উত্তর: মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ‘মরহূম’ শব্দের ব্যবহার আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত। শব্দটি আরবীতে ইসমে মাফঊলের ছীগাহ। যার অর্থ অনুগ্রহপ্রাপ্ত, দয়াপ্রাপ্ত ইত্যাদি। কিন্তু মৃত ব্যক্তি অনুগ্রহ ও দয়া পেয়েছে কি না, তা জানা সম্ভব নয়। বিধায় মরহূম শব্দ ব্যবহার করা ঠিক নয়। তাছাড়া এভাবে বলাটা অনেকটা গায়েবের বিষয়ে সংবাদ দেওয়ার নামান্তর। আর গায়েবের জ্ঞানের দাবি করা তো শিরক। কারণ গায়েবের সংবাদ আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না (আল-আনআম, ৬/৫৯; আল-জিন, ৭২/২৬)। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে এভাবে বলতে নিষেধ করেছেন। আনছারী মহিলা ও নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বায়আতকারী উম্মুল আলা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, (মদীনায় হিজরতের পর) লটারির মাধ্যমে মুহাজিরদের বণ্টন করা হচ্ছিল। তাতে উছমান ইবনু মাযঊন রযিয়াল্লাহু আনহু আমাদের অংশে পড়লেন, আমরা তাঁকে আমাদের গৃহে স্থান দিলাম। এক সময় তিনি সেই রোগে আক্রান্ত হলেন, যাতে তাঁর মৃত্যু হলো। যখন তাঁর মৃত্যু হলো এবং তাঁকে গোসল করিয়ে কাফনের কাপড় পরানো হলো, তখন আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন। তখন আমি বললাম, হে আবুস সায়েব! আপনার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক! আপনার ব্যাপারে আমার সাক্ষ্য এই যে, আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করেছেন। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি কী করে জানলে যে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান, হে আল্লাহর রাসূল! তাহলে আল্লাহ আর কাকে সম্মানিত করবেন? আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার ব্যাপার তো এই যে, নিশ্চয় তাঁর মৃত্যু হচ্ছে এবং আল্লাহর কসম! আমি তার জন্য কল্যাণ কামনা করি। আল্লাহর কসম! আমি জানি না আমার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হবে, অথচ আমি আল্লাহর রাসূল। সেই আনছারী মহিলা বলেন, আল্লাহর কসম! এরপর হতে কোনো দিন আমি কোনো ব্যক্তিকে সম্বন্ধে পবিত্র বলে মন্তব্য করব না (ছহীহ বুখারী, হা/৩৭১৪)। তাই উত্তম হলো— শরীআতে প্রমাণিত ‘গফারাল্লাহু লাহু’ (غَفَرَ اللَّهُ لَهُ) ও ‘রহিমাহুল্লাহ’ (رَحِمَهُ اللَّهُ) ও ‘রহমাতুল্লাহি আলাইহি’ (رَحْمَةُ اللَّهِ عَلَيْهِ) শব্দগুলো বলা। হাদীছের বিভিন্ন জায়গায় এই শব্দগুলো দিয়ে বিভিন্ন জনকে দু‘আ দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্নকারী : মো. রিফাত আলম
দিনাজপুর।