কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

ইসলামে গান-বাজনা নিষিদ্ধ

post title will place here

বর্তমান যুগে গান-বাজনা অনেকের জীবনের বিনোদনমূলক চাহিদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গান শুনে না এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তিদের কাছেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অবসর পেলে অধিকাংশ লোকজন গান শোনায় ব্যস্ত হয়ে উঠে। আসুন দেখি, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ কী বলে গান-বাজনা সম্পর্কে। গান-বাজনার প্রতি আগ্রহী ব্যক্তির শাস্তি খুবই ভয়াবহ। এসব কাজের ভালো-মন্দ বিবেচনা করা হয় চোখ ও কানের মাধ্যমে। তাই আল্লাহ তাআলা তার জন্য এমন শাস্তি নির্ধারণ করেছেন, যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক ও অপমানজনক। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ ‘আর মানুষের মধ্যে থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা ক্রয় করে। আর তারা এগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে। তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাজনক আযাব’ (লুক্বমান, ৩১/৬)

আয়াতে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ‘লাহওয়াল হাদীছ’ ক্রয় করে, সে জাহান্নামে কঠিন শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। কাজেই তা হারাম। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ‘লাহওয়াল হাদীছ’ কী? উক্ত আয়াতে বর্ণিত ‘লাহওয়াল হাদীছ’-এর ব্যাখ্যায় তাফসীর ইবনে কাছীরে বলা হয়েছে, তা হলো গান-বাজনা।[1] উক্ত আয়াত সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘ঐ সত্তার কসম, যিনি ছাড়া প্রকৃত কোনো মা‘বূদ নেই! নিশ্চয়ই এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো গান’। তিনি একথাটি তিনবার বলেন।[2] এভাবে বেশির ভাগ মুফাসসির ‘লাহওয়াল হাদীছ’ বলতে গান-বাজনাকে বুঝিয়েছেন। উপরিউক্ত আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, গান-বাজনা হারাম। যারা গান-বাজনা করে ও শোনে, তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।

ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা মদ, জুয়া ও সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন’।[3] এই হাদীছ থেকেও আমরা জানতে পারলাম যে, গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র হারাম।

নাফে‘ রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা ইবনু উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বাঁশির শব্দ শুনতে পেলে তিনি তার দুই কানে আঙুল ঢুকিয়ে রাস্তা হতে সরে গেলেন। তারপর তিনি আমাকে বললেন, ‘হে নাফে‘! তুমি কি কিছু শুনতে পাচ্ছ?’ আমি বললাম, ‘না’। অতঃপর তিনি তাঁর দুই আঙুল কান হতে বের করে বললেন, আমি একদা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। অতঃপর তিনি এমন (বাঁশির আওয়াজ) শুনে এরূপ করেছিলেন’।[4] এই হাদীছ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, যেখানে গান-বাজনা হয় সেখানে থাকা যাবে না। গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্রের শব্দ যেন কানে না আসে তার সম্ভবপর চেষ্টা করতে হবে। আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,لَيَكُوْنَنَّ فِيْ هَذِهِ الْأُمَّةِ خَسْفٌ وَ قَذْفٌ وَمَسْخٌ وَذَلِكَ إِذَا شَرِبُوْا الْخُمُوْرَ وَاتَّخَذُوْا الْقَيْنَاتِ وَضَرَبُوْا بِالْمَعَازِفِ ‘অবশ্যই আমার উম্মতের মাঝে ভূমি ধস, পাথর বর্ষণ ও আকার-আকৃতির বিকৃতিসাধন হবে, যখন তারা মদপান করবে, নর্তকী গ্রহণ করবে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজাবে’।[5]

হতে পারে, বর্তমানে আমাদের উপর যে বিপদগুলো আসছে তার মধ্যে অনেকগুলোই মদ্যপান, গান-বাজনা নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফল। অধিকাংশ বাড়িতে বাজনা বাজে, অধিকাংশ হোটেলেই বাজনা বাজে, তাই তো এত বিপদ। আমাদের এসব বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সকলকে চেষ্টা করতে হবে এসব হতে বিরত থাকতে ও অন্যকে বিরত রাখতে।

ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘অবশ্যই অবশ্যই আমার উম্মতের কিছু সম্প্রদায় রাত অতিবাহিত করবে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য-পানীয় এবং বিভিন্ন ধরনের বিনোদন, আমোদ-প্রমোদের সামগ্রী নিয়ে, অতঃপর তাদের সকাল হবে শূকর ও বানরের আকৃতিতে রূপান্তরিত হয়ে’।[6]

আবূ মালেক আশআরী রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মাঝে কিছু মানুষ মদপান করবে (মদের) ভিন্ন নাম দিয়ে। তাদের মাথার উপর বাদ্যযন্ত্র বাজানো হবে এবং গায়িকারা গান পরিবেশন করবে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে জমিনে ধসিয়ে দিবেন এবং তাদেরকে তিনি বানর ও শূকরে পরিণত করবেন’।[7] এই হাদীছ দ্বারা জানা যায় যে, মানুষ মদপান করবে কিন্তু তার নাম দিবে ভিন্ন। আমাদেরকে এসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অন্যথা আমাদেরকে আরো কঠিন বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।

গান-বাজনার ক্ষতিকর দিক : ইসলাম কোনো জিনিসের মধ্যে ক্ষতিকারক কোনো কিছু না থাকলে তাকে হারাম করে না। গান-বাজনার মধ্যে নানা ধরনের ক্ষতিকর দিক রয়েছে। শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়্যা রাহিমাহুল্লাহ এ সম্পর্কে বলেছেন, গান-বাজনা হচ্ছে নফসের মদস্বরূপ। মদ যেমন মানুষের ক্ষতি করে, বাদ্যযন্ত্রও মানুষের সেই রকম ক্ষতি করে। যখন গান-বাজনা তাদের আচ্ছন্ন করে ফেলে, তখনই তারা শিরকে পতিত হয়। আর তখন তারা অশ্লীল কাজ ও যুলম করতে উদ্যত হয়। তারা শিরক করতে থাকে এবং যাদের হত্যা করা নিষেধ তাদেরকেও হত্যা করতে থাকে, যেনা করতে থাকে। যারা গান-বাজনায় জড়িত, তাদের বেশির ভাগের মধ্যেই এই তিনটি দোষ দেখা যায়। তাদের বেশির ভাগই মুখ দিয়ে শিস দেয় ও হাততালি দেয়।[8]

শিরকের নিদর্শন : বর্তমান সময়ে অনেক যুবককে দেখা যায় গায়ক-গায়িকা, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের এত পরিমাণে ভালোবাসে যে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা সহ্য করতে পারে না। কিছু বললেই তারা প্রতিবাদ করে। কিন্তু ধর্ম নিয়ে কেউ মশকরা করলে বা আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নিয়ে মশকরা করলে তারা তেমন কিছু বলে না। তাদের বেশির ভাগই তাদের গায়কদের আল্লাহর মতোই ভালোবাসে অথবা আরো অধিক (নাঊযুবিল্লাহ), যা শিরক এর অন্তর্ভুক্ত।

গান হলো যেনার রাস্তাস্বরূপ। এর কারণেই অনেক অশ্লীল কাজ সঙ্ঘটিত হয়। যেখানে পুরুষ ও মহিলারা চরম লজ্জাহীন হয়ে পড়ে। এভাবে গান শ্রবণ করতে করতে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনে। তারা রাস্তায় অপদস্ত হয়, এমনকি এই গান-বাজনার পার্টিতে রাতের পর রাত জেগে এবং পার্টিতে গিয়ে ধর্ষিতা হয়। তাছাড়া তখন তাদের জন্য অন্যান্য অশ্লীল কাজ করা সহজ হয়ে যায়।

এছাড়াও গান-বাজনার আরো অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যেমন- এটা ব্যভিচারের প্রেরণা দানকারী, মস্তিষ্কের উপর আবরণ ফেলে, কুরআনের প্রতি অনীহা সৃষ্টি করে, আখেরাতের চিন্তা নির্মূল করে, গুনাহের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করে। বস্তুত গান-বাজনার বৈজ্ঞানিক ক্ষতিকর প্রভাব এত বেশি যে, তা নাজায়েয হওয়ার জন্য আলাদাভাবে কোনো দলীল খোঁজার প্রয়োজন পড়ে না। তারপরও আমরা কুরআনের আয়াত ও অনেক হাদীছ থেকে প্রমাণ পেশ করলাম, যা সুস্পষ্টভাবে গান-বাজনা হারাম হওয়ার প্রমাণ বহন করে।

গান-বাজনা হতে পরিত্রাণের উপায় : নিচে গান-বাজনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের কী করণীয় তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—

(১) কেউ যদি খালেছ অন্তরে গান-বাজনা শোনা থেকে নিবৃত হতে চায়, তাহলে হৃদয়ে এই বিশ্বাস করা জরুরী যে, ইসলামে গান-বাজনা হারাম এবং এর অনেক ক্ষতিকর দিকে রয়েছে, যা আজ বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত। তবে কেউ যদি মুসলিম বলে নিজেকে দাবি করে, তাহলে তার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট যে, তার মহান মালিক তার জন্য গান-বাজনা হারাম করেছেন। আর কেউ যদি জেনে-বুঝে হারাম কাজে লিপ্ত হয়, তাহলে সে যেন নিজেকে জাহান্নামের শাস্তির দিকে ঠেলে দিল। সাথে এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে, ইসলামে যা কিছু নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাতে অবশ্যই মানুষের জন্য ক্ষতি রয়েছে। তাতে কোনো কল্যাণ থাকলে অবশ্যই তা হারাম করা হতো না। যার অনেক ক্ষতিকর দিক আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি।

(২) একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং আখেরাতে প্রতিদান পাওয়ার উদ্দেশ্যে তা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করার জন্য মনের মধ্যে সুদৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কারণ সুদৃঢ় সিদ্ধান্তের কাছে আল্লাহর ইচ্ছায় প্রবৃত্তির হাতছানি ও শয়তানের কূটকৌশল পরাভূত হতে বাধ্য।

(৩) এ পথ থেকে ফিরে আসার জন্য মহান প্রতিপালকের কাছে আন্তরিকভাবে দু‘আ করা। কারণ আল্লাহ মানুষের অন্তরের নিয়ন্ত্রণকারী। তিনি যদি মনকে হারাম থেকে ঘুরিয়ে দেন, তাহলে তা সেদিকে আর মোড় নিতে পারবে না।

(৪) গান-বাজনার উপকরণ ঘর থেকে বের করা ফেলা দেওয়া। যেমন সাউন্ড সিস্টেম, স্পিকার, গিটার, তবলা, ইত্যাদি। সাথে সাথে যেখানে গান-বাজনা হয়, সেখানে না যাওয়া।

(৫) অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করা, সম্ভব হলে কুরআন মুখস্থ করা এবং ভালো ক্বারীদের তেলাওয়াত শোনা।

(৬) প্রচুর পরিমাণে যিকির-আযকারের মাধ্যমে জিহ্বাকে সতেজ রাখা। কারণ যিকির দ্বারা অন্তরে প্রশান্তি অর্জিত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللَّهِ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে আর তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা প্রশান্তি লাভ করে। জেনে রাখো! আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্তি লাভ করে’ (আর-রা‘দ, ১৩/২৮)। সুতরাং যারা হতাশা, অস্থিরতা, ব্যর্থতা ইত্যাদি থেকে বাঁচার জন্য বিরহের গান শুনে মনের শান্তি খোঁজে, তাদের উচিত এসব হারাম থেকে তওবা করা এবং আল্লাহর যিকিরের প্রতি মনোযোগী হওয়া। তাহলে তারা নিশ্চিতভাবেই অন্তরে অনাবিল প্রশান্তি লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।

(৭) দ্বীনী ইলম, ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। ভালো আলেমদের লিখিত বই-পুস্তক পাঠ করা। তাদের শিক্ষণীয় বক্তৃতা শোনা।

(৮) হৃদয়ে এই অনুভূতি জাগ্রত করা যে, মহান আল্লাহ আমাদেরকে কেবল তার দাসত্ব করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার মধ্যেই আমাদের কল্যাণ রয়েছে। এর বাইরে গেলে আমাদের জন্য অনেক ক্ষতি বা অকল্যাণ রয়েছে।

(৯) মনের মধ্যে গান শোনার ইচ্ছা জাগ্রত হলেই ‘আঊযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রজীম’ (আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি) পাঠ করা।

(১০) মৃত্যুর কথা, পরকালে শাস্তির কথা বারবার মনে করা। কেননা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করতে বলেছেন। হাদীছে এসেছ, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, أَكْثِرُوا ذِكْرَ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ يَعْنِى الْمَوْتَ ‘তোমরা (দুনিয়ার) স্বাদ-ভোগবিলাসকে বিনষ্টকারী বিষয় তথা মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করো’।[9]

(১১) গানের ক্ষতিকর দিকগুলো স্মরণ করা, যা প্রথম দিকে উল্লেখ করা হয়েছে।

(১২) মন্দ সংশ্রব বিশেষত পূর্বের গানের জগতের বন্ধু-বান্ধবদের এড়িয়ে চলা, পরিবর্তে ভালো দ্বীনদার লোকদের সাহচর্য লাভ করা। কেননা বন্ধু মানুষের জীবনে সীমাহীন প্রভাব সৃষ্টি করে। এজন্য এমন গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য একজন ভালো দ্বীনদার বন্ধুর গুরুত্ব অপরিসীম।

সুধী পাঠক! গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র অত্যন্ত নিকৃষ্ট এক বিষয়। এগুলোর প্রতি আসক্ত ব্যক্তিদের ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে। বর্তমানে অনেক যুবক গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এত কিছু জানার পরও কোনো শিক্ষিত মানুষ গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে আনন্দ বিনোদন করতে পারে না। আমাদেরকে গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র থেকে সর্বদা দূরে থাকতে হবে। এগুলোর ব্যবসা করার কথা ভুলেও মাথায় আনা যাবে না এবং এগুলোর প্রতি আগ্রহী ব্যক্তির সঙ্গ এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা তার সাথে চললে তার মতো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কথায় আছে, ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে’। লোহা এমনি এমনি পানিতে ভাসে না, লোহাকে কাঠের সাথে জুড়ে দিলে ভাসে। তাই ভালো সঙ্গী নির্বাচন করতে হবে। সকল যুবক ভাইদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে এই নিকৃষ্টতম গান-বাজনা, বাদ্যযন্ত্র হতে বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।

হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সকল পাপ কর্ম হতে বিরত থাকার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!

আবূরায়হান বিন জাহিদুল ইসলাম

ধামিনকৌড়, বাগমারা, রাজশাহী।

[1]. তাফসীর ইবনু কাছীর, ৩/৪৫১।

[2]. ইবনুল ক্বাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ, ইগাসাতুল লাহফান, ১/২৫৮-২৫৯।

[3]. বায়হাক্বী, মিশকাত, হা/৪৫০৩, হাদীছ ছহীহ।

[4]. আবূ দাঊদ, হা/৪৯২৪, সনদ ছহীহ।

[5]. আল-জামেউছ ছাগীর, হা/৯৫৯৮।

[6]. সিলসিলা ছহীহা, হা/১৬০৪, ২৬৯৯।

[7]. ইবনু মাজাহ, হা/৪০২০।

[8]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ১০/১১৭।

[9]. ইবনু মাজাহ, হা/৪২৫৮।

Magazine