উত্তর : না, এমন কথার শারঈ কোনো ভিত্তি নেই। তবে যৌতুক দাবি করা গর্হিত অপরাধ। এটি হিন্দু সমাজ থেকে আসা কুসংস্কৃতি। হিন্দুরা বিয়ের দিনেই মেয়েকে যা দেওয়ার দিয়ে দেয়। মীরাছ থেকে কোনো কিছু দেয় না। এই প্রথা মুসলিমদের মাঝে ঢুকে পড়েছে। এটি কনের পরিবারের উপর জঘন্য অত্যাচার। শরীআতে যা সম্পূর্ণ হারাম। জানা আবশ্যক যে, বরের পক্ষ থেকে কনেকে সন্তুষ্টচিত্তে মোহর প্রদান করতে হবে। কনে পক্ষের কাছ থেকে নেওয়া যাবে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা রমণীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে মোহর প্রদান করো’ (আন-নিসা, ৪/৪)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘তোমরা তাদেরকে ভালোভাবে মোহর প্রদান করো’ (আন-নিসা, ৪/২৫)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে গ্রহণ করো’ (আন-নিসা, ৪/২৪)। মূলত বিবাহের আদেশ দেওয়া হয়েছে পুরুষের সামর্থ্যের উপর। যার সামর্থ্য নেই সে বিবাহ করবে না (ছহীহ বুখারী, হা/১৯০৫; মিশকাত, হা/৩০৮০)। তবুও যৌতুক নিতে পারবে না। এমনকি বাসর রাতের পর পুরুষকেই ওয়ালীমা করার দায়িত্ব পালন করতে হবে (ছহীহ বুখারী, হা/৫১৫৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪২৭; মিশকাত, হা/৩২১০); আর স্ত্রীর থাকা-খাওয়ার যাবতীয় দায়িত্ব পুরুষকেই বহন করতে হবে (ছহীহ মুসলিম, হা/১২১৮; মিশকাত, হা/২৫৫৫)। বিবরণে স্পষ্ট হয় যে, বিবাহের পর থেকে সর্ব সময়ে স্বামীকে সকল খরচ বহন করতে হবে। মেয়ের পিতাকে বহন করতে হবে না। অতএব, যৌতুক আদান-প্রদান করা থেকে সর্বাত্মকভাবে বিরত থাকা জরুরী।
উল্লেখ্য যে, বিয়ের পর সাংসারিক সুবিধার জন্য কনের পিতা যদি স্বেচ্ছায় তার মেয়েকে কিছু দেয় তাহলে সেটি যৌতুক হবে না। অনুরূপভাবে জামাই কৌশল করে কিছু গ্রহণ করলেও তা জায়েয হবে না। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মেয়ে ফাতেমা রাযিয়াল্লাহু আনহা-কে বলেছিলেন, ‘আমার সম্পদ থেকে যা খুশি চাও, কিন্তু পরকালে আমি তোমার কোনো উপকার করতে পারব না’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৭৫৩; মিশকাত, হা/৫৩৭৩)। তাছাড়া ফাতেমা রাযিয়াল্লাহু আনহা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে খাদেম চাইতে গিয়েছিলেন। রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে বলেননি যে, বাবার পক্ষ থেকে মেয়েকে কিছু দেওয়া জায়েয হবে না (আবূ দাঊদ, হা/২৯৮৮)।
প্রশ্নকারী : হারুন
নীলফামারী।