কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ইসলামে মুরদান (দাড়িবিহীন কিশোর-যুবক) সম্পর্কিত বিধিবিধান (পর্ব-৮)

সমকামিতার ইতিহাস:

মানুষের মধ্যে সমকামিতা সর্বপ্রথম শুরু হয়েছিল লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতির মধ্যেই; তাদের আগে আর কেউ এ ধরনের জঘন্য কাজ করেনি। মহান আল্লাহ বলেন,وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِنَ الْعَالَمِينَ، إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِنْ دُونِ النِّسَاءِ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ ‘আর স্মরণ করুন লূত্ব-এর কথা, যখন তিনি তাঁর জাতিকে বলেছিলেন, তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের আগে দুনিয়ার কোনো মানুষ করেনি? তোমরা তো নারীদের ছেড়ে পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করছ! আসলে তোমরা তো সীমালঙ্ঘনকারী জাতি’ (আল-আ‘রাফ, ৭/৮০-৮১)

উক্ত আয়াতের তাফসীরে ইমাম কুরতুবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,لَمْ يَكُنِ اللِّوَاطُ فِي أُمَّةٍ قَبْلَ قَوْمِ لُوطٍ. ‘লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতির আগে কোনো জাতির মধ্যে সমকামিতা ছিল না’।[1]

হাফেয ইবনু কাছীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘লূত্ব আলাইহিস সালাম ছিলেন হারান ইবনে আযারের পুত্রএবং তিনি ছিলেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর ভ্রাতুষ্পুত্র (ভাইয়ের ছেলে)। তিনি ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর সঙ্গে ঈমান এনেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গেই শামভূমিতে হিজরত করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে ‘সাদূম’ (سدوم)নগরবাসী এবং আশপাশের গ্রামসমূহের নিকট নবী হিসেবে প্রেরণ করেন। তিনি তাদেরকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেন, ভালো কাজের নির্দেশ দেনএবং তাদেরকে নিষেধ করেন সেসব পাপকর্ম, হারাম কাজ ও অশ্লীলতা থেকে, যা তারা উদ্ভাবন করেছিল। এমন জঘন্য অপরাধ, যা তাদের আগে আদমসন্তানদের কেউ কখনো করেনি, এমনকি মানুষ ছাড়া অন্যরাও করেনি। আর তা হলো, পুরুষদের সাথে যৌনাচার (সমকামিতা)। এটি এমন এক জঘন্য বিষয় ছিল, যা আদমসন্তানদের কেউ কখনো চিন্তাও করেনি, তাদের মনেও এমন কোনো ভাবনা আসেনি, যতক্ষণ না ‘সাদূম’বাসীরা তা শুরু করেছিল। তাদের উপর আল্লাহর লা‘নত বর্ষিত হোক’।[2]

লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনা[3]:

কুরআনিক ঘটনাগুলোর একটি নিজস্ব উপস্থাপন পদ্ধতি রয়েছে, যা সত্য ঘটনাগুলোকে উপস্থাপন করে এবং চিন্তাগুলোকে এমনভাবে উপস্থাপন করে, যেন তা জীবন্তভাবে মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারে।

লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনা সেই কুরআনিক ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি, যেটি কুরআন বাস্তব রূপে উপস্থাপন করেছে। এই ঘটনার মাধ্যমে কুরআন ঈমানের মূলনীতি, তাওহীদের শিক্ষা এবং নিজেদের ওপর যুলুমকারী ও সৎপথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া লোকদের প্রতি আল্লাহর চিরন্তন নীতির বর্ণনা দিতে চেয়েছে।

লূত্ব আলাইহিস সালাম-এরঘটনার সারাংশ:

লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনা কুরআনে একাধিক স্থানে এসেছে। এই ঘটনা কখনো বিস্তারিতভাবে, আবার কখনো সংক্ষেপে এসেছে। প্রতিটি সূরায় এটি এমন ভঙ্গিতে উপস্থাপিত হয়েছে, যার নিজস্ব বার্তা, প্রভাব ও দিকনির্দেশনা রয়েছে।

লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনা যে অঞ্চলে ঘটেছিল, তার নাম ছিল সাদূম (سدوم), যা আজকের দিনে অধিকৃত ফিলিস্তীন ভূমির অন্তর্ভুক্ত। ঘটনার সারমর্ম হলো, লূত্ব আলাইহিস সালাম ছিলেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর ভাতিজা। তিনি তাঁর সঙ্গেই শামভূমিতে হিজরত করেন।

এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে সাদূম এবং আশেপাশের গ্রামবাসীদের কাছে নবী করে পাঠান। তিনি তাঁদের আল্লাহর দিকে ডাকেন, সৎকর্মে উৎসাহিত করেন এবং তাঁদেরকে সেই অপকর্ম ও অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকতে বলেন, যা আগে কোনো মানবজাতি বা অন্য কোনো জাতি করেনি। আর সেই জঘন্য পাপ হচ্ছে, সমকামিতা।

কিন্তু লূত্ব আলাইহিস সালাম–এর ক্বওম কিছুতেই তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। ফলে তাদের উপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নেমে আসে এমন ভয়াবহ আযাব, যা তাদের আগে বা পরে আর কাউকে মহান আল্লাহ দেননি।

ঘটনাটির ধারাবিবরণ:

এই কুরআনিক ঘটনাটিকে বেশ কয়েকটি ধারায় নিম্নরূপভাবে সাজানো যায়:

প্রথমত: লূত্ব আলাইহিস সালাম সাদূমবাসীদেরকে সঠিক দ্বীন ও সোজা পথে আহ্বান করেন। তিনি তাঁর দাওয়াতী কার্যক্রম শুরু করেন তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতির উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে। কারণ তাক্বওয়া হলো সমস্ত বিষয়ের মূল ভিত্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন,كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍ الْمُرْسَلِينَ - إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ لُوطٌ أَلَا تَتَّقُونَ - إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ - فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ ‘লূত্বের সম্প্রদায় রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। যখন তাদের ভাই লূত্ব তাদেরকে বললেন, তোমরা কি তাক্বওয়া অবলম্বন করবে না? আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। কাজেই তোমরা আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন করো এবং আমার আনুগত্য করো(আশ-শুআরা, ২৬/১৬০-১৬৩) তিনি তাদের জানান —যেমনটি অন্যান্য রাসূলও জানিয়েছেন— যে, তিনি একজন বিশ্বস্ত রাসূল এবং তিনি তাঁর দাওয়াতের বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চান না। মহান আল্লাহ বলেন,وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى رَبِّ الْعَالَمِينَ আমি এর বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না; আমার প্রতিদান তো শুধু জগৎসমূহের প্রতিপালকের নিকট’ (আশ-শু‘আরা, ২৬/১৬৪)

দ্বিতীয়ত: তিনি তাদেরকে নিষেধ করেন সেই অশ্লীল কাজ থেকে, যা তারা করত এবং যা এর আগে বিশ্বের আর কেউই করেনি। এ কথাটি কুরআন মাজীদের কয়েক জায়গায় বিভিন্নভাবে এসেছে। যেমন- মহান আল্লাহ বলেন, وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِنَ الْعَالَمِينَ ‘আর তোমরা স্মরণ কর লূত্বের কথা, যখন তিনি তার ক্বওমকে বলেছিলেন, তোমরা কি অশ্লীল কাজ করো, যা তোমাদের আগে বিশ্বের কেউ করেনি?(আল-আরাফ, ৭/৮০)। তিনি আরও বলেন, أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ وَأَنْتُمْ تُبْصِرُونَ ‘তোমরা দেখে-শুনে কেন অশ্লীল কাজ করছ?’ (আন-নামল, ২৭/৫৪)। মহান আল্লাহ আরও বলেন,أَئِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ وَتَقْطَعُونَ السَّبِيلَ وَتَأْتُونَ فِي نَادِيكُمُ الْمُنْكَرَ ‘তোমরাই তো পুরুষে উপগত হচ্ছ, তোমরাই তো রাহাজানি করে থাক এবং তোমরাই তো নিজেদের মজলিসে প্রকাশ্যে ঘৃণ্য কাজ করে থাক’ (আল-আনকাবূত, ২৯/২৯)

তৃতীয়ত: লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর দাওয়াতের বিপরীতে তাঁর জাতির অবস্থান ছিল প্রত্যাখ্যান, উপহাস, অবজ্ঞা এবং হুমকি ও শাস্তির ভয় প্রদর্শন। কুরআনের বহু আয়াতে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। যেমন- মহান আল্লাহ তাদের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন,أَخْرِجُوهُمْ مِنْ قَرْيَتِكُمْ إِنَّهُمْ أُنَاسٌ يَتَطَهَّرُونَ ‘এদেরকে (লূত্ব আলাইহিস সালাম ও মুমিনদেরকে) তোমাদের জনপদ থেকে বহিষ্কার করো, এরা তো এমন লোক, যারা অতি পবিত্র হতে চায়’ (আল-রাফ, /৮২)। তিনি আরও বলেন, قَالُوا أَوَلَمْ نَنْهَكَ عَنِ الْعَالَمِينَ ‘তারা বলল, আমরা কি দুনিয়ার সকল লোককে আশ্রয় দিতে তোমাকে নিষেধ করিনি?’ (আল-হিজর, ১৫/৭০)। অপর আয়াতে এসেছে,قَالُوا لَئِنْ لَمْ تَنْتَهِ يَا لُوطُ لَتَكُونَنَّ مِنَ الْمُخْرَجِينَ ‘তারা বলল, হে লূত্ব! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও, তবে অবশ্যই তুমি বিতাড়িতদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আশ-শূআরা, ২৬/১৬৭)। অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,قَالُوا ائْتِنَا بِعَذَابِ اللَّهِ إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ ‘তারা বলল, যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে আমাদের ওপর আল্লাহর শাস্তি নিয়ে এসো’ (আল-আনকাবূত, ২৯/২৯)

লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ক্বওম যা করত, তা গোপনে বা সংকোচ করে নয়; বরং প্রকাশ্যে, দম্ভভরে ও অহংকারে করত। তারা লূত্ব আলাইহিস সালাম যে নির্দেশনা নিয়ে এসেছিলেন, তা অবহেলা ও অবজ্ঞার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে নৈতিকতা, শালীনতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে উপহাস করত।

চতুর্থত: তাঁদের এই বিরোধিতা ও মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতি লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর অবস্থান ছিল নিম্নরূপ:

প্রথমে তিনি তাদের কর্মের প্রতি ঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশ করেন। মহান আল্লাহ তাঁর সম্পর্কে বলেন,قَالَ إِنِّي لِعَمَلِكُمْ مِنَ الْقَالِينَ ‘তিনি বললেন, আমি তো তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি’ (আশ-শু‘আরা, ২৬/১৬৮)। এরপর তিনি তাঁর রবের নিকট তাঁর ক্বওমের পাপকর্ম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, رَبِّ نَجِّنِي وَأَهْلِي مِمَّا يَعْمَلُونَ ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এবং আমার পরিবারকে তাদের কার্যকলাপ থেকে রক্ষা করুন’ (আশ-শুআরা, ২৬/১৬৯)

পঞ্চমত: লূত্ব আলাইহিস সালাম তাঁর জাতিকে সেই অশ্লীলতা থেকে ফেরানোর জন্য তাদেরকে বিয়ের মাধ্যমে নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে বলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,قَالَ يَا قَوْمِ هَؤُلَاءِ بَنَاتِي هُنَّ أَطْهَرُ لَكُمْ ‘তিনি বললেন, এই তো আমার কন্যারা, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্র’ (হূদ, ১১/৭৮)

উল্লেখ্য, এখানে ‘আমার কন্যারা’ বলতে বোঝানো হয়েছে তাঁর জাতির নারীরা। কারণ একজন নবী তাঁর জাতির জন্য পিতার মতো। বিখ্যাত মুফাসসির মুজাহিদ রাহিমাহুল্লাহ এমনটাই বলেছেন।[4] যাহোক, তিনি তাদেরকে হালাল পন্থার দিকেই নির্দেশনা দেন। কিন্তু তারা নারীদের প্রতি অনাসক্তি দেখিয়ে বলে,قَالُوا لَقَدْ عَلِمْتَ مَا لَنَا فِي بَنَاتِكَ مِنْ حَقٍّ وَإِنَّكَ لَتَعْلَمُ مَا نُرِيدُ ‘তারা বলল, তুমি তো জানো, তোমার কন্যাদেরকে আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই; আমরা কি চাই তা তো তুমি জানোই’ (হূদ, ১১/৭৮)

মুফাসসিরগণ উল্লেখ করেছেন,أَنَّ الرِّجَالَ كَانُوا قَدِ اسْتَغْنَى بَعْضُهُمْ بِبَعْضٍ، وَكَذَلِكَ نِسَاؤُهُمْ كُنَّ قَدِ اسْتَغْنَى بَعْضُهُنَّ بِبَعْضٍ أَيْضًا. ‘তাদের পুরুষেরা একে অপরকে নিয়ে পরিতৃপ্ত ছিল, অনুরূপভাবে তাদের নারীরাও একে অপরকে নিয়ে পরিতৃপ্ত ছিল’।[5]

ষষ্ঠত: এই ঘটনার মাঝে আল্লাহ তাআলা কিছু ফেরেশতা পাঠান, যাতে তারা লূত্ব আলাইহিস সালাম-কে সান্ত্বনা দিতে পারেন এবং তাঁর অবস্থানে তাঁকে দৃঢ় রাখতে পারেন। মহান আল্লাহ বলেন,وَقَالُوا لَا تَخَفْ وَلَا تَحْزَنْ إِنَّا مُنَجُّوكَ وَأَهْلَكَ إِلَّا امْرَأَتَكَ كَانَتْ مِنَ الْغَابِرِينَ ‘তারা বললেন, নিশ্চয় আমরা লূত্বকে ও তার পরিজনবৰ্গকে রক্ষা করব, তার স্ত্রীকে ছাড়া; সে তো পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত’ (আল-আনকাবূত, ২৯/৩৩)

এই আসমানী দূতগণ লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ক্বওমের কর্মকে অত্যন্ত ঘৃণা করেন এবং অনেক যুলুমপূর্ণ কাজ বলে অভিহিত করেন, যার জন্য পীড়াদায়ক আযাব অবশ্যম্ভাবী। মহান আল্লাহ বলেন,قَالُوا إِنَّا مُهْلِكُو أَهْلِ هَذِهِ الْقَرْيَةِ إِنَّ أَهْلَهَا كَانُوا ظَالِمِينَ ‘তারা বলেছিলেন, নিশ্চয় আমরা এ জনপদবাসীকে ধ্বংস করব, এর অধিবাসীরা তো যালেম’ (আল-আনকাবূত, ২৯/৩১)। তিনি আরও বলেন,إِنَّا مُنْزِلُونَ عَلَى أَهْلِ هَذِهِ الْقَرْيَةِ رِجْزًا مِنَ السَّمَاءِ بِمَا كَانُوا يَفْسُقُونَ ‘নিশ্চয় আমরা এ জনপদবাসীদের উপর আকাশ হতে শাস্তি নাযিল করব, কারণ তারা পাপাচার করছিল’ (আল-আনকাবূত, ২৯/৩৪)

সপ্তমত: আসমানী হেদায়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এবং নবীদের বার্তা নিয়ে উপহাসকারীদের পরিণাম আল্লাহ তা‘আলা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ - فَجَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِنْ سِجِّيلٍ ‘অতঃপর সূর্যোদয়ের সময় বিকট আওয়াজ তাদেরকে পাকড়াও করল; তাতে আমরা জনপদটিকে উল্টিয়ে উপর-নিচ করে দিলাম এবং তাদের উপর পোড়ামাটির পাথর-কঙ্কর বর্ষণ করলাম’ (আল-হিজর, ১৫/৭৩-৭৪)। তিনি আরও বলেন, فَلَمَّا جَاءَ أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِنْ سِجِّيلٍ مَنْضُودٍ - مُسَوَّمَةً عِنْدَ رَبِّكَ وَمَا هِيَ مِنَ الظَّالِمِينَ بِبَعِيدٍ ‘অতঃপর যখন আমাদের আদেশ আসল, তখন আমরা জনপদকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর ক্রমাগত বর্ষণ করলাম পোড়ামাটির পাথর, যা আপনার রবের কাছে চিহ্নিত ছিল। আর এটা যালেমদের থেকে দূরে নয়’ (হূদ, ১১/৮২-৮৩)

আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন, তাঁর প্রজ্ঞা এটিই দাবি করে যে, সেই যালেমদের জন্য এমন একটি পরিণতি নির্ধারণ করা হোক, যা পরবর্তীদের জন্য শিক্ষা ও নছীহত হয়ে থাকবে। তিনি আরও বলেন, وَلَقَدْ تَرَكْنَا مِنْهَا آيَةً بَيِّنَةً لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ ‘আর অবশ্যই আমি ঐ জনপদে সুস্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছি সে ক্বওমের জন্য, যারা বুঝে(আল-আনকাবূত, ২৯/৩৫)

এটি আল্লাহর চিরন্তন নিয়ম যে, তিনি সত্য ও মিথ্যার, ন্যায় ও অন্যায়ের, শালীনতা ও অশ্লীলতার দ্বন্দ্বে সবসময় তিনি তাঁর নবী এবং মুমিনদেরকে রক্ষা করে থাকেন; তেমনি তিনি লূত্ব আলাইহিস সালাম এবং যারা তাঁর সাথে ঈমান এনেছিলেন, তাঁদেরকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি বলেন,فَأَنْجَيْنَاهُ وَأَهْلَهُ إِلَّا امْرَأَتَهُ كَانَتْ مِنَ الْغَابِرِينَ ‘অতঃপর আমরা তাকে ও তার পরিবার-পরিজনের সবাইকে উদ্ধার করেছিলাম, তার স্ত্রী ছাড়া, সে ছিল পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত’ (আল-রাফ, /৮৩)। তিনি অন্যত্র বলেন,فَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ أَجْمَعِينَ - إِلَّا عَجُوزًا فِي الْغَابِرِينَ ‘তারপর আমরা তাকে এবং তার পরিবার-পরিজন সকলকে রক্ষা করলাম; এক বৃদ্ধ ছাড়া, যে ছিল পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত’ (আশ-শুআরা, ২৬/১৬০-১৭৩)

অষ্টমত: এই ঘটনার সমাপ্তি টানা হয়েছে চিন্তা-ভাবনা ও গভীর অনুধাবনের দিকে আহ্বানের মধ্য দিয়ে, যেন মানুষ আসমানী হেদায়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে এবং আল্লাহর নির্ধারিত প্রকৃতির বিপরীতে চললে কী পরিণতি হয়, তা ভেবে দেখে। নিম্নবর্ণিত আয়াতগুলোতে সেই কথাই প্রধ্বনিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ مَطَرًا فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِينَ ‘আর আমরা তাদের উপর ভীষণভাবে বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম। কাজেই দেখুন, অপরাধীদের পরিণাম কীরূপ হয়েছিল’ (আল-রাফ, /৮৪)। তিনি আরও বলেন, إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِلْمُتَوَسِّمِينَ এতে অবশ্যই অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লোকেদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে(আল-হিজর, ১৫/৭৫)তিনি অন্যত্র বলেন,إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَةً لِلْمُؤْمِنِينَ নিশ্চয়ই এতে মুমিনদের জন্য নিদর্শন রয়েছে’(আল-হিজর, ১৫/৭৭)

লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা:

কুরআনে বর্ণিত লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনাতে অন্যান্য কুরআনিক ঘটনার মতোই বহু শিক্ষা ও নছীহত রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:

১. একজন দাঈ বা আহ্বানকারীর প্রধান দায়িত্ব হলো— মানুষকে আল্লাহভীতির দিকে আহ্বান করা। হিকমতপূর্ণ পদ্ধতিতে সমাজের বিপথগামী ও বিভ্রান্ত মানুষদের সঠিক পথে ফেরানো। দাওয়াত যেন বিনিময় লাভ বা খ্যাতি অর্জনের উদ্দেশ্যে না হয়; বরং তা হওয়া উচিত আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য এবং মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনার জন্য।

২. যারা প্রকৃত ঈমানদার, চরিত্রবান এবং আত্মার পবিত্রতা ও মানুষের সম্মান রক্ষায় সচেষ্ট, তারা নিজেদের জীবন দিয়ে হলেও সত্য দ্বীন ও আল্লাহর আদেশ রক্ষা করেন। লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনায় সেটাই আমরা দেখি; তিনি তাঁর ক্বওমকে সঠিক রাস্তায় ফেরানোর ক্ষেত্রে কোনো মাধ্যমই বাকী রাখেননি। তিনি কখনও তাদেরকে তাক্বওয়ার আদেশ দিয়েছেন, فَاتَّقُوا اللهَ ‘কাজেই তোমরা আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন করো’ (হূদ, ১১/৭৮)। কখনও তাঁর জাতিকে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে সাবধান করেছেন,إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ ‘নিশ্চয় তোমরা অশ্লীল কাজ করছ’ (আল-আনকাবূত, ২৯/২৮)। কখনও সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, هَؤُلَاءِ بَنَاتِي إِنْ كُنْتُمْ فَاعِلِينَ ‘একান্তই যদি তোমরা কিছু করতে চাও, তবে আমার এ কন্যারা রয়েছে!’ (আল-হিজর, ১৫/৭১)। আবার কখনও আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছেন,قَالَ رَبِّ انْصُرْنِي عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِينَ ‘তিনি বললেন, হে আমার প্রভু! বিপথগামী জাতির বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন!’ (আল-আনকাবূত, ২৯/৩০)

৩. যদিও লূত্ব আলাইহিস সালাম ছিলেন অত্যন্ত ঈমানদার, দৃঢ়চেতা এবং সাহসী, তবুও তিনি চেয়েছিলেন আরও শক্তি থাকুক, যাতে এই অপরাধীদের বাধা দিতে পারেন। এটি আমাদের শেখায়— একজন দাঈ চাইলে সত্য প্রতিষ্ঠায় এবং মিথ্যা ও অন্যায়কে রোধ করতে অন্যের সাহায্য গ্রহণ করতে পারেন। মহান আল্লাহর নিচের বক্তব্য থেকে আমরা সেকথাই পাই, قَالَ لَوْ أَنَّ لِي بِكُمْ قُوَّةً أَوْ آوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ ‘তিনি বললেন, তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত অথবা যদি আমি আশ্রয় নিতে পারতাম কোনো সুদৃঢ় স্তম্ভের দিকে!’ (হূদ, ১১/৮০)

৪. আল্লাহর প্রজ্ঞা অনুযায়ী, অপরাধীদের শাস্তি তাদের অপরাধের ধরন অনুযায়ী হয়। লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতি যেহেতু প্রাকৃতিক নিয়মকে উল্টে দিয়েছিল, সেহেতু আল্লাহও তাদের জনপদ সম্পূর্ণরূপে উল্টে দিয়েছিলেন।

৫. কুরআন মাজীদ লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতির অপকর্মের কারণে তাদেরকে তিনটি গুরুতর বিশেষণে বিশেষিত করেছে: ক. بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ ‘বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী জাতি’ (আল-আরাফ, /৮১)। খ. بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ ‘বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী জাতি’ (আশ-শুআরা, ২৬/১৬৬)। গ. بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ ‘তোমরা মূর্খ জাতি’ (আন-নামল, ২৭/৫৫)

এই তিনটি শব্দ একত্রে নির্দেশ করে— তাদের বুদ্ধি বিকৃতি ঘটেছিল। স্বভাবজাতভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল এবং তারা নৈতিকতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এমনকি তাদের অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, যেখানে পৌঁছলে মানুষ পশুর চেয়েও নিচে নেমে যেতে পারে।

উক্ত ঘটনাকেন্দ্রিক দু’টি বিভ্রাট ও তার জবাব:

কুরআনে কারীমে লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর ঘটনা বর্ণনার মাঝে কিছু আয়াতে এমন বক্তব্য এসেছে, যেগুলোর ভুল ব্যাখ্যা করে কিছু লোক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।

প্রথম আয়াত: আল্লাহ তাআলা বলেন,قَالَ لَوْ أَنَّ لِي بِكُمْ قُوَّةً أَوْ آوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ ‘তিনি বললেন, তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত অথবা যদি আমি আশ্রয় নিতে পারতাম কোনো সুদৃঢ় স্তম্ভের দিকে!’ (হূদ, ১১/৮০)

হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,يَرْحَمُ اللَّهُ لُوطًا لَقَدْ كَانَ يَأْوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ ‘আল্লাহ লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর প্রতি রহম করুন! তিনি একটি মজবুত খুঁটির আশ্রয় চেয়েছিলেন’।[6]

কিছু লোক এই হাদীছের ভিত্তিতে মনে করে, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর উক্ত উক্তি সম্পর্কে আপত্তি করেছেন।

দ্বিতীয় আয়াত: মহান আল্লাহ বলেন,يَا قَوْمِ هَؤُلَاءِ بَنَاتِي هُنَّ أَطْهَرُ ‘তিনি বললেন, হে আমার সম্প্রদায়! এরা আমার কন্যা, তোমাদের জন্য এরা পবিত্র’ (হূদ, ১১/৭৮)

কিছু মানুষ মনে করে, লূত্ব আলাইহিস সালাম উক্ত উক্তির মাধ্যমে অশ্লীলতার দাওয়াত দিয়েছেন!

বিভ্রাট দু’টির জবাব: এতে তাদের বিভ্রাট ও সংশয়ের পক্ষে কোনো দলীল নেই। বরং তাঁর উভয় উক্তিই হক্ব। কেননা লূত্ব আলাইহিস সালাম যা বলেছিলেন, তা ছিল আত্মীয়স্বজন বা ঈমানদার অনুসারীদের সাহায্য দ্বারা এই দুনিয়াতে প্রতিরোধ ও শক্তি কামনা, যার দ্বারা তিনি তার ক্বওমের অশ্লীলতাকে প্রতিরোধ করতে পারেন— যেভাবে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও আনছার-মুহাজিরগণের কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছিলেন। লূত্ব আলাইহিস সালাম কখনই এটা ভাবেননি যে, তিনি তাঁর রবের চেয়েও শক্তিশালী কারও সাহায্য চাইছেন। আর মানুষের সহযোগিতা চাওয়াতে কোনো দোষ নেই। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَفَسَدَتِ الْأَرْضُ ‘যদি আল্লাহ মানুষকে একে অপরের দ্বারা প্রতিরোধ না করতেন, তবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেত’ (আল-বাক্বারা, ২/২৫১)

তাই, লূত্ব আলাইহিস সালাম যা কামনা করেছিলেন, তা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও আনছার ও মুহাজির ছাহাবীগণের কাছ থেকে কামনা করেছিলেন, যাতে তিনি আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিতে পারেন। তাহলে, লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর যে কাজটি ছিল, তা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও করেছেন। অতএব, লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর এই চাওয়াকে নিন্দা করার কোনো প্রশ্নই আসে না।

আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর এই কথার ব্যাপারে আপত্তি করেননি। বরং তিনি শুধু এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে, লূত্ব আলাইহিস সালাম বলেছিলেন, ‘আমি যদি কোনো শক্তিশালী আশ্রয়ের দিকে যেতে পারতাম (ركن شديد)’। আর এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে— ফেরেশতাদের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সাহায্য। তবে লূত্ব আলাইহিস সালাম তখন জানতেন না যে, ফেরেশতারা ইতোমধ্যেই তাঁকে সাহায্য করতে প্রেরিত হয়েছেন।

আর যে ব্যক্তি মনে করে, লূত্ব আলাইহিস সালাম বিশ্বাস করতেন না যে, আল্লাহ তাঁর শক্তিশালী আশ্রয়দাতা, সে প্রকৃতপক্ষে কুফরী করে। কারণ সে একজন নবী আলাইহিস সালাম সম্পর্কে এমন ধারণা করছে, যা কুফরী। এমন ধারণা অত্যন্ত নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ। কারণ যে নবী আলাইহিস সালাম নিজের চোখে আল্লাহর নিদর্শন ও অলৌকিকতা দেখেছেন এবং যিনি সারাজীবন আল্লাহর দিকে আহ্বান করেছেন, তাঁর সম্পর্কে এমন মনে করা অসম্ভব।

আর দ্বিতীয় আয়াতে ‘আমার কন্যারা’ বলতে বোঝানো হয়েছে লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতির নারীরা। কারণ একজন নবী তাঁর জাতির জন্য পিতার মতো।

তিনি তাদের বিয়ের মাধ্যমে হালাল সম্পর্ক স্থাপন করতে বলেন হারাম থেকে বিরত রাখতে। এটা স্পষ্ট যে, একজন নবী আলাইহিস সালাম কখনোই কোনো অশ্লীল কাজে দাওয়াত দিতে পারেন না, যেহেতু তিনি নিজেই সেই কাজ থেকে নিষেধ করছেন।

(ইনশা-আল্লাহ চলবে)

বিএ (অনার্স), উচ্চতর ডিপ্লোমা, এমএ এবং এমফিল, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব;
অধ্যক্ষ, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।


[1]. তাফসীর কুরতুবী, ৭/২৪৫।

[2]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৩/৪৪৪-৪৪৫।

[2]. ইসলামওয়েব (Islamweb) কর্তৃক উপস্থাপিত ঘটনাটির বর্ণনাশৈলি আমাকে মুগ্ধ করেছে। সেজন্য, ঘটনাটি সেখান থেকে উপস্থাপিত হলো। এই লিংক দেখুন:

https://www.islamweb.net/ar/article/174503/

 

[4]. দ্রষ্টব্য: তাফসীর ত্ববারী, ১৫/৪১৩-৪১৪।

[5]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৩/৪৪৫।

[6]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৩৮৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫১।

Magazine