উত্তর: ফযীলতপূর্ণ রামাযান মাসের আগমনবার্তা নিয়ে যে মাসটি আমাদের সামনে আবির্ভূত হয় তা হলো শাবান মাস। যা খানিকটা ফরয ছালাতের পূর্বে নফল ছালাত আদায়ের ন্যায়। এ মাসে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক বেশি ছিয়াম পালন করতেন। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে নফল ছিয়াম পালন করে যেতেন, এমনকি আমরা বলাবলি করতাম যে, হয়তো তিনি ছিয়াম ছাড়বেন না। আবার কখনো তিনি লাগাতার ছিয়াম রাখতেন না। অবস্থা এমন হতো যে আমরা গুঞ্জন করতাম, মনে হয় তিনি আর ছিয়াম রাখবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে একমাত্র রামাযান মাস ব্যতীত কখনো পুর্ণ ছিয়াম পালন করতে দেখিনি। আমি তাঁকে শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোনো মাসে অধিক সংখ্যক ছিয়াম পালন করতে দেখিনি (ছহীহ বুখারী, হা/১৯৬৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৫৬)। উসামা ইবনু যায়েদ বললেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি শাবান মাসে যে পরিমাণ ছিয়াম পালন করেন অন্য কোনো মাসে আমি আপনাকে ঐ পরিমাণ ছিয়াম পালন করতে দেখিনি। তিনি বললেন, ‘এটা এমন একটি মাস যে ব্যাপারে মানুষ বেখবর, যা রযব ও রামাযানের মধ্যকার একটি মাস। এটা এমন একটি মাস যাতে বান্দার আমলনামা রব্বুল ’আলামীনের নিকট উঠানো হয়। সুতরাং আমি ভালোবাসি যে, আমার আমল ছিয়ামরত অবস্থায় আল্লাহর নিকট উঠানো হোক (নাসাঈ, হা/২৩৫৭)। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসে যত ছিয়াম পালন করতেন অন্য কোনো মাসে তত ছিয়াম পালন করতেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের সাধ্যে যতদূর সম্ভব আমল করো। কেননা, তিনি নেকী দেওয়া বন্ধ করবেন না, যতক্ষণ না তোমরা আমল করে ক্লান্ত হয়েছো... (ছহীহ বুখারী, হা/১৯৭০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫০১১)। এ হাদীছগুলো থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হলো তা হচ্ছে শাবান মাসে ছিয়াম রাখা। আর যতো দূর পারা যায় অন্যান্য নফল ইবাদত করার চেষ্টা করা। যেমন: কুরআন তেলাওয়াত, নফল ছালাত আদায় করা, দান-ছাদাক্বা।
প্রশ্নকারী : খায়রুল ইসলাম
কুমিল্লা।