[২০ শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরী মোতাবেক ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ পবিত্র হারামে মাক্কীর (কা‘বা) জুমআর খুৎবা প্রদান করেন শায়খড. আব্দুল্লাহ ইবনু আওয়াদ আল-জুহানী হাফিযাহুল্লাহ। উক্ত খুৎবা বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-এর আরবী বিভাগের সম্মানিত পিএইচডি গবেষক আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ। খুৎবাটি ‘মাসিক আল-ইতিছাম’-এর সুধী পাঠকদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হলো।]
প্রথমখুৎবা
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করি, তাঁরই কাছে সাহায্য চাই, তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাঁরই কাছে সঠিক পথের দিশা চাই। আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, আমাদের নিজেদের খারাপ প্রবৃত্তি ও মন্দ কর্ম হতে। আল্লাহ যাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, তাকে কেউ বিপথগামী করতে পারে না আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন, তাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার কেউ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরীক নেই। আর আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমাদের নেতা ও নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলিম না হয়ে মারা যেয়ো না’ (আলে ইমরান, ৩/১০২)। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক আত্মা থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চেয়ে থাক। আর ভয় করো রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক’ (আন-নিসা, ৪/১)। মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজগুলোকে শুদ্ধ করে দেবেন এবং তোমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই এক মহাসাফল্য অর্জন করল’ (আল-আহযাব, ৩৩/৭০-৭১)।
নিশ্চয়ই সর্বাধিক সত্য কথা হলো আল্লাহর কিতাব (কুরআন) এবং সর্বোত্তম পথনির্দেশ হলো মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথনির্দেশ। আর সব থেকে মন্দ কাজ হলো (দ্বীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত কাজ আর প্রতিটি নব উদ্ভাবিত কাজই হলো বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআতই হলো গোমরাহী।
অতঃপর, আমি আপনাদেরকে এবং নিজেকে আল্লাহভীতির অছিয়ত করছি। কেননা তাক্বওয়া মানুষকে উচ্চ মর্যাদার দিকে নিয়ে যায়, অন্তরকে পবিত্র করে এবং চরিত্রকে পরিশুদ্ধ করে। অনেক সময় শারঈ বিভিন্ন বিধান ও উপদেশ দানের শেষে তাক্বওয়া অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়। কারণ তাক্বওয়া হলো এমন একটি শক্ত বন্ধন, যা শরীরের সব ইন্দ্রিয়কে আল্লাহর আনুগত্যমুখী করে। এটি এমন একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক, যা আল্লাহর আদেশ অমান্য করা থেকে বিরত রাখে এবং এটি সেই দৃঢ় সম্পর্ক, যা বান্দাকে তার সৃষ্টিকর্তার সাথে সংযুক্ত রাখে।
হে মানুষসকল! এই দুনিয়া অচিরেই শেষ হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং এর সময় দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এর সামান্য কিছু অংশই অবশিষ্ট রয়েছে, যেমন পানির পাত্রের তলানিতে কিছু ফোঁটা পানি অবশিষ্ট থাকলে পাত্রের মালিক তা বের করে আনার চেষ্টা করে। এই দুনিয়া হলো পরীক্ষা ও বিপদের স্থান। এখানে মুমিনদের পরীক্ষা করা হয় সুখ ও দুঃখ দ্বারা, কষ্ট ও স্বস্তি দ্বারা, সুস্থতা ও অসুস্থতা দ্বারা, প্রাচুর্য ও দারিদ্র্যের দ্বারা, সন্দেহ-সংশয় ও প্রবৃত্তির লালসা দ্বারা এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যু দিয়ে পরীক্ষা করা হয়, যা প্রত্যেক জীবিত প্রাণীর শেষ পরিণতি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সেইসব মানুষের জন্য মহাপুরস্কারের সুসংবাদ দিয়েছেন, যারা দুনিয়ার পরীক্ষা ও কষ্টের সামনে ধৈর্যধারণ করে। তিনি বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জানমাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, তাদেরকে যখন বিপদ আক্রান্ত করে তখন বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। তাদের উপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত’ (আল-বাক্বারা, ২/১৫৫-১৫৭)।
হে আল্লাহর বান্দাগণ! আপনারা খুব শীঘ্রই এই নশ্বর দুনিয়া থেকে এমন এক জগতে প্রস্থান করবেন, যা হবে চিরস্থায়ী। আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাই যে, আমাদের চারপাশ থেকে বাবা-মা, সন্তানসন্ততি, ভাই-বোন, প্রিয়জন ও প্রতিবেশীরা এ দুনিয়া ছেড়ে পরকালের পথে যাত্রা করছে। মৃত্যু হচ্ছে একটি অনিবার্য সত্য, যার মুখোমুখি সকলকেই হতে হবে। যা মহান আল্লাহ ছোট কিংবা বড়, ধনী কিংবা গরীব সবার জন্যই নির্ধারণ করে রেখেছেন। মর্যাদা, ক্ষমতা, অর্থ বা বন্ধুবান্ধব কেউই এটাকে ঠেকাতে পারবে না। এমনকি দুর্ভেদ্য প্রাচীর কিংবা দুর্গের ভেতর লুকিয়ে থাকলেও মৃত্যুকে রোধ করা যাবে না। আর যদি মহান আল্লাহ কারও জন্য চিরস্থায়ী জীবন নির্ধারণ করতেন, তবে তা অবশ্যই হতো তাঁর নবী-রাসূলদের জন্য, বিশেষত সর্বশ্রেষ্ঠ নবী আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য, যিনি মানুষকে আল্লাহর সরল সোজা পথে পরিচালিত করেছেন। তাই মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী, কোনোভাবেই এটা থেকে পালানো সম্ভব নয়। যতই দীর্ঘ হোক আমাদের জীবনকাল, যতই অবস্থান করি মযবূত প্রাচীর কিংবা দুর্গের আড়ালে; তথাপিও আমাদের কাছে মৃত্যু এসে পৌঁছাবেই। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যেখানেই থাকো না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করো’ (আন-নিসা, ৪/৭৮)। তিনি আরও বলেন, ‘বলো, যে মৃত্যু হতে তোমরা পলায়ন করছ তা অবশ্যই তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করবে। তারপর তোমাদেরকে অদৃশ্য ও দৃশ্য সম্পর্কে পরিজ্ঞাত আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তারপর তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন যা তোমরা করতে’ (আল-জুমুআ, ৬২/৮)। কাজেই একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তির উচিত এই জীবনের পরবর্তী গন্তব্য সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করা। তার ভাবা উচিত যে, সে কোথায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে, কী অবস্থায় তার আত্মা ক্ববয করা হবে, কারা তার জান ক্ববয করার জন্য আসবে, তার কবরের অবস্থা কেমন হতে পারে, তার কবর কি জান্নাতের কোনো বাগানের মতো হবে, যেখানে থাকবে প্রীতিকর সঙ্গী? নাকি জাহান্নামের গর্তের মতো হবে, যেখানে থাকবে ভীতিকর সঙ্গী? তার কল্পনা করা উচিত সেই অবস্থার কথা, যা তার জন্য অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুযন্ত্রণা নিয়ে আসবে, আত্মা বের হওয়ার মুহূর্তের কষ্ট, যখন তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জড়িয়ে যাবে, জিহ্বা আটকে যাবে, দৃষ্টিশক্তি স্থির হয়ে যাবে আর আত্মীয়স্বজন তাকে ঘিরে কান্নাকাটি করবে। তার ভাবা উচিত সেই সময়ের কথা, যখন তার সন্তানরা ইয়াতীম হয়ে পড়বে আর সম্পদ জমা থাকবে ধনভান্ডারে। যখন মানুষের সঙ্গে থাকবে কেবল তার অন্তরের সঞ্চিত আমল। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি কোনো উপকারে আসবে না। তবে যে আল্লাহর কাছে আসবে সুস্থ অন্তরে’ (আশ-শুআরা, ২৬/৮৮-৮৯)।
অতএব, আপনারা আপনাদের ভালো আমল, সত্য কথা ও উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে শেষ পরিণতির জন্য প্রস্তুত হোন। ভয়ংকর ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। এক অনিবার্য সফরের জন্য তৈরি হোন। ঘুম থেকে জেগে উঠুন, গাফলতি থেকে সাবধান হোন, আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে দ্রুত এগিয়ে চলুন, সেখানে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাওয়ার পূর্বেই।
আপনারা আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নিন, কারণ সেটি চিরস্থায়ী আবাস। আর দুনিয়ার সঙ্গে এমন ব্যবহার করুন, যেন তা কেবল আখেরাতে পৌঁছার একটি সেতুবন্ধন মাত্র।
(হে ভাই!) সেই অপরিচিত একাকী ঘরের কথা স্মরণ করুন। স্মরণ করুন সেই মাটি ও পোকামাকড়ের ঘরের কথা। আরও স্মরণ করুন সেই সংকীর্ণ কবরের কথা। আপনাকে যেন এই চিরন্তন মৃত্যু ও আপনজন থেকে বিচ্ছেদ হওয়ার সময়কে কোনো কিছুতেই ভুলিয়ে না দেয়। আপনি অন্তরের পরিবর্তনকারী মহান আল্লাহর কাছে ফিরে আসুন। তাঁর কাছেই দ্বীনের উপর দৃঢ় থাকার আকুতি পেশ করুন।
আমাদের প্রত্যেকের উচিত আমরা যেন মৃত্যুর সময় আল্লাহর ইবাদতের উপর অটল থাকতে পারি। জেনে রাখুন! ভালো মৃত্যু কেবল সেই ব্যক্তিরই হয়, যার ভিতরের জীবন সুন্দর। কারণ মৃত্যু এমন এক মুহূর্ত, যখন কোনো ভণিতা চলে না।
হে আল্লাহ! আমাদের জীবনের পরিসমাপ্তি যেন ভালো আমলের মাধ্যমে হয়। আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনটি যেন তোমার সঙ্গে সাক্ষাতের দিন হয়, যখন তুমি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে। হে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানদাতা! তুমি আমাদেরকে তোমার অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দাদের সাথে তোমার প্রতিবেশী করে জান্নাতে রেখো।
نفعني اللهُ وإيَّاكم بالقرآن العظيم، وبحديث سيد المرسلينَ، وأجارني وإيَّاكم من عذابه الأليم، وغفر لي ولكم ولسائر المسلمين أجمعين، إنه هو الغفور الرحيم.
দ্বিতীয়খুৎবা
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য, যিনি রাজাধিরাজ ও চিরস্থায়ী। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যমীনের উপর যা কিছু রয়েছে, সবই ধ্বংসশীল। আর থেকে যাবে শুধু মহামহিম ও মহানুভব তোমার রবের চেহারা’ (আর-রাহমান, ২৬-২৭)। আমি আল্লাহর প্রশংসা করি এবং তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল, যিনি তাঁর উম্মতের প্রতি দয়াশীল ও সদয় এবং বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা। হে আল্লাহ! তুমি তোমার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও ছাহাবীদের প্রতি অফুরন্ত দরূদ ও সালাম বর্ষণ করো।
অতঃপর, হে মুসলিমগণ! মহান আল্লাহকে ভয় করে চলুন এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসুন। আপনারা কখনোই একমাত্র দুনিয়াকে আপনাদের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্যবস্তু বা জ্ঞানের সীমা নির্ধারণ করবেন না। সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে চলুন এবং আপনাদের মধ্য থেকে যে সন্তানসন্ততি, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব মারা গেছে তাদের ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করুন। জেনে রাখুন! তারা তাদের পূর্বে কৃতকর্মের ফলের দিকে চলে গেছে এবং মহান দয়ালু আল্লাহর রহমতের দিকে গমন করেছে। তারা মহান আল্লাহর নিকটে তাদের জন্য সঞ্চয় হয়ে থাকবে, যারা তাদের মৃত্যুতে ছওয়াবের নিয়্যতে ধৈর্যধারণ করেছে। আপনারা অবশ্যই শারঈ পন্থায় শোক প্রকাশ করবেন আর জাহেলী পন্থায় শোক প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকবেন। আল্লাহ আপনাদের প্রতি রহম করুন।
(হে ভাই!) আমলে ছালেহের দিকে দ্রুত অগ্রসর হোন। তাহলে শীঘ্রই আপনারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও কবুলিয়্যাত লাভ করতে সক্ষম হবেন। আপনারা আপনাদের সুস্থতার সময়ে অসুস্থতার জন্য, তারুণ্যের সময়ে বার্ধক্যের জন্য, অবসর সময়ে ব্যস্ততার জন্য এবং জীবনের সময় থেকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
আপনারা বেশি বেশি আল্লাহর যিকির, তাঁর শুকরিয়া আদায় ও ছাদাক্বা করার মাধ্যমে তাঁর সাথে সম্পর্ককে দৃঢ় করুন। তাহলে আপনাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক্ব দেওয়া হবে, সাহায্য করা হবে এবং সকল বিপদ থেকে পরিত্রাণ দেওয়া হবে।
বুদ্ধিমান তো সেই ব্যক্তি, যে আত্মসমালোচনা করে, পাপের পরই নেকীর কাজ করে এবং মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য আমল করে। দুর্বল তো সেই ব্যক্তি, যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং অলীক আশায় বিভোর হয়ে থাকে।
হে আল্লাহ! তুমি ইসলাম ও মুসলিমদের সম্মান ও শক্তি বৃদ্ধি করো। ইসলাম ও তার অনুসারীদের সর্বত্র সাহায্য করো।
ফিলিস্তীনসহ বিশ্বের যেসব স্থানে মুসলিমরা নির্যাতিত হচ্ছে, তাদের রক্ষা করো। হে আল্লাহ! অত্যাচারী ইয়াহূদীদের উপর তোমার শাস্তি কঠিন করো, তাদের সংখ্যা কমিয়ে দাও, তাদের ছিন্নভিন্ন করো, তাদের কাউকেই আর অবশিষ্ট রেখো না। হে আল্লাহ! সমস্ত মুসলিম শাসককে তোমার কিতাব (কুরআন) অনুযায়ী শাসন করার ও তোমার শরীআত অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনার তাওফীক্ব দান করো।
হে আল্লাহ! সমস্ত মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, জীবিত ও মৃত সবাইকে তুমি ক্ষমা করো। হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে যারা তোমার একত্বের সাক্ষ্য দিয়েছে, তোমার নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুঅতের সাক্ষ্য দিয়েছে এবং এই অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের প্রতি তুমি দয়া করো। হে আল্লাহ! যখন আমরা তাদের মতো মাটির নিচে একাকী হব, যখন আমাদের আমলই একমাত্র সম্বল হবে; তখন তুমি আমাদের প্রতিও দয়া করো। হে আল্লাহ! যারা দুঃখ-কষ্টে আছে, তাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দাও। যারা অসুস্থ, তাদের রোগমুক্তি দাও। যারা ঋণগ্রস্ত, তাদের ঋণমুক্ত করো- আমীন!
 
                             
                        
 
                                 
        
    