাকে আল্লাহ তাআলা সম্মানিত করবেন, তাকে তিনি কখনো অপদস্থ করবেন না)।[10]

খাদীজা রাযিয়াল্লাহু আনহা যেই মানুষটির সাথে ইতোমধ্যে ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন, তিনি সাক্ষ্য দিচ্ছেন,وَتَصْدُقُ الحَدِيث ‘আপনি সত্য কথা বলেন’ (কখনোই মিথ্যা কথা বলেননি)। অতএব, আল্লাহ তাআলা আপনাকে অপমাণিত করবেন না। 

(গ) দাওয়াতের প্রথম দিকে ছাফা পাহাড়ের ঘটনা : কুরআন মাজীদে নিকটাত্মীয়দের দাওয়াত দেওয়ার আদেশ নাযিল হওয়ার পর নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাফা পাহাড়ে উঠলেন এবং উচ্চৈঃস্বরে বললেন, ‘ইয়া ছবাহা-হ’ অর্থাৎ বিপদ! বিপদ! কুরাইশদের লোকেরা পাহাড়ের সামনে উপস্থিত হলো। তিনি তাদের লক্ষ্য করে বললেন,أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَخْبَرْتُكُمْ أَن خَيْلًا تَخْرُجُ مِنْ سَفْحِ هَذَا الجَبَلِ، أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِي؟ ‘আমি যদি আপনাদের বলি যে, এক অশ্বারোহী সেনাদল এই পাহাড়ের ওপার থেকে (আপনাদের উপর আক্রমণ করার জন্য) বের হচ্ছে, তবে কি আপনারা আমার কথা বিশ্বাস করবেন?’ সকলে বলল,مَا جَربْنَا عَلَيْكَ كَذِبًا অর্থাৎ ‘আমরা আপনাকে কখনো মিথ্যা বলতে দেখিনি’। তখন তিনি বললেন, ‘আমি আপনাদেরকে এক কঠিন শাস্তির ব্যাপারে সতর্ক করছি’।[11]

এই ঘটনায় অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। তবে এখানে প্রাসঙ্গিক বিষয়টি হচ্ছে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে তাঁর জাতির সাক্ষ্য, مَا جَربْنَا عَلَيْكَ كَذِبًا অর্থাৎ ‘আমরা আপনাকে কখনোই মিথ্যা বলতে শুনিনি।’

(ঘ) ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ ছহীহ বুখারীতে হিরাক্লিয়াসের সাথে আবূ সুফিয়ানের সাক্ষাৎ ও কথোপকথনের বিখ্যাত ঘটনা বর্ণনা করেছেন, আবূ সুফিয়ান তখনো ইসলাম কবুল করেননি। তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে শামে গিয়েছিলেন। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের সংবাদ বাদশার নিকট পৌঁছেছিল। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে আরো জানতে চাচ্ছিলেন। তো আদেশ দিলেন, এখানে যদি আরবের কেউ থাকে তাকে আমার কাছে নিয়ে আসো, আমি আরবের নবী সম্পর্কে কিছু জানতে চাই। আবূ সুফিয়ান শামে ছিলেন, তাকে হিরাক্লিয়াসের সামনে হাযির করা হলো। হিরাক্লিয়াস অনেকগুলো প্রশ্ন করলেন। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল,فَهَلْ كُنْتُمْ تَتهِمُونَهُ بِالكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَال؟ ‘তিনি এখন যা বলছেন, তার আগে তোমরা কি কখনো তাকে (মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিথ্যাকথনে অভিযুক্ত করেছ?’

আবু সুফিয়ান বলেন, আমি উত্তরে বললাম, না, এমন অভিজ্ঞতা আমাদের কখনো হয়নি, আমরা তাকে মিথ্যাবাদিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করতে পারিনি।

হিরাক্লিয়াস যে বিষয়গুলো জানতে চেয়েছিলেন, সে সম্পর্কে আবূ সুফিয়ানের উত্তর শোনার পর তিনি নিজেই একে একে সেই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। সত্যবাদিতা সংক্রান্ত প্রশ্নের ব্যাপারে বললেন, আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, তোমরা কি তাকে নবুঅত দাবির আগে মিথ্যাবাদিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করতে পেরেছ? তুমি বলেছ, অভিযুক্ত করতে পারনি। এ থেকে আমি বুঝতে পেরেছি, তিনি সত্য নবী। কারণ যে ব্যক্তি মানুষের ব্যাপারে মিথ্যা বলেন না, তিনি আল্লাহর ব্যাপারেও মিথ্যা বলতে পারেন না। পুরো ঘটনাটি ছহীহ বুখারীতে এসেছে। এটি হচ্ছে তাঁর (নবীজী) সম্পর্কে এমন এক ব্যক্তির সাক্ষ্য, যিনি ঐ সময় পর্যন্ত তাঁর প্রাণের দুশমন ছিলেন এবং তার মর্যাদাহানির সুযোগ খুঁজছিলেন। কিন্তু বিন্দু পরিমাণ দোষ খুঁজে বের করতে পারেননি। আমরা গর্ব করি, আমরা এমন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত, যার সম্পর্কে কোনো কাফের-মুশরিকও বিন্দু পরিমাণ দোষ খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়নি।

এটা ছিল আবু সুফিয়ান রাযিয়াল্লাহু আনহু কাফের থাকা অবস্থায় নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি সত্যবাদিতার স্বীকৃতি। 

(ঙ) আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাত্র মদীনায় হিজরত করে এসেছেন, বদরের যুদ্ধের আগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। মদীনার নেতৃস্থানীয় ছাহাবী সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু উমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় গেলেন। মক্কা-মদীনার মাঝে আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল, আসা-যাওয়া ছিল, তাদের মাঝে পরিচয়ও ছিল। সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু যখন মক্কায় যেতেন, তখন মক্কার সরদার উমাইয়া ইবনু খালাফের বাড়িতে মেহমান হতেন। উমাইয়া ইবনু খালাফ যখন ব্যবসার উদ্দেশ্যে শামের দিকে যেত, তখন মদীনায় এলে সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর বাড়িতে মেহমান হতো। জাহেলী যুগ থেকেই এর প্রথা ছিল। (তাদের এই বন্ধুত্ব ছিল শরীআতে কাফের-মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্বের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পূর্বেকার ঘটনা)। সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু উমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় গিয়েছেন, কা‘বা তাওয়াফ করতে হবে। কিন্তু কা‘বা চত্বরে গিয়ে তাওয়াফ করবেন কীভাবে? তাঁরা মদীনার মুসলিম। মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুহাজির ছাহাবায়ে কেরামকে আশ্রয় দিয়েছেন। মক্কার কাফের নেতাদের চোখে তো এরা বড় অপরাধী। উমাইয়া ইবনু খালাফ বলল, অপেক্ষা করুন, দুপুরবেলায় প্রখর রৌদ্রের কারণে লোকজন কা‘বা চত্বরে থাকে না, নিজ নিজ ঘরে থাকে। ঐ সময় কা‘বা চত্বর ফাঁকা থাকে, তখন আপনি গিয়ে তাওয়াফ করে আসবেন। সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু সেভাবেই দুপুরবেলা তাওয়াফ করতে বের হলেন। গিয়েছেন নিরিবিলি তাওয়াফ করার জন্য। তাওয়াফ করছেন, এমতাবস্থায় দেখা হয়ে গেল একেবারে আবূ জাহলের সাথে।

আবূ জাহল সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে দেখে বলে উঠল, مَنْ هَذَا الّذِي يَطُوفُ بِالكَعْبَةِ؟ ‘কে রে এখানে কা‘বা তাওয়াফ করে?’ সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, أَنَا سَعْدٌ ‘আমি সা‘দ’। আবু জাহল উত্তেজিত হয়ে বলল, বাহ! কী নিরাপদে কা‘বা তাওয়াফ করছ! অথচ তোমরা মদীনার লোকেরা মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সঙ্গীদের আশ্রয় দিয়েছ!

এভাবে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। উমাইয়া ইবনু খালাফ সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে থামাতে চেষ্টা করে আর বলে, لاَ تَرْفَعْ صَوْتَكَ عَلَى أَبِي الحَكَمِ فَإِنّهُ سَيِّدُ أَهْلِ الوَادِي ‘হে সা‘দ! আবুল হাকামের আওয়াজের উপরে তোমার আওয়াজ উচুঁ করো না। তিনি এই মক্কা উপত্যকার সরদার! একটু আস্তে কথা বলো। আস্তে কথা বলো।

কয়েকবার যখন উমাইয়া সা‘দ রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে থামাবার চেষ্টা করল, সা‘দ রাযিয়াল্লাহু আনহু বিরক্ত হলেন। বিরক্ত হয়ে উমাইয়া ইবনু খালাফকে লক্ষ্য করে বললেন,دَعْنَا عَنْكَ فَإِنِّي سَمِعْتُ مُحَمّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَزْعُمُ أَنّهُ قَاتِلُكَ ‘আপনি আমার থেকে চলে যান, আমি মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে শুনেছি যে, তিনি আপনাকে হত্যা করবেন’।

একথা শুনে উমাইয়া ইবনু খালাফ আতঙ্কিত হয়ে বলে উঠল, إِيّايَ؟ ‘আমাকে?’ সা‘দ ইবনু মুআয রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হ্যাঁ’। তখন উমাইয়া ইবনু খালাফের আতঙ্কিত বাক্য,وَاللهِ مَا يَكْذِبُ مُحَمّدٌ إِذَا حَدّثَ ‘আল্লাহর কসম! মুহাম্মাদ যখন কথা বলেন, মিথ্যা বলেন না। উমাইয়া অস্থির হয়ে বাড়ি ফিরল। বাড়ি এসে বউকে বলল, শুনেছ, আমার ইয়াছরিবী ভাই কী বলেছে? বউ বলল, কী বলেছে? উমাইয়া বলল, সে নাকি মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, তিনি আমাকে হত্যা করবেন। একথা শুনে স্ত্রীও বলে উঠল, فَوَاللهِ مَا يَكْذِبُ مُحَمّدٌ ‘আল্লাহর কসম! মুহাম্মাদ কখনো মিথ্যা বলেন না’।[12]

বদরের যুদ্ধের সময় মক্কার সরদারেরা যখন মক্কা থেকে বের হলো, তখন উমাইয়া ইবনু খালাফের স্ত্রী স্বামীকে বলল, তুমি কি ভুলে গেছ, তোমার ইয়াছরিবী ভাই কী বলেছিল? স্ত্রীর একথা উমাইয়ার মনে এতই প্রভাব বিস্তার করল যে, তখন সে যুদ্ধে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। তখন আবূ জাহল বলল, তুমি এ অঞ্চলের সরদার। কাজেই অন্তত ২/১ দিন আমাদের সাথে চলো। পরবর্তীতে সে বের হয়, অতঃপর যেখানেই কাফেলা যাত্রাবিরতি করে, উমাইয়া তার সওয়ারিটা কাছেই বেঁধে রাখে। কোনো বিপদ হলেই, যেন দ্রুত সওয়ারিতে লাফিয়ে চড়ে সোজা মক্কায় ফিরতে পারে। এই উমাইয়া বেলাল রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে উত্তপ্ত রৌদ্রে শুইয়ে তাঁর বুকের উপর ভারী পাথর চাপা দিত এই খলনায়ক উমাইয়া।

কিন্তু পরে কী ঘটনা ঘটেছিল? ইতিহাস কী বলে? ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে, বদরের প্রান্তরে ছাহাবায়ে কেরাম ৭০ জন বড় বড় কাফের নেতাদেরকে হত্যা করে আর ৭০ জনকে বন্দি করা হয়। এর মধ্যে জাহান্নামের নিকৃষ্ট প্রাণী উমাইয়া ইবনু খালাফও ছিল, তাকে বেলাল রাযিয়াল্লাহু আনহু তরবারি দিয়ে হত্যা করে।

এই ঘটনা টেনে আনার উদ্দেশ্য হলো, উমাইয়া ইবনু খালাফ এবং তার স্ত্রীও কসম করে বলেছিল, মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই মিথ্যা বলেননি, বলতেই পারে না।তাঁর কথা নিতান্তই সত্য। তারা কাফের থাকা অবস্থায়ও স্বীকার করত মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন সত্যবাদী। জীবনে কখনোই একটি মিথ্যাও বলেননি। এটা ছিল নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শের এক মহান গুণ। যদি কোনো মুসলিম এই গুণটি গ্রহণ করে, দুনিয়াতে তাঁর মর্যাদা বেড়ে যায়, সকল দল ও মতের মানুষেরা তাকে ভালোবাসে। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এরকম অসংখ্য গুণ আছে, যা গণনা করে শেষ করা যাবে না। যার সমুন্নত চরিত্র সম্পর্কে আল্লাহ তাআলাই সাক্ষ্য দিয়েছেন, তার জন্য একটি আয়াতই যথেষ্ট وَإِنكَ لَعَلى خُلُقٍ عَظِيمٍ ‘নিশ্চয়ই আমি সুমহান চরিত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন’ (আল-ক্বলম, ৬৮/৪)

মুহাম্মাদ সাইফুর রহমান গাজী

শিক্ষার্থী, হাটহাজারী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।


[1]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৩৫।

[2]. রহমাতুল লিল আলামীন, ১/৪০; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৫৪।

[3]. তাফসীরে ত্ববারী, ১৮/৫৫২।

[4]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০২।

[5]. ছহীহ মুসলিম, হা/২২৮৫।

[6]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৯৫; ছহীহ বুখারী, হা/৩২৩১।

[7]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৯।

[8]. শারহে মুসলিম, ৩/৭৫।

[9]. মুসতাদরাকে হাকেম, হা/২২৩৭; সুনান বায়হাক্বী, ৭/৪৮০।

[10]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৯৮২।

[11]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৯৭১।

[12]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৬৩২।

Magazine