কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ইসলামে মুরদান (দাড়িবিহীন কিশোর-যুবক) সম্পর্কিত বিধিবিধান (পর্ব-৯)

post title will place here


প্রথম সমকামীদের শাস্তি:

সমকামিতা এমন জঘন্য কাজ, যা সৎস্বভাবসম্পন্ন মানুষরা প্রবলভাবে ঘৃণা করে, এমনকি পশুরাও এটি থেকে বিরত থাকে। কারণ এই নোংরা কাজটি মানুষের স্বভাবজাত প্রকৃতি ও মহান আল্লাহর সৃষ্টি-নিয়মের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

এই কাজটি যেহেতু মহান আল্লাহর সৃষ্টি-নিয়মের সম্পূর্ণ পরিপন্থি এবং আল্লাহর অমোঘ নিয়মের উল্টো, তাই আল্লাহও তাদের শহর উল্টে দিয়েছিলেন। তিনি শহরের উপর দিকটিকে নিচে করে দেন এবং তাদের ওপর এমনসব শাস্তি চাপিয়ে দেন, যা অন্য কোনো জাতির ওপর একত্রে চাপিয়ে দেননি।

Þ তিনি তাদের শাস্তি দিয়েছিলেন এক ভয়াবহ বজ্রধ্বনি ও প্রচণ্ড চিৎকারের মাধ্যমে, যা তাদের হৃদয় বিদীর্ণ করে দিয়েছিল এবং তাদের কানকে বধির করে তুলেছিল। মহান আল্লাহ বলেন, فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ ‘অতঃপর সূর্যোদয়ের সময় বিকট আওয়াজ তাদেরকে পাকড়াও করল(আল-হিজর, ১৫/৭৩)

এরপর তিনি তাদের নগরী উল্টে দেন, উপরের দিক নিচে করে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,فَلَمَّا جَاءَ أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِنْ سِجِّيلٍ مَنْضُودٍ - مُسَوَّمَةً عِنْدَ رَبِّكَ وَمَا هِيَ مِنَ الظَّالِمِينَ بِبَعِيدٍ ‘অতঃপর যখন আমাদের আদেশ এসে গেল, তখন আমরা জনপদের উপরকে নিচে উল্টিয়ে দিলাম এবং তাদের উপর ক্রমাগত পোড়ামাটির পাথর বর্ষণ করলাম, যা চিহ্নিত ছিল আপনার রবের কাছে। আর তা যালেমদের থেকে দূরে নয়’ (হূদ, ১১/৮২–৮৩)

ইবনু কাছীর রাহিমাহুল্লাহ আয়াতটির তাফসীরে উল্লেখ করেন,قَالَ مُجَاهِدٌ: أَخَذَ جبريلُ قَوْمَ لُوطٍ مِنْ سَرْحهم وَدُورِهِمْ، حَمَلَهُمْ بِمَوَاشِيهِمْ وَأَمْتِعَتِهِمْ، وَرَفَعَهُمْ حَتَّى سَمِعَ أَهْلُ السَّمَاءِ نُباح كِلَابِهِمْ ثُمَّ أَكْفَأَهُمْ. وَقَالَ: وَكَانَ حَمَلَهُمْ عَلَى خَوَافِي جَنَاحِهِ الْأَيْمَنِ. ‘মুজাহিদ বলেন, জিবরীল আলাইহিস সালাম লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতির লোকদেরকে তাদের ঘর-বাড়ি থেকে তাদের পশু ও জিনিসপত্রসহ তুলে নেন। তিনি তাদেরকে এত উচ্চতায় উঠান যে, আসমানবাসীরা তাদের কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ শুনতে পান। অতঃপর তিনি তাদেরকে উল্টিয়ে ফেলে দেন। তিনি (মুজাহিদ) আরো বলেন, তিনি (জিবরীল) তাঁর ডান ডানার প্রান্তে তাদেরকে বহন করেন’।[1]

Þ আল্লাহ তাদের ওপর সেই পাথরগুলো বর্ষণ করেছিলেন, যেগুলো ছিল বিশেষভাবে চিহ্নিত। প্রত্যেক পাথরের লক্ষ্য ছিল নির্দিষ্ট পাপী ব্যক্তি। আল্লাহ বলেন,مُسَوَّمَةً عِنْدَ رَبِّكَ وَمَا هِيَ مِنَ الظَّالِمِينَ بِبَعِيدٍ ‘যা চিহ্নিত ছিল আপনার রবের কাছে। আর তা যালেমদের থেকে দূরে নয়’ (হূদ, ১১/৮৩)

উক্ত আয়াতের তাফসীরে হাফেয ইবনু কাছীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন,

وَقَوْلُهُ: (مُسَوَّمَةً) أَيْ مُعَلَّمَةً مَخْتُومَةً، عَلَيْهَا أَسْمَاءُ أَصْحَابِهَا، كُلُّ حَجَرٍ مَكْتُوبٌ عَلَيْهِ اسْمُ الَّذِي يَنْزِلُ عَلَيْهِ.

مُسَوَّمَةً-এর অর্থ হলো ‘চিহ্নিত’ বা ‘মোহরযুক্ত’। প্রত্যেক পাথরের ওপর সেই ব্যক্তির নাম লেখা থাকে, যার উপর তা নিক্ষিপ্ত হবে’।[2]

Þ আর যারা লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর অতিথিদের ওপর অশ্লীল উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়তে চেয়েছিল, আল্লাহ তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন,وَلَقَدْ رَاوَدُوهُ عَنْ ضَيْفِهِ فَطَمَسْنَا أَعْيُنَهُمْ فَذُوقُوا عَذَابِي وَنُذُرِ ‘আর তারা তার কাছে তার মেহমানদেরকে (অসদুদ্দেশ্যে) দাবি করল। তখন আমি তাদের চোখগুলোকে অন্ধ করে দিলাম। (আর বললাম) আমার আযাব ও সাবধানবাণীর পরিণাম আস্বাদন করো(আল-ক্বমার, ৫৪/৩৭)

হাফেয ইবনু কাছীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন,

فَلَمَّا اشْتَدَّ الْحَالُ وَأَبَوْا إِلَّا الدُّخُولَ، خَرَجَ عَلَيْهِمْ جِبْرِيلُ، عَلَيْهِ السَّلَامُ، فَضَرَبَ أَعْيُنَهُمْ بِطَرَفِ جَنَاحِهِ، فَانْطَمَسَتْ أَعْيُنُهُمْ.

‘যখন পরিস্থিতি কঠিন হয়ে গেল এবং তারা (লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর অতিথিদের ঘরে) প্রবেশ করা ছাড়া কিছুতেই রাজি হলো না, তখন তাদের দিকে জিবরীল আলাইহিস সালাম বেরিয়ে এলেন। তিনি তাঁর ডানার প্রান্ত দিয়ে তাদের চোখে আঘাত করলেন, ফলে তাদের চোখ অন্ধ হয়ে গেল’।[3]

Þ উপর্যুক্ত সবগুলো শাস্তির কথা একত্রে উল্লেখ করে মহান আল্লাহ বলেন,فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ - فَجَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِنْ سِجِّيلٍ ‘অতঃপর সূর্যোদয়ের সময় বিকট আওয়াজ তাদেরকে পাকড়াও করল; তাতে আমরা জনপদটিকে উল্টিয়ে উপর-নিচ করে দিলাম এবং তাদের উপর পোড়ামাটির পাথর-কঙ্কর বর্ষণ করলাম’ (আল-হিজর, ১৫/৫৭-৭৪)

সম্মানিত পাঠক! এই হচ্ছে প্রথম সমকামীদের শাস্তির সংক্ষিপ্ত বিবরণ। আর ইতঃপূর্বে আমরা ‘ইসলামে সমকামিতার দণ্ডবিধি’ শিরোনামে ইসলামে সমকামিতার শাস্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এসেছি। আমরা দেখেছি যে, সমকামিতা যেহেতু অত্যন্ত গুরুতর ও ভয়াবহ অপরাধ, তাই এর শাস্তিও কঠোর। সেজন্যই তো খলীফা আবূ বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু তাঁর শাসনামলে তিনি সমকামীকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। পরকালের আগে দুনিয়াতেই তিনি তাদেরকে আগুনের শাস্তি আস্বাদন করিয়েছিলেন। একইভাবে আব্দুল্লাহ ইবনুয যুবাইর রাযিয়াল্লাহু আনহু ও হিশাম ইবনু আব্দিল মালেকও এ ধরনের শাস্তি দিয়েছিলেন। বরং সমকামীকে পুড়িয়ে মারার শাস্তির ব্যাপারে আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু-সহ অন্যান্য ছাহাবী একমত হয়েছিলেন।[4]

মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাতে এসেছে,سُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ: مَا حَدُّ اللُّوطِيِّ؟، قَالَ: «يُنْظَرُ أَعْلَى بِنَاءٍ فِي الْقَرْيَةِ فَيُرْمَى بِهِ مُنَكَّسًا، ثُمَّ يُتْبَعُ بِالْحِجَارَةِ» ‘ইবন আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘সমকামীর শাস্তি কী?’ তিনি বলেছিলেন, ‘গ্রামের সবচেয়ে উঁচু ভবনে নিয়ে গিয়ে তাকে উপুড় করে ফেলে দিতে হবে, তারপর তার উপর পাথর নিক্ষেপ করতে হবে’।[5]

প্রথম সমকামীদের শাস্তি ও মৃত সাগর:

‘পূর্বে জর্ডান, পশ্চিমে ইসরাঈল এবং ইসরাঈল অধিকৃত পশ্চিম তীর। মাঝখানে মৃত সাগর। ইংরেজি নাম, ডেড সি। নাম শুনে যা বোঝা যায়, বাস্তবতাও তাই। জলাশয় যেখানে সাধারণত ব্যাপক প্রাণের আধার, সেখানে এই গোটা জলাশয় একদম মৃত। তবে জলাশয়টির নামের ভেতরে একটা সমস্যা আছে। মৃত ‘সাগর’ আসলে সাগর নয়, লেক—বাংলায় যাকে বলে হ্রদ।

এ সাগরের পানিতে লবণের ঘনত্ব অনেক বেশি। সে জন্যই দৃশ্যমান কোনো প্রাণ এখানে দেখা যায় না। আসলে, সাধারণ জলজ প্রাণ—যেমন মাছ ও জলজ উদ্ভিদ—এখানে বাঁচতেই পারে না প্রচণ্ড ঘন লবণের জন্য। প্রশ্ন আসে, এখানে লবণের ঘনত্ব অন্যান্য সমুদ্র বা লবণাক্ত জলাধারের তুলনায় কত বেশি? গড়ে সমুদ্রের পানিতে প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ লবণ থাকে। সহজ করে বললে, ১ লিটার সমুদ্রের পানিতে দ্রবীভূত লবণ থাকে মাত্র ৩৫ গ্রাম। আরও ভেঙে বললে, ১ লিটারকে বলতে পারেন ১ হাজার গ্রাম (সমতুল্য)। তার মানে, ১ হাজার গ্রামে মাত্র ৩৫ গ্রাম লবণ থাকে। আর মৃত সাগরে এ লবণের পরিমাণ ৩৪.২ শতাংশ! মানে ১ হাজার গ্রামে প্রায় ৩৪২ গ্রাম! আর সাধারণ সমুদ্রের তুলনায় এখানে পানির উচ্চতাও অনেক কম। সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ৪০০ মিটার নিচে’।[6]

এই অঞ্চলটি পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু ভূমি হিসেবে পরিচিত। কিছু গবেষকের মতে, সময়ের সাথে সাথে এখানকার ভূমির নিচু হওয়া আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জর্ডান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্বের অধ্যাপক ভূতত্ত্ববিদ ইলিয়াস সালামা বলেন, ‘ষাটের দশকের শুরুতে মৃত সাগরের পানির স্তর ছিল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৯২ মিটার নিচে, আর আজ তা নেমে গেছে ৪১২ মিটার নিচে’।[7]

অনেক মুফাসসির ও ঐতিহাসিক প্রথম সমকামীদের শাস্তি ও এই মৃত সাগরের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছেন। তারা বলেছেন, এখনকার মৃত সাগরই সেই ঐতিহাসিক সাদূম জনপদ, যেখানে লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর সম্প্রদায় বসবাস করত এবং সমকামিতার মতো মারাত্মক পাপের দরুন জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর দুই ডানায় সাদূম ও এর আশপাশের এলাকাতে শূন্যে তুলে ধরে উপরকে নিচে এবং নিচকে উপরে তুলে সজোরে ফেলে দেন। ফলে যে সাগরের সৃষ্টি হয়, তা-ই বর্তমান মৃত সাগর।

এ ব্যাপারে ভিন্নমত থাকলেও উপর্যুক্ত মতটি অধিক অগ্রাধিকারযোগ্য বলে আমার কাছে মনে হয়। ইসলাম প্রশ্নোত্তর (islamqa.info) এ সম্পর্কিত একটি প্রশ্নের জবাবে কুরআন মাজীদের বেশ কয়েকটি আয়াত ও সেগুলোর ব্যাপারে কয়েকজন মুফাসসিরের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন,

فَهَذِهِ الآيَاتُ الْبَيِّنَاتُ تَدُلُّ عَلَى أَنَّ قُرَى قَوْمِ لُوطٍ كَانَتْ مَعْرُوفَةً بِعَيْنِ مَكَانِهَا عِنْدَ مَنْ بَعْدَهُمْ، وَأَنَّ مُشْرِكِي قُرَيْشٍ كَانُوا عَلَى عِلْمٍ بِهَا، وَلَوْلَا ذَلِكَ مَا أَخْبَرَهُمُ اللهُ بِأَنْ يَتَّعِظُوا بِهَا وَهُمْ يَمُرُّونَ عَلَيْهَا فِي طَرِيقِ سَفَرِهِمْ إِلَى الشَّامِ، ذَهَابًا وَإِيَابًا، وَقَدْ ذَكَرَ اللهُ تَعَالَى أَنَّهُ تَرَكَ مِنْهَا آيَةً بَيِّنَةً، وَلَا يَكُونُ ذَلِكَ مَعَ خَفَاءِ مَكَانِهَا.

فَيَدُلُّ ذَلِكَ عَلَى أَنَّ قُرَى قَوْمِ لُوطٍ مَعْرُوفَةٌ بِعَيْنِهَا، وَقَدْ تَكَاثَرَتِ الْأَقْوَالُ أَنَّهَا هِيَ مَا يُطْلَقُ عَلَيْهِ "الْبَحْرُ الْمَيِّتُ"، وَهُنَاكَ اكْتِشَافَاتٌ حَدِيثَةٌ تُؤَيِّدُ ذَلِكَ، مَعَ مَا يُضَافُ إِلَيْهِ مِنْ كَوْنِهَا كَذَلِكَ عِنْدَ أَهْلِ الْكِتَابِ، فَهَذَا كُلُّهُ يُقَوِّي بِأَنَّهَا كَانَتْ فِي بُقْعَةِ الْبَحْرِ الْمَيِّتِ.

‘এই স্পষ্ট আয়াতসমূহ প্রমাণ করে যে, লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতির নগরী তাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে নির্দিষ্ট স্থান হিসেবে পরিচিত ছিল এবং মুশরিক কুরাইশরাও সে স্থানের বিষয়ে জানত। যদি তারা না জানত, তবে আল্লাহ তাদেরকে উপদেশ দিতেন না যে, তারা সেসব ধ্বংসপ্রাপ্ত জনপদ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুক, যেগুলোর পাশ দিয়ে তারা শামে যাতায়াতের সময় অতিক্রম করত। আল্লাহ তাআলা উল্লেখ করেছেন যে, তিনি সেখান থেকে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছেন। আর তা তখনই সম্ভব, যখন স্থানটি গোপন থাকবে না।

এতে প্রমাণিত হয় যে, লূত্ব e-এর জাতির নগরী সুনির্দিষ্টভাবে পরিচিত ছিল এবং অধিকাংশ মতানুযায়ী সেটিই হলো আজকের ‘মৃত সাগর’ (Dead Sea)। আধুনিক প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারসমূহও এটিকে সমর্থন করে।

অতএব, এটি শক্তভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, লূত্ব আলাইহিস সালাম-এর জাতির বসতিগুলো ‘মৃত সাগর’-এর আশেপাশেই ছিল’।[8]

ইসলামওয়েবও এমতটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।[9]

বিভিন্ন ধর্মে সমকামিতা:

উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টধর্মে সমকামিতা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আল্লাহর ক্রোধ ও গযবের কারণ। বাইবেলের ভাষ্য হলো, মানুষ সমকামী হয়ে সৃষ্টি হয়নি; বরং পাপের কারণে সমকামী হয়। বাইবেলে আরও বলা হয়েছে, সমকামীরা আল্লাহর রাজ্যে অধিকার লাভ করবে না।[10]

হিন্দুধর্মগ্রন্থ মনুস্মৃতিতে সমকামিতার শাস্তির বিধান পাওয়া যায়। নারী সমকামিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘যদি দু’কুমারীর মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তাহলে তাদের শাস্তি ছিলো ২০০ মুদ্রা জরিমানা এবং ১০টি বেত্রাঘাত’।[11]

পুরুষ সমকামিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘দুজন পুরুষ অপ্রাকৃতিক কার্যে প্রবৃত্ত হলে তাদেরকে জাতিচ্যুত করা হবে এবং জামা পরে তাকে জলে ডুব দিতে হবে’।[12]

(ইনশা-আল্লাহ! চলবে)

* বিএ (অনার্স), উচ্চতর ডিপ্লোমা, এমএ এবং এমফিল, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব; অধ্যক্ষ, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।


[1]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৪/৩৪১।

[2]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৪/৩৪০।

[3]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৭/৪৮০।

[4]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আত-তুরুক্বুল-হুকমিয়্যাহ (মাকতাবাতু দারিল বায়ান), পৃ. ১৬-১৭।

[5]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, আছার নং- ২৮৩৩৭।

[6]. উচ্ছ্বাস তৌসিফ, বিজ্ঞানচিন্তা, প্রকাশকাল: ১১ জুলাই, ২০২৪। দ্রষ্টব্য: https://www.bigganchinta.com/chemistry/y6653lg1ad

[7]. দ্রষ্টব্য: https://www.islamweb.net/ar/fatwa/8646/

[8]. দ্রষ্টব্য: https://islamqa.info/ar/answers/110111/

[9]. দ্রষ্টব্য: https://www.islamweb.net/ar/fatwa/8646/

[10]. দ্রষ্টব্য: https://bn.wikipedia.org/wiki/

[11]. Manu Smriti chapter 8, verse 369

[12]. Manu Smriti Chapter 11, Verse 175

Magazine