বাংলাদেশের আহলেহাদীছদের সংগঠনগুলো নিয়ে আমার ভাবনাগুলো জমতে থাকে বহু আগে থেকে, সেই মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থা থেকে। কারণ তখন দেখতাম, আমাদের বাংলাদেশীদের মধ্যে যারা যে অঙ্গন থেকে সেখানে যাচ্ছেন, কেবল তারাই পরস্পর আন্তরিকতার সাথে মিশছেন; পরস্পরকে দাওয়াত দিচ্ছেন ও নিচ্ছেন। অন্যদেরকে দূরে রাখার চেষ্টা করছেন। অন্যদের ব্যাপারে এক ধরনের কানাঘুষা করছেন। এটা শুধু আহলেহাদীছদের ক্ষেত্রে ঘটত না; বরং অন্যদের ক্ষেত্রেই ঘটত।
মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন প্রশস্ত আঙিনায় এমন সংকীর্ণতা আমাকে খুবই অবাক, ব্যথিত ও মর্মাহত করত। ফলে আমাদের এমন অবস্থান ঠিক হচ্ছে কিনা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। বেরিয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল। সাংগঠনিক ইস্যু নিয়ে উলামায়ে কেরামের বক্তব্য ও মন্তব্য খুঁজতে থাকি। মূলত সেখান থেকেই ‘দল, সংগঠন, ইমারত ও বায়‘আত সম্পর্কে বিশিষ্ট উলামায়ে কেরামের বক্তব্য’ শীর্ষক বইটি প্রথমে সংকলন করি আরবী ভাষায়; পরবর্তীতে যার বঙ্গানুবাদ সম্পন্ন হয় ও প্রকাশিত হয় আল-হামদুলিল্লাহ।
তখন থেকে অদ্যাবধি বিশেষভাবে আহলেহাদীছ সংগঠনগুলোর উপর আমার হৃদয়গহীনে জমানো ভাবনাগুলোর সারসংক্ষেপ সম্প্রতি ‘আমার সংগঠন-ভাবনা’ শিরোনামে লিপিবদ্ধ করি। এই লেখাটির পেছনে আমার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সংগঠনের ব্যাপারে একটি সঠিক ধারণা তুলে ধরে অন্ধত্ব থেকে বের করে আনা এবং আমাদের একই আক্বীদা ও মানহাজের ভাইদের মধ্যকার দূরত্ব কমানো।
আল্লাহর কসম! আমি আসলে সংগঠনবিরোধী নই এবং আমি কারও ক্রীড়ানক ও পক্ষ হয়েও কথাগুলো বলছি না এবং আগেও কখনও বলিনি; বরং ইলমী আমানতের জায়গা থেকে কথাগুলো বলছি এবং কুরআন-হাদীছের আলোকে সালাফে ছালেহীনের বুঝনির্ভর নিরপেক্ষ অবস্থান এটাই।
[১]
এখানে সংগঠন বলতে শুধু বাংলাদেশের আহলেহাদীছদের দাওয়াতী সংগঠন উদ্দেশ্য। এখানে অন্য কোনো সংগঠনকে বুঝানো হয়নি। সুতরাং আমার কথাগুলো শুধু আমাদের আহলেহাদীছদের দাওয়াতী সংগঠনগুলোকে নিয়ে।
একটি জরুরী জ্ঞাতব্য, বাংলাদেশের আহলেহাদীছদের দাওয়াতী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন হলেও তাদের আক্বীদা, আমল, লেনদেন, আখলাক সবই এক রকম। এমনকি যারা আক্ষরিক অর্থে সংগঠনের নেতা, সদস্য বা সমর্থক হয়ে কাজ করেন না; বরং নিজেদের মতো করে দাওয়াতী কাজ করেন, কিন্তু সংগঠনের সাথে মিলেমিশে কাজ করতে আপত্তি করেন না, তারাও ঠিক ঐ একই বিষয় ধারণ ও লালন করেন। সেজন্য, নিঃসন্দেহে আহলেহাদীছগণ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ জনগোষ্ঠী আল-হামদুলিল্লাহ।
[২]
আমাদের সংগঠনগুলোর অবদান অনস্বীকার্য। যুগ যুগ ধরে সংগঠনগুলো এদেশে কুরআন-হাদীছের সঠিক ব্যাখ্যা দিয়ে যাচ্ছে। এসব সংগঠন যুগ যুগ ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সারাদেশে ইসলামের বাণী পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃত তাওহীদ ও সুন্নাতের আলো দিয়ে এদেশের প্রতিটি ঘরকে আলোকিত করার কাজ করে যাচ্ছে। যাবতীয় শিরক, বিদ‘আত, কুসংস্কার, অন্যায়-অনাচার ইত্যাদির বিরুদ্ধেও আমাদের সংগঠনগুলো অত্যন্ত সোচ্চার।
এদেশে অসংখ্য মসজিদ ও অগণিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করে যাচ্ছে সংগঠনগুলো। এদেশের শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও তাদের রয়েছে অসামান্য অবদান।
বিশেষ করে বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবদান রেখে চলেছে সংগঠনগুলো।
তারা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী।
বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির মাঝামাঝিতে অবস্থান করে সংগঠনগুলো দেশের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায়ও কাজ করে যাচ্ছে।
অসহায়, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ায় এসব সংগঠন। বিশেষ করে বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে তারা। এভাবে আরও অনেক অবদানের কথাই বলা যাবে, যেগুলো এসব সংগঠন রেখে যাচ্ছে।
[৩]
এরপর যে বিষয়টি খোলাসা করা জরুরী মনে করছি, তা হচ্ছে এই যে, মূলত আহলুল হাদীছ বা আহলেহাদীছ বা আছহাবুল হাদীছ বলতে শুধু জন্ম বা বংশসূত্রের কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে বুঝানো হয় না অথবা নির্দিষ্টভাবে কোনো জামা‘আত, দল, মাযহাব বা সংগঠনকে বুঝানো হয় না। বরং যিনিই যথার্থভাবে সালাফে ছালেহীনের মূলনীতি অনুযায়ী কুরআন ও ছহীহ হাদীছ বুঝবেন এবং সেই মোতাবেক আমল করবেন, তিনিই আহলেহাদীছ। মুক্তিপ্রাপ্ত দলের সদস্যদের মুক্তির মানদণ্ড হিসেবে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি ও আমার ছাহাবীবৃন্দ যে মানহাজের উপর আছি, (সেই মানহাজের উপর যারা থাকবে, তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে)’। সুতরাং এই মানহাজ অনুযায়ী যারাই চলবে, তারাই নাজাতপ্রাপ্ত, তারাই আহলেহাদীছ। আহলেহাদীছগণ বিভিন্ন সময় এবং বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগত নামে অভিহিত হয়েছেন। যেমন: আল-জামা‘আহ, আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ, আত-ত্বয়েফাহ আল-মানছূরাহ (বিজয়ী দল), আল-ফেরক্বাহ আন-নাজিয়াহ (মুক্তিপ্রাপ্ত দল), আহলুল হাদীছ/আহলেহাদীছ (কুরআন-হাদীছের অনুসারী), আছহাবুল হাদীছ, আহলুল আছার, সুন্নী, সালাফী ইত্যাদি। এসবগুলো নামেই তারা পরিচিত। তাদের নির্দিষ্ট একটি স্থানে সংঘবদ্ধ থাকা জরুরী নয়; বরং একেক জন একেক রকম দ্বীনী মিশন নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে পারেন।
তবে, হ্যাঁ, যদি তারা পৃথিবীর কোথাও কোথাও একই সাথে মিলেমিশে থাকতে পারেন, তাহলে নিঃসন্দেহে তা কল্যাণকর। কিন্তু বিশেষ পদ্ধতিতে মিলেঝুলে থাকতে গিয়ে যদি তা আরও বিভক্তি ও টুকরো টুকরো হওয়ার কারণ হয়, তাহলে অবশ্যই সংশোধনী দরকার।
নোট: কোনো দল যদি নিজেদেরকে ‘আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত’ বা ‘সুন্নী’ নামে নামকরণ করে হরহামেশা আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের নীতি বিরোধী কাজ করে এবং নানামুখী শিরক-বিদ‘আতই তাদের সাধনা হয়, তাহলে এই নামকরণ তাদের বিন্দুমাত্র উপকারে আসবে না; বরং তারা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত গণ্য হবে; যেমনটি আমাদের দেশের কিছু মানুষ ‘আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত’ বা ‘সুন্নী’ নাম দু’টির মতো পবিত্র নাম ব্যবহার করে শিরক-বিদ‘আতে নিমজ্জিত রয়েছে।
[৪]
বৃহত্তর পরিধিতে সংঘবদ্ধভাবে সহজে দ্বীন প্রচারের কাজ করার জন্যই মূলত দাওয়াতী সংগঠনের প্রয়োজন পড়ে। বিশেষ করে যেসব দেশে ইসলামী নিয়মে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় না বা যেসব দেশে মুসলিমরা সংখ্যালঘু বা যেসব দেশে মুসলিমরা বৈষম্যের শিকার, সেসব দেশে এ ধরনের সংগঠনের বেশি দরকার হয়। বরং কখনও কখনও এমন সংগঠন জরুরীও হয়ে পড়ে। কারণ এসব পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে মুসলিমদের সংগঠন বা প্লাটফর্ম না থাকলে তারা দুর্বল ও কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারে। সেই অর্থে সংগঠনের প্লাটফর্মে জমায়েত হয়ে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করাতে কোনো সমস্যা দেখি না; বরং হওয়াই দরকার, বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশের মতো প্রেক্ষাপটে।
[৫]
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আহলেহাদীছদের দাওয়াতী সংগঠন একটি থাকাই বেশি ভালো ও কল্যাণকর এবং অধিক শক্তি ও সামর্থ্যের পরিচায়ক। তবে, কোনো কারণবশত বা প্রয়োজনের তাগিদে একাধিক সংগঠন হয়ে গেলেও পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষের কিছু নেই; বরং পরস্পর উঠাবসা করা, স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখা, পরস্পরের সাথে সহযোগিতা বজায় রাখা উচিত। কারণ ওদের যে লক্ষ্য, এদেরও সেই একই লক্ষ্য। ওরা যা করতে চান, এরাও তাই করতে চান।
তাছাড়া অন্যদিক বিবেচনায় একাধিক প্লাটফর্ম তৈরি হলে কাজের পরিধি বাড়তে পারে, যেমনটি এখন কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে আল-হামদুলিল্লাহ; সেটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলেন বা অন্য কোনো দিক। এখন শুধু দরকার পরস্পরে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে কাজ করা, ভিন্ন সংগঠনে থাকলেও তা সম্ভব বৈকি। কারণ আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হলেও আমাদের সিলেবাস কিন্তু এক ও অভিন্ন।
পারস্পরিক এই স্বাভাবিক সম্পর্ক যতক্ষণ বজায় রাখা যাচ্ছে না, ততক্ষণ ‘অলা-বারা’ তথা আন্তরিক সম্পর্ক রাখা বা না রাখার আক্বীদা প্রশ্নবিদ্ধ রয়েই যাবে। এটা স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়; বরং আক্বীদার বিষয়। সংগঠনের ভ্রাতৃত্বই মুখ্য; ঈমানী ভ্রাতৃত্ব গৌণ— এমনটি হতে পারে না।
কেউ বলতে পারেন, ‘অলা-বারা’-এর নীতি লঙ্ঘন ও বিভক্তি-বিভাজনের যে বিষয়টি সাংগঠনিক ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়, তা তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফাউন্ডেশন, ট্রাস্ট ইত্যাদিতেও দেখা যায়। তাহলে এই বিষয়টি শুধু সংগঠনের সাথে জড়াচ্ছেন কেনো? এর উত্তর হচ্ছে, এ বিষয়টি আমি শুধু সংগঠনের সাথে জড়াতে নারাজ; বরং আমি বলতে চাই, এগুলো সর্বদা ও সব জায়গায় নিন্দনীয়। ফলে যেখানেই ঘটুক, সেখানেই সেগুলো বর্জনীয়। তবে এগুলো সংগঠনের ক্ষেত্রে পরিমাণে অনেক বেশি ঘটে এবং দেশব্যাপী, এমনকি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ব্যাপক আকারে ঘটে, অনেকটা মহামারির মতো। কিন্তু প্রতিষ্ঠান, ফাউন্ডেশন ইত্যাদির ক্ষেত্রে সেভাবে ঘটে না।
[৬]
দলাদলি, স্বদলপ্রীতি, পক্ষপাতিত্ব, একগুঁয়েমি ইত্যাদি, যাকে আরবীতে আছাবিয়্যাত, হিযবিয়্যাত ইত্যাদি বলা হয়— তার সবটা সবখানেই বর্জনীয়। মনে রাখতে হবে, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আছাবিয়্যাতের কবর রচনা করেছেন। ‘আনছার’ ও ‘মুহাজির’-এর মতো স্বীকৃত ও প্রশংসিত শব্দযুগল ও পক্ষদ্বয়কে উল্লেখ করে যখন দুইজন ছাহাবীর মধ্যকার ঝগড়া চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তখন রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এহেন কাজকে জাহিলী নিনাদ ও নোংরা-পচা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
ফলে আমাদের পক্ষপাতদুষ্ট হলে চলবে না। আমাদের কল্যাণচিন্তা, পরোপকারিতা, সাহায্য-সহযোগিতা, বেদনা-সহমর্মিতা, স্নেহ-ভালোবাসা, সম্মান-মর্যাদা ইত্যাদিকে সাংগঠনিক ও দলীয় দেওয়াল পেরিয়ে বাইরে বের করতেই হবে। সংগঠনের ঊর্ধ্বে উঠে আক্বীদা-মানহাজের বিশুদ্ধতার ভিত্তিতে পরহেযগারিতা, দ্বীনদারিতা, আমানতদারিতা, সততা, ন্যায়নিষ্ঠতা ইত্যাদির মূল্যায়ন করতেই হবে।
এগুলোকে স্রেফ দলীয় ফ্রেমে বাঁধলে তা হবে জাহিলিয়্যাত। এগুলোই হবে হিযবিয়্যাত বা দলাদলি ও ফেরক্বাবন্দি। এগুলোই হবে, আছাবিয়্যাত বা অন্ধভক্তি ও গোঁড়ামি।
অতএব, আমাদের সংগঠনগুলো থেকেও এই জাহিলিয়্যাত তাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, দাওয়াতী কাজে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা কাম্য, কিন্তু হিযবিয়্যাত ও আছাবিয়্যাত কাম্য নয়।
[৭]
সংগঠনের অধীনে কাজ করার সময় অবশ্যই কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন— (১) সংগঠনে কুরআন-হাদীছ ও সালাফে ছালেহীনের মূলনীতি পরিপন্থি কোনো কার্যক্রম থাকবে না। (২) সংগঠনে বায়‘আত বলে কিছু থাকবে না। কারণ, বায়‘আত কেবল মুসলিম রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে নির্দিষ্ট; কোনো সংস্থা, সংগঠন, দল বা জামা‘আতের নেতার জন্য তা আদৌ বৈধ নয়। অনুরূপভাবে কোনো শপথ, অঙ্গীকার ইত্যাদিও থাকবে না। ইসলামের যে অঙ্গীকারের মধ্যে আমরা রয়েছি, সেটাই যথেষ্ট। (৩) ঈমানী মহান ও প্রশস্ত ভ্রাতৃত্বের গণ্ডিকে সাংগঠনিক সংকীর্ণ ভ্রাতৃত্বের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করার অপচেষ্টা থেকে দূরে থাকতে হবে। (৪) সংগঠনের ভেতরের এবং বাইরের বিশুদ্ধ আক্বীদা, মানহাজ ও আমলের সকল মুসলিম ভাইয়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা থাকতে হবে, একে অন্যের দোষত্রুটি না বলে ভালো দিকগুলো বলতে হবে এবং কারো মধ্যে বিদ্যমান ত্রুটিবিচ্যুতি সংশোধনের জন্য হিকমতের সাথে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। (৫) সংগঠনকে দাওয়াতের একটি মাধ্যমের বাইরে অন্য কিছু মনে করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, দাওয়াতী সংগঠন কখনই হক্ব-বাতিলের মানদণ্ড বিবেচিত হতে পারে না। (৬) মানুষকে সংগঠনের পতাকাতলে আহ্বান না জানিয়ে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের স্নিগ্ধ ছায়াতলে আহ্বান জানাতে হবে। (৭) এখানে অন্ধভক্তি থাকা যাবে না। মনে রাখতে হবে, অতিভক্তি ও অন্ধভক্তি সর্বত্রই বর্জনীয়।
[৮]
জামা‘আতবদ্ধ থাকতে হবে— একথাই ঠিক। তবে জামা‘আত মানে শুধুই সংগঠন নয়। ইসলাম মানেই সংগঠন—এমন চিন্তাও রীতিমত সীমালঙ্ঘন। অথচ আমাদের অনেকের অবস্থা দেখে এমনটাই ফুটে ওঠে। যে ব্যক্তি যে সংগঠনে রয়েছেন, তার কাছে সেটাই হচ্ছে ‘জামা‘আত’। সেটাকে ঘিরেই তার যত জল্পনাকল্পনা। সেদিকে আহ্বান ও দল ভারী করাই তার একমাত্র মিশন। সেখানকার মানুষের জন্যই তার যত ভালোবাসা। এর বাইরে যেন তার দৃষ্টিসীমা অতিক্রম করেই না। বরং তার সেই গণ্ডির বাইরের সব মত, পথ, দল বা সংগঠনই তার চোখে বিভক্তি আর বিশৃঙ্খলা। বাইরের সবাই তার কাছে জামা‘আতত্যাগী। আর আমাদের পারস্পরিক কামড়াকামড়ি দেখে মনে হয়, সংগঠন অহী; বরং তারচেয়েও বেশি কিছু।
যুগ যুগ ধরে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কোনো-না কোনো সংগঠনের প্রভাব থাকার কারণে হয়তো অনেকের রক্ত-মাংসে এধরনের চিন্তা-চেতনা মিশে আছে, যা সম্পূর্ণ ভুল।
জামা‘আতবদ্ধ থাকার আয়াত ও হাদীছগুলোকে কেবল সংগঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া নেহায়েত অন্যায়। বরং হাদীছে উল্লিখিত জামা‘আত শব্দটির অর্থ অনেক ব্যাপক।
[৯]
হাদীছে উল্লিখিত জামা‘আত থেকে বের হয়ে যাওয়া এবং বের হওয়ার দুনিয়াবী কুফল ও পরকালীন আযাব সম্বলিত দলীলগুলোকে স্বজামা‘আতের বাইরের লোকদের উপর প্রয়োগ করা মারাত্মক সীমালঙ্ঘন। জাহিলী মৃত্যু হওয়া বা ইসলামের গণ্ডি থেকে তার গর্দান বের হয়ে যাওয়া বা জাহান্নামের দলভুক্ত হয়ে যাওয়া— এ ধরনের যত হাদীছ আছে, সেগুলোকে অন্য সংগঠন ও তার লোকজনের উপর প্রয়োগ করা মারাত্মক অপরাধ; সাথে সাথে হাদীছগুলোর চরম অপব্যাখ্যাও বটে। আর এটা কিন্তু কোনো ঠুনকো বিষয় নয়; বরং অত্যন্ত মারাত্মক ও ভয়াবহ বিষয়। কারণ, কেউ যখন কোনো দল বা সংগঠন ও এর সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যের স্বরূপ, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে গিয়ে এ হাদীছ (‘যে ব্যক্তি জামা‘আত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে গেল, সে ইসলামের রজ্জু তার গর্দান হতে খুলে ফেলল’) পেশ করছে, তখন কিন্তু সে প্রকারান্তরে তার জামা‘আত, দল বা সংগঠনের বাইরের সবাইকে ‘ইসলামের বাইরের’ বা ‘কাফের’ গণ্য করছে! -নাঊযুবিল্লাহ- সেটা সে মুখে বলুক বা না বলুক; স্বীকার করুক বা না করুক।
[১০]
আমাদের কোনো সংগঠনকে এই ভেবে গোঁ করে বসে থাকা যাবে না যে, মহান আল্লাহর যে রজ্জুকে আঁকড়ে ধরে বিভক্তি সৃষ্টি করতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেই মানদণ্ড শুধু সেই সংগঠনের মধ্যেই রয়েছে। ফলে, অন্যদেরকে তাদের পতাকাতলেই সমবেত হতে হবে এবং তাদের সংগঠনে যুক্ত হয়ে তাদের নেতৃত্বেই চলতে হবে। এভাবে গোঁ করে বসে থাকলে ক্ষত আরও গভীর হবে, বিভেদ আরও বাড়বে এবং একতাবদ্ধ থাকার আয়াত ও হাদীছগুলো মুখে আওড়ালেও কোনো ফায়দা হবে না। দলে ঢুকতেই হবে এবং ঢুকে অন্ধ হয়ে যেতে হবে— এ দুটোই ভুল ধারণা।
মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকের সংগঠনে যোগ দেওয়া জরুরী নয়। ফলে সংগঠনের সদস্য না হলে সে আমার শত্রু নয়। বরং যে কেউ সালাফী মানহাজের উপর অবিচল থেকে দ্বীন ও দুনিয়ার কাজ করে গেলেই যথেষ্ট এবং সালাফে ছালেহীনের মানহাজে থাকার কারণে সে আমার ভাই। দলের সদস্য না হয়েও পরস্পর হৃদ্যতা ও সহযোগিতা বজায় রাখা যায়।
[১১]
যেসব হাদীছে জামা‘আত ও ইমারতের কথা এসেছে, সেই জামা‘আত দ্বারা কোনোভাবেই প্রচলিত কোনো সংগঠনকে বুঝানো হয়নি। এসব হাদীছের ব্যাখ্যায় অগ্রজ-অনুজ সকল উলামায়ে কেরামের বক্তব্যে এটাই ফুটে উঠে। সুতরাং নিজের সংগঠনকে সেই জামা‘আত হিসেবে গণ্য করে উল্লসিত হওয়া এবং অন্যকে জামা‘আতচ্যুত দাবি করা বোকামি বৈকি! মনে রাখতে হবে, প্রচলিত কোনো সংগঠন থেকে বের হয়ে গেলে কেউ অমুসলিম হয়ে যায় না, হয় না দলত্যাগী ও জামা‘আতত্যাগীও।
প্রতিটি সংগঠন যতদিন এসব হাদীছ দিয়ে এই দলীল নিবে যে, অন্যরা জামা‘আতচ্যুত এবং হক্ব কেবল তাদের নিজেদের সাথেই রয়েছে, ততদিন ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং এমন চিন্তা-চেতনা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।
[১২]
সংগঠন স্রেফ দ্বীন প্রচারের মাধ্যম; এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। যাহোক, আল্লাহর দিকে দাওয়াত এবং এর মাধ্যমে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি আমাদের মূল লক্ষ্য। আর সংগঠন হচ্ছে সেই লক্ষ্য পূরণের একটি মাধ্যম মাত্র; এর বাইরেও অনেক মাধ্যম রয়েছে। সুতরাং এটিকে কোনোভাবেই লক্ষ্যে পরিণত করা যাবে না। কিন্তু আমাদের অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, সংগঠনই আমাদের মূল লক্ষ্য আর দ্বীন প্রচার গৌণ।
[১৩]
নিবেদিতপ্রাণ হতে হবে কেবল আল্লাহর জন্য, ইসলামের জন্য; কোনো সংগঠনের জন্য নয়। যদি বলা হয়, সংগঠনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হওয়া মানেই তো ইসলামের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হওয়া, তাহলে বলব, মধ্যস্থতায় না বলে সরাসরি ‘ইসলামের জন্য নিবেদিতপ্রাণ’ বলতে সমস্যা কোথায়? বরং ‘অমুক আমাদের সংগঠনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ’— এধরনের বাক্যে জাহিলিয়্যাতের দুর্গন্ধ স্পষ্ট। কারণ সাধারণত নিজ সংগঠনের প্রতি যে যত কট্টর ও অন্ধভক্ত এবং অন্য সংগঠনের প্রতি যত বেশি বিদ্বেষী, তাকে তত বেশি নিবেদিতপ্রাণ গণ্য করা হয়!
অনুরূপভাবে আমি মনে করি, একই কারণে কাউকে সংগঠনের কর্মী হিসেবে অভিহিত না করে দ্বীনের কর্মী হিসেবে আখ্যায়িত করা উচিত। সংগঠনের কর্মী, সংগঠনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ— এধরনের শব্দচয়নের মধ্যে জাহিলিয়্যাতের দুর্গন্ধ বিদ্যমান।
[১৪]
সংগঠন করতে গেলে অবশ্যই নেতৃত্বের প্রয়োজন আছে এবং যেখানে নেতৃত্ব আছে, সেখানে আনুগত্যেরও বিষয় আছে। সেজন্য, আল্লাহর অবাধ্যতা হয় না— এমন বিষয়ে যে-কোনো ভালো নেতৃত্বের আনুগত্য করা দরকার। অন্যথা কোনো কিছুই সুচারুরূপে চলতে পারে না। তবে ‘উলিল আমর’-এর অনুসরণ দ্বারা এখানে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির অনুসরণ বুঝানো হয়নি। সেজন্য এটিকে শুধু সাংগঠনিক নেতৃত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা যথার্থ নয়।
[১৫]
পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ, কাদা ছোড়াছুড়ি, পরস্পরকে প্রতিহত করার অপচেষ্টা তো করা যাবেই না। এমনকি মুরব্বী সংগঠন, প্রাচীন সংগঠন, বৃহত্তম সংগঠন; অপরদিকে সক্রিয় সংগঠন, প্রভাব বিস্তারকারী সংগঠন, মেহনতী দল, বলিষ্ঠ যুবশক্তি ইত্যাদি বিশেষণ নিয়ে গোঁ ধরে বসে থাকলে আর তৃপ্তির ঢেকুর তুললে দূরত্ব বাড়তেই থাকবে। মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যা অন্যের নেই। অতএব, নিজের বৈশিষ্ট্য নিয়ে অহমিকা প্রদর্শন করে ও অন্যকে তুচ্ছ জ্ঞান করে জিদ ধরে বসে থাকলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। বরং দূরত্ব ধীরে ধীরে বাড়বে; কমবে না।
অনুরূপভাবে আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি যে, ‘দরজা খোলা আছে’, ‘ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসো’— এসব ডায়ালগও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। আবার কাউকে দেখে আসছি, আদর্শের দোহাই দিয়ে নিজেদেরকে তালাবদ্ধ রাখতে। আসলে এভাবে বুলি আওড়িয়ে একতাবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তেমনিভাবে একটি সংগঠন ভেঙে দিয়ে তার নেতাকর্মী ও সদস্য-সমর্থকবৃন্দ অপর সংগঠনে সুড়সুড় করে ঢুকে পড়বে— এমন পরিস্থিতি এখন মোটেও নেই এবং এমনটা আশা করা আকাশকুসুম চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয়। শুধু আমি থাকব আর কেউ থাকবে না— এমন ভাবা কি ঠিক হবে?
[১৬]
অতএব, মন পরিষ্কার করে পরস্পরের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতে হবে। উদারতা প্রদর্শন করে পরস্পরকে দাওয়াত দিতে হবে ও দাওয়াত গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, উপলক্ষ্য ও প্রোগ্রামে পরস্পরকে দাওয়াত দিতে হবে এবং দাওয়াত পেলে সেটাকে যে-কোনো উপায়ে দূরে ঠেলে না দিয়ে সাদরে গ্রহণ করতে হবে এবং অংশগ্রহণ করতে হবে। এভাবে ধীরে ধীরে দূরত্ব কমিয়ে পরস্পর কাছে আসা সম্ভব ইনশা-আল্লাহ।
[১৭]
ইসলাম ও ঈমানের বিষয় এবং দেশ ও জাতীয় ইস্যুগুলোর মতো বড় বড় ইস্যুতে আমাদের সংগঠনগুলোকে পরস্পরের কাছাকাছি আসতেই হবে। এক মঞ্চে সবাইকে উঠতেই হবে। এক কণ্ঠে সবাইকে কথা বলতেই হবে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতেই হবে। এভাবেই নিজেদের শক্তির জানান দিতে হবে। এভাবে যত ঐক্যবদ্ধ হওয়া যাবে, তত আহলেহাদীছদের শক্তি আরও বেশি সঞ্চারিত হবে। রাষ্ট্র বিনির্মাণে আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে। এধরনের ইস্যুতে সাংগঠনিক দেওয়াল টপকে কেবল আহলেহাদীছ পরিচয়ে ও আহলেহাদীছ ব্যানারে সকলকে এক কণ্ঠে কথা বলতেই হবে। তা করতে ব্যর্থ হলে আহলেহাদীছগণ অপাঙক্তেয়, অবহেলিত ও অবমূল্যায়িত থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যাবে।
[১৮]
আহলেহাদীছদের বিভিন্ন দাওয়াতী সংগঠন, ফাউন্ডেশন বা প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও বয়োজ্যেষ্ঠ মুরব্বীগণের প্রতি আমাদের সবিনয় নিবেদন এই যে, সাধারণ জনগণ ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা একতা চান, তারা আপনাদের পরস্পরের মাঝে সুসম্পর্ক দেখতে চান, এক মঞ্চে দেখতে চান এবং এগুলো তাদেরকে যারপরনাই উল্লসিত করে।
পক্ষান্তরে, আপনাদের পারস্পরিক অনৈক্য, বিভক্তি-বিভাজন, হিংসা-বিদ্বেষ, কাদা ছোড়াছুড়ি তাদেরকে ভীষণ ভাবায় ও কষ্ট দেয়।
সুতরাং কুরআনে কারীম ও হাদীছে নববীর দিকনির্দেশনা ধারণ করে এবং সাধারণ জনগণের আবেগ ও চাওয়াকে সামনে রেখে পরস্পর কাছাকাছি আসার চেষ্টা করুন। অন্য সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দকে নিজেদের প্রোগ্রামগুলোতে ডাকুন; অন্যদের প্রোগ্রামে দাওয়াত দিলে যাওয়ার চেষ্টা করুন। আপনারা কাছাকাছি আসতে পারলে জনগণের কাছাকাছি আসা মুহূর্তের ব্যাপার মাত্র। মনে রাখবেন, চুল টানলে মাথা আসে।
জনগণ আপনাদের মুখপানে তাকিয়ে, আপনারা কী সিদ্ধান্ত ও ভূমিকা গ্রহণ করেন, তা দেখার অপেক্ষায়।
[১৯]
এই হচ্ছে, আমাদের সংগঠনগুলোর ব্যাপারে আমার অবস্থান। আমি আসলে সংগঠনবিরোধী নই। তবে, সংগঠন করতে গিয়ে যদি সংগঠনে বায়‘আতের মতো ইস্যুর অনুপ্রবেশ ঘটে, ‘অলা-বারা’-এর নীতি লঙ্ঘিত হয়, পরস্পরের মাঝে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়, বিভেদ-বিভক্তি তৈরির প্লাটফর্মে পরিণত হয়, পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ, গীবত-তোহমত ডালভাতে পরিণত হয়, তাহলে আমি শুধু সেগুলোর বিরোধী; সংগঠনের বিরোধী নই। সংগঠন নামক এই বৈধ মাধ্যমটি ধরতে গিয়ে কোনোভাবেই এতসব কাবীরা গোনাহ করা যাবে না। সেজন্য, এসব হতে দূরে থেকে কেউ সংগঠনের অধীনে কাজ করলে তাতে কোনো আপত্তি নেই। বরং আমাদের দেশের মতো জায়গায় ও প্রেক্ষাপটে ইসলামের নির্দেশনা মেনে সাংগঠনিকভাবে কাজ করা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
মহান আল্লাহ আমাদের বুঝা ও মানার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
আব্দুল আলীম ইবনে কাওছার মাদানী
বি. এ. (অনার্স), উচ্চতর ডিপ্লোমা, এম. এ. এবং এম.ফিল., মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,
সঊদী আরব; অধ্যক্ষ, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।