উত্তর: মহান আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি নিদর্শন হলো তিনি মেঘের মাঝে বিদ্যুৎ চমকান। আর এ বিদ্যুতের মাঝে আশা ও নিরাশা দুটোই বিদ্যমান। কেননা, এই বজ্রপাতের মাধ্যমে অনেক বনী আদম দুনিয়া ত্যাগ করে। আবার অনেক মানুষ বিদ্যুৎ চমকে আশার আলো দেখতে পায়, তারা মনে করে, এই তো বুঝি রহমতের ঝর্ণা ধারা বয়ে যাবে এবং সিক্ত হবে খরতাপে চৌচির হওয়া পৃথিবী। গাছ-গাছালী, তরুলতা ও ঘাস ফিরে পাবে নতুন জীবন। ফুলে-ফলে ভরে উঠবে কৃষকের জমিন। ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে। উৎকট ও ভ্যাপসা গরম থেকে রক্ষা পাবে সকল মানুষ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তিনি সেই সত্ত্বা যিনি ভয় দেখানোর জন্য ও আশা সঞ্চারের জন্য মেঘের মাঝে তোমাদের বিদ্যুৎ চমক দেখান, তিনি ভারী মেঘমালা সৃষ্টি করেন। মেঘের গর্জন ও ফেরেশতারা প্রশংসাসহ তাঁর ভয়ে তাঁর মাহাত্ম্য ঘোষণা করে, তিনি বজ্রপাত করান, অতঃপর যাকে চান তাকে বজ্রাঘাত করেন, অথচ তারা (কাফেররা) আল্লাহর অস্তিত্ব বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়, তিনি তার কৌশলে ও মাহাত্ম্যে অনেক বড়’ (আর-রা‘দ, ১৩/১২-১৩)। বিপদাপদে নিম্নের দু‘আ পাঠ করা যায়। যথা-
لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
অর্থ: আপনি ছাড়া কোনো প্রকৃত মা‘বূদ নেই, আপনি পবিত্র, নিশ্চয় আমি যালিমদের অন্তর্ভূক্ত ছিলাম (আম্মিয়া, ২১/৮৭)।
রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বজ্রপাতের সময় বিশেষভাবে এই দুআটি পাঠ করতেন- سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ
নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী আয়েশা রযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন ঝড়ো হাওয়া বইতো, তখন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু‘আ পাঠ করতেন-
اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا فِيهَا وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর কল্যাণ, এতে নিহিত কল্যাণ ও প্রেরিত কল্যাণ কামনা করছি। আমি আপনার নিকট এর অনিষ্ট, এতে নিহিত অনিষ্ট ও প্রেরিত অনিষ্ট হতে আশ্রয় গ্রহন করছি। আশেয়া রযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আর যখন তিনি আকাশে মেঘ দেখতে পেতেন, তখন তার চেহারার রং পরিবর্তন হয়ে যেত, আর ঘর হতে বের হতেন ও ঘরে প্রবেশ করতেন। বৃষ্টিপাত হলে, তাঁর সকল চিন্তা দূর হয়ে যেত… (ছহীহ মুসলিম, হা/৮৯৯)।
প্রশ্নকারী : মো. রোকনুজ্জামান
শিবগঞ্জ, বগুড়া।