কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

শিশু-কিশোরদের দ্বীনের দাওয়াত

post title will place here

[১]

আজকের শিশু-কিশোররা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের সেই ভবিষ্যৎ কেমন হওয়া চাই, সেটার জন্য আজকের দিনগুলোতে তাদের পেছনে সময় দেওয়ার তথা তাদেরকে নিয়ে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। তাদের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। তাদের এই সময়টাতে যা যা শেখানো হবে, তা তাদের শার্প মস্তিষ্কে মনে থাকবে ভালো। কাজেই এ সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অনেকেই বলে থাকেন, আজকালকার বাচ্চারা বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে, কথা শুনে না ইত্যাদি আরও কত কী! দেখুন তাদেরকে আদব না শেখালে বেয়াদব তো হবেই। এ দায় তো আর তাদের নয়, আমাদের নিজেদের। তারা তো আর মায়ের পেট থেকে বেয়াদব হয়ে জন্মেনি। বরং তাদেরকে আমরা আদব শিখাচ্ছি না, আদবের পরিবেশে রাখছি না— এ দোষ আমাদের। তাদের বেয়াদব হয়ে যাওয়া তো আমাদের ব্যর্থতা।

এছাড়া ‘বেয়াদব’ বললে তারা আদব শিখে যাবে না। উলটো আরও বেশি বেয়াদব হবে। ফলে ‘বেয়াদব’ বলে দূরে ঠেলে না দিয়ে তাদেরকে আদব শেখানোর চেষ্টা করতে হবে, তাদেরকে আদবের পরিবেশে রাখতে হবে। কেবল স্কুল-মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে ছেড়ে দিলেই হবে না; তাদের আদবের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিজেকেই সচেতনভাবে দিতে হবে। এটাকে গুরুত্ব না দেওয়া মানে তাদেরকে বেয়াদব হতে সাহায্য করা।

আপনি আজকের শিশু-কিশোরদের আগামী ১০-১৫ বছর পর কিংবা পরিণত বয়সে কীভাবে দেখতে চান সেটা নির্ভর করে আপনি আজকের দিনগুলোতে তাদেরকে কী শিখাচ্ছেন, কোন পরিবেশে রাখছেন, তাদের পেছনে কতটুকু মেহনত করছেন। ভালো কিছু শেখালে বেঁচে থাকলে এর ফল আপনি একটা সময়ে দেখতে পারবেন। তখন দেখবেন তারা আপনার চক্ষু শীতলকারীতে পরিণত হয়েছে। অন্যথা, তাদের বেয়াদবি সহ্য করে একসময় সেটার বিরাট মাশুল দিতে হতে পারে। তখন তারা আপনার পাশাপাশি অন্যদেরও চক্ষুশূলে পরিণত হবে।

[২]

এবার শিশু-কিশোরদের উপযোগী কয়েকটি দাওয়াতী বাণী তুলে ধরছি। অবশ্য, আপনি নিজে থেকেও তাদের উপযোগী আরও ভালো কিছু নছীহত করতে পারেন। এগুলো সময়ে সময়ে তাদেরকে বলবেন, একসাথে নয় কিন্তু। কখন করবেন? এই ধরুন, আপনি রাস্তায় হেঁটে মাসজিদে বা কোথাও যাওয়ার পথে কোনো শিশু-কিশোরকে পেলেন, তখন আপনি তাকে সালাম দিয়ে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করে এগুলোর কয়েকটি শিখিয়ে দিলেন। এছাড়া, আপনার ঘরের ভাই-বোন কিংবা আপনার আশেপাশের যেকোনো শিশু-কিশোরকে এগুলো শিখিয়ে দিবেন। এগুলো ইসলামিক ম্যানারস, যা জানা খুবই জরুরী। তাকে বলবেন—

(১) ছোট-বড় সবাইকে সালাম দিবে, ঘরে ঢুকেই শুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দিবে। আর কেউ সালাম দিলে তুমি শুধু জবাব দিবে।

বাবা-মা থেকে শুরু করে রিকশা চালক, ভিক্ষুক, বাসায় যিনি কাজ করেন, তাকেও সালাম দিবে। এতে একটুও লজ্জাবোধ করবে না। তাদেরকে মামা, খালা বলে ডাকবে। দেখবে তারা খুশি হয়ে তোমাকে দু‘আ দিবে। তাদেরকে ছোট মনে করবে না।

এছাড়া, ঘরে প্রবেশ করার সময় সালাম দিয়ে এবং বিসমিল্লাহ পড়ে প্রবেশ করবে। এটাকে অভ্যাস করে নিবে। এতে তোমার সাথে ঘরে শয়তান ঢুকতে পারবে না। তুমি কি চাও শয়তান তোমার সাথে ঘরে প্রবেশ করুক? না, তাহলে ‘সালাম’ আর ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে আজ থেকে কখনো ভুলবে না কিন্তু।

(২) যেকোনো কাজ শুরু করার সময় এবং খাবার খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করবে। খাবার শেষে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বলবে।

(৩) ছোট-বড় কারো সাথে দেখা হলে মুছাফাহা করবে। এতে গোনাহ মাফ হয়। আর সম্পর্ক অনুযায়ী ভাইয়া বা চাচা বা মামা সম্বোধন করে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করবে। যেমন- আপনি কেমন আছেন, ভাইয়া? এতে তিনি খুশি হয়ে তোমাকে দু‘আ দিবেন, আল্লাহও খুশি হবেন।

(৪) মানুষের সাথে গোমড়ামুখো হয়ে থাকবে না, সবসময় হাসিমুখে কথা বলবে। এতে দানের ছওয়াব পাবে।

(৫) কখনো কোনো ভুল করে বসলে ‘দুঃখিত/সরি’ বলবে। আর আল্লাহর কাছে বলবে, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’। কেউ কোনো উপকার করলে বা তোমাকে কিছু দিলে বলবে, ‘জাযাকাল্লাহু খয়রান’। আল্লাহকে বলবে, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’।

(৬) সুন্দর বা ভালো জিনিস দেখলে বলবে, ‘মাশাআল্লাহ’। কোনো কিছু দেখে বা শুনে অবাক হলে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে। আর ভবিষ্যতে কিছু করার কথা বললে, ইনশা-আল্লাহ বলবে। যেমন- কালকে কি স্কুলে যাবে? তুমি এভাবে বলবে, ‘ইনশা-আল্লাহ যাব’।

(৭) মা-বাবার কথামতো চলবে। কখনো তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করবে না। তাদের কষ্ট বোঝার চেষ্টা করবে। তারা তোমাদেরকে কত কষ্ট করে বড় করছেন। এটা ভুলে যেয়ো না। তাদের জন্য দু‘আ করবে।

(৮) কখনো রাগ করবে না। চিৎকার-চেচিয়ে কথা বলবে না। নরম গলায় কথা বলবে। ভদ্র হয়ে চলবে।

(৯) যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলবে না। ডাস্টবিন খুঁজে সেখানে ফেলবে।

(১০) কেউ কিছু না পারলে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে না। তাকে লজ্জা দিবে না। সে কোনো ভুল করলে তাকে সুন্দর করে দরদ দিয়ে বুঝিয়ে সংশোধন করে দিবে, কেমন?

(১১) কাউকে দেখিয়ে দেখিয়ে কিছু খাবে না। এতে সে মনে মনে কষ্ট পেতে পারে। পারলে তাকে সাথে নিয়ে ভাগাভাগি করে খাবে। আর না পারলে অন্তত তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে খাবে না।

(১২) যে-কোনো জিনিস বসে খাবে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নয়। আর বাম হাত দিয়ে নয়, ডান হাত দিয়ে খাবে। 

(১৩) ঘরের টুকটাক কাজে মা-বাবাকে সাহায্য করবে। মায়ের জন্য রেখে না দিয়ে নিজের খাবার-প্লেট নিজে পরিষ্কার করার চেষ্টা করবে। এতে তোমার ছওয়াব হবে। 

(১৪) কখনো কাউকে গালিগালাজ করবে না। কাউকে খারাপ নামে কিংবা ব্যঙ্গ করে ডাকবে না।

(১৫) মুরব্বীদের রেখে চেয়ারে আগ বাড়িয়ে বসবে না। তাদের সামনে কখনো পায়ের ওপর পা তুলে বসবে না। এতে বেয়াদবি হবে। সবসময় তাদের সম্মান করবে।

(১৬) বাথরুমে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করবে আর ডান পা দিয়ে বের হবে। আবার, মাসজিদে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করবে আর বাম পা দিয়ে বের হবে। প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দু‘আ বলবে।

(১৭) অহংকার কী, জানো? —নিজেকে বড় মনে করা, অন্যকে ছোট মনে করা আর সত্য জিনিসকে না মানাই হচ্ছে অহংকার। 

(১৮) হিংসা কী, জানো? —কোনো মানুষের ভালো কিছু দেখে সহ্য করতে না পেরে তার ভালো জিনিসটি অপসারণ হয়ে যেন সেটা নিজের হয়, এরকম কামনা করলে, সেটাকে হিংসা বলে।

মনে রেখো, যারা অহংকার এবং হিংসা করে, তাদেরকে আল্লাহ খুব ঘৃণা করেন, তাদেরকে আল্লাহ জান্নাত দিবেন না বলেছেন। এবার বলো তো, আমরা কি অহংকার এবং হিংসা করব?

(১৯) মক্তব বা প্রাইভেট-শিক্ষক যিনিই হোক আরবী ক্লাস মন দিয়ে করবে। কারণ তোমাকে আল্লাহর কালাম কুরআন শুদ্ধ করে শিখতে হবে, ছালাত শুদ্ধ করে শিখতে হবে। আর বাবা, ভাইয়ার সাথে মাসজিদে সালাত আদায় করতে যাবে।

(২০) কারো কথা বলার মাঝখানে তুমি কথা বলো না। এটা অসুন্দর। কেউ কিছু বললে তুমি সেটা আগে মন দিয়ে শুনবে। তারপর কিছু বলার থাকলে সেটা সুন্দর করে বলবে।

(২১) কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে, তাঁকে সান্ত্বনা দিবে। তাঁকে সান্ত্বনা দিবে যে, আল্লাহ সবকিছু ঠিক করে দিবেন, আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না। 

(২২) কোনো কাজে তাড়াহুড়ো করবে না, আস্তে ধীরে করবে। আর কাজ করে ফলাফলের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করবে।

(২৩) কারো কথা লুকিয়ে লুকিয়ে শুনবে না। কাউকে নিয়ে খারাপ কথা বলবে না। একজনের গোপন কথা অন্য জনকে বলবে না। এ কাজ খুব খারাপ।

(২৪) যে-কোনো বিষয় মা-বাবার সাথে মন খুলে শেয়ার করবে এবং পরামর্শ নিবে, ভিতরে কোনো কিছু চেপে রাখবে না। মনে রাখবে, বন্ধু-বান্ধবের চেয়ে তোমার সবচেয়ে বড় আপন হচ্ছে মা-বাবা।

(২৫) যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তোমার জীবনের লক্ষ্য কী? তুমি এক বাক্যে বলবে, জান্নাতে গিয়ে আমার আল্লাহকে দেখাই আমার জীবনের আসল লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্য সামনে রেখে জীবনটাকে সাজাবে, কেমন?

[৩]

এখন অনেকে বলতে পারেন, বাচ্চারা কি এসব কথা শুনবে? —কেন শুনবে না! এই চিন্তা মূলত শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। কারণ সে চায় না বাচ্চাদের পিছনে কাজ করা হোক। যাহোক, কথা শুনার জন্য কিছু কাজ করতে হবে। এজন্য তাদের সাথে মিশতে হবে। হাসিমুখে কথা বলতে হবে। তাদের কিছু শেখানোর জন্য আগে নিজের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে হবে, সুন্দর আচরণ দিয়ে তাদের আস্থার মানুষে পরিণত হতে হবে। আর তার জন্য তাদের সাথে মাঝে মাঝে খেলাধুলা করা যেতে পারে। খেলাধুলার ফাঁকে ফাঁকেও বিভিন্ন জিনিস শেখানো যেতে পারে।

এছাড়া, তাদের নাম সম্বোধন করে ডাকবেন। সম্বোধনের মধ্যে অন্যরকম একটা অ্যাট্রাকশন ও মায়া কাজ করে। এতে তারা আপনাকে ‘আপন’ ভাববে। এই ধরুন, আপনি তাকে সম্পর্ক অনুযায়ী ‘ভাইয়া’, ‘চাচ্চু’ কিংবা সরাসরি নাম ধরে ডাকবেন। দেখবেন এতে তারা কত খুশি হয়। তখন তারা ভাববে আরে, উনি তো আমাকে অনেক স্নেহ করেন, অনেক কেয়ার নিয়ে কথা বলেন। এতে সহজেই আপনি তাদের মনে জায়গা দখল করে নিতে পারবেন। আর কথা শুনানোর ক্ষেত্রে তাদের মনের মধ্যে নিজের জায়গা নিশ্চিত করা আবশ্যক।

এছাড়া, মাঝে মাঝে কিছু ভালো মানের চকোলেট দিবেন। তাদের ভালো-মন্দ ও পড়াশোনার বিষয় জিজ্ঞেস করবেন। একদিন দেখা না হলে মহব্বত নিয়ে বলবেন, জানো ভাইয়া, তোমাকে আমি অনেক মিস করেছি। সে কোথাও যাওয়ার কথা বললে বলবেন, তোমাকে আমি খুব মিস করব। এছাড়া, দেখা হলে ইতিবাচকভাবে এভাবে শুরু করে বলতে পারেন, মাশাআল্লাহ! তোমাকে তো অনেক সুন্দর লাগছে। তাকে যে ভ্যালু দেওয়া হচ্ছে, ভ্যালুএ্যাবল মনে করা হচ্ছে এটা তার সাথে সুন্দর কথা বলে, সুন্দর ব্যবহার দিয়ে বোঝাতে হবে। তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দেখে সে অনেক খুশি হবে। এভাবে ব্যবহার করলে দেখবেন আপনার প্রতি তার ভালোবাসা অনেক বাড়বে। বিশ্বাস করুন, এগুলোর কার্যকারিতা অনেক বেশি, যা পরীক্ষিত বটে।

এভাবে সুন্দর করে মায়া নিয়ে কথা বললে কী হবে, জানেন? এতে তাদের সাথে আপনার ভালো ও মজবুত একটি সম্পর্ক গড়ে উঠবে। যে-কোনো বিষয়ে সহজেই আপনি তাদের কাছে পৌঁছতে পারবেন, তাদের প্রতি আপনার অ্যাকসেস সহজ হয়ে যাবে। আর এই সুযোগে আপনি তাদেরকে যত ভালো কিছু বলবেন, দেখবেন তারা সেগুলো সহজে গ্রহণ করছে, কোনো কথা ফেলে দিতে পারবে না। এমনকি আপনার শাসনকে অনধিকার চর্চা মনে করবে না। তাদের হৃদয়ে আপনার অবস্থান এত শক্ত হবে, যা আপনি ভাবতেও পারবেন না। সম্পর্ক সুন্দর না করে যত সুন্দর নছীহতই করুন না কেন, দেখবেন তাদের কাছে তেমন একটা অ্যাটেনশন পাচ্ছেন না। এজন্য নছীহতের জন্য আগে সুন্দর ব্যবহার করে সম্পর্ক সুন্দর হওয়া চাই।

শিখিয়ে দিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করে তাদের মুখ থেকে শুনে নিবেন। এতে তাদের শেখাটা মজবুত হবে। এই ধরুন, আপনি জিজ্ঞেস করবেন, আমরা কোনো কিছু খেলে কোন হাত দিয়ে যেন খাব? দেখবেন, সে বলবে, ‘ডান হাত দিয়ে’। আচ্ছা, আমরা কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাব? দেখবেন বলবে, ‘জি, না, বসে বসে খাব’। ঘরে ঢুকার সময় কী যেন বলব? সে জবাব দিবে, ‘বিসমিল্লাহ বলব আর সালাম দেব’। আমরা কি মানুষের সাথে গোমড়ামুখে কথা বলব? দেখবেন সে বলবে, ‘জি, না। হাসিমুখে কথা বলব’। হাসিমুখে কথা বললে কী হবে যেন? সে জবাব দিবে, ‘দান করার ছওয়াব হবে’।

এভাবে আপনার প্রতিটা শেখানো জিনিস তাদেরকে জিজ্ঞেস করে করে তাদের মুখ থেকে পুনরায় শুনে নিবেন। আর প্রতিবার উত্তর শুনে প্রশংসার উপস্থিতি রেখে বলবেন, ‘মাশাআল্লাহ, তুমি দেখছি অনেক সুন্দর পারো। তুমি এগুলো কীভাবে পারো, আমাকে একটু শেখাবে? তোমার তো মেধা ভালো আছে। তুমি সহজে মনে রাখতে পারো। আল-হামদুলিল্লাহ’! এতে সে মনে মনে খুশি হবে, তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা, এতে সে উৎসাহ পাবে। ফলে তার মধ্যে শেখার আগ্রহ তৈরি হবে।

শুধু শেখানোতেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না; তাদেরকে বলে দিবেন যে, তুমি যেগুলো শিখেছ, সেগুলো তোমার ভাই-বোন ও বন্ধুদের শেখাবে, কেমন? তবে কোনোভাবে তাদেরকে লজ্জা দিয়ে শেখাবে না। এই ধরো, তুমি কাউকে দেখলে যে, সে বাম হাত দিয়ে কিছু খাচ্ছে কিংবা দাঁড়িয়ে খাচ্ছে— তাকে সবার সামনে লজ্জা দিয়ে এ কথা বলো না যে, এই তুমি জানো না ডান হাত দিয়ে খেতে হয়, বসে খেতে হয়। এভাবে বলা যাবে না কিন্তু। তোমাকেও যদি কেউ এভাবে সবার সামনে ভুল ধরিয়ে দেয়, তবে তোমার কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই লজ্জা ও কষ্ট লাগবে। ফলে তাকে লজ্জা না দিয়ে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলতে হবে, দেখো ডান হাত দিয়ে এবং বসে বসে খেলে আল্লাহ খুশি হবেন এবং তোমার ছওয়াব হবে।

এই যে আপনি তাকে অন্যকে বলার কথা বলছেন এতে আপনি তাকে কী করছেন, জানেন? এতে আপনি তাকে এক প্রকার দাঈ বানিয়ে দিচ্ছেন। সে এভাবে আস্তে আস্তে দ্বীনের দাওয়াতের সাথে অভ্যস্ত হওয়া শুরু করবে, যা তার পরবর্তী সময়ে অনেক কাজে দিবে। সে যত জনকে এভাবে দাওয়াত দিবে ছওয়াবের এর একটা অংশ আপনার আখেরাতের অ্যাকাউন্টে গিয়ে জমা হবে। আপনার মৃত্যুর পরও এটা ছাদাক্বায়ে জারিয়া হিসেবে চলতে থাকবে। ফলে তাকে যখন আপনি বলে দিচ্ছেন এগুলো অন্যকেও শিখিয়ে দিয়ো, তখন আপনি শুধু তাকেই দাওয়াত দিচ্ছেন না, বরং তার মাধ্যমে আরও বহুজনকে দাওয়াত দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। আর আপনি ভাবতেই পারবেন না যে, এটা আপনার কত বড় কাজ হচ্ছে। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!

আম্বরখানা, সিলেট।

Magazine