কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ইসলামে কথা বলার নীতি : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

post title will place here

কথা ভাব বিনিময়ের এক শক্তিশালী মাধ্যম। কথা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। মানুষের জীবনে চলার জন্য, প্রয়োজনীয় কাজ সুচারুরূপে করার জন্য কথা এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। জগতের সৃষ্টিশীল সবকিছুর নির্মাণ ও জীবনযাপনের সকল সৌন্দর্য কথার উপর নির্ভর করে। কথা বলার জন্য শব্দ প্রয়োগের তারতম্য ও এর যথাযথ ব্যবহার প্রত্যাশিত সফলতা নিশ্চিত করে। কখনো কখনো শব্দ প্রয়োগের অযত্নায়ন ব্যক্তির ব্যর্থতাকে অনিবার্য করে তোলে। এজন্যই বলা হয়ে থাকে, সুন্দর করে কথা বলা একটি আর্ট বা শিল্প। যে যত বেশি এ শিল্প রপ্ত করে ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করেছে, সে তত বেশি উদ্দেশ্য সাধনে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। কথা বলার সময়ে শব্দ বা বাক্য এবং সুর ও ছন্দ একটু এদিক-সেদিক হলে, এর জন্য কখনো কখনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চড়া মূল্য দিতে হয়। প্রত্যাশিত লক্ষ্য আর ঘরে তোলা যায় না। সময়, পরিবেশ ও যার সাথে কথা বলা হচ্ছে তার মনোজাগতিক অবস্থা ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি, এ্যাটিচিউড ও সাউন্ডের কম্বিনেশন এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুন্দর ও ঠিকমতো কথার উপস্থাপনই লক্ষ্য হাছিলের সবচেয়ে কার্যকর উপাদান।

কারো কথার আঘাতে কষ্ট পেলে সে স্মৃতি মানুষ মনে রাখে, সে কখনো তা ভুলে না। বয়ে বেড়ায় আজীবন; সময়-সুযোগ পেলেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে তা বলে বেড়ায় বংশ পরম্পরায়। যুগের পর যুগ তা স্মৃতির অলিন্দে স্থায়ীভাবে স্থান করে নেয়। রাগে, ক্ষোভে, দুঃখে, ঘৃণায় ও অভিমানে রোমন্থন করে সেই স্মৃতি। এজন্য আরবী প্রবাদ আছে, ‘জারাহাতুস সিনানে লাহাল ইলতিয়াম; ওয়ালা ইয়ালতামু মা জারাহাল্লিসান’ অর্থাৎ ‘কথার ঘা শুকায় না; মাইরের ঘা শুকায়’।[1] ব্যথা-বেদনা ও দুর্ভোগমাখা ফেলে আশা জীবনের কষ্টের কথা মানুষ বেমা‘লূম ভুলে যায়; তেমন একটা মনে রাখে না। কিন্তু কথার ব্যথা এবং এর বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ করতে থাকে অহর্নিশ, চলতে থাকে আজীবন।

আবার একটি কথা যদি মমতা মাখানো হয়, স্নেহের পরশে রঙিন হয়, সুন্দর-মায়াবী শব্দ প্রয়োগে ও দয়া-আন্তরিকতার চাদরে আবৃত শব্দ প্রয়োগে হয়, মানুষ কখনো তা ভুলে না; মনে রাখে আজীবন, তা দাগ কাটে মনে, জীবনের দেয়ালে স্থান করে নেয় সে কথা। যাপিত জীবনে কখনো কোনো দুর্ভোগে কোনো আর্থিক সহযোগিতার চেয়ে ভালো কথা দিয়ে, সুন্দর আইডিয়া দিয়ে কাউকে সঠিক পথে পরামর্শ দিলে অনেক সময় তা কালজয়ী হয়ে উঠে।

একটি ভালো কথা শুধু সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে অনবদ্য ভূমিকাই রাখে না, বরং এর দ্বারা কার্যসিদ্ধ হয় সহজভাবে। এজন্যই ইসলামে কথা বলার আদব বা শিষ্টাচার বর্ণিত হয়েছে মহান আল্লাহ পাকের বাণী ইলাহী বিধান মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে ও মহানবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বর্ণিত বিভিন্ন হাদীছে। তার প্রথমটি হলো কথা বলার পূর্বে সম্ভাষণ করা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যা মনোযোগ আকর্ষণে ও বক্তা-শ্রোতার মাঝে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য মহান আল্লাহ কথা বলার পূর্বে প্রথমে সালাম দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,فَإِذَا دَخَلْتُم بُيُوتًا فَسَلِّمُوا عَلَى أَنفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ اللَّهِ مُبَارَكَةً طَيِّبَةً كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُون ‘যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ কর, তখন তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবে। এটা আল্লাহর কাছ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র দু‘আ। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা বুঝে নাও’ (আন-নূর, ২৪/৬১)। সালাম মানে অন্যের কল্যাণকামিতার ঘোষণা প্রদান করা। এই ঘোষণা বক্তা-শ্রোতার মাঝে আন্তরিক সহমর্মিভাব তৈরি করে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদর সম্ভাষণ বা সালাম বিনিময়ের ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীছে অনেক গুরুত্বারোপ করেছেন। এক মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের পাঁচটি হক্ব বা অধিকারের প্রথমটি হলো দেখা হলে সালাম দেওয়া।[2]

কথা শুরু করা বা বক্তব্য প্রদানে সতর্কতা অবলম্বনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সচেতনতা ও সতর্কতার সাথে কথা বললে মানুষ বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত বিষয়ের থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে। তাছাড়া প্রত্যেকটি কথা আল্লাহ তাআলার নিয়োগপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ লিপিবদ্ধ করে রাখেন। তা রেকর্ডভুক্ত হয়ে দলীল হিসেবে সংরক্ষিত হয়।[3] শব্দ প্রয়োগ ও সুন্দরভাবে বক্তব্য উপস্থাপনের প্রতি খেয়াল করা বা কথা বলার আদব বর্ণনা সংক্রান্ত নির্দেশনা মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে দিয়েছেন। এজন্যই সুন্দরভাবে ও উত্তমরূপে কথা বলতে, ভাব বিনিময়ে করতে বলা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, وَقُولُوا لِلنَّاسِ حُسْنًا ‘মানুষের সঙ্গে সদালাপ করবে’ (আল-বাক্বারা, ২/৮৩)[4]

ব্যক্তিগত জীবনে সদালাপী লোকদের সকলে ভালোবাসে ও পছন্দ করে। কথা বলার সময় ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক অনেকে আমরা অপ্রয়োজনীয় বা ইরিভিলেন্ট কথা, অনর্থক ও বাজে কথা মুখ ফসকে বলে ফেলি। তর্কের খাতিরে বা নিজের মতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে অনেক কথায়ই বলা হয়। কথা বলার সময়ে হয়তো কথার ধারাবাহিকতায় মনে থাকে না বা সচেতন থাকি না। পরে মনে হয়, এ কথাটা না বললে ভালো ছিল। এজন্য ইসলামে অপ্রয়োজনীয় কথা বলা পরিহার করতে বলা হয়েছে। সূরা আল-মুমিনূনে সফলকাম ব্যক্তিদের দীর্ঘ একটি তালিকা দয়াময় প্রভু উপস্থাপন করেছেন (আল-মুমিনীন, ২৩/১-১১)। তৃতীয় নম্বরটি হলো, وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ ‘যারা অপ্রয়োজনীয় কথা বা অসার ক্রিয়াকলাপ হতে নিজেদের বিরত রাখে’ (আল-মুমিনূন, ২৩/৩)। ছহীহ বুখারীতে এই মর্মে নির্দেশনা রয়েছে।[5] কথা বলার সময়ে শব্দ প্রয়োগের পাশাপাশি কণ্ঠস্বরের উঠানামাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভালো কথা কর্কশভাবে বললেও শ্রোতা সহজভাবে সেটা নেয় না। প্রয়োজনীয় কাজে উদ্দেশ্য সফল হয় না। তাই কণ্ঠস্বরের ম্যাকানিজম কথা বলার প্রয়োজনকে সফলতার প্রান্ত সীমায় নিয়ে যায়। পবিত্র কুরআনে এজন্যই কথা বলার সময়ে কণ্ঠস্বর নিচু করে কথা বলতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে,وَاقْصِدْ فِي مَشْيِكَ وَاغْضُضْ مِن صَوْتِكَ إِنَّ أَنكَرَ الْأَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِيرِ ‘পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন করো এবং কণ্ঠস্বর নিচু করো। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর’ (লুক্বমান, ৩১/১৯)। আরো বলা হয়েছে,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَنْ تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنْتُمْ لَا تَشْعُرُونَ - إِنَّ الَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَاتَهُمْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ أُولَئِكَ الَّذِينَ امْتَحَنَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَى لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ

‘হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর কণ্ঠস্বরের উপর তোমাদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিষ্ফল হযে় যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না। যারা আল্লাহর রাসূলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্য শোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার’ (আল-হুজুরাত, ৪৯/২-৩)

অন্যদিকে বুদ্ধি খাটিয়ে বিচক্ষণতার সাথে কথা বলা হলো কার্যকর পদ্ধতি। তা অন্যের মনোযোগ আকর্ষণের পাশাপাশি অর্থবহ আইডিয়া শেয়ারিয়ং-কে নিশ্চিত করে। সূরা আন-নাহলে এই মর্মে নির্দেশনা রয়েছে।[6] কথা বলার সময়ে সঠিক কথা বলা শুধু ব্যক্তিত্ববোধ তৈরিতেই অনবদ্য ভূমিকা পালন করে না; বরং দীর্ঘস্থায়ী পারস্পরিক সম্পর্কের মেলবন্ধনে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করে। আর তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا ‘হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো’ (আল-আহযাব, ৩৩/৭০)। সঠিক কথা বলতেও আন্তরিকতার প্রলেপ এবং মোলায়েম ভাষা প্রয়োগ করা প্রয়োজন। কেননা কর্কশ ভাষায় সঠিক কথাও অনেক সময়ে শ্রোতা যার সাথে কথা বলা হচ্ছে তিনি ইতিবাচকভাবে নিতে চান না। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَاقْصِدْ فِي مَشْيِكَ وَاغْضُضْ مِن صَوْتِكَ إِنَّ أَنكَرَ الْأَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِيرِ ‘পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন করো এবং কণ্ঠস্বর নিচু করো। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর’ (লুক্বমান, ৩১/১৯)

নিজের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কথা বলার সময়ে কখনো ভালো-মন্দ মিশ্রণ করা ঠিক নয়। বরং কঠিন হলেও, পরিস্থিতি নিজের প্রতিকূলে গেলেও সত্যাশ্রয়ী এবং উত্তমের সাথে মিল হয়ে সর্বোত্তম কথা বলা উচিত। এতে দীর্ঘস্থায়ী কল্যাণ নিহিত থাকে। এজন্যই আল্লাহ তাআলা বলেন,وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ ‘ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দ প্রতিহত করো উৎকৃষ্ট দ্বারা; ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো’ (হা-মীম আস-সাজদাহ, ৪১/৩৪)

কথা বলার সময়ে মনে রাখা দরকার যে বিষয়ের কথা হচ্ছে সে বিষয়ে কাজটা কেমন হবে। কথা ও কাজে মিল রাখা বা মিল থাকবে কিনা। প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন করতে পারব কিনা; অথবা যা বলছি নিজে এর সাথে একমত কিনা; নিজে পালন করব কিনা? সাময়িক কিছু পাওয়া বা লাভের আশায় লুকানো চেতনাকে আড়াল করে কথা বললে পরবর্তিতে লজ্জিত হতে হয়। ইসলামে এই বিষয়কে সাংঘাতিকভাবে সম্বোধন করা হয়েছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে। বলা হয়েছে, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ ‘তোমরা এমন কথা কেন বল, যা তোমরা কর না? এটা কতই না নিন্দনীয় ব্যাপার যে, তোমরা যা করছ না তা বলছ’ (আছ-ছফ, ৬১/২)। কথা বলার সময়ে সতর্কতা খুবই প্রয়োজন, সেটা যে লেভেলের লোকের সাথেই কথা বলা হোক না কেন। কথা যেমন জাদুর মতো কাজ করে, ঠিক কথাই কাল হয়ে যায়। কথা যেমন কাজের অনিবার্যতা তৈরি করে; কর্মপরিবেশ ঠিক করে; ঠিক কথার কারণে সবকিছু অনিশ্চিত হয়ে যায়; সাজানো-গোছানো অবস্থা নিমেষেই এলোমেলো হয়ে যায়। মুমিনের একটি কথা বা আইডিয়া প্রদান যেমন ছাদাক্বা ও বারাকাহ হয়, ঠিক কথাই পাপের বা হতাশার অনুরণন তৈরি করে। এজন্য বাক্যালাপে সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়। কথা বলার সময়ে মূর্খ বা যারা যে বিষয়ের উপযুক্ত নয় তাদের সাথে ঐ বিষয়ে বাক্যালাপ না করে বরং এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلَامًا ‘রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মূর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম’ (আল-ফুরক্বান, ২৫/৬৩)

কথা আমানত, কথা হাতিয়ার, কথা একটি অনিবার্য রূপান্তর ও আসন্ন বিপ্লব। সুতরাং কথা বলতে হবে চিন্তা করে, হিসেব কষে, বুদ্ধিমত্তার সাথে। প্রযুক্তির এ গগণচুম্বী উৎকর্ষ সাধনের এই যুগে কথা বলতে হবে আরো যত্নায়নে। টেকনোলজি সব সংরক্ষণ করে রাখে। সময়ে অসময়ে ঘোর বিপদের কারণ হতে পারে আপনার মুখনিঃসৃত একটি দু’টি কথাই। আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী সঠিকভাবে আমল বা ইসলাম চর্চা করার তওফীক্ব দান করুন- আমীন!

ড. মোহাম্মদ হেদায়াত উল্লাহ

সহকারী অধ্যাপক (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা), সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা।


[1]. শারহে কাফিয়া।

[2]. ছহীহ মুসলিম, হা/২১৬২।

[3]. আল্লাহ তাআল বলেন, مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ ‘সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রযে়ছে’ (ক্বাফ, ৫০/১৮০)

[4]. ছহীহ বুখারী, হা/১৪১৩।

[5]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫৯।

[6]. আল্লাহ তাআলা বলেন,ادْعُ إِلِى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ ‘আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভালো জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে’ (আন-নাহল, ১৬/১২৫)

Magazine