কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

এইডস : ইসলামই যার একমাত্র সমাধান

post title will place here

 পৃথিবী জুড়ে আজ অনৈতিক এবং অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। যেকারণে বিভিন্ন উপায়ে আল্লাহ পৃথিবীতে গযব নাযিল করেন। তেমনই একটি আযাবের নাম হলো ‘এইডস’। যে রোগের সমাধান এখন পর্যন্ত পৃথিবীর মানুষ আবিষ্কার করতে পারেনি। অথচ ইসলামেই রয়েছে এর প্রকৃত সমাধান।

এই মরণব্যাধি সম্পর্কে পৃথিবীবাসীকে সচেতন করতে প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব এইডস দিবস’ পালন করা হয়। আজ আমরা জানার চেষ্টা করব ইসলামই কীভাবে এইডসকে প্রতিরোধ করতে পারে।

এইডস কী :

এইডস এর পুরো নাম হলো ‘অ্যাকুয়ার্ড‌ ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিন্ড্রোম’ এবং এইচআইভি-পজিটিভকেই বলা হয় ‘এইডস’। এই রোগের ভাইরাস ‘এইচআইভি’ কারো শরীরে প্রবেশ করলে তার শরীরের রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। ফলে যেকোনো সংক্রামক জীবাণু সহজেই এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিকে আক্রমণ করে অসুস্থ করে দেয়। এতে এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। যা ধীরে ধীরে তাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

এইডস কীভাবে ছড়ায় :

এইচআইভি মানবদেহের কয়েকটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থে (রক্ত, বীর্য, বুকের দুধ ইত্যাদিতে) বেশি থাকে। ফলে, মানবদেহের এই তরল পদার্থগুলোর আদানপ্রদানের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়াতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে যে যে উপায়ে এইচআইভি ছড়াতে পারে, তা হলো—

(১) এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর রক্ত সাধারণ কোনো ব্যক্তির দেহে দান করলে ঐ ব্যক্তি এইডসে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে যারা নেশাগ্রস্ত ভাসমান রক্তদাতা তারা এই পদ্ধতিতে এইডসের সংক্রমণ বৃদ্ধি করে। 

(২) এইডস আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে (গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে বা সন্তানের মায়ের দুধ পানকালে)। মায়ের এইডস থাকলে অবশ্যই তার গর্ভের সন্তানের এইডস হওয়ার ঝুঁকি বেশি। একইসাথে আক্রান্ত মা শিশুকে দুগ্ধ পান করালেও এইডস আক্রান্ত হবে। 

(৩) যেকোনো অনিরাপদ দৈহিক যৌন মিলনে। বিশেষ করে যৌনপল্লিতে যাদের নিয়মিত যাতায়াত, তাদের এইডস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। একই সাথে সমকামী এবং নিম্নশ্রেণির যৌনকর্মী দ্বারাও এইডস ছড়ায়। 

(৪) আক্রান্ত ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহৃত সুঁচ বা সিরিঞ্জ অন্য কোনো ব্যক্তি ব্যবহার করলেও এইডস হয়। যারা নেশাগ্রস্ত তারা এই উপায়ে বেশি আক্রান্ত হয়। 

(৫) আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো অঙ্গ অন্য ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে এইডস হতে পারে।

এইডস বৃদ্ধির কারণ : 

দিনদিন দেশে বিভিন্ন কারণে এইডসের রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ হলো—

পারিবারিক অনুশাসন না থাকা : সমীক্ষায় দেখা যায় যে, কিশোর ও যুবক শ্রেণিরাই এইডস আক্রান্ত বেশি। এই কিশোর-তরুণ-যুবকরা পারিবারিক নৈতিক অনুশাসন না থাকার কারণেই নেশা এবং যৌনতায় মেতে উঠে। 

ইসলামী অনুশাসন মেনে না চলা : পারিবারিক অনুশাসনের পাশাপাশি ধর্মীয় অনুশাসন খুবই জরুরী। ধর্মীয় অনুশাসনে সর্বাবস্থায় নেশা এবং অবৈধ যৌনতাকে নিষিদ্ধ করে। এই ধর্মীয় অনুশাসন না থাকার কারণে কিশোর-যুবকরা সহজেই নিষিদ্ধ কাজে জড়িয়ে পড়ে। 

সহজলভ্য পতিতাবৃত্তি : আজ শহর-গ্রাম সবখানেই পতিতাবৃত্তি হচ্ছে হাতের নাগালে। এই সহজলভ্য যৌনতার কারণে কিশোর-যুবক-তরুণরা অনায়াসেই নিষিদ্ধ যৌনাচারে জড়িত হয়। যার ফলে এইডসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। 

সহজলভ্য নেশাদ্রব্য : আজকাল নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে হাতের নাগালেই সকল নেশাদ্রব্য পাওয়া যায়। যা এইডস বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। 

সামাজিক অবক্ষয় : দিনদিন সমাজ থেকে মানুষে নীতি-নৈতিকতা উঠে যাচ্ছে। ফলে আজকাল কেউ কারো মন্দ দেখলেও তাকে শুধরানোর চেষ্টা করে না। একইসাথে সমাজের মানুষ টাকা-পয়সাকে গুরুত্ব দেয়। যার ফলে উপযুক্ত বয়সের বেশি হওয়ার পরও ছেলেদের বিয়ের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে। এতে করে তরুণ-যুবকরা নিষিদ্ধ পল্লিতে যাতায়াত করে এইডসের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। 

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা : রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে আজ লক্ষ লক্ষ তরুণ বেকার। এসব শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকাররা উপযুক্ত বয়স পার হওয়ার পরও বিয়ে করতে পারে না। ফলে তারা নেশা এবং যৌনতার নিষিদ্ধ দুনিয়ায় প্রবেশ করে। এতে করেও এইডসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় সমাজে।

এইডস প্রতিরোধের উপায় :

এইডস এমন একটি রোগ, যার অধিকাংশ রোগীর বয়সই হচ্ছে ১৫-২৫ বৎসরের মধ্যে। অর্থাৎ আনুপাতিকহারে যুবকরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত। তাই যুবকদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করাই হতে পারে এইডস প্রতিরোধে সঠিক সিদ্ধান্ত। 

আমরা জানি, এইডসের কোনো প্রতিকার নেই। তাই এর প্রতিরোধ জরুরী। একই সাথে এইডস বৃদ্ধির যেসব কারণ জেনেছি, তার বিচার-বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারব এইডস এমন একটি রোগ যার প্রতিরোধের শিক্ষা একমাত্র ইসলামেই রয়েছে। আমরা যদি ইসলামের নীতি-নৈতিকতা, আইনকানুন সঠিকভাবে পালন করি, তাহলে এইডস প্রতিরোধ অবশ্যই সম্ভব। আমরা ইসলামের বিভিন্ন অনুশাসনের মাধ্যমে এইডস প্রতিরোধ করতে পারি। 

পারিবারিক উপায় :

পারিবারিক সুশিক্ষা : একটি পরিবার হলো যেকোনো মানুষের প্রথম শিক্ষাকেন্দ্র। সকল মানুষ ভালো-মন্দ সবকিছুর শিক্ষা প্রথমে পরিবারেই পেয়ে থাকে। তাই যে পরিবারে ইসলামের নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা ভালো, সেই পরিবারের সন্তানেরা কখনোই অনৈতিক পথে পা বাড়ায় না। এইডসে আক্রান্তদের অধিকাংশই হলো নেশাগ্রস্ত এবং অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকারী। তাই প্রতিটি পরিবারে ইসলামী শাসন অনুসরণ করা হলে অবশ্যই তাদের সন্তানরা বিপথে পা বাড়াতে পারবে না।

শারীরিক উপযুক্ততায় বিয়ে করানো : এইডস প্রতিরোধে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে, সন্তানদের শারীরিক উপযুক্ততায় বিয়ে করানো। আর একমাত্র ইসলামই বলে, সঠিক বয়সে সঠিক সময়ে সন্তানদের বিয়ে দাও। আমাদের দেশে বিয়ের যোগ্যতাকে শারীরিক দিকে বিবেচনা না করে বরং অর্থনৈতিক ভিত্তিতেই বিবেচনা করা হয় বেশি। অর্থাৎ ছেলেরা যখন অর্থনৈতিকভাবে উপযুক্ত হয় তখনই তাদের বিয়ের চিন্তা করা হয়, যা কখনোই উচিত নয়। যেসব সন্তানরা উপযুক্ত সময় হওয়ার পরও বিয়ে করতে পারে না, তারা যৌনপল্লিতে যৌনকর্মীর কাছে নিজেদের চাহিদা পূরণ করে। আর এভাবেই অবাধ যাতায়াতে একজনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস বাসা বাঁধে। তাই বিয়ের বিষয়ে যদি আমাদের পরিবারগুলো ইসলামের নীতি অনুসরণ করে তাহলে এইডসের প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

সামাজিক বিভিন্ন উপায় :

সৃজনশীল সংগঠন : আমাদের দেশে অতীতে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গ্রামে অসংখ্য ধর্মীয়, সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠন ছিল। এলাকার সন্তানরা এসব সংগঠন করে তাদের কৈশোর এবং যৌবন পার করত। ফলে এলাকায় একটা সামাজিক নৈতিকতা এবং আদর্শের শৃঙ্খলা ছিল। ছোটরা বড়দের সম্মান করত। ছোটদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড়রা বাধা দিয়ে তাদের শাসন করত। যা বর্তমান সামাজিক অবস্থায় কল্পনাই করা যায় না। তাই বর্তমানেও যদি এই জাতীয় পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তাহলেও উঠতি বয়সের ছেলেদের আমরা অনৈতিক পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারব। আর তরুণদের এই পথ থেকে ফেরানোর মাধ্যমে আমরা এইডসসহ অন্যান্য রোগ থেকেও প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব। 

অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা : আমাদের দেশে আগে একটা ইসলামিক সামাজিক শৃঙ্খলা ছিল, যা এখন আর নেই। এই শৃঙ্খলার ফলে এলাকার সন্তানরা সহজে চাইলেই কখ‌নো নেশা কিংবা অনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারত না। শুধু তাই নয়, তৎকালীন সময়ে এলাকায় কখনোই কোনো যৌন কিংবা নেশার ব্যবসার জায়গায় দেওয়া হতো না। ফলে অনেকের খারাপ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সামাজিক চাপে তাদের ইচ্ছা পূরণ হতো না। যা এখন আধুনিক অনৈসলামিক যুগে সমাজে হাত বাড়ালেই বাসাবাড়িতে সহজেই পাওয়া যায়। তাই সমাজে যদি ইসলামিক পরিবেশ সৃষ্টি করে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাধা প্রদান করা হয় তাহলেও এইডস প্রতিরোধ সম্ভব হবে। 

ধর্মীয় উপায় :

ধর্মীয় অনুশাসন : যেসব পরিবারে ইসলামের কঠোর অনুশাসন মেনে চলা হয়, সেসব পরিবারের সন্তানরা কখনোই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারে না। তাই প্রত্যেকেরই উচিত সন্তানদের ইসলামের অনুশাসনে রাখা। একইসাথে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এইডসের ভয়াবহতা নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করার মাধ্যমেও এইডস প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

যেনা-ব্যভিচার থেকে দূরে থাকা : ইসলামে যেনা-ব্যভিচার নিষিদ্ধ এবং চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ﴿وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا﴾ ‘আর তোমরা যেনার কাছেও যেয়ো না। কেননা এটি অত্যন্ত অশ্লীল ও মন্দ পথ’ (আল-ইসরা, ১৭/৩২)। যদি সমাজে ইসলামের এই দাওআত সঠিকভাবে পৌঁছানো যায়, তাহলেও এইডস প্রতিরোধ সম্ভব হবে। কেননা যে নিজেকে মুসলিম দাবি করবে সে কখনোই অবাধ যৌনাচারের লিপ্ত হতে পারে না। 

পর্দার বিধান চালু করা : আমাদের দেশে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগার কারণে দিনদিন ইসলামের সকল বিধান উঠে যাচ্ছে। এমন একটি বিধান হলো পর্দা। আজ রাস্তাঘাটে, শপিংমল-অফিস-আদালতে, স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে নারী-পুরুষের পোশাকের কোনো শালীনতা নেই। নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার কারণে অশালীন পোশাক পুরুষদের যৌন উত্তেজনাকে বর্ধিত করে। যার পরবর্তিত পদক্ষেপ হয় যৌনপল্লিতে যাতায়াতের মাধ্যমে। আর অসাবধানতার শেষ পরিণতি হয় এইডসের মাধ্যমে। সুতরাং ঘরে-বাইরে নারী-পুরুষদের শালীন পোশাক-পরিচ্ছেদ এবং পর্দার বিধান এইডস প্রতিরোধের একটি উপায়। 

সমকামিতা বন্ধ করা : ইসলামে সমকামিতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ বিশ্বে বিভিন্ন দেশ সমকামিতাকে স্বীকৃত দিয়েছে, যা অত্যন্ত গর্হিত বিষয়। এই সমকামিতার ফলেও এইডস রোগীর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এখনই ইসলামের বিধান চালু করে সমকামিতা বন্ধ করা উচিত। 

ওয়ায-নছীহত করা : আজ আমাদের দেশে ওয়ায-নছীহত প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অথচ ওলামায়ে কেরাম এবং দাঈরা তাদের ওয়ায-নছীহতে পর্দা, অশ্লীলতা, যেনা-ব্যভিচার ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেন, যার প্রভাবে সমাজে অশ্লীলতা কমে আসে। একইসাথে আলেমরা সঠিক সময়ে বিয়ে করার ও দেওয়ার তাগিদ দেন, যার ফলে সমাজে অনাচার কমে আসে। তাই যতই ওয়ায-মাহফিলের আয়োজন করা হবে, ততই এইডসের প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। 

রাষ্ট্রীয় উপায় :

অবাধ যৌনাচার বন্ধ করা : ইসলামে অবাধ যৌনাচার নিষিদ্ধ। এইডসের মূল টার্গেটই হলো কিশোর-তরুণ যুবকশ্রেণি। যাদের যৌন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সবচেয়ে কম। তাই এইসব কিশোর-তরুণরা অবাধ যৌনতায় মেতে উঠে সহজেই। আর দেশে যৌনতা সহজলভ্য হওয়ার কারণে এইডসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায় নিমিষেই। যদি ইসলামী আইন চালু করে অবাধ যৌনাচার বন্ধ করা যায়, তাহলে এইডস সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব। 

অবাধ মাদকদ্রব্য পরিহার করা : ইসলামে সর্বাবস্থায় মাদক হারাম। আর ইসলামী আইন না থাকার কারণে বর্তমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার কারণে মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা চারিদিকে। এর ফলে কিশোর-তরুণ-যুবক সহজেই নেশাগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। তাই ইসলামী আইন চালু করে যদি মাদক নিষিদ্ধ করা যায়, তাহলে এইডসের ভয়াবহতা রোধ করা সম্ভব।

পতিতাবৃত্তি বন্ধ ও পুনর্বাসন : ইসলামে যেনা-ব্যভিচার সম্পর্কিত সকল কিছুই হারাম। তাই আইন করে দেশে গড়ে উঠা সকল পতিতালয় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বন্ধ করে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। যদি ইসলামী আইন করে সহজলভ্য সকল পতিতাবৃত্তি বন্ধ করে তাদের পুনর্বাসন করা যায়, তাহলে এইডসের মতো ভয়ংকর রোগের বিস্তার রোধ হবে।

সকল প্রকার পর্নসাইট বন্ধ করা : ইসলাম কখনোই অশ্লীলতাকে বরদাশত করে না। অথচ আধুনিক ডিজিটাল বিশ্বে পতিতাবৃত্তি ও যৌনতা বিভিন্ন অ্যাপস এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে গেছে। যদি এইডসের বৃদ্ধি রোধ করতে হয়, তাহলে ইসলামকে মেনে নিয়ে এখনই আইন করে সকল প্রকার পর্নোগ্রাফিক সাইট এবং অ্যাপস সরকারি উদ্যোগে বন্ধ করে এইডসকে প্রতিরোধ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের সচেতন করা : সরকার ধীরে ধীরে পাঠ্যসূচি থেকে ইসলাম ধর্ম বইকে বন্ধ করে দিচ্ছে। অথচ একমাত্র ইসলামই অশ্লীলতা এবং যৌনতাকে কঠোর হস্তে দমন করে। তাই প্রতিটি শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে ইসলাম ধর্ম বইকে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। একই সাথে পাঠ্যবইয়ে এইডসের বিষয়ে পাঠ তৈরি করে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করে এইডস প্রতিরোধ করতে হবে।

ব্যক্তিগত সচেতনতা :

যৌন আসক্ত ব্যক্তির বিয়ে : পৃথিবীতে অনেক পুরুষ রয়েছেন যাদের যৌন আসক্তি বেশি। এরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফলে এরা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও যেখানে সেখানে অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত হয়। এসব ব্যক্তির দ্বারাই এইডসের সংক্রমণ বেশি হয়। তাই যেসব পুরুষ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তাদের উচিত যৌনপল্লিতে না গিয়ে একাধিক বিয়ে করা। যার অনুমোদন ইসলাম দেয়। কিন্তু বর্তমান সমাজ ইসলামকে মানে না বলে একাধিক বিয়েকে সমর্থন করে না। অথচ অবাধ যৌনাচারও বন্ধ করতে পারে না। তাই ইসলামেই রয়েছে এর সমাধান। আমাদের উচিত ইসলাম মেনে বিয়ের মাধ্যমেই যৌনতার সমাধান করা।

স্ত্রীদের সতর্কতা ও উদারতা : যেসব স্বামী এক স্ত্রীতে সন্তুষ্ট নয়, সেসব স্ত্রীর উচিত স্বামীদের প্রতি সতর্ক হয়ে উদার হওয়া। যদি সে কলাকৌশলে স্বামীকে খারাপ পথ থেকে ফেরাতে না পারে, তাহলে তার উচিত উদার মনোভাব নিয়ে স্বামীকে বিয়ের জন্য উদ্বুদ্ধ করা। ফলে সামর্থ্যের অভাবে বিয়ে করতে না পারলে স্বামী শুধরে যাবে। নচেৎ স্বামী বিয়ে করে পাপমুক্ত থাকবে। এতে সকলেরই কল্যাণ হবে। আর বর্তমান পৃথিবীতে পুরুষের চাইতে নারীর সংখ্যাই বেশি। যেকারণে অসংখ্য নারী সংসার না পেয়ে পতিতাবৃত্তিতে নেমে যায়। তাই ইসলামকে মেনে চলতে পারলেই এইডসকে প্রতিরোধ করা যাবে।

উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে আমরা এইডসের প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে পারলাম। এই আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, এইডস এমন একটি রোগ যার সম্পূর্ণ সমাধান ইসলামে আছে। যেকারণে ইসলামী দেশগুলোতে এইডসের ভয়াবহতা কম। সেই তুলনায় ইউরোপ-আমেরিকা-আফ্রিকায় এইডসের প্রকোপ বেশি। সুতরাং আল্লাহর গযব এইডস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করা। আসুন! আমরা ইসলামকে মেনে চলি এবং সবাইকে সচেতন করি। যাতে আমরা আগামী প্রজন্মকে এইচআইভিমুক্ত একটি ধরণি উপহার দিতে পারি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!


সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।

Magazine