ভূমিকা: রামাযান মাস কুরআন মাজীদ নাযিলের মাস। ক্ষমা, রহমত ও মুক্তির অনন্য বার্তা নিয়ে শ্রেষ্ঠ মাস রামাযান আমাদের নিকটে প্রায় সমাগত। এ মাসের ইবাদতের মর্যাদা অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক। প্রত্যেক মুমিনের হৃদয় এই মহা সম্মানিত মাসের অপেক্ষায় সদা উদগ্রীব থাকে। এ মাসে মুমিন বান্দারা যাতে সুন্দর ও নিরাপদে ইবাদত-বন্দেগী করতে পারে, সেজন্য শুধু এ মাসে দুষ্টু জিনদেরকে আবদ্ধ করে রাখা হয়; অথচ আমরা পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া এ মাসে পদার্পণ করে তা অলসতা, অবহেলায় অতিবাহিত করি। সুন্দরভাবে ও ইবাদতের মাধ্যমে মহিমান্বিত রামাযান মাসকে অতিবাহিত করতে পূর্বপ্রস্তুতির বিকল্প নেই। তাই আজকের প্রবন্ধে ‘রামাযানের পূর্বপ্রস্তুতি: আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের পথনির্দেশনা’—এই শিরোনামে আলোচনা করার প্রয়াস পাব, ইনশা-আল্লাহ।
রামাযানের পূর্বপ্রস্তুতিস্বরূপ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ:
(১) রামাযান মাসব্যাপীইবাদতের দৃঢ় সংকল্প করা: যেকোনো কাজে সফলতার পূর্বশর্ত হলো সেই বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প করা আর ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য খালেছ নিয়্যতের বিকল্প নেই। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ ‘নিশ্চয়ই সকল কাজের ফলাফল নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল’।[1]
(২) রামাযানের ছিয়াম ত্রুটিমুক্তভাবে পালনের খালেছ নিয়্যত করা: যেকোনো কাজের পূর্ণ ফলাফল পেতে কাজটি ত্রুটিমুক্ত হওয়া যেমন জরুরী, ঠিক তেমনি ছিয়াম পালনের মাধ্যমে জীবনের সকল গুনাহ থেকে ক্ষমা পেতে ছিয়াম ত্রুটিমুক্ত হওয়া প্রয়োজন। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ وَالْجَهْلَ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ ‘যে ব্যক্তি ছিয়াম রেখে মিথ্যা কথা, কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার ছিয়াম রেখে শুধু পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই’।[2]
(৩) রামাযান মাস আসার আগেই বেশি বেশি তওবা- ইস্তিগফার করে সম্পূর্ণভাবে গুনাহ থেকে মুক্ত হওয়া: আল্লাহর অনুগ্রহ না থাকলে পাপী বান্দাদের জন্য রামাযান মাস পাওয়া আর না পাওয়া সমান। তাই এ মাস আসার আগেই আল্লাহর কাছে খালেছ তওবা করা উচিত, যাতে রামাযান মাসটি তার জন্য কল্যাণকর হয় এবং ইবাদত- বন্দেগীতে মনোযোগ সৃষ্টি হয়। সুতরাং প্রত্যেকের উচিত তওবা-ইস্তিগফার করে গুনাহ থেকে ফিরে আসা। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَاللَّهُ يُرِيدُ أَنْ يَتُوبَ عَلَيْكُم ‘আল্লাহ চান তোমরা তাঁর কাছে তওবা করো’ (আন-নিসা, ৪/২৭)। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,يَا أَيُّهَا النَّاسُ تُوْبُوْا إِلَى اللهِ فَإِنِّىْ أَتُوْبُ فِى الْيَوْمِ إِلَيْهِ مِائَةَ مَرَّةٍ ‘হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকটে তওবা করো, কারণ আমি তাঁর কাছে দিনে ১০০ বার তওবা করি’।[3] তিনি আরও বলেন,وَاللهِ إِنِّى لأَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِى الْيَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِيْنَ مَرَّةً ‘আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ৭০ বারেরও অধিক ইস্তিগফার ও তওবা করে থাকি’।[4] রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পূর্বাপর সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন; অথচ এরপরও তিনি প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তওবা করেন। সুতরাং আমাদের গুনাহ থেকে আরও অধিক হারে তওবা করা প্রয়োজন।
(৪) রামাযানের প্রস্তুতি হিসেবে শা‘বান মাস থেকেই ছিয়াম রাখা: মহিমান্বিত রামাযান মাসে সফলতা লাভ করতে হলে শা‘বান মাস থেকেই নেক আমল আরম্ভ করতে হবে। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা‘বান মাসে অধিক হারে ছিয়াম পালন করতেন। আয়েশা রযিয়াল্লাহু আনহা বলেন,كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يُفْطِرُ، وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يَصُومُ فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلاَّ رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِى شَعْبَانَ ‘রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে (এত অধিক) ছিয়াম পালন করতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর ছিয়াম পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি) ছিয়াম পালন ছেড়ে দিতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) ছিয়াম পালন করবেন না। আমি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রামাযান ব্যতীত পূর্ণ মাস ছিয়াম পালন করতে দেখিনি এবং শা‘বান মাসের চেয়ে কোনো মাসে এত অধিক (নফল) ছিয়াম পালন করতে দেখিনি।[5]
(৫) বিগত রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম থাকলে তা আদায় করে নেওয়া: বিভিন্ন ওযর থাকার কারণে অনেকের ছিয়াম ক্বাযা হতে পারে। নানা ব্যস্ততার কারণে যা আদায় করা হয়নি। রামাযানের পূর্বে শা‘বান মাসের মধ্যেই তা আদায় করে নিতে হবে। আয়েশা রযিয়াল্লাহু আনহা বলেন,كَانَ يَكُونُ عَلَيَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَهُ إِلا فِي شَعْبَانَ ‘আমার উপর বিগত রামাযানের ছিয়াম বাকি থাকলে শা‘বান মাসে ছাড়া আমি তা আদায় করতে পারতাম না’।[6] হাফেয ইবনু হাজার রহিমাহুল্লাহ বলেন, আয়েশা রযিয়াল্লাহু আনহা-এর শা‘বান মাসে ক্বাযা ছিয়াম আদায়ে সচেষ্ট হওয়া থেকে বিধান গ্রহণ করা যায় যে, রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম পরবর্তী রামাযান আসার আগেই আদায় করে নিতে হবে।[7]
(৬) রামাযানের গুরুত্ব ও ফযীলত অনুধাবন করা: আল্লাহর অশেষ রহমতের বার্তা নিয়ে রামাযান আগমন করে। ইবাদত করার পূর্বে রামাযানের গুরুত্ব ও ফযীলত অনুধাবন করতে হবে, তাহলে ইবাদতে তৃপ্তি পাওয়া যাবে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,إِذَا كَانَ رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ الرَّحْمَةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِيْنُ ‘যখন রামাযান মাস আসে, তখন রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা হয় এবং শয়তানদেরকে শৃঙ্খলিত করা হয়’।[8]
এছাড়া রামাযান অশেষ ফযীলতপূর্ণ মাস। এ মাসে কুরআন নাযিল হয়েছে। এ মাসেই লায়লাতুল ক্বদর রয়েছে, যা হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা উত্তম। এ মাসে বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ মাসের ছিয়াম ও ক্বিয়ামের মাধ্যমে পূর্ববর্তী গুনাহ থেকে মুক্তি লাভ হয়। সুতরাং এ মাসের ফযীলতের দিকগুলো অনুধাবন করে সে অনুযায়ী পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হবে।
(৭) রামাযান সংক্রান্ত মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কে অবহিত হওয়া: রামাযান সম্পর্কিত নানা মাসআলা-মাসায়েল জেনে নেওয়া উচিত, যাতে রামাযানের ছিয়াম ত্রুটিমুক্ত হয় এবং নানাবিধ অসুবিধা ও কষ্ট থেকে বাঁচা যায়। যেমন- সফরকালে ছিয়াম ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ, ভুলবশত খেলে ছিয়াম ভঙ্গ না হওয়া, গভীর ঘুমের কারণে সাহারী খেতে না পারলেও ছিয়াম শুদ্ধ হওয়া এবং স্বপ্নদোষের কারণে ছিয়াম ভঙ্গ না হওয়া ইত্যাদি মাসআলা জানা থাকলে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
(৮) রামাযান মাসে কুরআন শিক্ষা ও অধিক হারে তেলাওয়াত করার পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া: রামাযান মাসে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির সংবিধান কুরআন নাযিল করেছেন। তাই এ মাসে কুরআন শিক্ষা ও তেলাওয়াতের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং যারা পড়তে পারে না, তারা রামাযানের পূর্বেই তেলাওয়াত শিখে নিবে। যারা অল্প পারে, তারা আরও ভালো পারার জন্য পূর্ব থেকেই চর্চা শুরু করবে আর যারা ভালোভাবে পারে, তারা কুরআনের অর্থ জানা ও বুঝার চেষ্টা করবে। যারা কুরআনের অর্থ মোটামুটি জানে তাদের কুরআনের ব্যাখ্যা, তাফসীর ও গবেষণার জন্য পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। যেন প্রতিটি মুমিনের রামাযান হয় কুরআনময়। রবের কালাম নিয়েই কেটে যায় যেন বরকতপূর্ণ কুরআনের এই মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন,شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ ‘রামাযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়াতস্বরূপ এবং হেদায়াতের ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকরণের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি হিসেবে (আল-বাক্বারা, ২/১৮৫)।
(৯)রামাযানের আগমনে খুশি হওয়া: রামাযান মাস পাওয়াটা একজন মুসলিমের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ নেয়ামত। যেহেতু রামাযান কল্যাণের মৌসুম। সুতরাং আল্লাহ প্রদত্ত এ নেয়ামত লাভের সুযোগ পেয়ে মুমিন হৃদয় আনন্দে উদ্বেলিত হবে এটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ তাআলা বলেন,قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ ‘বলুন, আল্লাহর এই দান (কুরআন) ও তাঁর রহমতের (ইসলামের) কারণে তাদের আনন্দিত হওয়া উচিত। এটি তারা যা কিছু সঞ্চয় করেছে, সেসব থেকে অনেক উত্তম’ (ইউনুস, ১০/৫৮)। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ بِفِطْرِهِ وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ ‘ছিয়াম পালনকারীর জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে। যখন ইফতার করে, তখন সে ইফতার করার কারণে আনন্দিত হয় আর যখন সে তার প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন তার ছওমের কারণে আনন্দিত হবে’।[9] নেকী অর্জনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই আনন্দকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরী।
(১০) ইবাদতের জন্য রামাযানের পূর্বেই ঝামেলামুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা: প্রতিটি মানুষের কিছু না কিছু ঝামেলা বা পেরেশানি থাকে। বাড়িঘর, জায়গা-জমি, প্রতিষ্ঠান, ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা বা ব্যস্ততা একজন মানুষের থাকতে পারে। তাই ইবাদতের সুবিধার্থে রামাযান আসার আগেই ঝামেলামুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা এবং ইবাদতের জন্য যথাসম্ভব অবসর হয়ে যাওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا ابْنَ آدَمَ تفَرَّغْ لِعِبَادَتِي أَمْلَأْ صَدْرَكَ غِنًى وَأَسُدَّ فَقْرَكَ ‘হে বানূ আদম! তুমি আমার ইবাদতের জন্য ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে সচ্ছলতা দিয়ে ভরে দিব এবং তোমার অভাব দূর করে দিব’।[10]
(১১)নাফস ও শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখার দৃঢ় সংকল্পকরা: মানুষের অন্তর মন্দপ্রবণ। মন্দের প্রতি মানুষের উৎসাহ বা আগ্রহ কাজ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ النَّفْسَ لَأَمَّارَةٌ بِالسُّوْءِ ‘নিশ্চয়ই মন মন্দ কাজের নির্দেশদানকারী’ (ইউসুফ, ১২/৫৩)। অপরদিকে শয়তান সর্বদা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ব্যস্ত রয়েছে। আল্লাহ শয়তানের ভাষ্য উল্লেখ করে বলেন, فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِيْنَ ‘আপনার ইযযতের কসম! আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে বিপথগামী করব’ (ছোয়াদ, ৩৮/৮২)। সুতরাং ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্তরায় হলো মানুষের নাফসে আম্মারা ও শয়তানের কুমন্ত্রণা। এই মাসে যদিও শয়তান শৃঙ্খলিত থাকে, তবুও ষড়রিপুর তাড়নায় মানুষ অন্যায় ও পাপ করে বসে। অনেক সময় নিজেকে ইবাদতে মশগূল রাখতে পারে না। তাই এই বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন হয়ে তা মোকাবেলা করতে হবে।
(১২) পূর্ববর্তী রামাযানের ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে দৃঢ় সংকল্প করা: রামাযানের ফযীলত লাভ করার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করতে হবে। ইবাদতের মাধ্যমে রামাযানে নিজেকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করতে না পারলে তা হবে চরম ব্যর্থতা। মালেক ইবনুল হুওয়াইরিছ রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
صَعِدَ رَسُولُ اللهِ ﷺ الْمِنْبَرَ فَلَمَّا رَقِيَ عَتَبَةً قَالَ آمِينَ ثُمَّ رَقِيَ عَتَبَةً أُخْرَى فقَالَ آمِينَ ثُمَّ رَقِيَ عَتَبَةً ثَالِثَةً فقَالَ آمِينَ ثُمَّ قَالَ أَتَانِي جِبْرِيلُ فقَالَ يَا مُحَمَّدُ مَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ فَأَبْعَدَهُ اللهُ قُلْتُ آمِينَ قَالَ وَمَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا فَدَخَلَ النَّارَ فَأَبْعَدَهُ اللهُ قُلْتُ آمِينَ فقَالَ وَمَنْ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ فَأَبْعَدَهُ اللهُ قُلْ آمِينَ فَقُلْتُ آمِينَ.
‘রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন। অতঃপর ১ম সিঁড়িতে পা দিয়ে বললেন, ‘আমীন’, আরেক সিঁড়িতে পা দিয়ে বললেন, ‘আমীন’, এরপর ৩য় সিঁড়িতে পা দিয়ে বললেন, ‘আমীন’। লোকেরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমরা আপনাকে তিন সিঁড়িতে তিনবার ‘আমীন’ বলতে শুনলাম। তিনি বললেন, ‘আমি যখন ১ম সিঁড়িতে উঠলাম, তখন জিবরীল আমাকে এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! যে ব্যক্তি রামাযান মাস পেল, কিন্তু তাকে ক্ষমা করা হলো না, আল্লাহ তাকে দূরে রাখুন। আমি বললাম, আমীন। ২য় সিঁড়িতে উঠলে জিবরীল বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতামাতাকে বা তাদের একজনকে পেল; অতঃপর সে জাহান্নামে প্রবেশ করল। আল্লাহ তাকে দূরে রাখুন। আমি বললাম, আমীন। অতঃপর ৩য় সিঁড়িতে পা দিলে তিনি বললেন, যার নিকটে আপনার কথা বলা হয়; অথচ সে আপনার উপরে দরূদ পাঠ করে না, আল্লাহ তাকে দূরে রাখুন। আপনি বলুন, ‘আমীন’। আমি বললাম, ‘আমীন’।[11] অন্যত্র তিনি বলেন,
أَتَاكُمْ رَمَضَانُ شَهْرٌ مُبَارَكٌ فَرَضَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ تُفْتَحُ فِيهِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَتُغْلَقُ فِيهِ أَبْوَابُ الْجَحِيمِ وَتُغَلُّ فِيهِ مَرَدَةُ الشَّيَاطِيْنِ لِلَّهِ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ مَنْ حُرِمَ خَيْرَهَا فَقَدْ حُرِمَ.
‘তোমাদের কাছে বরকতময় রামাযান মাস এসেছে। মহান আল্লাহ তোমাদের উপর এ মাসের ছিয়াম ফরয করে দিয়েছেন। এ মাসে আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ মাসে অবাধ্য শয়তানদেরকে বন্দি করা হয়। এ মাসে আল্লাহর এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে ব্যক্তি এ রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে অবশ্যই প্রত্যেক কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত রইল’।[12]
সুতরাং কল্যাণ থেকে বঞ্চিত না হয়ে এবং রামাযানে নিজেকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করতে না পারার ব্যর্থতা ঘোচাতে রামাযানে সাধ্যমতো ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল, তেলাওয়াতের মাধ্যমে পূর্ণ নেকীর হক্বদার হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে।
(১৩)আল্লাহর নিকটে তাওফীক্ব কামনা করে দু‘আ করা ও কঠোর পরিশ্রম করা: রামাযানে ছিয়াম পালন ও ফরয ছালাতসহ অধিক নফল ছালাত আদায় করার চেষ্টা করা এবং এজন্য আল্লাহর নিকটে তওফীক্ব কামনা করতে হবে। কেননা এ মাসে বেশি বেশি ছিয়াম-ক্বিয়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, দুই ব্যক্তি দূরদূরান্ত থেকে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলেন। তারা ছিলেন খাঁটি মুসলিম। তাদের একজন ছিলেন অপরজন অপেক্ষা শক্তিধর মুজাহিদ। তাদের মধ্যকার মুজাহিদ ব্যক্তি যুদ্ধ করে শহীদ হলেন এবং অপরজন এক বছর পর মারা গেলেন। তালহা রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি একদা স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি জান্নাতের দরজায় উপস্থিত এবং আমি তাদের সাথে আছি। জান্নাত থেকে এক ব্যক্তি বের হয়ে এসে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি পরে মারা গিয়েছিলেন, তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিল। সে পুনরায় বের হয়ে এসে শহীদ ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিল। পরে সে আমার নিকট ফিরে এসে বলল, তুমি চলে যাও। কেননা তোমার (জান্নাতে প্রবেশের) সময় এখনও হয়নি, তোমার পালা পরে। সকালবেলা তালহা রযিয়াল্লাহু আনহু উক্ত ঘটনা লোকদের নিকট বর্ণনা করলেন। তারা এতে বিস্ময়াভিভূত হলেন। বিষয়টি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কানে গেল এবং তারাও তাঁর কাছে ঘটনাটা বর্ণনা করলেন। তিনি বললেন, ‘কী কারণে তোমরা বিস্মিত হলে?’ তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এই ব্যক্তি তাদের দুজনের মধ্যে অধিকতর শক্তিধর মুজাহিদ, তাকে শহীদ করা হয়েছে; অথচ অপর লোকটি তার আগেই জান্নাতে প্রবেশ করলেন! রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘অপর লোকটি কি তার পরে এক বছর জীবিত থাকেনি?’ তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘সে একটি রামাযান মাস পায়নি, ছিয়াম রাখেনি এবং এক বছর যাবৎ এই এই ছালাত কি পড়েনি?’ তারা বললেন, ‘জি, হ্যাঁ’। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আসমান-যমীনের মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে, তাদের দুজনের মধ্যে রয়েছে তার চেয়ে অধিক ব্যবধান’।[13]
উপরিউক্ত ফযীলত লাভ করার জন্য আল্লাহর কাছে তাওফীক্ব ও সাহায্য চাইতে হবে। সেই সাথে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজে সফল হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
(১৪) রামাযানের পূর্বেই পরস্পরের মধ্যে বিদ্যমান বিবাদ মীমাংসা করে নিতে হবে: রামাযানে মহান আল্লাহ অনেক মানুষকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু যাদের মাঝে বিবাদ আছে, তাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের মধ্যকার বিবাদ মিটিয়ে নেয়। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজা খোলা হয় এবং প্রত্যেক বান্দাকে ক্ষমা করা হয়, যে আল্লাহ তাআলার সাথে কোনো কিছুকে অংশীদার করে না আর সে ব্যক্তি এ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়, যে কোনো মুসলিমের সাথে হিংসা ও শত্রুতা পোষণ করে। ফেরেশতাদেরকে বলা হয় যে, এদের অবকাশ দাও, যেন তারা পরস্পর মীমাংসা করে নিতে পারে’।[14]
১৫. স্ত্রী-পুত্রসহ পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে বসে রামাযানের মাসআলা-মাসায়েল আলোচনা করা এবং ছোটদেরকেও ছিয়াম পালনে উদ্বুদ্ধ করা: রামাযান মাস আসার আগেই নিজের প্রস্তুতির সাথে সাথে পরিবারের সদস্যদেরকেও বিভিন্ন মাসআলা-মাসায়েল, রামাযানের গুরুত্ব ও ফযীলত, করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে অবহিত করা আর ছোটদেরকেও ইবাদতে উদ্ধুদ্ধ করা উচিত। সম্ভব হলে ছোটদেরকে সাথে সাথে রেখে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া উচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর’ (আত-তাহরীম, ৬৬/৬)। ইবনু সীরীন রহিমাহুল্লাহ বলেন,يُؤْمَرُ الصَّبِيُّ بِالصَّلَاةِ إِذَا عَرَفَ يَمِينَهُ مِنْ شِمَالْهِ، وَبِالصَّوْمِ إِذَا أَطَاقَهُ ‘যখন বাচ্চারা ডান-বাম চিনতে শিখে, তখন ছালাতের নির্দেশ দিতে হবে আর যখন ছিয়াম রাখতে (না খেয়ে থাকতে) সক্ষম হবে, তখন থেকে ছিয়াম রাখার নির্দেশ দিতে হবে’।[15] তাই ৯ বছর থেকে বাচ্চাদের ছিয়াম রাখার অভ্যাস করানো উচিত।
(১৬) বিগত রামাযানের অসমাপ্ত ইবাদতগুলো চিহ্নিত করা: রামাযান মাস আসার আগে বিগত রামাযানের নেক আমলগুলো করতে না পারার কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করা। যেমন- কেন নিয়মিত কুরআন অধ্যয়ন করা হয়নি? কেন তারাবীহ পড়া হয়নি? কেন দান-খয়রাত করা হয়নি? কেন ই‘তিকাফ করা হয়নি? কেন ছায়েমকে ইফতার করানো হয়নি? কেন পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত জামাআতের সঙ্গে আদায় করা সম্ভব হয়নি? কেন কুরআন-সুন্নাহর আলোচনায় বসা হয়নি? কেন রামাযানে পরিবারের লোকদের হক্ব আদায় করা হয়নি? কেন রামাযানে পাড়া-প্রতিবেশী বা আত্মীয়দের হক্ব আদায় করা হয়নি?
উক্ত বিষয়গুলো চিহ্নিত করে নেওয়া প্রয়োজন। এ বছর রামাযান আসার আগে আগে চিহ্নিত কারণগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখলে কিংবা সে অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করলে কল্যাণকর সব নেক আমল যথাযথ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
(১৭) রামাযান মাসের চাঁদের অনুসন্ধান করা: শা‘বান মাসের শেষ দিকে রহমতের মাস রামাযানের নতুন চাঁদ দেখা একটি সুন্নাত আমল। আজ এই সুন্নাত আমাদের থেকে বিদায় নিচ্ছে। মাহে রামাযানকে বরণ করে নিতে চাঁদ দেখার জন্য পশ্চিম আকাশে অনুসন্ধান করা উচিত। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নতুন চাঁদ দেখতেন, তখন বলতেন,اَللهُ اَكْبَرُ اَللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْاِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْاِسْلَامِ وَالتَّوْفِيْقِ لِمَا تُحِبُّ وَتَرْضَى رَبُّنَا وَرَبُّكَ الله ‘আল্লাহ সবচেয়ে বড়! হে আল্লাহ! আপনি এটাকে নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলাম ও সেসব আমলের তাওফীক্বের সাথে উদিত করুন, যা আপনি ভালোবাসেন এবং যাতে আপনি সন্তুষ্ট হন, সেটাই আমাদের তাওফীক্ব দিন, আমাদের প্রভু এবং তোমার প্রভু আল্লাহ’।[16]
(১৮) রামাযানের আগে থেকেই বেশি বেশি দু‘আ করা: রামাযানে আমলের তাওফীক্ব পাওয়ার জন্য দু‘আ করা। বান্দা যতই চেষ্টা করুক না কেন আল্লাহ তাওফীক্ব না দিলে কোনো ইবাদত করা সম্ভব হবে না। আবার তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ‘তোমাদের প্রভু বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব’ (আল-মুমিন, ৪০/৬০)।
(১৯) সুস্থতার জন্য ও ব্যস্ততা থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা: সুস্থতা ও অবসর সময় আল্লাহর বিশেষ দুটি নেয়ামত। যদি এই দুটি নেয়ামত না থাকে, তাহলে যতই পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করি না কেন, তা বাস্তবায়ন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আল্লাহর কাছে এই দুটি নেয়ামতের জন্য দু‘আ করতে হবে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ ‘এমন দুটি নেয়ামত রয়েছে, যাতে অধিকাংশ লোক প্রতারিত হয়ে থাকে— একটি হচ্ছে সুস্থতা আর অপরটি হচ্ছে অবসর’।[17]
উপসংহার: মহান রবের কাছে ফরিয়াদ করি, হে আল্লাহ! আপনার রহমত ও ক্ষমার মাসে কত মানুষ সৌভাগ্যবানদের কাতারে নাম লেখাবে! কত মানুষ ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে! কত মানুষ জান্নাতী হয়ে যাবে! হে আল্লাহ! আমরা যেন সেই সব সৌভাগ্যবানের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি। আপনি আমাদের সেই তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!
আবূ মাহদী মামুন বিন আব্দুল্লাহ
অধ্যয়নরত, আক্বীদা ও দাওয়াহ বিভাগ, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।
[1]. ছহীহ বুখারী, হা/১।
[2]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯০৩।
[3]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৭০২।
[4]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৩০৭।
[5]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৬৯, ১৯৭০।
[6]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৪৬।
[7]. ফাতহুল বারী, ৪/১৯১।
[8]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০৭৯।
[9]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯০৪।
[10]. তিরমিযী, হা/২৪৬৬; ইবনু মাজাহ, হা/৪১০৭।
[11]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৪০৯।
[12]. নাসাঈ, হা/২১০৬।
[13]. আহমাদ, হা/১৪০৪, হাদীছ ছহীহ।
[14]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৬৫।
[15]. মুছান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হা/৭৩৯০।
[16]. তিরমিযী, হা/৩৪৫১, হাদীছ ছহীহ।
[17]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪১২।