উত্তর : হ্যাঁ, দ্বীন শেখা বা শেখানোর জন্য, দ্বীনের প্রচার-প্রসারের জন্য বা অন্য যেকোনো শারঈ কারণে মসজিদে অবস্থান করা যায়। উক্ববা ইবনু আমের রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (একদিন) মসজিদ প্রাঙ্গণে বসেছিলাম। এ সময় রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে আসলেন ও (আমাদের) বললেন, তোমাদের কেউ কি প্রতিদিন সকালে ‘বুত্বহান’ অথবা ‘আক্বীক’ বাজারে গিয়ে দু’টি বড় কুঁজওয়ালা উটনী কোনো অপরাধ সংঘটন ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা ছাড়াই নিয়ে আসতে পছন্দ করবে? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের প্রত্যেকেই এ কাজ করতে পছন্দ করবে। তখন তিনি বললেন, যদি তা-ই হয় তাহলে তোমাদের কেউ কোনো মসজিদে গিয়ে সকালে আল্লাহর কিতাবের দু’টি আয়াত (মানুষকে) শিক্ষা দেয় না বা (নিজে) শিক্ষাগ্রহণ করে না কেন? অথচ এ দু’টি আয়াত শিক্ষা দেওয়া তার জন্য দু’টি উটনী অথবা তিনটি আয়াত শিক্ষা দেওয়া তার জন্য তিনটি উটনী অথবা চারটি আয়াত শিক্ষা দেওয়া তার জন্য চারটি উটনীর চেয়েও উত্তম। সারকথা, কুরআনের যে কোনো সংখ্যক আয়াত, একই সংখ্যক উটনীর চেয়ে উত্তম’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৮০৩; ইবনু আবী শায়বা, হা/৩০০৭৪; ছহীহ আত-তারগীব, হা/১৪১৮; ছহীহ আল জামে‘, হা/২৬৯৭; মিশকাত, হা/২১১০)। মসজিদে অবস্থান করত ৭০ জন গরীব মুহাজির ছাহাবী। সর্বদায় মসজিদে অবস্থান করত, ঘুমাত এবং কুরআন-হাদীছের জ্ঞান চর্চা করত (মিরকাত, ২/৫৯৬, ৩/৯৫৯, হা/১২৮৯)। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতেমার বাড়িতে আলী রযিয়াল্লাহু আনহু-কে না পেয়ে খোঁজ করলেন। অবশেষে তাঁকে মসজিদে শুয়ে থাকা অবস্থায় পেলেন। তিনি দেখলেন তার গায়ে মাটি লেগে আছে। তখন তিনি তার গায়ের মাটি মুছে দিচ্ছিলেন আর বলছিলেন, হে মাটির পিতা! উঠো (ছহীহ বুখারী, হা/৬২৮০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪০৯)। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রযিয়াল্লাহু আনহু যখন অবিবাহিত ছিলেন তখন তিনি মসজিদে নববীতে ঘুমাতেন। তার কোনো পরিবার-পরিজন ছিল না (ছহীহ বুখারী, হা/৪৪০; নাসাঈ, হা/৭৬২)। ছাহাবীদের মধ্যে যারা আহলে ছুফফা ছিলেন, তাদের কোনো ঘর-বাড়ি না থাকায় নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মসজিদে অবস্থান করার অনুমিতি প্রদান করেছিলেন (ছহীহ বুখারী ‘মসজিদে পুরুষদের নিদ্রা যাওয়া’ পরিচ্ছেদ)।
প্রশ্নকারী : আনোয়ার হোসেন
ময়মনসিংহ সদর।