কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

কিতাবুল ঈমান (৩য় পর্ব)

post title will place here

(মিন্নাতুল বারী- ৩০তম পর্ব)

ঈমান না আনার ভয়াবহতা :

যারা মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ঈমান আনয়ন করবে না, তাদের ভয়াবহতার বিষয়ে পবিত্র কুরআনে অগণিত আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। তন্মধ্যে বিশেষ কিছু আয়াত নিম্নে পেশ করা হলো—

চেহারা মলিন হবে : আল্লাহ তাআলা বলেন, وَوُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ عَلَيْهَا غَبَرَةٌ - تَرْهَقُهَا قَتَرَةٌ - أُولَئِكَ هُمُ الْكَفَرَةُ الْفَجَرَةُ ‘সেই দিন কিছু মুখ হবে ধুলামলিন। কালো অন্ধকার সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে। আর তারাই কাফের পাপী’ (আবাসা, ৮০/৪০-৪২)। সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল আর কিছু চেহারা হবে কালো মলিন। আর যাদের চেহারা কালো মলিন হবে, তাদেরকে তিরস্কার করে বলা হবে- তোমরাই তো রূহের জগতে ঈমান আনয়নের পর দুনিয়াতে তা অস্বীকার করেছো। অতএব, আজকে সেই শাস্তি স্বাদ আস্বাদন করো, যা তোমরা অস্বীকার করেছো। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ تَرَى الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى اللَّهِ وُجُوهُهُمْ مُسْوَدَّةٌ أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوًى لِلْمُتَكَبِّرِينَ ‘যারা মহান আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যারোপ করে ক্বিয়ামতের দিন দেখতে পাবেন, তাদের চেহারাগুলো হবে কালো। আর জাহান্নামে কি অহংকারীদের জন্য আবাসস্থল নেই?’ (আয-যুমার, ৩৯/৬০)

আফসোস : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّا أَنْذَرْنَاكُمْ عَذَابًا قَرِيبًا يَوْمَ يَنْظُرُ الْمَرْءُ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ وَيَقُولُ الْكَافِرُ يَا لَيْتَنِي كُنْتُ تُرَابًا ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদেরকে আসন্ন আযাবের বিষয়ে সতর্ক করেছি, যেদিন মানুষ দেখতে পাবে যা তার দুই হাত অগ্রে পাঠিয়েছে (অর্থাৎ দুনিয়ায় যা সে করেছে) আর সেই দিন কাফেররা বলবে হায়! আফসোস! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম’ (আন-নাবা, ৭৮/৪০)

জাহান্নামের দারোয়ানের তিরস্কার : আল্লাহ তাআলা বলেন, وَسِيقَ الَّذِينَ كَفَرُوا إِلَى جَهَنَّمَ زُمَرًا حَتَّى إِذَا جَاءُوهَا فُتِحَتْ أَبْوَابُهَا وَقَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ رُسُلٌ مِنْكُمْ يَتْلُونَ عَلَيْكُمْ آَيَاتِ رَبِّكُمْ وَيُنْذِرُونَكُمْ لِقَاءَ يَوْمِكُمْ هَذَا قَالُوا بَلَى وَلَكِنْ حَقَّتْ كَلِمَةُ الْعَذَابِ عَلَى الْكَافِرِينَ * قِيلَ ادْخُلُوا أَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا فَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِينَ ‘আর যারা কাফের, তাদেরকে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তারা যখন জাহান্নামের কাছে আসবে, তখন জাহান্নামের দারোয়ান ফেরেশতাগণ তাদেরকে বলবেন, ‘তোমাদের নিকট কি তোমাদের মধ্যে থেকে রাসূলগণ আসেননি, যারা তোমাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহ তোমাদেরকে পাঠ করে শুনাতেন এবং তোমাদেরকে এই দিনের সাক্ষাৎ সম্পর্কে সতর্ক করতেন?’ তখন তারা উত্তরে বলবে, ‘হ্যাঁ। কিন্তু কাফেরদের উপর শাস্তির বাণী সত্যে পরিণত হয়েছে’। তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমরা জাহান্নামের দরজা দিয়ে প্রবেশ করো। তোমরা সেখানে চিরস্থায়ী থাকবে। আর অহংকারীদের আবাসস্থল কতইনা নিকৃষ্ট!’ (আয-যুমার, ৩৯/৭১)

বারংবার আগুনে পুড়ানো : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِآَيَاتِنَا سَوْفَ نُصْلِيهِمْ نَارًا كُلَّمَا نَضِجَتْ جُلُودُهُمْ بَدَّلْنَاهُمْ جُلُودًا غَيْرَهَا لِيَذُوقُوا الْعَذَابَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَزِيزًا حَكِيمًا ‘নিশ্চয় যারা আমাদের আয়াতকে অস্বীকার করেছে, অচিরেই আমরা তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধিভূত করব। যখনই তাদের চামড়া দগ্ধ হয়ে যাবে, তখনই আমরা অন্য চামড়ায় বদলে দিব, যাতে তারা শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করতে পারে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’ (আন-নিসা, ৪/৫৬)

ধনসম্পদ কোনো কাজে আসবে না : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَنْ تُغْنِيَ عَنْهُمْ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا وَأُولَئِكَ هُمْ وَقُودُ النَّارِ ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি তাদের কোনো উপকারে আসবে না। আর এরাই হবে জাহান্নামের ইন্ধন’ (আলে ইমরান, ৩/১০)

পৃথিবী ভর্তি সোনা মুক্তিপণ দিলেও মুক্তি মিলবে না : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْ أَحَدِهِمْ مِلْءُ الْأَرْضِ ذَهَبًا وَلَوِ افْتَدَى بِهِ أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ وَمَا لَهُمْ مِنْ نَاصِرِينَ ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং কাফের অবস্থায় মারা গেছে, তাদের থেকে যমীন ভর্তি সোনাও গ্রহণ করা হবে, যদিও তা মুক্তিপণ দিয়ে মুক্তি পেতে চায়। এদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। আর তাদের জন্য থাকবে না কোনো সাহায্যকারী’ (আলে ইমরান, ৩/৯১)। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَنْ تُغْنِيَ عَنْهُمْ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি তাদের কোনো প্রকার কাজে আসবে না। আর এরা জাহান্নামের অধিবাসী হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে’ (আলে ইমরান, ৩/১১৬)

ক্ষমা নেই : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَظَلَمُوا لَمْ يَكُنِ اللَّهُ لِيَغْفِرَ لَهُمْ وَلَا لِيَهْدِيَهُمْ طَرِيقًا - إِلَّا طَرِيقَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং যুলুম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে কখনই ক্ষমা করবেন না এবং তাদেরকে জাহান্নামের পথ ব্যতীত কোনো (সঠিক) পথ দেখাবেন না। সেখানে তারা অনন্তকাল চিরস্থায়ী থাকবে। আর এটি করা আল্লাহর জন্য সহজ’ (আন-নিসা, ৪/১৬৮-১৬৯)। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ مَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং মহান আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে অতঃপর কাফের অবস্থায় মারা গেছে, তাদেরকে আল্লাহ কখনই ক্ষমা করবেন না’ (মুহাম্মাদ, ৪৭/৩৪)

আমল ধ্বংস : আল্লাহ তাআলা বলেন, وَمَنْ يَكْفُرْ بِالْإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ ‘আর যারা ঈমানকে অস্বীকার করে, তার সকল আমল ধ্বংস হয়ে যাবে আর সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে’ (আল-মায়েদা, ৫/৫)। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, وَالَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَلِقَاءِ الْآخِرَةِ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ هَلْ يُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ‘আর যারা আমাদের আয়াতসমূহ ও পরকালের সাক্ষাতকে মিথ্যা বলেছে, তাদের সকল আমল বিনষ্ট হয়ে গেছে। তারা যা আমল করত, সেটা ছাড়া অন্য কোনো বদলা দেওয়া হবে কি?’ (আল-আ‘রাফ, ৭/১৪৭)

আসমানের দরজা খোলা হবে না : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَاسْتَكْبَرُوا عَنْهَا لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَلَا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى يَلِجَ الْجَمَلُ فِي سَمِّ الْخِيَاطِ وَكَذَلِكَ نَجْزِي الْمُجْرِمِينَ ‘নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যারোপ করে এবং এই ব্যাপারে অহংকার করে, তাদের জন্য আসমানের দরজাসমূহ খোলা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না উট সুঁইয়ের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে (যা কখনই সম্ভব নয়) আর এভাবেই আমরা পাপীদের প্রতিদান দিব’ (আল-আ‘রাফ, ৭/৪০)

নিকৃষ্ট সৃষ্টি : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أُولَئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ

‘নিশ্চয় আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কুফরী করে এবং যারা মুশরিক, তারা জাহান্নামের আগুনে চিরকাল থাকবে। আর এরাই সৃষ্টির মাঝে নিকৃষ্ট’ (আল-বাইয়্যেনা, ৯৮/৬)। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ ‘আর যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। আর ওটা কত মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল’ (আল-মুলক, ৬৭/৬)

চিরস্থায়ী জাহান্নাম : আল্লাহ তাআলা বলেন, وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ خَالِدِينَ فِيهَا وَبِئْسَ الْمَصِيرُ ‘আর যারা আমাদের আয়াতসমূহকে অস্বীকার ও মিথ্যারোপ করেছে, তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকবে আর জাহান্নাম কতইনা নিকৃষ্ট আবাসস্থল’ (আত-তাগাবুন, ৬৪/১০)

অন্তরে মোহর মারা : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنْذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ - خَتَمَ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَعَلَى سَمْعِهِمْ وَعَلَى أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, আপনি তাদেরকে সতর্ক করেন অথবা না করেন তাদের জন্য উভয়ই সমান; তারা ঈমান আনয়ন করবে না। আল্লাহ তাদের অন্তরের উপর এবং শ্রবণশক্তির উপর মোহর মেরে দিয়েছেন, তাদের চোখের উপর রয়েছে পর্দা আর তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি’ (আল-বাক্বারা, ২/৬-৭)

মহান আল্লাহর লা‘নত : আল্লাহ তাআলা বলেন, فَلَمَّا جَاءَهُمْ مَا عَرَفُوا كَفَرُوا بِهِ فَلَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الْكَافِرِينَ - بِئْسَمَا اشْتَرَوْا بِهِ أَنْفُسَهُمْ أَنْ يَكْفُرُوا بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ بَغْيًا أَنْ يُنَزِّلَ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ عَلَى مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ فَبَاءُوا بِغَضَبٍ عَلَى غَضَبٍ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ مُهِينٌ ‘অতঃপর যখন তাদের নিকটে আসে এমন কিছু যা তারা স্বীকার করেছে, তখন তারা তা অস্বীকার করে! কাজেই কাফেরদের উপর আল্লাহর লা‘নত। তারা যার বিনিময়ে নিজেদের বিক্রি করেছে, তা কতইনা মন্দ; সেটা হলো আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তা অস্বীকার করা এই বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে যে, আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহ তাঁর বান্দাদের মাঝে যার উপর ইচ্ছা করেন, তার উপর অবতীর্ণ করেন। ফলে তারা গযবের উপর গযবে নিপতিত হয়েছে আর কাফেরদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি’ (আল-বাক্বারা, ২/৮৯-৯০)

ফেরেশতা ও সমগ্র মানুষের অভিশাপ : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ - خَالِدِينَ فِيهَا لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنْظَرُونَ ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং কাফের অবস্থায় মারা গেছে, তাদের উপর রয়েছে মহান আল্লাহ, ফেরেশতা ও সকল মানুষের অভিশাপ। তাতে তারা চিরকাল থাকবে; তাদের উপর থেকে আযাব হালকা করা হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেওয়া হবে না’ (আল-বাক্বারা, ২/১৬১-১৬২)

চরম পথভ্রষ্টতা : আল্লাহ তাআলা বলেন, وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا - إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا ثُمَّ ازْدَادُوا كُفْرًا لَمْ يَكُنِ اللَّهُ لِيَغْفِرَ لَهُمْ وَلَا لِيَهْدِيَهُمْ سَبِيلًا ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ ও শেষ দিবসকে অস্বীকার করে, সে অবশ্যই সুদূর বিভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছে। নিশ্চয় যারা ঈমান আনয়ন করে, তারপর কুফরী করে, তারপর আবার ঈমান আনয়ন করে অতঃপর কুফরী করে তারপর তাদের কুফরী বৃদ্ধি পায়, তাদেরকে আল্লাহ কখনই ক্ষমা করবেন না এবং তাদেরকে কোনো রাস্তা প্রদর্শন করবেন না’ (আন-নিসা, ৪/১৩৬-১৩৭)

জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবে না : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ أَنَّ لَهُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لِيَفْتَدُوا بِهِ مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ - يُرِيدُونَ أَنْ يَخْرُجُوا مِنَ النَّارِ وَمَا هُمْ بِخَارِجِينَ مِنْهَا وَلَهُمْ عَذَابٌ مُقِيمٌ ‘নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, যদি তাদের থাকত পৃথিবীর মধ্যস্থিত সমস্ত কিছু এবং এর সাথে সমপরিমাণ সম্পদ- শাস্তি থেকে মুক্তিপণ দেওয়ার জন্য, তবুও তা তাদের থেকে গ্রহণ করা হতো না। আর তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। তারা জাহান্নাম থেকে বের হয়ে যেতে চাইবে কিন্তু তারা বের হতে পারবে না। আর তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি’ (আল-মায়েদা, ৫/৩৬-৩৭)

মহান আল্লাহর দয়া থেকে হতাশ : আল্লাহ তাআলা বলেন, وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَلِقَائِهِ أُولَئِكَ يَئِسُوا مِنْ رَحْمَتِي وَأُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ‘আর যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ ও তাঁর সাথে সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে, তারা আমার রহমত থেকে হতাশ হয়ে গেছে, আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি’ (আল-আনকাবূত, ২৯/২৩)

মহান আল্লাহ কথা বলবেন না : আল্লাহ তাআলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلًا أُولَئِكَ لَا خَلَاقَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ‘নিশ্চয় যারা মহান আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা ও তাদের শপথকে সামান্য মূল্যের বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়, তাদের জন্য পরকালে কোনো অংশ নেই, আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, ক্বিয়ামতের দিন তিনি তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে তিনি পরিশুদ্ধও করবেন না আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি’ (আলে ইমরান, ৩/৭৭)

(চলবে)

আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক

ফাযেল, দারুল উলূম দেওবান্দ, ভারত; বি. এ (অনার্স), মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব;
এমএসসি, ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইউনিভার্সিটি অফ ডান্ডি, যুক্তরাজ্য।

Magazine