উত্তর: জিনেরা মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং বিভিন্নভাবে আক্রমণ করে কষ্ট দেয়। কখনো জিনেরা মানুষকে মেরে ফেলে। কখনো বা পাথর নিক্ষেপ করে এবং বিভিন্নভাবে ভয় দেখায়। জিনদের এ সকল কর্ম হাদীছ এবং বিভিন্ন বাস্তব ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত (ছহীহ বুখারী, হা/৩২৯৭-৩২৯৮ ও ৩৩১০-৩৩১১)। নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খন্দক যুদ্ধের দিন জনৈক ছাহাবীকে তার স্ত্রীর কাছে যাওয়ার অনুমতি দেন। কারণ তিনি নতুন বিবাহ করেছিলেন। অতঃপর যুবক ঘরে ফিরে দেখলেন যে, স্ত্রী ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। এ দৃশ্য দেখে তিনি তার প্রতি মনক্ষুণ্ন হলেন। স্ত্রী বললেন, ঘরে প্রবেশ করুন। ঘরে প্রবেশ করে দেখলেন বিছানার উপরে একটি সাপ প্যাঁচ দিয়ে বসে আছে। যুবকটির হাতেই ছিল বর্শা। বর্শা দিয়ে সাপকে আঘাত করার সাথে সাথে সাপটি মারা গেল এবং উক্ত ছাহাবীও মৃত্যুবরণ করলেন। সাপ এবং ছাহাবীর মধ্যে কে আগে মারা গেল, তা জানা যায়নি। এই সংবাদ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পৌঁছার পর তিনি ঘরের মধ্যে বসবাসকারী পিঠের উপরে রেখা বিশিষ্ট এবং লেজহীন ছোট ছোট সাপগুলো ব্যতীত অন্যগুলো মারতে বললেন (ছহীহ মুসলিম, হা/২২৩৬; ফৎওয়া আরকানুল ইসলাম, প্রশ্ন-৪৩)। উক্ত ঘটনা এবং সূরা আল-বাক্বারার ২৭৫ নং আয়াত থেকে জানা যায় যে, জিনেরা মানুষের উপরে আক্রমণ করে এবং নানাভাবে কষ্ট দেয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা সূদ খায়, তারা ক্বিয়ামতে দন্ডায়মান হবে যেভাবে দন্ডয়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আছর করে ভারসাম্যহীন পাগলের মত করে দেয়’ (আল-বাক্বারা, ২৭৫)। আর জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য হাদীছে বর্ণিত দু‘আগুলো পাঠ করতে হবে। তার মধ্যে আয়াতুল কুরসী অন্যতম। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শয়নকালে যদি কেউ আয়াতুল কুরসী পাঠ করে, তাহলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান (জিন) তার নিকটবর্তী হতে না পারে (ছহীহ বুখারী, হা/২৩১১; মিশকাত, হা/২১২৩)। এছাড়া সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত এবং সূরা আল-ফালাক্ব ও আন-নাস পড়া যায়।
প্রশ্নকারী : কাওছার আহমাদ
দিনাজপুর।