(গ) দুধপানসূত্রে স্থায়ী মাহরাম নারীগণের বিবরণ:
বংশীয় কারণে বা রক্ত সম্পর্কীয় কারণে যেসব নারী মাহরাম হয়, দুধ সম্পর্কীয় কারণে তারাই মাহরাম হয়। দুধ সম্পর্কের কারণে মাহরাম নারীগণ বংশীয় কারণে মাহরাম নারীগণের ন্যায়। কারণ দুধপানের বিষয়টি দুধপানকারীকে দুধদানকারিণী মায়ের সাথে এমন সম্পর্ক তৈরি করে দেয়, যা তার জন্মদাত্রী মায়ের সম্পর্কের মতোই। সেজন্যই মহান আল্লাহ বলেছেন,وَأُمَّهَاتُكُمُ اللَّاتِي أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَاتُكُمْ مِنَ الرَّضَاعَةِ ‘(তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে) তোমাদের সেসব মাকে, যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছেন এবং (তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে) তোমাদের দুধবোনদেরকে’ (আন-নিসা, ৪/২৩)। এ আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে ইমাম কুরতুবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, فَإِذَا أَرْضَعَتِ الْمَرْأَةُ طِفْلًا حَرُمَتْ عَلَيْهِ لِأَنَّهَا أُمُّهُ وَبِنْتُهَا لِأَنَّهَا أُخْتُهُ وَأُخْتُهَا لِأَنَّهَا خَالَتُهُ وَأُمُّهَا لِأَنَّهَا جَدَّتُهُ وَبِنْتُ زَوْجِهَا صَاحِبُ اللَّبَنِ لِأَنَّهَا أُخْتُهُ وَأُخْتُهُ لِأَنَّهَا عَمَّتُهُ وَأُمُّهُ لِأَنَّهَا جَدَّتُهُ وَبَنَاتُ بَنِيهَا وَبَنَاتِهَا لِأَنَّهُنَّ بَنَاتُ إِخْوَتِهِ وَأَخَوَاتِهِ ‘কোনো মহিলা যখন কোনো শিশুকে দুধপান করান, তখন তিনি তার জন্য (বিবাহে) হারাম হয়ে যান। কেননা তিনি তার মা। ঐ মহিলার মেয়ে হারাম হয়ে যায়। কেননা সে তার বোন। উক্ত মহিলার বোন হারাম হয়ে যান। কেননা তিনি তার খালা। তাঁর মা হারাম হয়ে যান। কেননা তিনি তার নানী। উক্ত মহিলার স্বামীর (অন্য স্ত্রীর) মেয়ে হারাম হয়ে যায়। কেননা সে তার বোন। উক্ত মহিলার স্বামীর বোন হারাম হয়ে যান। কেননা তিনি তার ফুফু। উক্ত মহিলার স্বামীর মা হারাম হয়ে যান। কেননা তিনি তার দাদী। উক্ত মহিলার ছেলের মেয়ে এবং মেয়ের মেয়ে (নাতনী) হারাম হয়ে যায়। কেননা তারা তার ভাইয়ের মেয়ে ও বোনের মেয়ে (ভাগনি)’।[1]
ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হামযা রাযিয়াল্লাহু আনহু–এর মেয়ে সম্পর্কে বলেন, لاَ تَحِلُّ لِي، يَحْرُمُ مِنَ الرَّضَاعِ مَا يَحْرُمُ مِنَ النَّسَبِ هِيَ بِنْتُ أَخِي مِنَ الرَّضَاعَةِ ‘তিনি আমার জন্য হালাল নন। বংশীয় কারণে যারা হারাম হয়, দুধপানের কারণেও তারা হারাম হয়। তিনি তো আমার দুধভাইয়ের মেয়ে’।[2] অপর এক বর্ণনায় এসেছে,أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ عِنْدَهَا وَأَنَّهَا سَمِعَتْ صَوْتَ رَجُلٍ يَسْتَأْذِنُ فِى بَيْتِ حَفْصَةَ قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذَا رَجُلٌ يَسْتَأْذِنُ فِى بَيْتِكَ فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم أُرَاهُ فُلاَنًا لِعَمِّ حَفْصَةَ مِنَ الرَّضَاعَةِ قَالَتْ عَائِشَةُ لَوْ كَانَ فُلاَنٌ حَيًّا لِعَمِّهَا مِنَ الرَّضَاعَةِ دَخَلَ عَلَىَّ فَقَالَ نَعَمِ الرَّضَاعَةُ تُحَرِّمُ مَا تُحَرِّمُ الْوِلاَدَةُ ‘নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদিন) তাঁর নিকট ছিলেন। তখন তিনি জনৈক ব্যক্তির হাফছা রাযিয়াল্লাহু আনহা-এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাওয়ার আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ ব্যক্তি একজন পুরুষ মানুষ, যিনি আপনার ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছেন। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার মনে হয়, সে হাফছার অমুক দুধচাচা। তখন আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বললেন, আচ্ছা আমার অমুক দুধচাচা যদি জীবিত থাকতেন, তাহলে কি তিনি আমার ঘরে প্রবেশ করতে পারতেন? জবাবে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, পারতেন। কেননা, জন্মসূত্রে যা হারাম হয়, দুধপানসূত্রেও তা হারাম হয়ে যায়’।[3] অন্য একটি হাদীছে এসেছে, আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর আবুল কুআইসের ভাই আফলাহ তাঁর গৃহে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আবুল কুআইস ছিলেন আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা–এর দুধবাপ। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে আফলাহকে অনুমতি দেব না। কেননা আবুল কুআইস আমাকে দুধপান করাননি; বরং আমাকে দুধপান করিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (আমার ঘরে) প্রবেশ করলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আবুল কুআইসের ভাই আফলাহ আমার গৃহে প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছেন। কিন্তু আপনার অনুমতি না নেওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে অনুমতি দিতে অপছন্দ করেছি। তিনি বলেন, অতঃপর নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ائْذَنِي لَهُ ‘তাঁকে তুমি অনুমতি দাও’। উরওয়া রাহিমাহুল্লাহ বলেন, সেজন্যই আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলতেন, حَرِّمُوا مِنَ الرَّضَاعَةِ مَا تُحَرِّمُونَ مِنَ النَّسَبِ ‘বংশগত কারণে যাদেরকে তোমরা (বিবাহে) হারাম মনে করো, দুধপানসূত্রেও তোমরা তাদেরকে হারাম গণ্য করো’।[4]
ইবনু কুদামা বলেন, وَأَجْمَعَ عُلَمَاءُ الْأُمَّةِ عَلَى التَّحْرِيمِ بِالرَّضَاع ‘উলামায়ে কেরামের ইজমা হয়েছে যে, দুধপান দ্বারা হারাম সাব্যস্ত হয়’।[5] সেজন্য তাদের নিকট দুধপান সম্পর্কিত সূত্র হচ্ছে, كُلُّ مَا تَحْرُمُ الْمَرْأَةُ بِسَبَبِهِ قَرَابَةً وَمُصَاهَرَةً، تَحْرُمُ رَضَاعًا ‘বংশ এবং বিবাহ যেকোনো কারণে যে নারী হারাম হয়, দুধপানের কারণেও সে নারী হারাম হয়’।[6]
দুধপানসূত্রে হারাম সাব্যস্ত হয় কীভাবে?
ধরে নিচ্ছি, যায়েদ ও খাদীজা অপরিচিত দু’জন মানুষ। যায়েদ এক পরিবারের আর খাদীজা ভিন্ন আরেক পরিবারের। যায়েদকে খাদীজা নির্ধারিত পরিমাণ ও নির্দিষ্ট বয়সে দুধ পান করালো। এখন যায়েদের পরিবারের সাথে এই দুধপানের কোনো সম্পর্ক নেই; বিষয়টি কেবলই যায়েদের সাথে সম্পর্কিত। অর্থাৎ ঐ দুধপানের প্রভাব কেবল যায়েদ এবং খাদীজার পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। দুধপানকারী যায়েদ দুধদানকারিণী খাদীজার পরিবারে ঢুকে যাবে। কারণ যখন খাদীজা যায়েদকে দুধপান করিয়েছে, তখন সে তার মা হয়ে গেছে। এখন যায়েদের উপর তাই হারাম হবে, যা খাদীজার পেটের ছেলের উপর হারাম হয়। ফলে এই যায়েদ খাদীজার ছেলে হয়ে যাবে, খাদীজার স্বামী যায়েদের পিতা হয়ে যাবে, খাদীজার সন্তানেরা তার ভাই-বোন হয়ে যাবে, খাদীজার বোনেরা তার খালা হয়ে যাবে, খাদীজার স্বামীর বোনেরা তার ফুফু হয়ে যাবে, এভাবে খাদীজার অন্যান্য আত্মীয়ের সাথেও যায়েদের সম্পর্ক তৈরি হবে। ভাবখানা এমন যে, খাদীজা যায়েদকে প্রসব করেছে এবং যায়েদ এই পরিবারের জন্য এমনভাবে হারাম হয়ে গেছে, যেন সে খাদীজার একজন সন্তান।[7]
উল্লেখ্য, দুধপানসূত্রে কেউ হারাম হওয়ার জন্য কিছু বিশেষ শর্ত ও নিয়মকানুন রয়েছে, যার আলোচনা সামনে আসছে ইনশা-আল্লাহ।
যাহোক, দুধপান সম্পর্কীয় মাহরাম নারীগণ ৮ প্রকারের। তাদের ৪ প্রকার বংশীয় কারণে এবং অপর ৪ প্রকার বৈবাহিক কারণে মাহরাম হয়। নিচে তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো—
প্রথম প্রকার: দুধপানের দিক থেকে দুধপানকারীরমূলগত মাহরাম
অর্থাৎ দুধপানকারী ব্যক্তির দুধমা, দুধনানী, দুধদাদী এভাবে যত উপরে উঠুক সবাই তার জন্য (বিবাহের ক্ষেত্রে) হারাম। কারণ তারা সবাই তার দুধমা।
দ্বিতীয় প্রকার: দুধপানের দিক থেকে দুধপানকারীর শাখাগত মাহরাম
অর্থাৎ দুধপানকারী ব্যক্তির দুধমেয়ে, দুধনাতনী এভাবে যত নিচে নামুক সবাই তার জন্য (বিবাহের ক্ষেত্রে) হারাম। অতএব, যে মেয়ে কোনো পুরুষের স্ত্রীর দুধপান করল, সেই পুরুষ ঐ মেয়ের পিতা হয়ে গেল। সেজন্য ঐ মেয়েটি ঐ পুরুষ লোকটির জন্য হারাম হয়ে গেল। কেননা মেয়েটি তার দুধমেয়ে। এখানে দুধমেয়ে বলতে, দুধমেয়ে, দুধমেয়ের মেয়ে, দুধছেলের মেয়ে এভাবে যতই নিচে যাক, সবাই উদ্দেশ্য।
তৃতীয় প্রকার: দুধপানের দিক থেকে দুধপানকারীর দুধপিতা-মাতার জন্মদান সম্বন্ধীয় মাহরাম
অর্থাৎ দুধপানকারী ব্যক্তির দুধবোন, দুধভাই ও দুধবোনের মেয়ে (দুধভাগনি) এভাবে যত নিচে নামুক সবাই তার জন্য (বিবাহের ক্ষেত্রে) হারাম। অতএব, যে ব্যক্তি কোনো মহিলার দুধপান করবে, সে ঐ মহিলার সন্তানদের ভাই হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, দুধবোন হওয়ার জন্য একই সময়ে দুধপান করা শর্ত নয়, যেমনটি অনেকের মধ্যে ধারণা আছে। বরং সময়ের বিস্তর ব্যবধান থাকলেও একই মায়ের দুধপান করলে ছেলে-মেয়ে উভয়ে পরস্পর দুধভাই-দুধবোন হিসেবে গণ্য হবে।
চতুর্থ প্রকার: দুধপানের দিক থেকে দুধপানকারীর দুধদাদা-দাদীর জন্মদান সম্বন্ধীয় মাহরাম
অর্থাৎ দুধপানকারীর দুধফুফু, দুধখালা। তাদেরকে বিয়ে করা তেমন হারাম, যেমন তার বংশীয় ফুফু ও খালাকে বিয়ে করা হারাম। আরো সহজ করে বলা যায়, যে মহিলা আপনাকে দুধপান করিয়েছেন, তার বোন আপনার দুধখালা। তিনি আপনার জন্য চিরকাল হারাম। অনুরূপভাবে আপনার দুধমায়ের স্বামীর বোন আপনার দুধফুফু।
উক্ত ৪ প্রকার নারী দুধপানের দিক থেকে বংশীয় কারণে হারাম হয়।
পঞ্চম প্রকার: দুধপানের দিক থেকে ব্যক্তির স্ত্রীর মূলগত মাহরাম
অর্থাৎ ব্যক্তির স্ত্রীর দুধমা, স্ত্রীর দুধনানী, স্ত্রীর দুধদাদী এভাবে যত উপরে উঠুক-না কেন, তারা সবাই এ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। বিয়ে করার কারণেই কিন্তু বিবাহিত ব্যক্তির সাথে তার স্ত্রীর দুধমা, স্ত্রীর দুধনানী, স্ত্রীর দুধদাদীর উক্ত সম্পর্ক স্থাপিত হচ্ছে।
ষষ্ঠ প্রকার: দুধপানের দিক থেকে ব্যক্তির স্ত্রীর শাখাগত মাহরাম
অর্থাৎ ব্যক্তির স্ত্রীর দুধমেয়ে, স্ত্রীর দুধমেয়ের মেয়ে, স্ত্রীর দুধছেলের মেয়ে এভাবে যত নিচে নামুক-না কেনো, তারা সবাই এ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো ঐ ব্যক্তির স্ত্রীর সাথে তার সহবাস হতে হবে; সহবাস হওয়ার আগে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে ব্যক্তির স্ত্রীর দুধমেয়ে, স্ত্রীর দুধমেয়ের মেয়ে, স্ত্রীর দুধছেলের মেয়ের সাথে সেই ব্যক্তির বিয়ে বন্ধন হারাম হবে না।
সপ্তম প্রকার: দুধপানের দিক থেকে ব্যক্তির মূলগত কোনো পুরুষের স্ত্রী
অর্থাৎ ব্যক্তির দুধবাপের স্ত্রী, দুধদাদার স্ত্রী প্রমুখ।
অষ্টম প্রকার: দুধপানের দিক থেকে ব্যক্তির শাখাগত কোনো পুরুষের স্ত্রী
অর্থাৎ ব্যক্তির দুধছেলের স্ত্রী, দুধছেলের ছেলের স্ত্রী প্রমুখ।
শেষের ৪ প্রকার নারী দুধপানের দিক থেকে বৈবাহিক কারণে হারাম হয়।
দুধপানসূত্রে যেসব নারীকে বিয়ে করা চিরতরে হারাম, তাদের তালিকাটা আমরা আরো সহজ করে এভাবেও বলতে পারি—
(১) দুধমা— যিনি দুধপানকারীকে দুধপান করিয়েছেন, দুধমায়ের মা ও দুধমায়ের নানী-দাদী। এভাবে যত উপরে উঠুক তারা সবাই দুধপানকারীর মা।
(২) দুধমায়ের মেয়ে, তার মেয়ে— এভাবে যত নিচে নামুক। তারা দুধপানকারী পুরুষের আগে জন্মগ্রহণ করুক বা পরে জন্মগ্রহণ করুক, তাতে হুকুমে কোনো পার্থক্য হবে না। এ শ্রেণির নারী হারাম হওয়ার কারণ হচ্ছে, তারা হলো দুধপানকারী সেই পুরুষ লোকটির বোন। অর্থাৎ আপনি যার দুধপান করেছেন, তার মেয়েরা আপনার বোন, তারা আপনার আগে জন্মগ্রহণ করুক বা পরে জন্মগ্রহণ করুক।
(৩) দুধমায়ের বোন। যিনি আপনাকে বুকের দুধপান করিয়েছেন, তার বোন আপনার খালা এবং তিনি আপনার জন্য চিরতরে হারাম।
(৪) দুধমায়ের মেয়ের মেয়ে তথা দুধপানকারীর দুধসম্পর্কের ভাগনি। আরো স্পষ্ট করে বলা যায়, একজন পুরুষ কোনো মহিলার বুকের দুধপান করল আর এই মহিলার মেয়ে রয়েছে। এখন এই মেয়েটি এই দুধপানকারী পুরুষ লোকটির বোন। এই মেয়েটির বিয়ে হওয়ার পর তার একটি মেয়ে হলো। শেষের এই মেয়েটিই ঐ পুরুষ লোকটির দুধবোনের মেয়ে তথা দুধভাগনি।
(৫) দুধমায়ের স্বামীর মা, যে স্বামীর মিলনে গর্ভধারণের ফলে উক্ত দুধমায়ের বুকে দুধ এসেছে। দুধমায়ের স্বামীর এই মাকে চিরদিনের জন্য বিয়ে করা হারাম। কারণ তিনি ঐ লোকটির দুধ সম্পর্কের দাদী। কেননা যে দুধ লোকটি পান করেছে, সেই দুধ বুকে আসার পেছনে যে মানুষটির অবদান রয়েছে, তিনি হচ্ছেন সেই দুধপানকারী লোকটির দুধবাবা। তাহলে সেই দুধবাবার মা তার দুধদাদী। ফলে তাকে বিয়ে করা চিরতরে হারাম।
(৬) দুধমায়ের স্বামীর বোন। চিরতরে তাকে বিয়ে করা হারাম হওয়ার কারণ হচ্ছে, তিনি দুধপানকারীর দুধসম্পর্কীয় ফুফু।
(৭) দুধমায়ের ছেলের মেয়ে। চিরতরে তাকে বিয়ে করা হারাম হওয়ার কারণ হচ্ছে, তিনি দুধপানকারীর দুধভাইয়ের মেয়ে তথা দুধসম্পর্কীয় ভাতিজি।
(৮) দুধমায়ের স্বামীর মেয়ে— যদিও মেয়েটি স্বামীর অন্য স্ত্রীর মেয়ে হয়। তাকে চিরতরে বিয়ে করা হারাম হওয়ার কারণ হচ্ছে, সে পিতার দিক থেকে তার দুধবোন।
(৯) দুধমায়ের স্বামীর বোন। তিনি হারাম হওয়ার কারণ হচ্ছে, তিনি দুধপানকারী পুরুষের ফুফু।
(১০) দুধমায়ের স্বামীর অন্য স্ত্রী। তাকে বিয়ে করা হারাম হওয়ার কারণ হচ্ছে, তিনি তার দুধসম্পর্কীয় বাবার স্ত্রী।
(১১) দুধপানকারী পুরুষের স্ত্রীকে বিয়ে করা দুধমায়ের স্বামীর জন্য হারাম। কেননা সে তার দুধছেলের স্ত্রী।
জরুরী জ্ঞাতব্য, দুধপানসূত্রে হারাম হওয়ার বিষয়টি কেবল দুধপানকারী পুরুষের জন্য প্রযোজ্য; এই নিষিদ্ধতা দুধপানকারী ব্যক্তির অন্য কোনো আত্মীয়স্বজন পর্যন্ত গড়াবে না। অর্থাৎ অন্য কারো জন্য প্রযোজ্য হবে না। ফলে উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দুধপানকারীর দুধবোন দুধপানকারীর অন্য ভাইয়ের বোন হিসেবে গণ্য হবে না। সেকারণে দুধপানকারীর অন্য ভাই চাইলে তার ভাইয়ের দুধবোনকে বিয়ে করতে পারে। কোনো পুরুষ যদি কোনো মহিলার বুকের দুধপান করে, তাহলে ঐ মহিলার সকল মেয়ে ঐ পুরুষের জন্য হারাম হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু ঐ পুরুষের ভাই, যে উক্ত মহিলার বুকের দুধপান করেনি, সে চাইলে তার ভাইয়ের দুধবোনকে বিয়ে করতে পারবে। কেননা নিষিদ্ধতা শুধু দুধপানকারীর ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ। এক্ষেত্রে সূত্র হচ্ছে, ‘যারা একই মায়ের বুকের দুধপানে অংশগ্রহণ করেছে, তারা সবাই পরস্পর ভাই-ভাই ও ভাই-বোন। অতএব, দুধপানকারীর ভাই, যে তাদের সাথে একই মায়ের দুধপান করেনি, সে তার ভাইয়ের দুধমায়ের মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। কারণ সে তার জন্য মাহরাম নয়, বরং বেগানা নারী— যদিও তার ভাইয়ের দুধবোন’।[8]
দুধপানসূত্রে হারাম হওয়ার শর্ত: দুধপানসূত্রে হারাম হওয়ার জন্য বা মাহরাম সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যেমন—
(১) মানুষের বুকের দুধপান হতে হবে। সেজন্য যদি দু’জন মানুষ কোনো একটি গরু, ছাগল বা উটের দুধ পান করে, তাহলে তারা পরস্পর ভাই-ভাই হবে না। কারণ মহান আল্লাহ বলেছেন, وَأُمَّهَاتُكُمُ اللَّاتِي أَرْضَعْنَكُمْ ‘(তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে) তোমাদের সেসব মাকে, যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছেন’ (আন-নিসা, ৪/২৩)। আর আদমকন্যা না হওয়া পর্যন্ত কেউ মানুষের মা হতে পারবে না।[9]
(২) দুধপান পাঁচ অথবা পাঁচের অধিকবার হতে হবে। সুতরাং যদি কোনো শিশু কোনো নারীর কাছ থেকে পাঁচবারের কম একবার, দুইবার, তিনবার বা চারবার দুধ পান করে, তাহলে উক্ত নারী তার মা বলে গণ্য হবে না। কেননা ছহীহ মুসলিমে আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,كَانَ فِيمَا أُنْزِلَ مِنَ الْقُرْآنِ عَشْرُ رَضَعَاتٍ مَعْلُومَاتٍ يُحَرِّمْنَ ثُمَّ نُسِخْنَ، بِخَمْسٍ مَعْلُومَاتٍ فَتُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُنَّ فِيمَا يُقْرَأُ مِنَ الْقُرْآنِ ‘প্রথমত কুরআনে এই নির্দেশই অবতীর্ণ হয়েছিল যে, নির্দিষ্ট সময়ে ১০ বার দুধপান নারীকে হারামে পরিণত করে। অতঃপর এই নির্দেশ রহিত হয় ৫ বার নির্দিষ্ট সময় দুধপান দ্বারা। আর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুকাল পর্যন্ত কুরআনের আয়াত হিসেবে এটি পাঠ করা হতো’।[10] ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে, পাঁচবার দুধপান (তেলাওয়াত হিসেবে) মানসূখ হওয়ার বিষয়টি এত পরে অবতীর্ণ হয়েছে যে, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর মারা যাওয়ার সময়েও কিছু মানুষ পাঁচবার দুধপানকে কুরআনের আয়াত গণ্য করে তেলাওয়াত করতেন। কারণ খুব নিকট অতীতে মানসূখ হওয়ায় খবরটি তাঁদের কাছে পৌঁছেনি। কিন্তু যখনই তাঁদের কাছে খবর পৌঁছে গেছে, তখনই তাঁরা সেখান থেকে সরে এসেছেন এবং ইজমা পোষণ করেছেন যে, এগুলো আর তেলাওয়াত করা যাবে না। নাস্খ বা রহিত হওয়ার বিষয়টি তিন ধরনের: হুকুম ও তেলাওয়াত উভয়ই রহিত হয়ে যাওয়া। যেমন— দশবার দুধপানের বিষয়টি। হুকুম অবশিষ্ট থাকা ও তেলাওয়াত রহিত হয়ে যাওয়া। যেমন— পাঁচবার দুধপানের বিষয়টি...’।[11]
অতএব, পাঁচবারের কম একবার, দুইবার, তিনবার বা চারবার দুধপান করলে হারাম সাব্যস্ত হবে না। এ শর্তটির ব্যাপারে ভিন্ন মত থাকলেও এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ও অগ্রাধিকারযোগ্য মত।
যদি প্রশ্ন করা হয়, পাঁচবারের শর্ত কেন? উত্তর হবে, এটি আল্লাহর হুকুম। সুতরাং কোনো প্রশ্ন ছাড়াই যেভাবে এসেছে, সেভাবে মেনে নেওয়া একজন মুসলিমের দায়িত্ব। যেমনভাবে একজন মুসলিম ছালাতের রাকআত সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় না।
আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, দুধপানের ক্ষেত্রে পাঁচবার কীভাবে হিসাব করতে হবে?
এর উত্তরে বলা যায়, শিশু বুকের দুধ মুখে নিয়ে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় মুখ থেকে দুধ ছেড়ে দিলে তা একবার গণ্য হবে। এভাবে আবার দুধ মুখে নিয়ে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় দুধ ছেড়ে দিলে তা দ্বিতীয়বার গণ্য হবে। এভাবে পূর্ণ পাঁচবার পান করলে হারাম সাব্যস্ত হবে।[12] তবে, এক বৈঠকে টানা পাঁচবার পান করা শর্ত নয়; বরং একাধিক বৈঠকেও যদি এভাবে পাঁচবার পান করে, তবুও তা ধর্তব্য হবে।[13]
কেউ কেউ বলেন, এক বৈঠকে স্বেচ্ছায় মুখ থেকে দুধ ছেড়ে দিয়ে থেমে গেলে একবার গণ্য হবে; নিঃশ্বাস নেওয়া, সামান্য বিশ্রাম নেওয়া বা অন্য কোনো কারণে সামান্য বিরতি নিয়ে আবার দুধ মুখে নিলেও একবারই গণ্য হবে, যেমনভাবে কেউ খাওয়াদাওয়া করতে করতে মাঝখানে কোনো কারণে সামান্য বিরতি নিলে তবুও সেটাকে একবার খাওয়াই ধরা হয়।[14]
প্রথম মতটির পক্ষে সঊদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক আলেমের মত রয়েছে।
(৩) দুধপান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হতে হবে। অর্থাৎ দুই বছরের মধ্যে হতে হবে। যদি দুধপান নির্দিষ্ট সময়ের পরে হয় অথবা কিছুটা আগে আর কিছুটা পরে হয়, তাহলে দুধদাত্রী নারী শিশুর মা বলে গণ্য হবে না। মহান আল্লাহ বলেন, وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَنْ أَرَادَ أَنْ يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ ‘মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দুই বছর দুধপান করাবে। এটা সে ব্যক্তির জন্য, যে স্তন্যপান কাল পূর্ণ করতে চায়’ (আল-বাক্বারা, ২/২৩৩)। ইমাম কুরতুবী রাহিমাহুল্লাহ উক্ত আয়াতের তাফসীরে দুই বছরের মধ্যে দুধপান হতে হবে মর্মে বক্তব্য উল্লেখ করেছেন।[15]
আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসলেন, তখন আমার নিকট এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আয়েশা! এ কে? আমি বললাম, আমার দুধভাই। তিনি বললেন,يَا عَائِشَةُ انْظُرْنَ مَنْ إِخْوَانُكُنَّ فَإِنَّمَاالرَّضَاعَةُمِنَالمَجَاعَةِ ‘হে আয়েশা! কে তোমার সত্যিকার দুধভাই তা যাচাই করে দেখে নিও। কেননা ক্ষুধার কারণে দুধপানের ফলেই শুধু দুধসম্পর্ক স্থাপিত হয়’।[16] অর্থাৎ যে বয়সে দুধ পান করলে অন্য কিছু না খেলেও পেট ভরে ও পরিতৃপ্ত হয় এবং স্রেফ এর দ্বারা তার গোশত-হাড়ের প্রবৃদ্ধি ঘটে।[17] যে বয়সে অন্য খাবারের বিকল্প হিসেবে কেবল দুধই যথেষ্ট হয়ে যায়, এখানে সেই বয়সের কথা বলা হয়েছে। আর সেই বয়সটা হচ্ছে দুই বছর বা এর কাছাকাছি সময়।[18]
যখনই দুধপানের শর্তগুলো পুরোপুরি পাওয়া যাবে, তখনই দুধপানকারী শিশুটি দুধদাত্রী নারীর সন্তান বলে গণ্য হবে এবং নারীর অন্য সন্তানরা তার ভাই-বোনের অন্তর্ভুক্ত হবে, চাই তাদের জন্ম তার আগে কিংবা পরে হোক। আর একইভাবে দুধবাবার সন্তানরাও তার ভাই-বোনের অন্তর্ভুক্ত হবে, চাই তারা দুধমার সন্তান হোক বা অপর স্ত্রীর সন্তান হোক।
(ঘ) লিআন[19] সম্পন্ন হওয়া স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের মাঝে লিআনপরবর্তী বিয়েবন্ধন চিরতরে হারাম:
যেহেতু এই এক শ্রেণির নারী তার স্বামীর জন্য চিরতরে হারাম, সেহেতু এই শ্রেণিকে কেউ কেউ এখানে উল্লেখ করেছেন। হাদীছে এসেছে,قَالَ سَهْلٌ حَضَرْتُ هَذَا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَضَتِ السُّنَّةُ بَعْدُ فِي الْمُتَلَاعِنَيْنِ أَنْ يُفَرَّقَ بَيْنَهُمَا ثُمَّلَايَجْتَمِعَانِأَبَدًا ‘সাহল রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর নিকটে উপস্থিত ছিলাম। অতঃপর উভয় লিআনকারীর জন্য এই নিয়ম চলে আসছে যে, তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করা হবে এবং পুনরায় কখনো তারা উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে না’।[20]
তবে তাদেরকে পরস্পর বেগানা নারী-পুরুষের মতো পর্দার বিধান মেনে চলতে হবে।
(চলবে)
বি. এ. (অনার্স), উচ্চতর ডিপ্লোমা, এম. এ. এবং এম.ফিল., মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব; অধ্যক্ষ, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।
[1]. তাফসীর কুরতুবী, ৫/১০৯।
[2]. ছহীহ বুখারী, হা/২৬৪৫।
[3]. ছহীহ বুখারী, হা/৫০৯৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৪৪।
[4]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১৫৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৪৫।
[5]. আল-মুগনী, ৮/১৭১।
[6]. মুহাম্মাদ সাঈদ রসলান, আল-মুহাররামাত মিনান নিসা, পৃ. ৫০।
[7]. আলী রমলী, ফাযলু রব্বিল বারিয়্যাহ ফী শারহিদ দুরারিল বাহিয়্যাহ, পৃ. ৩০৭।
[8]. দুধপান সম্পর্কিত মাহরাম নারীগণের উল্লিখিত তথ্য ও বিন্যাসের অধিকাংশই মুহাম্মাদ সাঈদ রসলান প্রণীত ‘আল-মুহাররামাত মিনান নিসা’-এর ৫০-৫৬ নম্বর পৃষ্ঠার আলোকে প্রণীত।
[9]. শায়খ উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ-দার্ব (দ্রষ্টব্য: https://binothaimeen.net/content/7733)।
[10]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৫২।
[11]. শারহুন নাবাবী আলা ছহীহি মুসলিম, ১০/২৯।
[12]. দ্রষ্টব্য: ফাতাওয়াল লাজনাহ আদ-দায়েমাহ, ১৬/১০।
[13]. ফতওয়ার এই লিংক দ্রষ্টব্য:
https://www.islamweb.net/ar/fatwa/121016/।
[14]. ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মাআদ, ৫/৫১১।
[15]. তাফসীর কুরতুবী, ৩/১৬২।
[16]. ছহীহ বুখারী, হা/২৬৪৭।
[17]. দ্রষ্টব্য: ফাতহুল বারী, ৯/১৪৮।
[18]. দ্রষ্টব্য: ইমাম কুরতুবী, আল-মুফহিম, ৪/১৮৮।
[19]. লিআনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ইতোপূর্বে একটি পাদটীকায় আলোচনা করা হয়েছে।
[20]. সুনানে আবূ দাঊদ, হা/২২৫০, ছহীহ।