কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

আল্লাহর দিকে দাওয়াত : দলীয় মোড়কে নাকি পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে?

শায়খ মুহাম্মাদ ইবরাহীম শাক্বরার গুরুত্বপূর্ণ অভিমত :[1]

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি ইসলামকে সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করার জন্য তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হেদায়াত ও হক্ব দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন। ছালাত ও সালাম বর্ষিত হোক গোটা মানবতার জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরিত নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর। তিনি রিসালাত যথাযথভাবে পৌঁছে দিয়েছেন, আমানত পূর্ণ করেছেন এবং তার পরে উম্মতকে স্পষ্ট দলীলের উপর রেখে গেছেন। মহান আল্লাহ তাঁর ছাহাবীগণ, তাবেঈগণ এবং তাদের যথাযথ অনুসারীগণের প্রতি সন্তুষ্ট হৌন।

মুসলিম উম্মাহ তাদের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কারণে অনুগ্রহপ্রাপ্ত উম্মত, যতক্ষণ তারা আক্বীদা ও আমলে কালেমাতুশ শাহাদাহকে আঁকড়ে ধরে থাকবে এবং তাঁর জীবনাদর্শ দ্বারা নিজেদের সুশোভিত করবে। এভাবে তারা শ্রেষ্ঠ অনুসৃত ব্যক্তির শ্রেষ্ঠ অনুসারী হতে পারবে এবং যুগ যুগ ধরে শরীআতের বিধিবিধান তাদের একটি আনন্দময় জীবন উপহার দেবে।

যখন ফেতনা-ফাসাদের হিংস্র ছোবল এই উম্মতকে আঘাত করেছে এবং নানা আদর্শ যখন তাদের ভূমিকে গ্রাস করেছে, তখন তারা কলহ-বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে, সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ প্রদর্শিত পথ হারিয়েছে, তাদের রবের উদ্দিষ্ট হক্ব থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে, যা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া আশাতীত ব্যাপার। তবে যদি তারা পুনরায় ইসলামে ফিরে আসতে পারে, কুরআনের শক্ত রশি দিয়ে নিজেদের বাঁধতে পারে এবং সেই আলোর সামনে নিজেদের হৃদয়কে খুলে দিতে পারে— যে আলোর মাধ্যমে অন্ধকার বিদূরিত হয়েছে, আসমান-যমীন আলোকিত হয়েছে, ইহকাল-পরকাল কল্যাণময় হয়েছে এবং ভ্রষ্টতা থেকে হেদায়াত স্পষ্ট হয়েছে, তাহলে সেটা ভিন্ন হিসাব। এরশাদ হচ্ছে,قَدْ جاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتابٌ مُبِينٌ - يَهْدِي بِهِ اللَّهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوانَهُ سُبُلَ السَّلامِ وَيُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُماتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِهِ وَيَهْدِيهِمْ إِلى صِراطٍ مُسْتَقِيمٍ ‘অবশ্যই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে শান্তির পথ দেখান, যারা তার সন্তুষ্টির অনুসরণ করে এবং তার অনুমতিতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর তাদেরকে সরল পথের দিকে হেদায়াত করেন’ (আল-মায়েদাহ, ৫/১৫-১৬)

১৪টি শতাব্দী কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে; রেখে গেছে কিছু মানুষ, যারা প্রথম তিন শতাব্দীর মানুষগুলো ও তাদের কাহিনী জেনেছে এবং তাদের ঝরনাধারা থেকে যুগ পরম্পরায় নিজেরা সিক্ত হয়েছে এবং পরবর্তীদেরকেও সিক্ত করেছে। ঐ তিন যুগ সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ— যাদের লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট, চেহারাগুলো ছিল আলোকিত ও প্রফুল্ল। তাদের আপাদমস্তক তাদের নিজেদের পরিচয় তুলে ধরে। কেনই-বা নয়? এর সাথে যুক্ত হয়েছে খোদ নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষ্য; তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিয়েছেন,خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ‘আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম মানুষ। অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী। অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী’।[2]

এই সাক্ষ্যের পরে মুমিন তো বটেই, এমনকি কোনো বিবেকবানের জন্যও শোভনীয় নয় যে, তিনি সেই যুগের মানুাষগুলোর কথা ও কর্ম লালনে যত্নবান হবেন না, তাদের কাছাকাছি গিয়ে তাদের আদর্শ পূর্ণমাত্রায় নিবেন না। তাদের সেই আদর্শই তো বিশুদ্ধ আক্বীদার জানান দেয়।

সেই শতাব্দীত্রয়ের মানুষগুলোর কী এমন আদর্শ ছিল যে, স্বয়ং অহী তার সাফাই গেয়েছে?! তাদের আদর্শ ও চরিত্রের নির্যাস মহান আল্লাহর এই বাণীতে ফুটে ওঠে—كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ‘তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির (সর্বাত্মক কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব ঘটানো হয়েছে, তোমরা সৎকাজের আদেশ করো এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করো আর আল্লাহর প্রতি ঈমান রক্ষা করে চলো’ (আলে ইমরান, ৩/১১০)। উল্লিখিত উম্মত তাদের রবের নির্ধারিত সীমারেখার মধ্যে অবিচল থেকেছেন, তার প্রণীত বিধিবিধান মেনে চলেছেন এবং তারা হেদায়াতের বিরোধিতা করেননি।

এই উম্মতের শুরুর মানুষগুলো যার মাধ্যমে সংশোধিত হয়েছিলেন, উম্মতের শেষের মানুষগুলো তা ভিন্ন অন্য কিছুর মাধ্যমে কস্মিনকালেও সংশোধিত হতে পারবে না। কুরআন-সুন্নাহর সাথে অবস্থান ব্যতীত কখনই মুক্তি মিলতে পারে না। নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের গুণাবলি অর্জন ব্যতীত ভূপৃষ্ঠে নেতৃত্বের আসনে কখনই অধিষ্ঠিত হওয়া যাবে না।

নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই উম্মত ৭৩টি দলে বিভক্ত হয়ে যাবে, যেগুলোর মধ্যে একটি ছাড়া সবগুলোই জাহান্নামে যাবে। আর সেই নাজাতপ্রাপ্ত দলটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মানহাজের উপর অটুট থাকবে, প্রথম যুগের মানুষগুলোর নীতির উপর অবিচল থাকবে এবং তাদের পথনির্দেশ অনুসরণ করবে। এরশাদ হচ্ছে,وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ ‘আর এটি তো আমার সোজা পথ। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ করো এবং অন্যান্য পথ অনুসরণ করো না, তাহলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে’ (আল-আনআম, ৬/১৫৩)। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي، وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ ‘তোমাদের উপর আমার সুন্নাত ও আমার পরবর্তী হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাগণের সুন্নাত আঁকড়ে ধরে থাকা আবশ্যক’।[3]

মুসলিমদের দলে দলে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে সমস্যা এত প্রকট হয়েছে যে, তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। প্রত্যেকটি দল আলাদা আলাদা প্রতীক দাঁড় করাচ্ছে এবং চাচ্ছে যে, তাদের সাথে সকলেই একযোগে ঐ প্রতীক বহন করুক। প্রত্যেকটি দল নিজেদের জন্য পৃথক কর্মপরিকল্পনা সাজাচ্ছে এবং কেউ তার বিরোধিতা করুক, তা মেনে নিতে পারছে না। ১০ জন যখন সংঘবদ্ধ হচ্ছে, তখন অতি উৎসাহে তারা পৃথক কর্মপরিকল্পনা ও প্রতীক তৈরি করছে! তারা চাচ্ছে, অন্যান্য জামাআত ও দলের যে অধিকার রয়েছে, তাদেরও সেই একই অধিকার রয়েছে…। আর প্রায় প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটছে!

আপনার রবের কসম! একটু লক্ষ করুন, মূল দলগুলো ভেঙে কত শাখা-প্রশাখা তৈরি হচ্ছে, যেসব দলাদলির ব্যাপারে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্ক করে বলেছেন,وَسَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ فَرَقَةً ‘আমার উম্মত ৭৩টি ফেরক্বায় বিভক্ত হয়ে পড়বে’।[4]

আমাদের প্রিয় আলী আল-হালাবী প্রণীত এই মূল্যবান পুস্তিকাটি আমি পড়েছি। এখানে আমি এমন ইলমের সমাহার দেখেছি, যা তার জ্ঞানের প্রশস্ততা ও ক্ষুরধার লেখনীশক্তির জানান দেয়। বইটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুদ্ধ-অশুদ্ধের অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। যা পাঠককে অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়টিকে বেছে নিতে ও ভুলটাকে বর্জন করতে সাহায্য করবে।

একটি বিষয়ে ভিন্ন মত থাকতে পারে— এটা কোনো ব্যাপারই না এবং এটা বা ওটা ছুড়ে ফেলাও দোষের কিছু না— যদি মতভেদের লক্ষ্য থাকে হক্ব সম্পর্কে জানা। কারণ দলীল অস্পষ্ট থাকার কারণে কখনও হক্ব অস্পষ্ট থাকতে পারে অথবা দীর্ঘদিন দলীল-প্রমাণ থেকে দূরে থাকলে হক্ব অস্পষ্ট থাকতে পারে। তবে প্রত্যেক মতভেদকারী যদি স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, অহেতুক বিতর্কে নিজের বুদ্ধি খাটায় এবং প্রত্যেকেই নিজের মত নিয়ে খুশী থাকে, তাহলে এটা ভয়ানক বিপদ!

একই মানহাজের অনুসারীদের মাঝে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে জটিল মতভেদ হলে তা বিপদের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। কারণ সেই মতবিরোধটা এত প্রকট হয় যে, তাদের জ্ঞানীদের পক্ষে তাদের মধ্যে এর নিরসন করা দুরূহ হয়ে পড়ে এবং তাদের মধ্যে একটি নিরাপদ দৃষ্টিভঙ্গি ফিরিয়ে আনাও কঠিন হয়ে যায়। অথচ সেই দৃষ্টিভঙ্গি তাদের সকলের মানহাজ থেকে অস্পষ্ট ছিল।

ব্যথা-বেদনা, কষ্টসহিষ্ণুতা, অবিচলতা ও সংশোধনের আশায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর একই মানহাজের অনুসারীদের জ্ঞানীগণের জন্য একথা বলা মোটেও শোভনীয় নয় যে, ‘এর চেয়ে বেশি ভালো হওয়া সম্ভব নয়’। একথা বলে উভয় মতের মানুষগুলোকে শয়তানের হাতে ছেড়ে দিয়ে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়াও তাদের জন্য সমীচীন নয়। কারণ শয়তান জনগণের ভালো দৃষ্টি কেড়ে নিয়ে তাদের মধ্যে নানা কুমন্ত্রণা ঢুকিয়ে দিবে এবং তাদের মধ্যে মন্দ ধারণার প্রসার ঘটাবে। সেকারণে সাধারণ জনগণের উচিত, তাদের জ্ঞানীদের কথা মেনে নেওয়া— যদিও তা উভয়পক্ষের জন্য ভারী ও অসন্তোষজনক মনে হয়। আর জ্ঞানীদের জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, তারা হক্ব কথাটাই বলবেন। কারণ তারাই তো হক্বের যোগ্য অধিকারী।

আমাদের প্রিয় ভাই আলী আল-হালাবীর এই পুস্তিকাটি সেই সমস্ত জ্ঞানীর জায়গা দখল করবে বলে আশা করা যায়। এতে অন্যদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়নি, বিরোধীদের কোনো নিন্দা করা হয়নি এবং দ্বিধাগ্রস্তদের ক্ষেত্রেও কোনোরূপ কৌশল অবলম্বন করা হয়নি। তিনি যেটা সঠিক ও হক্ব মনে করেছেন, সেটাকেই লিপিবদ্ধ করেছেন এবং একারণে আল্লাহর নিকট তার জন্য নেকী রয়েছে।

আমি দাওয়াতী ময়দানে অভিজ্ঞতার লম্বা সময় পার করেছি এবং এ অঙ্গনে অনেক কাজের সঙ্গী হয়েছি। এ দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় মহান আল্লাহ আমাকে দাওয়াতী ময়দানে কর্মরত দাঈদের অনেক ভুলভ্রান্তি সম্পর্কে জানার অভিজ্ঞতা দিয়েছেন। যদিও ভুল কোনো দোষের না, কারণ ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। কিন্তু ভুল তখনই পাপে পরিণত হয়, যখন ভুল দেখে চুপ থাকা হয় এবং ভুলটা কাজের একটা অঙ্গে পরিণত হয়।

মানুষের জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজের তুলনায় দাওয়াতে ময়দানে কাজ করা সম্পূর্ণ আলাদা। সেজন্য আমার মতো কারো জন্যই এই ভুলগুলো বুকের মধ্যে ভাঁজ করে রাখা কখনই উচিত নয়। কারণ সে দেখতে পাচ্ছে যে, ভাঁজের মধ্যে কিছু ধোঁকা ও প্রতারণা লুকিয়ে রয়েছে। যদি হৃদয়ে একগুঁয়ে মনোভাব লুকিয়ে থাকে, যা আমাকে গোঁড়ামি ও পক্ষপাতমূলকভাবে নির্দিষ্ট দাওয়াতী অঙ্গনের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করবে, তাহলে এই ভুলগুলো কখনই প্রকাশ পাবে না। মনে রাখতে হবে, একজন দাঈর জন্য এটা বা এর চেয়ে অনেক হালকা পর্যায়ের কাজও হারাম।

আমি জানি না, ইসলামী ময়দানগুলোর কর্মী ও দাঈগণ কেন এই বাতিল অলা বা বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতার হুকুম জানেন না! আমি এখানে বহুবচন শব্দ ব্যবহারের জন্য দুঃখিত! তবে এটাই বাস্তবতা। এই বাতিল সম্পর্ক বিভিন্ন দাওয়াতী ময়দানে মানুষদেরকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটি ময়দানে রয়েছে আলাদা আলাদা সাক্ষ্য! প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নাম! প্রত্যেকটি ময়দান তার অনুসারীদের পূর্ণ আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছে ও উৎসাহিত করছে। কারণ সে নিজের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসী যে, সে-ই হক্বের উপর!

(চলবে)


মূল : আলী ইবনে হাসান আল-হালাবী আল-আছারী

বইটির লেখক আলী ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আব্দুল হামীদ আল-হালাবী আল-আছারী (জন্ম : ১৩৮০ হিজরী) একজন ফিলিস্তীনী সালাফী আলেম। তিনি আল্লামা মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানীর অত্যন্ত ঘনিষ্ট ও প্রিয় ছাত্র ছিলেন। শায়খ আলবানী, শায়খ ইবনে বায, শায়খ বাকর আবূ যায়েদ, শায়খ মুক্ববিল ইবনে হাদী, শায়খ আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ প্রমুখ জগদ্বিখ্যাত উলামায়ে কেরাম শায়খ আলী আল-হালাবীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি একাধারে প্রসিদ্ধ আলোচক এবং বহু গ্রন্থপ্রণেতা।

অনুবাদ : আব্দুল আলীম ইবনে কাওছার মাদানী

বি. এ. (অনার্স), উচ্চতর ডিপ্লোমা, এম. এ. এবং এম.ফিল., মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব; অধ্যক্ষ, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।



[1]. শায়খ মুহাম্মাদ ইবরাহীম শাক্বরা (১৯৩৪-২০১৭ খ্রি.) একজন প্রখ্যাত ফিলিস্তীনী সালাফী আলেমে দ্বীন। দাওয়াতী ময়দানে যার ছিল দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। শায়খ আব্দুল আযীয ইবনে বায ও শায়খ মুহাম্মাদ আমীন আশ-শানক্বীতীর আমলে তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দেন। তিনি শায়খ আব্দুল আযীয ইবনে বাযের খুব প্রিয়পাত্র ছিলেন। সঊদী আরব থেকে ফেরার পর জর্ডানে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সেখানে শায়খ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানীর বাসায় তার সাথে এক মাসেরও বেশি সময় কাটান। এসব জগদ্বিখ্যাত আলেম-উলামার ইলম, আমল, আখলাক, আক্বীদা, মানহাজ তার মধ্যে খুব বেশি প্রভাব ফেলে। যাহোক, শায়খ মুহাম্মাদ ইবরাহীম শাক্বরা শায়খ আলী আল-হালাবীর اَلدَّعْوَةُ إِلَى اللهِ بَيْنَ التَّجَمُّعِ الْحِزْبِيِّ وَالتَّعَاوُنِ الشَّرْعِيِّ শীর্ষক বইটি পড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য লিখেন। যা শায়খ হালাবী তার বইয়ের শুরুতে উপস্থাপন করেন। উল্লিখিত অভিমতটি সেই মন্তব্যেরই ভাবানুবাদ। -অনুবাদক।

[2]. ছহীহ বুখারী, হা/২৬৫২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৩৩।

[3]. সুনানে আবূ দাঊদ, হা/৪৬০৭; সুনানে ইবনু মাজাহ, হা/৪২, ‘ছহীহ’।

[4]. সুনানে আবূ দাঊদ, হা/৪৫৯৬; সুনানে ইবনু মাজাহ, হা/৩৯৯১, ‘হাসান-ছহীহ’।

Magazine