কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

কুরআন, হাদীছ ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবজিহ্বার রহস্য

post title will place here

জিহ্বাকে আরবীতে ‘লিসান’ বলা হয়। এটি একটি গোশতপিণ্ড। জ্ঞানীরা জিহ্বাকে ‘হৃদয়ের দরজা’ নামে আখ্যায়িত করেছেন। মানুষের অন্তরের গোপনীয়তা জিহ্বা দ্বারাই প্রকাশ পায়। এর ক্ষমতা প্রবল ক্ষমতাশালী নরপতি হতেও বেশি। জিহ্বা হচ্ছে আল্লাহর নেয়ামতসমূহের একটি। আল্লাহ তাআলা জিহ্বাকে বিভিন্ন বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা ও মনের ভাব প্রকাশ করার মাধ্যম হিসেবে দান করেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, أَلَمْ نَجْعَل لَّهُۥ عَيْنَيْنِ - وَلِسَانًا وَشَفَتَيْنِ ‘আমি কি তার জন্য দুটি চোখ বানাইনি? আর একটি জিহ্বা ও দুটি ঠোঁট!’ (আল-বালাদ, ৯০/-৯)

জিহ্বা বা মুখের ব্যবহার থেকেই বুঝে নেওয়া যায়, কোন ব্যক্তি কতটা বুদ্ধিমান অথবা নির্বোধ? কে কতটা সভ্য অথবা অসভ্য? এই জিহ্বার অযাচিত ব্যবহারের ফলেই অনেককে হতে হয় বিপন্ন অথবা লাঞ্ছিত। এই জিহ্বার অপব্যবহারের কারণেই জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে অনেক মানবসন্তানকে। পঞ্চ-ইন্দ্রিয়ের অন্যতম অনুষঙ্গ এই জিহ্বা। এটি একটি মাংসল অঙ্গ, যা মুখের ভেতর অবস্থিত। জিহ্বার গোড়াকে বলে শিকড়। এই শিকড় গলার ভেতরের অঙ্গের সাথে সংযুক্ত তথা হাইওয়েড নামক হাড়ের সঙ্গে যুক্ত। চোয়ালের হাড়ের সঙ্গেও রয়েছে এ অঙ্গের সংযুক্তি।

জিহ্বার রহস্য ও আধুনিক বিজ্ঞান: রাসায়নিক দ্রব্য সম্ভারে গঠিত এই জিহ্বা। পাকস্থলীর প্রথম এবং প্রধান অঙ্গ একে বলা চলে। দ্রব্য মুখে পুরার পরই আরম্ভ হয় এই জিহ্বার স্বাদ। এটা নরম, আঠালো এবং পিচ্ছিল সংকোচন ও প্রসারণবিশিষ্ট। যেদিকে ইচ্ছা সেদিকেই ঘোরানো-ফিরানো যায়। এর রাসায়নিক ক্রিয়াই সবচেয়ে অদ্ভুত এবং রহস্য সৃষ্টিকারী। মনে হয় হাজার রকম ‘ফিল্টার’ এতে সন্নিবেশিত করা হয়েছে, যার ফলে প্রতিটি জিনিস জিহ্বায় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিমেষেই চোখ বুজলে বলা যায় এবং ভাগ করা যায়। রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আমরা ল্যাবরেটরিতে এক পদার্থ হতে অন্য পদার্থকে পৃথক করে থাকি। সেখানে রাযিয়াল্লাহু আনহুমা2S, রাযিয়াল্লাহু আনহুমা2SO4, Nরাযিয়াল্লাহু আনহুমা3NO4, Nরাযিয়াল্লাহু আনহুমা4SO4, রাযিয়াল্লাহু আনহুমারাযিয়াল্লাহু আনহুI, Nরাযিয়াল্লাহু আনহুমা3 ইত্যাদি রাসায়নিক এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। জিহ্বাকে বিশ্লেষণ করে উক্ত সাহায্যকারী এজেন্টগুলো দেখতে পাই না; তবে এটা হতে এক প্রকার রস নিঃসৃত হয় যা খাদ্যকে নরম, পিচ্ছিল ও ভোজন উপযোগী করে পাকস্থলীতে পাঠায়। আর এই নিঃসৃত রস উক্ত রাসায়নিক এজেন্ট হতে সম্পূর্ণ পৃথক।

জিহ্বাকে ডাক্তারি মতে বিশ্লেষণ করলেও দেখা যায় কতকগুলো গোশত স্তর একটার উপর আরেকটা মিলিত হয়ে সম্পূর্ণ জিহ্বার রূপ নিয়েছে। এর উপরি ভাগ ছিদ্র ছিদ্র। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এখানে খাবার উপযোগী পদার্থগুলোই এটা গ্রহণ করে আর বাকিগুলো অন্য কোনো অঙ্গের পরামর্শ না নিয়েই ফিরিয়ে দেয়। যেমন— পচা, দুর্গন্ধময়, বিষজাতীয় দ্রব্য, বিষাক্ত পদার্থ এতে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারে এবং তৎক্ষণাৎ তা ফেলে দেয় আর উপযোগী খাদ্য পেলে যতক্ষণ পর্যন্ত পাকস্থলী পূর্ণ না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণ করে। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ কার্যপ্রণালি আমাদের মতো বৈজ্ঞানিকদের দ্বারা সম্ভব হয় না। জিহ্বাকে কেটে তুলে ফেলে আমাদের তৈরি নতুন জিহ্বা স্থাপন করা চলে না অথবা এর পরিবর্তে অন্য কোনো ‘ফিল্টার’ বসিয়েও কোনো খাদ্যদ্রব্যকে পৃথক করে দেখা যায় না। যে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জিহ্বা গঠিত, সেই রাসায়নিক দ্রব্যাদি নিয়েও আমরা নতুন জিহ্বা তৈরি করতে পারি না অথবা এর অনুরূপ সৃষ্টি করে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হই।

জিহ্বার ছাপের মাঝে স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ: আমরা কি কখনো আমাদের জিহ্বা নিয়ে বিস্মিত হয়েছি? এটা আল্লাহ পাকের এক অতীব বিস্ময়কর সুন্দর সৃষ্টি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে একটাই জিহ্বা দান করেছেন। কিন্তু এই একটা মাত্র জিহ্বা দিয়ে আমরা হাজার রকম খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারি। যদি আমাদের জিহ্বার স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা না থাকত, তাহলে আমরা একটা আম আর একটা মাটির দলার মধ্যে কোনো তফাত ধরতে পারতাম না।

আমরা জানি, আমাদের হাতের আঙুলের যে ছাপ তা একেক মানুষের একেক রকম। কারো ছাপের সাথে কারো ছাপের মিল নেই। হাতের আঙুলের মতো আমাদের জিহ্বার ছাপও কিন্তু একেক জনের একেক রকম। আল্লাহ তাআলা আমাদের শরীরের সবচেয়ে শক্তিশালী এই অঙ্গটি দান করেছেন তাঁর প্রশংসা গাওয়ার জন্য। সত্যিকারভাবে এই জিহ্বার সাহায্যেই আমরা মহিমাময় কুরআন তেলাওয়াত করতে পারি। আল্লাহর বড়ত্ব, মাহাত্ম্য নিয়ে কথা বলতে পারি। আল্লাহ তাআলা মিথ্যা কথা বলা, গীবত, পরনিন্দা, পরচর্চা এসব খারাপ কাজে জিহ্বাকে দূষিত করার জন্য সৃষ্টি করেননি।

জিহ্বাও আধুনিক বিজ্ঞান: জিহ্বা মানুষের মুখগহ্বরের সম্মুখভাগে বিদ্যমান, যাতে ক্ষতিকর জিনিস মাত্রকেই সে সঙ্গে সঙ্গে উগলে ফেলে দিতে পারে। কোনো জিনিস তিক্ত না মিষ্টি, ঠাণ্ডা না গরম, টক না লোনা, কোমল না কটু তা মানুষ এই যন্ত্রের দ্বারাই টের পায়। মানুষের জিহ্বায় রুচিবোধের জন্য ৯ হাজার সেল কোষ আছে, যার প্রতিটি সেল একাধিক স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে মস্তিষ্কের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে মানুষ প্রতিটি বস্তুর স্বাদ ভিন্ন ভিন্নভাবে অনুভব করতে পারে। যেমন— আপেল, কমলা, আম প্রত্যেকটির ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ আমরা বুঝতে পারি। চিকেন, মাটন, বীফ প্রত্যেকটি মাংস জাতীয় খাদ্য; কিন্তু এদের আলাদা আলাদা স্বাদ পরখ করা যায়। জিহ্বার মধ্যে আস্বাদন স্তর না থাকলে সমস্ত খাদ্যদ্রব্য এক রকম মনে হতো। আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, আমরা জিহ্বা দিয়ে যখন কথা বলি, তখন জিহ্বার ১ লক্ষ ১৭ হাজার সেল একত্রে এসে এমনভাবে আমাদের কথাগুলোকে সাজিয়ে-গুছিয়ে দেয়, যাতে কোনো কথার সাথে কোনো কথার সংঘাত না হয়। এখন প্রশ্ন হলো, কোন সে মহাকারিগর যিনি এই বিস্ময়কর পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করেছেন? শুধু তাই নয়, মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীর দেহে তিনি সেলগুলো তৈরি করেননি।

জিহ্বার লালা ও আধুনিক বিজ্ঞান: মুখের ভেতর আল্লাহ তাআলা অতি প্রয়োজনীয় এক প্রকারের তরল লালা সৃষ্টি করেছেন, যা খাদ্যের সাথে মিশে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। আহারের সময় এই লালা আবশ্যক পরিমাণে নির্গত হয় এবং খাবারের পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এটি আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ ও সুনিপুণ কৌশলের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এরূপ যদি না হতো এবং সর্বদা এই লালা নির্গত হতে থাকত, তবে মুখ খোলাই সমস্যা হয়ে পড়ত। আর কথাবার্তা বলা তো আরও কঠিন হয়ে পড়ত। কারণ মুখ খুললেই বা কথা বলতে গেলেই লালা গড়িয়ে পড়ত এবং বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হতো। মহান আল্লাহ তাঁর অপার অনুগ্রহে এমন ব্যবস্থা করে দিয়েছেন যে, এই লালা শুধু খাদ্য চিবানোর সময় নির্গত হয় এবং পরে বন্ধ হয়ে যায়। তবে অন্য সবসময় মুখে লালা সীমিত পরিমাণে বিদ্যমান থাকে, যাতে মুখ ও কণ্ঠনালি সিক্ত থাকে। নতুবা কণ্ঠনালি শুকিয়ে যেত এবং কথা বলা অসম্ভব হয়ে পড়ত। এমনকি কণ্ঠনালি শুকিয়ে শ্বাসগ্রহণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়ত। যার ফলে অনিবার্যভাবে প্রাণনাশ ঘটত।

জিহ্বার স্বাদ: জিহ্বা নাকের মতো একইভাবে কাজ করে। এটি তার পৃষ্ঠের পেপিলি নামক দোলগুলোতে অবস্থিত ক্ষুদ্র স্বাদের কুঁড়ি ব্যবহার করে খাবার এবং পানীয়গুলোতে ফ্লেভারেন্ট (Flছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামvorছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামnহাফিযাহুল্লাহs) নামক পদার্থ শনাক্ত করে। স্বাদ গ্রহণের স্বাদকুঁড়ি নাকের ঘ্রাণযুক্ত প্যাঁচগুলোর অনুরূপভাবে কাজ করে। তারা মস্তিষ্কের গস্টেটরি (রাযিয়াল্লাহু আনহাusহাফিযাহুল্লাহছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামহাফিযাহুল্লাহory) সেন্টারে স্নায়ু সংকেত পাঠায়, যা আপনি কী স্বাদে স্বাদ গ্রহণ করছেন তা কার্যকর করে। আপনার স্বাদ এবং গন্ধের সংবেদনগুলো একসাথে কাজ করে ফ্লেভারটি নির্ধারণ করে।

জিহ্বারশক্ত স্বাদ: আপনি বিভিন্ন স্বাদ বুঝতে পারেন। এগুলোকে সাধারণত পাঁচটি বিভাগে ভাগ করা হয়— মিষ্টি, লবণাক্ত, টক, তেতো এবং মজাদার। তবে মরিচের মতো মশলাদার স্বাদসহ আরও কিছু থাকতে পারে। মরিচে এমন একটি রাসায়নিক উপাদান করে, যা জিহ্বাকে জ্বালায়।

জিহ্বার ভাষা তৈরির রহস্য: পৃথিবীতে মানুষের মতো করে আর কোনো প্রাণী নিজের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না। কারণ আল্লাহ তাআলা মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষকে কথা বলা শিখিয়েছেন। কুরআন মাজীদে আছে, خَلَقَ الْإِنْسَانَ-عَلَّمَهُ الْبَيَانَ ‘তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তিনি মানুষকে কথা বলতে শিখিয়েছেন (বাকশক্তি দান করেছেন)’ (আর-হমান, ৫৫/৩-৪)

পাকস্থলীর অঙ্গ হিসেবে কাজ করা ছাড়া জিহ্বার আরও একটা প্রধান এবং প্রয়োজনীয় কাজ আমরা দেখতে পাই। বৈজ্ঞানিক উপায়ে আমরা শব্দতরঙ্গ সৃষ্টি করতে পারি কিন্তু মনের ইচ্ছাকে এই শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে কথায় রূপান্তর করতে পারি না। যে শব্দতরঙ্গের সৃষ্টি করি, সেটাতে ভাব ও আবেগের প্রকাশ হয় না। বাংলা ভাষাতে নাই-বা হলো, আরবী, ইংরেজি, ফরাসি, ল্যাটিন প্রভৃতি সেরা ভাষাগুলোরও কোনো সৃষ্টি এতে দেখা যায় না। কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টি এই জিহ্বা গলার সুরকে নিয়ে ইচ্ছামতো মনের আবেগ ও ভাবকে প্রকাশ করে। তালুর সঙ্গে এক ধাক্কা দেয়, দাঁতের সঙ্গে এক ধাক্কা দেয়। আবার প্রয়োজনে এক ধাক্কা দিয়ে নাকের ভেতরও কিছু শব্দতরঙ্গ পাঠিয়ে সুন্দর, সুললিত ভাষায় বের করে। অদ্ভুত এর কারুকার্য, অদ্ভুত এর কার্যপ্রণালি। ইংরেজি, ফরাসি, উর্দূ, কোনো ভাষাতেই এর ব্যবধান নেই। যে কোনো ভাষায় ইচ্ছার প্রকাশ করার মতো ব্যবহার এই জিহ্বা জানে।

কোন সে কারিগর, যিনি জিহ্বাকে দিয়ে শব্দতরঙ্গে আলোড়ন এনে কথা সৃষ্টি করেন? কোন সে রসায়নবিদ, যিনি সর্বদা জিহ্বাকে আর্দ্র রাখেন, যার ফলে কথা নষ্ট হয় না? কোন সে আদেশদাতা, যার বদৌলতে তা সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হয়ে উচ্চ ও নিম্ন স্বরে কথা সৃষ্টি করেন? তিনিই মহান আল্লাহ, যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন ও তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সন্নিবেশিত করেছেন।

আমাদের স্বরযন্ত্রে যে কথা তৈরি হয়, তাতে জিহ্বা অংশগ্রহণ করে থাকে। জিহ্বা না থাকলে প্রয়োজনীয় কথা তৈরি করে তার ডেলিভারি দেওয়া মোটেও সম্ভব হতো না। আমাদের ঠোঁট দুটি কথা বলার সময় সঞ্চালিত হয়। খাদ্য ও পানীয় সর্বপ্রথম রিসিভ করে ঠোঁট। পরে মুখের ভেতর আবদ্ধ করে উপযোগিতা সৃষ্টি করে। মানুষের ঠোঁটদ্বয় দাঁতের উপর আবৃত্ত থাকে, যার দরুন চেহারার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।

জিহ্বা সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য:

(১) জিহ্বা মানবদেহের সবচেয়ে নমনীয় মাংসপেশি।

(২) জিহ্বাই একমাত্র মাংসপেশি, যেটি মানবদেহের এক প্রান্তের সাথে সংযুক্ত থাকে। 

(৩) জিহ্বায় আটটি মাংসপেশি আছে। 

(৪) জিহ্বার উপরিপৃষ্ঠকে ‘ডরসাম’ বলা হয়।

(৫) আঙুলের ছাপের মতো প্রত্যেক মানুষের জিহ্বার ছাপও আলাদা আলাদা রকমের হয়। 

(৬) নাক বন্ধ থাকলে অনেক সময় জিহ্বায় খাদ্যের স্বাদ অনুভব করা যায় না। মানুষ জিহ্বা দিয়ে প্রায় ৮০০০ রকমের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে। 

(৭) ঝাল কোনো স্বাদ নয়। স্বাদ কোরকগুলো যখন ব্যথা পায় তখন সেটিকে মস্তিষ্ক ঝাল হিসেবে বিবেচনা করে।

(৮) জিহ্বা দিয়ে নিজ হাতের কনুই স্পর্শ করা সম্ভব নয়। (৯) জিহ্বা দিয়ে নাকের ডগা স্পর্শ করা যায়, তবে সেটি খুব কঠিন কাজ।

(১০) জিহ্বার নড়াচড়ায় লালা নিঃসরণ বাড়ে।

(১১) মানুষের জিহ্বা থেকে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ পাইট লালা নিঃসৃত হয়।

(১২) জিহ্বার লালা খাদ্যকে পিচ্ছিল করে এবং হজমে সাহায্য করে।

যত বিপদ ডেকে আনে জিহ্বা: জিহ্বা মানুষকে ধ্বংসের অতলে ডুবাতে পারে, আবার সাফল্যের শীর্ষেও সমাসীন করতে পারে। অধিকাংশ পাপ ও পুণ্যের কাজ জিহ্বা দ্বারাই সংঘটিত হয়। সুতরাং জিহ্বাকে সংযত রাখাই আবশ্যক। গীবত, মিথ্যা, কুটনামি, পরনিন্দা, অশ্লীল কথা, গালমন্দ ইত্যাদি এই জিহ্বারই কাজ। তাই বলা হয়, যুদ্ধের ময়দানে প্রাণ বিলানো অপেক্ষা জিহ্বাকে সংযত রাখা অধিক কঠিন কাজ। এ ব্যাপারে উক্ববা ইবনু আমের রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, নাজাতের উপায় কী? তিনি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার জিহ্বাকে সংযত রাখো। তোমার ঘরকে প্রশস্ত করো। ঘরকে প্রশস্ত করার অর্থ মেহমানদারি করো। তোমার অপরাধের জন্য কান্নাকাটি করো’।[1] 

এছাড়া সুফিয়ান ইবনে আব্দুল্লাহ ছাক্বাফী রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একবার আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার জন্য যে জিনিসগুলো ভয়ের কারণ বলে আপনি মনে করেন, তন্মধ্যে সর্বাধিক ভয়ঙ্কর কোনটি? বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জিহ্বা ধরলেন এবং বললেন, ‘এটা (অর্থাৎ জিহ্বা)’।[2] এই হাদীছ হতে বুঝা যায়, জিহ্বা কত ভয়াবহ। তা নিয়ন্ত্রণ করা বা সংযত করা বড়ই কঠিন। এ ব্যাপারে আসলাম রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একবার উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে গেলেন। তখন তিনি নিজের জিহ্বা টানছিলেন। উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, থামুন! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুক। ব্যাপার কী? তখন আবূ বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এটাই আমাকে ধ্বংসের স্থানসমূহে অবতীর্ণ করেছে।[3] 

সুতরাং জিহ্বার অসংযত ব্যবহারের কারণেই আজ স্বামী-স্ত্রীতে, মানুষে-মানুষে, পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে অশান্তি বিরাজ করছে। এজন্যই আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী জিনিস (জিহ্বা বা বাকশক্তি)-এর এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী জিনিস (লজ্জাস্থান)-এর নিশ্চয়তা দিবে, আমি তার জন্য জান্নাতের যামিন হব’।[4] এই হাদীছে দুই চোয়ালের মধ্যস্থিত বস্তু দ্বারা জিহ্বা, মুখ আর দুই পায়ের মধ্যস্থিত বস্তু দ্বারা লজ্জাস্থানকে বুঝানো হয়েছে। মূলত এই দুই অঙ্গ দ্বারা অধিকাংশ কাবীরা গুনাহ সংঘটিত হয়। আর যে ব্যক্তি কাবীরা গুনাহে লিপ্ত হয় না, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না। আবূ মূসা রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! মুসলিমদের মধ্যে কে সর্বোত্তম? তিনি বলেন, ‘যার মুখ ও হাতের অনিষ্ট থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে, সেই সর্বোত্তম মুসলিম’।[5] 

মানুষের সাথে একজন মুসলিম কীভাবে কথা বলবে, সে বিষয়ে ইসলাম কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মপদ্ধতি প্রণয়ন করে দিয়েছে। সর্বাবস্থায় মুসলিমকে অটুট বিশ্বাস নিয়ে মনে রাখতে হবে যে, তার মুখ দিয়ে উচ্চারিত প্রতিটি শব্দের জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি যদি উত্তম কিছু বলেন, তিনি পুরস্কৃত হবেন আর যদি মন্দ কিছু বলেন, তবে সেই মন্দ কথার জন্য তাকে অবধারিতভাবেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন,مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার সাথেই রয়েছে’ (ক্বাফ, ৫০/১৮)। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সতর্ক করে বলেছেন যে, মুখের কথা খুবই বিপজ্জনক। একটি হাদীছে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘বান্দা অনেক সময় এমন কথা বলে, যাতে সে গুরুত্ব দেয় না; অথচ সেই কথা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে। ফলে আল্লাহ তাআলা এর দ্বারা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। পক্ষান্তরে বান্দা অনেক সময় এমন কথাও বলে, যাতে সে গুরুত্ব দেয় না; অথচ সেই কথা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে। ফলে সেই কথাই তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে’।[6]

কাজেই মুখের কথা বিপদের কারণ হতে পারে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামের সীমারেখার মধ্যে থেকে আমাদেরকে কথা বলা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এজন্যই রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে; অন্যথা চুপ থাকে’।[7] ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, হাদীছটির বক্তব্য এ ব্যাপারে খোলাখুলিভাবে স্পষ্ট যে, কোনো কথায় উপকার ও কল্যাণ নিহিত না থাকলে তা না বলাই কর্তব্য। তবে যে কথা বললে উপকার ও কল্যাণ হয়, তা বলাই কর্তব্য। কিন্তু যদি কল্যাণের দিকটা সন্দেহপূর্ণ হয়, তবে কথা না বলাই উত্তম। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন,وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে’ (বনী ইসরাঈল, ১৭/৩৬)। এই আয়াতের ব্যাখ্যা তাফসীরে কুরতুবী ও মাযহারীতে বর্ণিত হয়েছে, যে বিষয় তোমার জানা নেই, তা কাজে পরিণত করো না। জানাশোনা ছাড়াই কাউকে দোষারোপ করো না। কারণ ক্বিয়ামতের দিন কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণকে প্রশ্ন করা হবে। কানকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবন কী কী শুনেছ? চক্ষুকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবন কী কী দেখেছ? অন্তঃকরণকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবন কী কী কল্পনা করেছ এবং কী কী বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছ? যদি কান দ্বারা শরীআতবিরোধী কথাবার্তা শুনে থাকে, যেমন কারো গীবত এবং হারাম গানবাদ্য শোনা কিংবা চক্ষু দ্বারা শরীআতবিরোধী বস্তু দেখে থাকে কিংবা অন্তরে কুরআন ও সুন্নাহবিরোধী বিশ্বাসকে স্থান দিয়ে থাকে অথবা কারো সম্পর্কে প্রমাণ ছাড়া কোনো অভিযোগ মনে ক্বায়েম করে থাকে, তবে এসব প্রশ্নের ফলে ক্বিয়ামতের দিন আযাব ভোগ করতে হবে। আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে বলেন, ‘বান্দা যখন ভালোমন্দ বিচার না করে কোনো কথা বলে, তখন তার কারণে সে নিজেকে জাহান্নামের এত গভীরে নিয়ে যায়, যা পূর্ব ও পশ্চিমের দূরত্বের সমান’।[8]

আমাদেরকে এই নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এই আমানতের হেফাযত করতে হবে। আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতকে তাঁর হুকুম অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে। তাতেই হবে নেয়ামতের শুকরিয়া ও আমানতের হেফাযত৷ আমার এ চোখ দিয়ে আমি এমন কিছু দেখব না, যা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে। হাত দিয়ে এমন কিছু ধরব না, যা ধরতে তিনি নিষেধ করেছেন। এমন পথে পা বাড়াব না, যে পথ শয়তানের। আমার যবান দিয়ে এমন কথা বলব না, যা আমাকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। মোটকথা, আমার প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে ভালো কাজ করব, খারাপ থেকে বিরত থাকব। কারণ আমার এই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাল সাক্ষী হবে। ভালো কাজ করলে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে আর মন্দ কাজ করলে আমারই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আমার বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। সে এক কঠিন পরিস্থিতি! বান্দা আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। হিসাবের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। একমাত্র চেষ্টা হবে, কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এ কঠিন পরিস্থিতি থেকে। বান্দা চেষ্টা করবে পাপ অস্বীকার করতে। এমন সময় আল্লাহ অনুমতি দিবেন অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সাক্ষী দেওয়ার। আল্লাহ সেগুলোকে কথা বলার শক্তি দিবেন, সেগুলো কথা বলবে। আমাদেরই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আমাদের সব গোপন বিষয় বলে দিবে, সব সত্য বলে দিবে। আমরা অস্বীকার করতে পারব না। আল্লাহ আমাদের যবানে মোহর মেরে দিবেন। আমরা কিছু বলতে পারব না, অস্বীকারও করতে পারব না; কথা বলবে শুধু আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। যেমন কুরআনে এসেছে,الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দিব। ফলে তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দিবে তাদের কৃতকর্মের’ (ইয়াসী, ৩৬/৬৫)

শুধু কী তাই! আমার শরীরের চামড়াও সাক্ষ্য দিবে আমার বিরুদ্ধে, যদি আমি তা আল্লাহর নাফরমানীতে ব্যবহার করি। যে চামড়া আমার চেহারাকে সুন্দর করেছে, তা যদি আমি আল্লাহর নাফরমানীতে ব্যবহার করি, হারাম ক্ষেত্রে রূপের প্রদর্শন করি, তাহলে তা আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে। সে বলবে, দুনিয়াতে তুমি আমাকে আমার রবের নাফরমানীতে ব্যবহার করেছ। সেদিন আমি কিছু বলতে পারিনি। আজ আমার রব আমাকে বলার শক্তি দিয়েছেন। আমি আজ সব বলে দিব। তখন মানুষ নিজের শরীরের চামড়াকে বলবে, وَقَالُوا لِجُلُودِهِمْ لِمَ شَهِدْتُمْ عَلَيْنَا ‘তারা তাদের চামড়াকে বলবে, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন?’ সেগুলো উত্তর দিবে, أَنْطَقَنَا اللَّهُ الَّذِي أَنْطَقَ كُلَّ شَيْءٍ ‘ঐ আল্লাহ আমাদেরকে বাকশক্তি দান করেছেন, যিনি বাকশক্তি দান করেছেন প্রতিটি জিনিসকে’ (হা-মীম আস-সাজদাহ, ৪১/২১)

হ্যাঁ, এখনই আমাকে ভাবতে হবে আমার অবস্থা কেমন হবে। আল্লাহর দেওয়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কি আমি আল্লাহর আনুগত্যে ব্যবহার করছি, না তাঁর নাফরমানীতে? তা কি ক্বিয়ামতের ঐ কঠিন মুহূর্তে আল্লাহর সামনে, সকল সৃষ্টিজীবের সামনে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে, না বিপক্ষে?

আবূ সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আদম সন্তান যখন সকালে উপনীত হয়, তখন তার সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জিহ্বাকে অত্যন্ত বিনীতভাবে নিবেদন করে যে, তুমি আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। কারণ আমাদের ব্যাপারসমূহ তোমার সাথেই সম্পৃক্ত। যদি তুমি সোজা-সরল থাকো, তাহলে আমরাও সোজা-সরল থাকব। আর যদি তুমি বক্রতা অবলম্বন করো, তাহলে আমরাও বেঁকে বসব’।[9]

মূলকথা হলো, কথাবার্তা বলতে যবানের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ একটা অসত্য কথার কারণে, মুখের একটা খারাপ কথা উচ্চারণের কারণে স্বামী-স্ত্রীতে, পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে হতাশা ও অশান্তি সৃষ্টি হয়। আর একটি সত্য ও ভালো কথার কারণে স্বামী-স্ত্রীতে, পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে শান্তি বিরাজ করে।

আল্লাহ আমাদেরকে জিহ্বার গুরুত্ব বুঝার এবং এর নেয়মতের শুকরিয়া আদায়ের তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!

মো. হারুনুর রশীদ

ফরক্কাবাদ, বিরল, দিনাজপুর।


[1]. সিলসিলা ছহীহা, হা/৮৯০।

[2]. ইবনু মাজাহ, হা/৩৯৭২, হাদীছ ছহীহ।

[3]. মুওয়াত্ত্বা মালেক, হা/৩৬২১।

[4]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৭৪।

[5]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৮৪।

[6]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৭৮।

[7]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০১৮।

[8]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৮৮।

[9]. তিরমিযী, হা/২৪০৭, হাসান; আহমদ, হা/১১৪৯৮।

Magazine