ইসলামপূর্ব যুগে নারীদেরকে সামাজিকভাবে অত্যন্ত হেয় ও লাঞ্ছিত করা হতো। তৎকালীন আরবে নারীদের ভোগ্য সামগ্রী মনে করা হতো। তারা ছিল পুরুষদের দাসী মাত্র। তাদের সাথে একজন দাস-দাসীর সাথে যে আচরণ করা হয়, তার চেয়েও নিকৃষ্ট আচরণ করা হতো। কন্যা সন্তানদের জীবন্ত দাফনপ্রথা প্রসিদ্ধ ছিল। পরিবারের কর্তা ইচ্ছা করলে নারীকে ক্রয়-বিক্রয় ও হস্তান্তর করতে পারত। নারী তার আত্মীয়স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বা মীরাসের অধিকারিণী হতো না; বরং সে নিজেই ঘরের অন্যান্য জিনিসপত্রের ন্যায় পরিত্যক্ত সামগ্রী হিসেবে বিবেচিত হতো। তাদেরকে মনে করা হতো পুরুষের স্বত্বাধীন; কোনো জিনিসেই তাদের নিজস্ব কোনো স্বত্ব ছিল না। আর যা কিছুই নারীর স্বত্ব বলে গণ্য করা হতো, তাতেও পুরুষের অনুমতি ছাড়া ভোগ-দখল করার এতটুকু অধিকার তাদের ছিল না। তবে স্বামীর এ অধিকার স্বীকৃত ছিল যে, সে তার নারীরূপী নিজস্ব সম্পত্তি যেভাবে খুশী, যেখানে খুশী ব্যবহার করতে পারবে। তাতে তাকে স্পর্শ করারও কেউ ছিল না। এমনকি ইউরোপের যেসব দেশকে আধুনিক বিশ্বের সর্বাধিক সভ্য দেশ হিসেবে গণ্য করা হয়, সেগুলোতেও কোনো কোনো এলাকায় এমন ছিল যারা নারীর মানবসত্তাকেই স্বীকার করত না। মহানবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার আনীত ধর্মই বিশ্ববাসীর চোখের পর্দা উন্মোচন করেছে। নারীর অধিকার সংরক্ষণ পুরুষদের উপর ফরয করেছে। দিয়েছে সমাজে নারীদের পরিপূর্ণ মর্যাদা। হাদীছে এসেছে,
عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السَّلَمِيِّ أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَالْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ رِجْلَيْهَا.
মুআবিয়া ইবনু জাহেমা সালামী রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা জাহেমা রযিয়াল্লাহু আনহু নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি জিহাদ করব মনস্থ করেছি, তাই আপনার নিকট পরামর্শ নিতে এসেছি’। একথা শুনে তিনি বললেন, ‘তোমার মা আছে কি?’ জাহেমা রযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হ্যাঁ’। তিনি বললেন, ‘তাহলে তুমি তার খেদমতে অবিচল থাকো। কারণ, তার পদতলে তোমার জান্নাত রয়েছে’।[1] অন্য এক হাদীছে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِأَهْلِهِ وَأَنَا خَيْرُكُمْ لِأَهْلِي ‘তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোত্তম, যে তার স্ত্রীর নিকট সর্বোত্তম। আর আমি আমার স্ত্রীর নিকট সর্বোত্তম’।[2] সর্বপ্রথম তিনিই নারীগণকে সম্পত্তির অধিকারিণী বলে ঘোষণা করেন। ইসলাম নারীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে। দিয়েছে নারীর জানমালের নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সম্মান। এসবের জন্যই নারীজাতি সমাজের অভিশাপ না হয়ে আশীর্বাদে পরিণত হয়।
মা হিসেবে নারীর মর্যাদা :
ইসলাম নারীদের সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা দিয়েছে মা হিসেবে। পৃথিবীর আর কোনো ধর্ম বা মতবাদে নারীকে মা হিসেবে এত মর্যাদা ও ইযযত দেওয়া হয়নি। কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ বলেন,﴿وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا﴾ ‘আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। (মায়ের জন্য বেশি দিয়েছি) কারণ, তার মা জননী তাকে কষ্ট সহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্ট সহকারে প্রসব করেছে’ (আল-আহক্বাফ, ৪৬/১৫)।
আয়াতের শুরুতে পিতা-মাতা উভয়ের সাথে সদ্ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এ স্থলে কেবল মাতার কষ্টের কথা উল্লেখ করার তাৎপর্য হলো, মাতার পরিশ্রম ও কষ্ট অপরিহার্য ও জরুরী। গর্ভধারণের সময়ের কষ্ট, প্রসববেদনার কষ্ট সর্বাবস্থায় ও সব সন্তানের ক্ষেত্রে মাকেই সহ্য করতে হয়। পক্ষান্তরে পিতাকে এসবের কিছুই সহ্য করতে হয় না। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তানের উপর মাতার হক্ব বেশি রেখেছেন। হাদীছে এসেছে, আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সাহচর্যে আমার সদাচার পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারী কে? তিনি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার মা’। লোকটি বললেন, তারপর কে? তিনি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার মা’। লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? তিনি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার মা’। লোকটি আবারো জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? তিনি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার বাবা’। অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমার মা, অতঃপর তোমার মা, অতঃপর তোমার মা, অতঃপর তোমার বাবা, তারপর তোমার নিকট আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব’।[3]
বোন হিসেবে নারীর মর্যাদা :
ইসলাম যেমনিভাবে মা হিসেবে নারীর মর্যাদা দিয়েছে, তেমনিভাবে বোন হিসেবেও নারীর মর্যাদা দিয়েছে। এমনকি পিতার সম্পত্তি থেকেও তার জন্য অংশ নির্ধারণ করেছে। নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,لاَ يَكُونُ لأَحَدٍ ثَلاَثُ بَنَاتٍ أَوْ ثَلاَثُ أَخَوَاتٍ أَوِ ابْنَتَانِ أَوْ أُخْتَانِ فَيَتَّقِى اللَّهَ فِيهِنَّ وَيُحْسِنُ إِلَيْهِنَّ إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ ‘যার তিনটি মেয়ে অথবা তিনটি বোন আছে, অথবা দুটি মেয়ে অথবা দুটি বোন আছে, সে তাদের (অধিকার) সম্পর্কে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করলে এবং তাদের প্রতি ভালো ব্যবহার করলে তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত আছে’।[4]
কন্যা হিসেবে নারীর অধিকার :
ইসলামপূর্ব অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজের মূর্খ লোকেরা কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়াকে পাপ বা অভিশাপ মনে করত বিধায় কোনো পরিবারে কন্যা সন্তান জন্ম নিলে লজ্জায়, ঘৃণায়, অপমানে সে কন্যা সন্তান জীবন্ত পুঁতে দিত। কিন্তু ইসলাম নারীকে কন্যা হিসেবে যে সম্মান আর মর্যাদা দিয়েছে, ইতিহাসে এর তুলনাই হয় না। নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,مَنِ ابْتُلِىَ بِشَىْءٍ مِنَ الْبَنَاتِ فَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ كُنَّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ ‘যে ব্যক্তি তার মেয়ে সন্তানদের জন্য কোনো রকম পরীক্ষার সম্মুখীন হয় (বিপদগ্ৰস্ত হয়), সে তাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধরলে তার জন্য তারা জাহান্নাম হতে আবরণ (প্রতিবন্ধক) হবে’।[5]
স্ত্রী হিসেবে নারীর মর্যাদা :
লক্ষ্য করলে দেখা যায়, পৃথিবীতে এমন দু’টি বস্তু রয়েছে, যা গোটা বিশ্বের অস্তিত্ব, সংগঠন ও উন্নয়নের স্তম্ভস্বরূপ। তার একটি হচ্ছে নারী, অপরটি হচ্ছে সম্পদ। যদি এগুলোকে তাদের প্রকৃত মর্যাদা, স্থান ও উদ্দেশ্যের উপর রাখা যায় তখনই এগুলোর দ্বারা দুনিয়ার সবচাইতে বড় বড় কল্যাণের আশা করা যায়।
ইসলামের দৃষ্টিতে নারী-পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। এ প্রসঙ্গে কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ বলেন,﴿هُنَّ لِبَاسٌ لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ﴾ ‘তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ’(আল-বাক্বারা, ২/১৮৭)। আর রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘উত্তম স্ত্রী সৌভাগ্যের পরিচায়ক’।[6] তিনি আরও বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম’।[7] আল্লাহ তাআলা বলেন,﴿وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ فَإِنْ كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا﴾ ‘তোমরা নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবনযাপন করো। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়তো তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ তাআলা অনেক কল্যাণ রেখেছেন’ (আন-নিসা, ৪/১৯)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন,﴿وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ﴾ ‘পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার আছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী’ (আল-বাক্বারা, ২/২২৮)।
কুরআনুল কারীমে ‘নিসা’ তথা মহিলা শিরোনামে নারীর অধিকার ও কর্তব্যসংক্রান্ত একটি স্বতন্ত্র সূরা রয়েছে। এছাড়াও কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে এবং হাদীছে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। ইসলাম নিশ্চিত করেছে নারীর ন্যায্য অধিকার। ইসলাম নারীকে ক্ষেত্রবিশেষ পুরুষদের চেয়েও বেশি অধিকার দিয়েছে। অর্থসম্পদের দিক থেকে ইসলাম নারীকে যে নিশ্চয়তা দিয়েছে তা বলতে গেলে প্রয়োজনেরও অধিক। কারণ, মীরাছ হিসাবে নারী তার ভাইয়ের অর্ধেকের অংশীদার। অথচ পিতা-মাতার পরিবারের কাউকে লালনপালনের দায়িত্ব তার নেই। অন্যদিকে ভাই পরের মেয়েকে বিবাহ করে ঘরে আনবে। ওই মেয়ের সকল দায়দায়িত্ব তার উপর বর্তাবে। পিতা-মাতার দায়িত্বও তার উপর। কিন্তু নারীর সম্পদ হস্তক্ষেপ করার কারও অধিকার নেই। এগুলো তার একমাত্র নিজস্ব। কুরআনুল কারীমে তাই বর্ণনা করা হয়েছে, ﴿وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِمَّا اكْتَسَبْنَ﴾ ‘আর নারীরা তাই পাবে যা তারা অর্জন করবে’ (আন-নিসা, ৪/৩২)।
বর্তমান বিশ্বে নারীর যথাযথ অধিকার দেওয়া হচ্ছে না। তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, মুসলিম সমাজেও ইসলাম প্রদত্ত নারীর অধিকারকে স্বীকার করা হয় না, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এমতাবস্থায় এটি ইউরোপীয়দের সংস্কৃতি সদৃশ্য হয়। আর তাদের সবকিছু উপেক্ষা করে চলা প্রতিটি মুমিনের জন্য অত্যাবশ্যক।
নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা একবারে নেই বললেই চলে। অথচ আল্লাহ তাআলা নারী-পুরুষ উভয়কে সম্মান দিয়েছেন। ইসলাম পুরুষদের তুলনায় নারীদেরকে ভিন্ন চোখে দেখেনি; বরং যুগ যুগ থেকে চলে আসা অবহেলিত নারীসমাজকে যথাযথ মর্যাদা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও অধিক মর্যাদা দান করেছে। সেই সাথে ইসলাম আমাদেরকে এই শিক্ষা দেয় যে, মানুষ হিসেবে নারী-পুরুষ সমান। ইসলামী জ্ঞান অর্জন সবার জন্যই আবশ্যক। নবীজী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘দ্বীনী ইলম (জ্ঞান) অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয’।[8]
নারী তার মর্যাদা বজায় রেখে সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। নারী ছাড়া অন্য কেউই মাতৃত্বের সেবা ও সহধর্মিণীর গঠনমূলক সহযোগী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম নয়; মায়েরাই পরিবারের প্রধান উৎস।
নাজমুল হাসান সাকিব
দাওরায়ে হাদীছ (মাস্টার্স), ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা;
অধ্যয়নরত (ইফতা), আল-মারকাজুল ইসলামী, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
[1]. নাসাঈ, হা/৩১০৪; ইবনু মাজাহ, হা/২৭৮১, হাদীছ ছহীহ।
[2]. ইবনু মাজাহ, হা/১৯৭৭, হাদীছ ছহীহ; তিরমিযী, হা/৩৮৯৫।
[3]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৯৭১; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৪৮; মিশকাত, হা/৪৯১১।
[4]. সিলসিলা ছহীহা, হা/২৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৪০২।
[5]. তিরমিযী, হা/১৯১৩, হাদীছ ছহীহ।
[6]. জামেউছ ছাগীর, হা/৫৯৪২; মু‘জামুল কাবীর, হা/৫৮।
[7]. তিরমিযী, হা/৩৮৯৫; ইবনু মাজাহ, হা/১৯৭৭।
[8]. ইবনু মাজাহ, হা/২২৪।