উত্তর : এতে তার স্ত্রী তালাক হবে না। কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে যেনার অপবাদ দেয় তাহলে তার সমাধানের পথ দু’টি। প্রথমত, স্বামী যে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে তা যদি স্বীকার করে তাহলে তাকে মিথ্যা অপবাদের কারণে ৮০ বেত্রাঘাত করা হবে (নূর, ৪)। আর যদি স্ত্রী যেনা করেছে মর্মে স্বীকৃতি দেয় তাহলে তাকে যেনার শাস্তি প্রয়োগ করা হবে (নূর, ২)। দ্বিতীয়ত, সে ব্যক্তি যদি মিথ্যা অপবাদের কথা স্বীকার না করে আর স্ত্রী যদি যেনা করেছে মর্মে স্বীকৃতি না দেয় তাহলে স্বামী তার দাবির স্বপক্ষে প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী উপস্থিত করবে। যদি স্বামী সাক্ষী উপস্থিত করতে না পারে তাহলে উভয়ের মাঝে লি‘আনের বিধান সাব্যস্ত হবে। লি‘আন বলা হয়, প্রথমে স্বামী চারবার আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে যে, ‘আল্লাহর শপথ! নিশ্চয়ই আমি আমার দাবির ক্ষেত্রে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত’ এবং পঞ্চম বারে বলবে, ‘আমি যদি মিথ্যাবাদী হয়ে থাকি তাহলে আল্লাহর অভিশাপ আমার প্রতি নেমে আসুক। অনুরূপভাবে স্ত্রীও চারবার বলবে, ‘আল্লাহর শপথ আমার স্বামী মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত’। পঞ্চম বারে বলবে, ‘আমার স্বামী যদি সত্যবাদী হয়ে থাকে তাহলে আমার উপর আল্লাহর আযাব নেমে আসুক (নূর, ৬-৯)। এবং এর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তালাক সাব্যস্ত হয়ে যাবে নতুনভাবে তালাক দেওয়ার কোন প্রয়োজন হবে না। ইবনে ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে স্বীয় স্ত্রীর উপর (যেনার) অভিযোগ আনে এবং সে স্ত্রীর সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কে লি‘আন করতে আদেশ দেন। আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে বলেছেন, সেভাবে তারা লি‘আন করে। তারপর রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সিদ্ধান্ত দিলেন যে, বাচ্চাটি স্ত্রীর আর তিনি লি’আনকারী দু’জনকে আলাদা করে দিলেন (ছহীহ বুখারী, হা/৪৩৭৯, ৪৯০০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৪৩)। প্রশ্নোল্লিখিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি একথা প্রতীয়মান হয় যে, সে স্ত্রীর প্রতি মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে তাহলে তাকে ইসলামী হুকুমত এর পক্ষ থেকে ৮০ বেত্রাঘাত করতে হবে। উল্লেখ্য যে এসব হদ বা শাস্তি প্রয়োগ করা সরকারের দায়িত্ব (নায়লুল আওত্বার, ৭/২৯৫-২৯৬ পৃঃ)।
প্রশ্নকারী : আবু তালহা
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।