কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (১৮): ফরয, নফল প্রত্যেক ছালাতের শুরুতেই কি ছানা পড়া লাগবে?

উত্তর: প্রত্যেক ছালাতে হোক ফরজ কিংবা নফল, তাকবীরে তাহরীমার পর ও ক্বিরাআত পড়ার আগে ছানা পড়া সুন্নাত। আবূ হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীরে তাহরীমা ও ক্বিরাআতের মধ্যে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকতেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার পিতামাতা আপনার উপর কুরবান হোক, তাকবীর ও ক্বিরাআত এর মধ্যে চুপ থাকার সময় আপনি কী পাঠ করে থাকেন? তিনি বললেন, ‘এ সময় আমি বলি- اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِى وَبَيْنَ خَطَايَاىَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ ، اللَّهُمَّ نَقِّنِى مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ ، اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَاىَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ ‘হে আল্লাহ! আমার এবং আমার গুনাহের মধ্যে এমন ব্যবধান করে দাও যেমন ব্যবধান করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ্‌ আমাকে আমার গুনাহ হতে এমনভাবে পবিত্র করো যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়। হে আল্লাহ! আমার গুনাহকে বরফ, পানি ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও’ (ছহীহ বুখারী, হা/৭৪৪)। ইবনু হাযম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমরা এটাকে ফরয বলব না। কেননা এটা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি কর্ম। যার ব্যাপারে আদেশ করা হয়নি। সুতরাং তাঁর অনুসরণ করা উত্তম (আল মুহাল্লা, ৩/১২)। আবার রাতের নফল ছালাতে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, আব্দুর রহমান ইবনু আওফ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা যখন ছালাত আদায় করতেন তখন কীভাবে তাঁর ছালাত শুরু করতেন? জবাবে আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বললেন, রাতে যখন তিনি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছালাত আদায় করতে উঠতেন তখন এ দু’আটি পড়ে ছালাত শুরু করতেন, اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيلَ، وَمِيكَائِيلَ، وإسْرَافِيلَ، فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأرْضِ، عَالِمَ الغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، أَنْتَ تَحْكُمُ بيْنَ عِبَادِكَ فِيما كَانُوا فيه يَخْتَلِفُونَ، اهْدِنِي لِما اخْتُلِفَ فيه مِنَ الحَقِّ بإذْنِكَ؛ إنَّكَ تَهْدِي مَن تَشَاءُ إلى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ. ‘হে আল্লাহ! জিবরীল, মীকাঈল ও ইসরাফীলের প্রতিপালক, আসমান ও যমিনের স্রষ্টা, প্রকাশ্য ও গোপন বিষয়সমূহের জ্ঞানের অধিকারী। তোমার বান্দারা যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করে তুমিই সেগুলোর ফায়সালা করবে। সত্য ও ন্যায়ের যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করা হয়েছে সে বিষয়ে তুমি আমাকে পথ দেখাও। তুমিই তো যাকে ইচ্ছা সরল-সহজ পথ দেখিয়ে থাক (ছহীহ মুসলিম, হা/৭৭০)।

প্রশ্নকারী : নাহিদ বিন বাবুল

চারঘাট, রাজশাহী।


Magazine