কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

প্রশ্ন (৩৮) : ঋণ পরিশোধ করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ গ্রহিতা যদি ঋণদাতার কাছে মাফ চায়, তাহলে তাকে মাফ করা যাবে কি?

উত্তর: সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে মাফ করা বা না করা আপনার ইচ্ছাধীন। তবে তার উপর চাপ সৃষ্টি করে পাওনা আদায় করে নেওয়া আপনার অধিকার রয়েছে। ঋণ পরিশোধ করা ঋণ গ্রহীতার উপর একটি জরুরী বিষয়। ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধে টালবাহানা করা- আজ দিব না, কাল দিব, মাফ করে দেন ইত্যাদি কথা বলা বা এ ধরনের আচরণ করা যুলুমের শামিল। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ঋণ পরিশোধে ধনী ব্যক্তির টালবাহানা করা যুলুম’... (ছহীহ বুখারী, হা/২২৮৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৬৪)। আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রম হানী বা অন্য কোন বিষয়ে (ঋণ ইত্যাদি) যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করায়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোনো দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোনো সৎকর্ম থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট থেকে নেওয়া হবে আর তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ থেকে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে (ছহীহ বুখারী, হা/২৪৪৯)। সুতরাং ঋণ পরিশোধে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উচিত হবে তাকে ঋণ দিয়ে ঋণদাতা যে অনুগ্রহ করেছে তার বদলে ঋনদাতার সাথে ভালো আচরণ করা। সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে অপারগ হলে ঋণদাতার কাছে আরো সময় চেয়ে নেওয়া এবং তা পরিশোধের সর্বাত্মক চেষ্টা করা। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে গড়িমশি করা এক প্রকার যুলুম। তাই যতদ্রুত সম্ভব ঋণ পরিশোধ করে ঋণের বোঝা মাথা থেকে নামিয়ে ফেলা। অন্যথায় পরকালে ঋণের ঘানি টানতে গিয়ে নিজের সৎ আমলের ছওয়াব ঋণদাতাকে দিয়ে নিশ্চিত দেওলিয়া হতে হবে।

প্রশ্নকারী : আনোয়ার হোসেন

কাশিমপুর, গাজীপুর।

 

Magazine