কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (১০) : রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাঁত শহীদ হয়েছিল বলে ওয়াইস কারনী তার সবগুলো দাঁত তুলে ফেলেছিলেন বলে প্রচলিত আছে? এর সত্যতা কতটুকু?

উত্তর : ওয়াইস কারনী সম্পর্কে উক্ত বর্ণনার কোন ভিত্তি নেই। বরং ঘটনাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। তার জন্ম ৫৯৪ খৃষ্টাব্দে ও মৃত্যু ৬৫৮ খৃষ্টাব্দে (মোতাবেক ৩৭ হিঃ)। তার নাম ওয়াইস কারনী বিন আখের। উপাধি খায়রুত তাবেঈন। তার সম্পর্কে যে কয়েকটি বর্ণনা রয়েছে তার কোনটিতে দাঁতের কথা নেই (মানাকিবে ওয়াইস, মুসতাদরাকে হাকেম, ৩/৪৫৫-৪৫৮ পৃঃ; তিরমিযী, হা/২৪৩৮; সনদ হাসান ছহীহ; হিলয়াতুল আউলিয়া ২/৮১-৮৩ পৃঃ)। তাছাড়া শোকাহত হয়ে একজন তাবেয়ী নিজ দাঁত ভেঙ্গে ফেলবেন এমন ঘটনা অসম্ভব ও শরী‘আত পরিপন্থী। বরং তার সম্পর্কে যা জানা যায় তা এই যে, তিনি ছিলেন একজন সম্মানিত তাবেঈ। তিনি নবী মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানা পেয়েছেন। কিন্তু তাঁকে দেখেননি। যুহাইর ইবনু হারব রাহিমাহুল্লাহ উসাইর ইবনু জাবির রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, কূফার একটি প্রতিনিধিদল ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে আসে। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি ছিল যে ওয়াইস রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত। ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহুজিজ্ঞেস করলেন, এখানে ‘কারন’ গোত্রের কোন লোক আছে কি? তখন ঐ লোকটি উঠে আসল। এরপর ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে ইয়ামান থেকে এক ব্যক্তি আসবে, যে ওয়াইস নামে পরিচিত। ইয়ামানে তার মা ছাড়া আর কেউ নেই। তার শ্বেত রোগ হয়েছিল। সে আল্লাহর কাছে দু‘আ করার বদৌলতে আল্লাহ তার শ্বেত রোগ মুক্ত করে দেন। তবে কেবলমাত্র এক দিনার অথবা এক দিরহাম পরিমাণ স্থান আরোগ্য হয়নি। তোমাদের মধ্যে যে কেউ তার সাক্ষাত পাবে সে যেন তাকে দিয়ে তোমাদের জন্য ক্ষমার দু‘আ করিয়ে নেয়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৪২; ইফাবা, হা/৬০৫৩)।

প্রশ্নকারী : জুয়েল রানা

পত্নিতলা, নওগাঁ।


Magazine