কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার এক অনন্য বার্তা

হজ্জের শিক্ষা ও হজ্জ-পরবর্তী করণীয়

post title will place here

হজ্জ একটি শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত এবং ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। নিম্নে হজ্জের শিক্ষা ও হজ্জ-পরবর্তী সময়ে হাজীদের করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

() হজ্জের চেতনা তাওহীদ প্রতিষ্ঠা: তাওহীদ হলো আল্লাহর একত্বকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস, স্বীকার এবং প্রতিষ্ঠা করা। এর বিপরীত হলো শিরক। যা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য বলেই দয়াময় আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করলেও এ ভয়াবহ পাপ ক্ষমা করবেন না।[1] আর আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে মানবজাতিকে শিরক থেকে বেঁচে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্যই সকল নবী-রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। একজন মুমিনের আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সকল আনুগত্য ও ইবাদত হতে হবে তাওহীদী চেতনায় একীভূত ও শিরক থেকে মুক্ত। আর হজ্জ পালনের প্রথম ধাপ হলো তালবিয়া পাঠ, যা কেবল একত্বের চেতনাই প্রকাশ করে থাকে। আর এজন্যই রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাওহীদযুক্ত তালবিয়া আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। যা হলো—

 لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ.

অর্থ: ‘আমি তোমার দরবারে হাযির আছি, হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে হাযির। তোমার কোনো শরীক নেই, আমি তোমার দরবারে হাযির। সমস্ত প্রশংসা, নেয়ামত তোমারই এবং সমগ্র রাজত্ব তোমার, তোমার কোনো শরীক নেই’।[2]

সুতরাং হজ্জ হলো তাওহীদ বাস্তবায়নের একটি অন্যতম মাধ্যম। আর নিশ্চয় আল্লাহ তাওহীদ ছাড়া কোনো আমলই গ্রহণ করেন না। এজন্য হাদীছে কুদসীতে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ তাআলা বলেন,أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ مَنْ عَمِلَ عَمَلاً أَشْرَكَ فِيهِ مَعِى غَيْرِى تَرَكْتُهُ وَشِرْكَهُ ‘আমি শিরককারীদের শিরক থেকে অমুখাপেক্ষী। যে ব্যক্তি আমার সাথে অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন করবে, আমি তাকে ও তার অংশীদারকে ছেড়ে দেই’।[3]

() আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি অন্যতম মাধ্যম হলো হজ্জ পালন করা। এ সম্পর্কে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,مَنْ حَجَّ لِلَّهِ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ পালন করল এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ হতে বিরত থাকল, সে ঐ দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ্জ হতে ফিরে আসবে, যে দিন তাকে তার মা জন্ম দিয়েছিল’।[4] অন্যত্র আমর ইবনুল ‘আছ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদীছে এসেছে, আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে আমর! তুমি কি জনো না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়, হিজরত পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয় আর হজ্জ পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়?’[5] আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَالذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِى الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ وَالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَيْسَ لِلْحَجَّةِ الْمَبْرُورَةِ ثَوَابٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ ‘তোমরা হজ্জ ও উমরা পরপর আদায় করো। কেননা এ হজ্জ ও উমরা দারিদ্র্য ও গুনাহ দূর করে দেয়, যেমন লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা হাপরের আগুনে দূর হয়। আর একটি কবুল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়’।[6]

() হজ্জের চেতনা তাক্বওয়া অর্জন: আল্লাহ অধিকাংশ হজ্জ সম্পর্কিত আয়াতেই তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জনের কথা বলেছেন। সূরা আল-বাক্বারায় বলা হয়েছে,وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ... ‘আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমরা পূর্ণ করো...’ (আল-বাক্বারা, /১৯৬)। আর আয়াতে শেষাংশে বলা হচ্ছে, وَاتَّقُوا اللهَ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ ‘আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা’ (আল-বাক্বারা, /১৯৬)। অনুরূপভাবে আরও বলা হয়েছে, الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَعْلُومَاتٌ ‘হজ্জের মাসগুলো নির্ধারিত’ (আল-বাক্বারা, /১৯৭)। আর এই আয়াতের শেষাংশে বলা হচ্ছে, وَتَزَوَّدُوا فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى وَاتَّقُونِ يَاأُولِي الْأَلْبَابِ ‘নিশ্চয়ই সর্বোত্তম পাথেয় হলো আল্লাহভীতি। অতএব, হে জ্ঞানীগণ! তোমরা আমাকে ভয় করো’ (আল-বাক্বারা, /১৯৭)

আসলে হজ্জের নিয়মরীতি সবকিছুই যে তাক্বওয়া অর্জনের নিমিত্তে তার প্রমাণ উক্ত আয়াত দুটিও। মহান আল্লাহ বলেন, ذَلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوبِ ‘উপরের গুলো এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশসমূহকে সম্মান করে, নিশ্চয়ই সেটি হৃদয় নিঃসৃত আল্লাহভীতির প্রকাশ’ (আল-হাজ্জ, ২২/৩২)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,لَنْ يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَكِنْ يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنْكُمْ ‘এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর নিকটে পৌঁছে না। বরং তাঁর নিকট পৌঁছে তোমাদের আল্লাহভীরুতা’ (আল-হাজ্জ, ২২/)

তাক্বওয়া শুধু উম্মাতে মুহাম্মাদীর জন্যই নয়, বরং সকল উম্মতের জন্য সর্বোত্তম নির্দেশনা ও শেষ দিবসের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ পাথেয়। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَقَدْ وَصَّيْنَا الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَإِيَّاكُمْ أَنِ اتَّقُوا اللَّهَ ‘বস্তুত, আমরা আদেশ করেছিলাম তোমাদের পূর্ববর্তী কিতাবধারীদের এবং তোমাদের এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো’ (আন-নিসা, /১৩১)। সুতরাং হজ্জ পালন তাক্বওয়া অর্জনের শ্রেষ্ঠতম মাধ্যম।

() হজ্জ মানে আল্লাহর ডাকে সাড়া দান: সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিমের জন্য হজ্জ পালন করা ফরয। এতে আল্লাহর নির্দেশনা রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,وَأَذِّنْ فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ ‘আর তুমি মানুষের মাঝে হজ্জের ঘোষণা প্রচার করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সকল প্রকার (পথশ্রান্ত) কৃশকায় উটের উপর ছওয়ার হয়ে দূরদূরান্ত হতে’ (আল-হজ্জ, ২২/২৭)। আর সেই ডাকে মানুষ সাড়া দিয়ে হজ্জে لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাশ মুখরিত করে তোলে। আর উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠের নির্দেশনা দিয়ে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জিবরীল আমার নিকট এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনার ছাহাবীগণকে নির্দেশ দাও, তারা যেন উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠ করে। কেননা তা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্য হতে অন্যতম’।[7] উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠ একটি মহৎ কাজ। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُلَبِّى إِلاَّ لَبَّى مَنْ عَنْ يَمِينِهِ أَوْ عَنْ شِمَالِهِ مِنْ حَجَرٍ أَوْ شَجَرٍ أَوْ مَدَرٍ حَتَّى تَنْقَطِعَ الأَرْضُ مِنْ هَا هُنَا وَهَا هُنَا ‘যখন কোনো মুসলিম তালবিয়া পাঠ করে, তখন তার ডান ও বামে পাথর, বৃক্ষরাজি, মাটি সবকিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করে। এমনকি পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত (তালবিয়া পাঠকারীদের দ্বারা) পূর্ণ হয়ে যায়’।[8]

পৃথিবীর সবকিছুই যে আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করে এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন,تُسَبِّحُ لَهُ السَّمَاوَاتُ السَّبْعُ وَالْأَرْضُ وَمَنْ فِيهِنَّ وَإِنْ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا يُسَبِّحُ بِحَمْدِهِ وَلَكِنْ لَا تَفْقَهُونَ تَسْبِيحَهُمْ إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا ‘সাত আসমান ও যমীন এবং এ দুইয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু তাঁরই পবিত্রতা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নেই, যা তার প্রশংসাসহ মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু তাদের পবিত্রতা বর্ণনা তোমরা বুঝতে পারো না। নিশ্চয়ই তিনি অতীব সহনশীল ও ক্ষমাপরায়ণ’ (আল-ইসরা, ১৭/৪৪)

() নবী-রাসূলদের স্মরণ: হজ্জ পালনে গেলে পূর্ববর্তী নবী-রাসূল ও তাদের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের কথা অধিক পরিমাণে স্মরণ হয়। বিশেষ করে ইবরাহীম, ইসমাঈল ও হাজেরা আলাইহিমুস সালাম সম্পর্কে। যেমন—

(ক) কা‘বাঘর দর্শনের সাথে সাথে ইবরাহীম ও ইসমাঈল আলাইহিমাস সালাম-এর কথা স্মরণ হয়। কা‘বাঘর নির্মাণ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَاهِيمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمَاعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ‘আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীম ও ইসমাঈল বায়তুল্লাহর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তখন তারা প্রার্থনা করেছিলেন, হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি আমাদের পক্ষ হতে এটি কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’ (আল-বাক্বারা, ২/১২৭)

(খ) মাক্বামে ইবরাহীম, যার উপর দাঁড়িয়ে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম কা‘বাঘর নির্মাণ করেছিলেন। সাত তাওয়াফ শেষে দুই রাকআত ছালাত আদায় করতে হয় আর সেটা মাক্বামে ইবরাহীমের পিছনে হওয়া বাঞ্ছনীয়- যদি না ভিড় থাকে। এতে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন, وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى ‘তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়ানোর স্থানকে ছালাতের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো’ (আল-বাক্বারা, /১২৫)

(গ) যমযম কূপ ও ছাফা-মারওয়ার মধ্যবর্তী স্থলে সাঈ করার প্রাক্কালে হাজেরার সেই স্বগতোক্তির কথা মনে পড়ে যখন পিতা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তাকে ও শিশু সন্তানকে এক বিরানভূমিতে রেখে যাচ্ছিলেন, তখন হাজেরা বলেছিলেন,مَنْ أَمَرَكَ أَنْ تَضَعَنِيَ بِأَرْضٍ لَيْسَ فِيهَا ضَرْعٌ، وَلَا زَرْعٌ، وَلَا أَنِيسٌ، وَلَا زَادٌ، وَلَا مَاءٌ؟ ‘আপনি কার নির্দেশে আমাকে এমন জায়গায় রেখে যাচ্ছেন, যেখানে কোনো দুধ, শস্য, মানুষ কিংবা খাদ্য-পানীয় নেই?’ তখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বলেছিলেন, رَبِّي أَمَرَنِي ‘আমার প্রভু আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন’। তখন হাজেরা বলেছিলেন, فَإِنَّهُ لَنْ يُضَيِّعَنَا ‘নিশ্চয় তিনি আমাদের ধ্বংস করবেন না’।[9]

(ঘ) একইভাবে আরাফায় অবস্থানের সময় রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন,كُونُوا عَلَى مَشَاعِرِكُمْ فَإِنَّكُمْ عَلَى إِرْثٍ مِنْ إِرْثِ إِبْرَاهِيمَ ‘হজ্জের নির্ধারিত স্থানসমূহে অবস্থান করো। কারণ তোমরা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়েছো’।[10]

(ঙ) অনুরূপভাবে পাথর নিক্ষেপের সময় আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর কথা। ইবনু আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, لَمَّا أَتَى إِبْرَاهِيمُ خَلِيلُ اللَّهِ الْمَنَاسِكَ عَرَضَ لَهُ الشَّيْطَانُ عِنْدَ جَمْرَةِ الْعَقَبَةِ فَرَمَاهُ بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ حَتَّى سَاخَ فِي الْأَرْضِ، ثُمَّ عَرَضَ لَهُ عِنْدَ الْجَمْرَةِ الثَّانِيَةِ فَرَمَاهُ بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ حَتَّى سَاخَ فِي الْأَرْضِ، ثُمَّ عَرَضَ لَهُ عِنْدِ الْجَمْرَةِ الثَّالِثَةِ فَرَمَاهُ بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ حَتَّى سَاخَ فِي الْأَرْضِ ‘যখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম কুরবানী করতে এসেছিলেন, তখন জামরায়ে আক্বাবায় শয়তান ধোঁকা দিচ্ছিল। ফলে তিনি সাতটি পাথর নিক্ষপ করলে শয়তান মাটিতে গেড়ে যায়। অতঃপর দ্বিতীয় জামরায় শয়তান ধোঁকা দিলে তিনি পুনরায় সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেন। এতে শয়তান মাটিতে দেবে যায়। এভাবে তৃতীয় জামরাতে শয়তান ধোঁকা দিলে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সাতটি পাথর নিক্ষেপের ফলে শয়তান মাটিতে দেবে যায়’।[11]

কুরবানী যবেহ করার সময়কালে সেই মহান ঘটনার কথা স্মরণ হয়, যখন ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম স্বপ্নে দেখলেন যে, তিনি পুত্র ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-কে কুরবানী করছেন। এটা পুত্রের নিকট বর্ণনা করতেই তার দৃঢ়চিত্ত উত্তর আমাদের অন্তরাত্মাকে শিহরিত করে তোলে, যা কুরআনের ভাষায় এসেছে এভাবে,فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْيَ قَالَ يَابُنَيَّ إِنِّي أَرَى فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ فَانْظُرْ مَاذَا تَرَى قَالَ يَاأَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُ سَتَجِدُنِي إِنْ شَاءَ اللَّهُ مِنَ الصَّابِرِينَ - فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِينِ ‘অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরার বয়সে উপনীত হলো, তখন ইবরাহীম তাকে বললেন, হে আমার বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি। এখন ভেবে দেখো, তোমার অভিমত কী? সে বলল, হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন। এভাবে পিতা-পুত্র উভয়ে যখন আত্মসমর্পণ করলেন এবং পিতা যখন পুত্রকে তার চেহারা ধরে মাটিতে কাত করে শোয়ালেন…’ (আছ-ছাফফাত, ৩৭/১০২-১০)

() রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ: হজ্জের বিধিবিধান ও নিয়মকানুনগুলো আমরা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পদ্ধতি অনুযায়ী পালন করার চেষ্টা করি। কোন কাজ করলে হজ্জের ত্রুটি হবে, কোন আমল সুন্নাত অনুযায়ী হবে এ বিষয়ে মনোনিবেশ করি। এ ক্ষেত্রে উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর কথা প্রণিধানযোগ্য। তিনি হাজারে আসওয়াদকে চুম্বনের প্রাক্কালে বলেছিলেন,إِنِّى أَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ وَلَوْلاَ أَنِّى رَأَيْتُ النَّبِىَّ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ ‘আমি অবশ্যই জানি যে, তুমি একখানা পাথর মাত্র। তুমি কারো কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে কখনো আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না’।[12]

() মুশরিকদের আমলের বিরুদ্ধাচরণ: জাহেলী যুগে মুশরিকরা যেভাবে হজ্জ পালন করত, তা মহানবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমূলে পরিবর্তন করে দেন। হজ্জের ভাষণে তিনি বলেন,أَلاَ كُلُّ شَىْءٍ مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ تَحْتَ قَدَمَىَّ مَوْضُوعٌ وَدِمَاءُ الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعَةٌ وَإِنَّ أَوَّلَ دَمٍ أَضَعُ مِنْ دِمَائِنَا دَمُ ابْنِ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ كَانَ مُسْتَرْضِعًا فِى بَنِى سَعْدٍ فَقَتَلَتْهُ هُذَيْلٌ وَرِبَا الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ وَأَوَّلُ رِبًا أَضَعُ رِبَانَا رِبَا عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَإِنَّهُ مَوْضُوعٌ كُلُّهُ ‘সাবধান! জাহেলী যুগের সকল ব্যাপার (অপসংস্কৃতি) আমার উভয় পায়ের নিচে। জাহেলী যুগের রক্তের দাবিও বাতিল হলো। আমি সর্বপ্রথম যে রক্তপণ বাতিল করছি, তা হলো আমাদের বংশের রবীআহ ইবনু হারেছের পুত্রের রক্তপণ। সে শিশু অবস্থায় বানূ সা‘দ গোত্রে দুগ্ধপোষ্য ছিল। তখন হুযায়েল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করে। জাহেলী যুগের সূদও বাতিল। আমি প্রথম যে সূদ হারাম করছি, তা হলো আমাদের বংশের আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের সূদ। তার সমস্ত সূদ বাতিল হলো’।[13]

সুতরাং হজ্জ পালন অবস্থায় যাবতীয় অপকর্ম ও জাহেলিয়াত থেকে দূরে থাকতে হবে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,أَبْغَضُ النَّاسِ إِلَى اللَّهِ ثَلاَثَةٌ مُلْحِدٌ فِى الْحَرَمِ ، وَمُبْتَغٍ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ، وَمُطَّلِبُ دَمِ امْرِئٍ بِغَيْرِ حَقٍّ لِيُهَرِيقَ دَمَهُ ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত লোক হচ্ছে তিন জন। তারা হলো— (ক) যে লোক পবিত্র হারাম এলাকায় অন্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত হয়, (খ) যে লোক ইসলামী যুগে জাহেলী যুগের রীতিনীতি অন্বেষণ করে এবং (গ) যে লোক ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া কারো রক্ত দাবি করে’।[14]

() ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি: হজ্জে বিভিন্ন দেশ, ভাষা ও বর্ণের লোক একত্রিত হয়। আর প্রত্যেকেই তাক্বওয়া অর্জনের প্রতিযোগিতা করে। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জের ভাষণে বলেছেন,يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَلاَ إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ أَلاَ لاَ فَضْلَ لِعَرَبِىٍّ عَلَى أَعْجَمِىٍّ وَلاَ لِعَجَمِىٍّ عَلَى عَرَبِىٍّ وَلاَ لأَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ وَلاَ أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ إِلاَّ بِالتَّقْوَى أَبَلَّغْتُ ‘হে লোক সকল! জেনে রাখো, তোমাদের রব একজন, তোমাদের পিতা একজন। জেনে রাখো! অনারবদের উপর আরবদের এবং আরবদের উপর অনারবদের কোনো প্রাধান্য নেই— তাক্বওয়া ব্যতীত। একইভাবে কালোর উপর লালের ও লালের উপর কালোর কোনো প্রাধান্য নেই— তাক্বওয়া ব্যতীত’।[15]

হজ্জ-পরবর্তী করণীয়: আল্লাহ তাআলার নির্দেশনা অনুযায়ী হজ্জ চলাকালীন সময়ে অশ্লীলতা, কুৎসা, অন্যায় আচরণ, ঝগড়া ও কলহ-বিবাদ করা যায় না (আল-বাক্বারা, /১৯৭)। হজ্জের এই শিক্ষা হজ্জ-পরবর্তী সময়ে নিজের জীবনে আজীবন লালন ও ধারণ করতে হবে। সর্বদা তর্কবিতর্ক ও ঝগড়াবিবাদ পরিহার করে চলতে হবে। কারও ব্যবহার পছন্দ না হলেও রাগ করা যাবে না বা কটু কথা বলা যাবে না, কারও মনে কষ্ট দেওয়া যাবে না। কারও দ্বারা যদি কারও কোনো ক্ষতি হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। সবসময় ওযূর সঙ্গে থাকার চেষ্টা করতে হবে এবং মনে সবসময় আল্লাহর যিকির জারী রাখতে হবে। নিজের স্বার্থ আগে উদ্ধার করার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। নিজের আগে অন্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোনো মানুষের হক্ব নষ্ট করা যাবে না।

পবিত্র কুরআনের সর্বশেষ সূরায় সর্বশেষ আয়াতে দুই প্রকার শয়তানের কথা উল্লেখ আছে— এই দুই ভয় হলো জিন শয়তান ও মানুষ শয়তান (আল-ফালাক্ব, ১১৩/)। এ ছাড়া রয়েছে নফস শয়তান। ত্রিবিধ শয়তানের প্ররোচনা ও তাড়না থেকে নিজেকে রক্ষা করা, মনোজগতে শয়তানী শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার এবং সব ধরনের শয়তানী ভাব ও প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে একমাত্র বিবেকের অনুসরণে আল্লাহ তাআলার ইবাদত তথা আনুগত্য করাই হলো শয়তানকে পাথর মারার মূল রহস্য। হজ্জ পরবর্তী সময়েও যাবতীয় শয়তানী কার্যক্রম থেকে দূরে থাকতে হবে।

পৃথিবীর সব মানুষ একই পিতামাতার সন্তান। মানুষে মানুষে কোনো প্রকার ভেদাভেদ নেই, সাদা-কালোয় কোনো প্রভেদ নেই। বর্ণবৈষম্য ও বংশকৌলিন্য এগুলো মানুষের কৃত্রিম সৃষ্টি। পদ-পদবি ও অবস্থানগত পার্থক্য মানুষের মধ্যে অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করে। হজ্জের মাধ্যমে তা দূরীভূত হয়। হজ্জকে মানবতার প্রশিক্ষণ বলা যায়। হজ্জের ছয় দিন এই প্রশিক্ষণই হয়। যিলহজ্জ মাসের সাত তারিখে সব হাজী মিনার তাঁবুতে গণবিছানায় গিয়ে একাত্মতার ঘোষণা দেন। যিলহজ্জের ৯ তারিখে হাজীরা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে ঐক্যের অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেন, মিলিত হন আন্তর্জাতিক মহাসম্মেলনে। এদিন সন্ধ্যায় (১০ যিলহজ্জের রাতে) হাজীরা মুযদালিফায় গিয়ে সব কৃত্রিমতার অবসানের মাধ্যমে মানবতার পূর্ণতা ও আদি আসল প্রকৃত মানবরূপ লাভ করেন। সবার পদতলে মৃত্তিকা, মাথার ওপরে উন্মুক্ত আকাশ, সবার পরনে একই কাপড়। পোশাকে আতিশয্য নেই; খোলা মাথা। পাগড়ি, টুপি ও লম্বা চুলের আড়ম্বর নেই। সঙ্গে সেবক-কর্মচারী নেই, গন্তব্য এক হলেও রাস্তা জানা নেই, নিজের শক্তি-সামর্থ্য ও জ্ঞানগরিমার প্রকাশ নেই, বুদ্ধি-বিবেচনা ও কৌশল প্রয়োগের সুযোগ নেই; শুধুই আল্লাহর ওপর ভরসা। এটিই হজ্জের প্রকৃত উদ্দেশ্য ও আসল শিক্ষা। এই চেতনায় বাকী জীবনেও কোনো ধরনের মানুষে মানুষে বৈষম্য করা থেকে হাজীরা বিরত থাকবে।

কুরবানীর মূল প্রতিপাদ্যই হলো প্রিয়তমের জন্য অন্য সবকিছু বিসর্জন দেওয়া। পশু কুরবানী একটি প্রতীক মাত্র। মনের মধ্যে যে পশুবৃত্তি বিদ্যমান, তাকে পরাভূত ও পরাজিত করাই হলো পশু যবেহ বা পশু কুরবানীর আনুষ্ঠানিক শিক্ষা। এর মাধ্যমে মনের সব কুপ্রবৃত্তিকে চিরতরে বিদায় করা এবং চরিত্রের সব কু-স্বভাব পরিত্যাগ করাই এর মূল উদ্দেশ্য। হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিজ নিজ দেশে ফিরে এসে হাজীগণ এই চেতনা লালন ও অনুশীলন করবেন। সার্বক্ষণিক রিপুর চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করবেন এবং যাবতীয় শয়তানী কার্যক্রম থেকে দূরে থাকবেন। একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার জন্য যাবতীয় ইবাদত করবেন। বাকী জীবন শিরক থেকে নিজেরা বিরত থাকবেন এবং পরিবারকেও বিরত রাখবেন।

হজ্জের সময় বর্ণ, শ্রেণি, দেশ, জাতি, মত, পথ ও পেশা নির্বিশেষে সব দেশের সব মানুষ এক ইমামের পেছনে ছালাত আদায় করেন। এ হলো ‘ভিন্নমতসহ ঐক্য’-এর অনন্য দৃষ্টান্ত। বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ সহাবস্থান করেন বলে ভাষার দূরত্ব দূর হয়ে মনের নৈকট্য অর্জিত হয় এবং প্রকৃত মানবিক অনুভূতি জাগ্রত হয়। মনের সংকীর্ণতা দূর হয়, দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হয়, চিন্তার বিকাশ সাধিত হয়। যারা হজ্জের শিক্ষা লাভে ধন্য হন, তারাই প্রকৃত হাজী। হজ্জ একটি ইবাদত, এটি কোনো সার্টিফিকেট কোর্স বা পদ-পদবি নয়। হজ্জ করার পর নিজ থেকেই নামের সঙ্গে হাজী বিশেষণ যোগ করা সমীচীন নয়। হজ্জ কবুল করার মালিক আল্লাহ। কিছু বাহ্যিক আলামত বা নিদর্শন রয়েছে, যাতে হজ্জ কবুল হলো কি-না, তা সাধারণভাবে বুঝা যায়। যেমন হজ্জের পরের কাজে-কর্মে, আমলে-আখলাকে, চিন্তা-চেতনায় পরিশুদ্ধি অর্জন করা বা পূর্বাপেক্ষা উন্নতি লাভ করা। হজ্জ করা বড় কথা নয়; জীবনব্যাপী হজ্জের প্রকৃত শিক্ষা ধারণ করাই আসল সার্থকতা।

ড. মোহাম্মদ হেদায়াত উল্লাহ

সহকারী অধ্যাপক (বিসিএস, সাধারণ শিক্ষা), সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা।


[1]. আন-নিসা, ৪/৪৮, ১১৬। এ ছাড়াও শিরকের বহুমাত্রিক ক্ষতি নিয়ে অন্য সূরায় অনেক আয়াত রয়েছে। দেখুন- আল-কাহফ, ১৮/১০৩-১০৪; আল-ফুরক্বান, ২৫/২৩; আয-যুমার, ৩৯/৬৫।

[2]. ছহীহ মুসলিম, হা/১২১৮।

[3]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৮৫।

[4]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫২১; ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৫০।

[5]. ছহীহ মুসলিম, হা/১২১।

[6]. তিরমিযী, হা/২১১; ইবনু মাজাহ, হা/২৮৮৭।

[7]. ইবনু মাজাহ, হা/২৯২৩; আহমাদ, হা/২১২৭৮।

[8]. তিরমিযী, হা/৮২৮; মিশকাত, হা/২৫৫০।

[9]. তাফসীর ইবনু জারীর, ১৩/৬৯২।

[10]. তিরমিযী, হা/৮৮৩; নাসাঈ, হা/৩০১৪।

[11]. হাকেম, হা/১৭১৩; আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১১৫৬।

[12]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫৯৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১২৭০।

[13]. ছহীহ মুসলিম, হা/১২১৮।

[14]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৮৮২।

[15]. আহমাদ, হা/২৩৫৩৬।

Magazine