ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর আক্বীদার উৎস কী?[1]
উছূলুদ্দীন বা দ্বীনের মূলনীতি বিষয়ক মাসআলা-মাসায়েল আল্লাহ এবং তার রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট ও পরিপূর্ণভাবে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন, যার পরে আর কারো ওযর থাকে না। সুস্পষ্টভাবে সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে যে বিষয়টি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে বর্ণনা করেছেন, সেটি হচ্ছে আক্বীদা। বরং রাসূলগণ আলাইহিমুস সালাম-এর মাধ্যমে এই আক্বীদা দিয়েই মহান আল্লাহ মানুষের উপর দলীল দাঁড় করিয়েছেন।[2] যার পরে আর কারো অজুহাত পেশ করার কিছু থাকবে না। মহান আল্লাহ বলেন,رُسُلًا مُبَشِّرِينَ وَمُنْذِرِينَ لِئَلَّا يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى اللَّهِ حُجَّةٌ بَعْدَ الرُّسُلِ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا ‘আর (পাঠিয়েছি) রাসূলগণকে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে, যাতে আল্লাহর বিপক্ষে রাসূলগণের পর মানুষের জন্য কোনো অজুহাত না থাকে। আর আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’ (আন-নিসা, ৪/১৬৫)।
আল্লাহর কালাম ও রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীর অনুসরণ-অনুকরণের ক্ষেত্রে ছাহাবায়ে কেরাম এ পথেই হেঁটেছেন। তাদের কেউ কুরআন ও হাদীছের বাইরে অন্য কিছু দিয়ে আক্বীদাবিষয়ক দলীল গ্রহণ করেননি। মহান আল্লাহ, ফেরেশতাম-লী, আসমানী কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, পরকাল, তাক্বদীরের ভালো-মন্দ সহ আরো যা কিছু ঈমানের মূলনীতির সাথে সম্পর্কিত, সেগুলো এই ইলাহী উৎস থেকেই তারা নিয়েছেন। মাক্বরীযী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আল্লাহর একত্ব ও মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুঅত সাব্যস্তের ক্ষেত্রে তারা আল্লাহর কিতাব ছাড়া অন্য কিছু থেকে দলীল গ্রহণ করেননি।[3]
এই পদাঙ্ক অনুসরণ করেই চলেছেন তাবে‘ঊন ও আতবা‘উত তাবে‘ঈন। ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ সহ চার ইমাম, এমনকি সকল যুগের সালাফী আলেম ছিলেন এ পথেরই পথিক। ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর নিকট সাধারণভাবে দ্বীনের সব বিষয় এবং বিশেষভাবে আক্বীদা সংক্রান্ত বিষয়ে কিতাব ও ছহীহ হাদীছই ছিলো মূল উৎস। ‘দ্বীনের সকল বিষয়ের ন্যায় আক্বীদার ক্ষেত্রেও মূল ভিত্তি হলো কুরআনুল কারীম, ছহীহ হাদীছ এবং এরপর ছাহাবীগণের মত। আক্বীদা ও ফিক্বহের মৌলিক পার্থক্য হলো, ফিক্বহের ক্ষেত্রে ইজতিহাদ, ক্বিয়াস, যুক্তি বা ‘আক্বলী দলীলের প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু আক্বীদার ক্ষেত্রে এর কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে কুরআন, সুন্নাহ ও ছাহাবীগণের অনুসরণই একমাত্র করণীয়। কারণ ফিক্বহের বিষয়বস্ত্ত পরিবর্তনশীল। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা ছাহাবীগণের যুগে ছিল না এমন কোনো নতুন বিষয়ে ফিক্বহী মত জানার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আক্বীদার বিষয়বস্ত্ত মহান আল্লাহর সত্তা, গুণাবলি, নবী-রাসূলগণ... ইত্যাদি। এগুলো অপরিবর্তনীয়। এক্ষেত্রে মুমিনের একমাত্র দায়িত্ব রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ছাহাবীগণের আক্বীদা জানা ও মানা’।[4] আক্বীদার ক্ষেত্রে কোন্টা ‘মুতাওয়াতির হাদীছ’ আর কোন্টা ‘আহাদ হাদীছ’ তার কোনো পার্থক্য ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ করেননি। তিনি বলেন,آخذ بِكِتَاب الله فما لم أَجِدْ فَبِسُنَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَمَا لَمْ أَجِدْ فِي كِتَابِ اللَّهِ ولافى سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَخَذْتُ بِقَوْلِ أَصْحَابِهِ آخُذُ بِقَوْلِ مَنْ شِئْتُ مِنْهُمْ وَأَدَعُ مَنْ شِئْتُ مِنْهُمْ وَلا أَخْرُجُ مِنْ قَوْلِهِمْ إِلَى قَوْلِ غَيْرِهِمْ ‘আমি আল্লাহর কিতাব ধারণ করি। যা (সেখানে) না পাই, তা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত থেকে গ্রহণ করি। যা আল্লাহর কিতাব ও রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতে না পাই, তা ছাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য থেকে গ্রহণ করি। তাদের মধ্যে যার কথা মনে চাই গ্রহণ করি, যার কথা মনে চাই না গ্রহণ করি না। তবে তাদের কথা রেখে অন্য কারো কথা গ্রহণ করি না’।[5] তিনি আরো বলেন,إِذَا لَمْ يَكُنْ فِي كِتَابِ اللَّهِ وَلَا فِي سُنَّةِ رَسُوْلِ اللهِ نَظَرْتُ فِيْ أَقَاوِيْلِ أَصْحَابِهِ وَلَا أَخْرُجُ عَنْ قَوْلِهِمْ إِلَى قَوْلِ غَيْرِهِمْ فَإِذَا انْتَهَى الْأَمْرُ أَوْ جَاءَ الْأَمْرُ إِلَى إِبْرَاهِيْمَ وَالشَّعْبِيِّ وَابْنِ سِيْرِيْنَ وَالْحَسَنِ وَعَطَاءٍ وَسَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ وَعَدَّدَ رِجَالًا فَقَوْمٌ اجْتَهَدُوْا فَأَجْتَهِدُ كَمَا اجْتَهَدُوْا ‘যখন আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতে না থাকে, তখন ছাহাবায়ে কেরামের বক্তব্যের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করি। তাদের বক্তব্য থেকে বের হয়ে অন্য কারো বক্তব্য ধরি না। এরপর কোনো বিষয় যখন ইবরাহীম, শা‘বী, ইবনে সীরীন, হাসান, আতা, সাঈদ ইবনে জুবাইর রাহিমাহুমুল্লাহ প্রমখের কাছে আসে, তখন দেখি তারা ইজতিহাদ করেছেন। ফলে তাদের ইজতিহাদের মত আমিও ইজতিহাদ করি’।[6] ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর ছাত্র হাসান ইবনে যিয়াদ লুলুয়ী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,لَيْسَ لِأَحَدٍ أَنْ يَقُوْلَ بِرَأْيِهِ مَعَ نَصٍّ عَنْ كِتَابِ اللهِ أَوْ سُنَّةٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ أَوْ إِجْمَاعٍ عَنِ الْأُمَّةِ وَإِذَا اخْتَلَفَ الصَّحَابَةُ عَلَى أَقْوَالٍ نَخْتَارُ مِنْهَا مَا هُوَ أَقْرَبُ إِلَى الْكِتَابِ أَوِ السُّنَّةِ وَنَجْتَنِبَ عَمَّا جَاوَزَ ذَلِكَ ‘আল্লাহর কিতাব বা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীছে কোনো বক্তব্য থাকলে অথবা উম্মতের ইজমা বিদ্যমান থাকলে সে বিষয়ে নিজস্ব মতানুযায়ী কথা বলার অধিকার কারো নেই। আর যদি ছাহাবীগণ (কোনো বিষয়ে) মতভেদ করেন, তাহলে আমরা তাদের মতগুলোর মধ্যে কুরআন বা হাদীছের অধিক নিকটবর্তী বক্তব্যটি গ্রহণ করি এবং এর বাইরের সবকিছু পরিত্যাগ করি’।[7]
মোদ্দাকথা, ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর নিকট সাধারণভাবে দ্বীনের সব বিষয় এবং বিশেষভাবে আক্বীদা সংক্রান্ত বিষয়ে শারঈ দলীলের ক্রমধারা এরকম: কুরআন মাজীদ, অতঃপর ছহীহ হাদীছ, অতঃপর ছাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য। আর ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর ছাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য ছেড়ে অন্য দিকে না যাওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে, তারা ছিলেন যাবতীয় বিদ‘আতমুক্ত এবং তাদের অন্তর ও নিয়্যত ছিলো পরিচ্ছন্ন। তাছাড়া তারা অহি অবতীর্ণ হতে দেখেছেন।
ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচার আছে; তা হচ্ছে এই যে, তিনি হাদীছের বিরোধিতা করে রায়-ক্বিয়াসকে এর উপর প্রাধান্য দিয়েছেন।
এটা ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর উপর অপবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি নিজেই এ অপবাদের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন,كَذَبَ وَاللهِ وَافْتَرَى عَلَيْنَا مَنْ يَّقُوْلُ إِنَّنَا نُقَدِّمُ الْقِيَاسَ عَلَى النَّصِّ، وَهَلْ يُحْتَاجُ بَعْدَ النَّصِّ إِلَى قِيَاسٍ ‘আল্লাহর কসম! যে বলে যে, আমরা কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্যের উপর ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দেই, সে আমাদের উপর মিথ্যারোপ করে। কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্য পাওয়া গেলে ক্বিয়াসের কোনো দরকার আছে কি?!’[8] তিনি আরো বলেন,لَيْسَ لِأَحَدٍ أَنْ يَّقُوْلَ بِرَأْيِهِ مَعَ كِتَابِ اللهِ تَعَالَى، وَلَا مَعَ سُنَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا مَعَ مَا أَجْمَعَ عَلَيْهِ الصَّحَابَةُ ‘আল্লাহর কিতাব, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত এবং ছাহাবায়ে কেরামের ইজমা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় কেউ তার নিজের মতানুযায়ী কথা বলতে পারে না’।[9] ছহীহ হাদীছের উপর ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দেওয়া তো অনেক দূরের কথা, এমনকি অগ্রহণযোগ্য হাদীছের উপরও তিনি ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দিতেন না। তিনি বলেন,اَلْخَبَرُ الْمُرْسَلُ وَالضَّعِيْفُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْلَى مِنَ الْقِيَاسِ وَلَا يَحِلُّ الْقِيَاسُ مَعَ وُجُوْدِهِ ‘রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত মুরসাল ও যঈফ হাদীছ ক্বিয়াস করার চেয়েও উত্তম। এমন হাদীছ থাকা অবস্থায় ক্বিয়াস করা বৈধ নয়’।[10] বরং কুরআন-হাদীছের বক্তব্য থাকা অবস্থায় ক্বিয়াসকে বা কুরআন ও হাদীছের উপর ভিত্তিশীল নয় এমন ক্বিয়াসকে তিনি নিন্দা করেছেন। ওয়াকী‘ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-কে বলতে শুনেছি,اَلْبَوْلُ فِي الْمَسْجِدِ أَحْسَنُ مِنْ بَعْضِ الْقِيَاسِ ‘কিছু কিছু ক্বিয়াসের চেয়ে মসজিদে পেশা করা ভালো’।[11]
কোনো যুগের উলামায়ে কেরামও ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর উপর আরোপিত এ অপবাদ মেনে নেননি, বরং কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর সমসাময়িক মুহাদ্দিছ সুফিয়ান ছাওরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,كَانَ أَبُو حَنِيفَةَ شَدِيدَ الأَخْذِ لِلْعِلْمِ ذَابًّا عَنْ حَرَمِ اللَّهِ أَنْ تُسْتَحَلَّ يَأْخُذُ بِمَا صَحَّ عِنْدَهُ مِنَ الأَحَادِيثِ الَّتِي كَانَ يَحْمِلُهَا الثِّقَاتُ وَبِالآخَرِ مِنْ فِعْلِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَبِمَا أَدْرَكَ عَلَيْهِ عُلَمَاءَ الْكُوفَةِ ثُمَّ شَنَّعَ عَلَيْهِ قَوْمٌ يَغْفِرُ الله لنا وَلَهُم ‘আবু হানীফা ইলম গ্রহণের ব্যাপারে কঠোর ছিলেন। আল্লাহর হালালকৃত কোনো বিষয়কে হারাম করে নেওয়াকে তিনি শক্তহস্তে দমন করতেন। বিশ্বস্ত রাবীগণের বর্ণিত ছহীহ হাদীছ, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্ম এবং কূফার আলেমগণের বিশুদ্ধ নীতি তিনি গ্রহণ করতেন। এতদসত্ত্বেও কিছু মানুষ তার নিন্দা করে! আল্লাহ আমাদেরকে এবং তাদেরকে ক্ষমা করুন’।[12]
ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর ছাত্র যুফার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘বিরোধীদের কথার দিকে ভ্রুক্ষেপ করবেন না। কেননা আবু হানীফা এবং আমাদের অনুসারীরা কোনো মাসআলাতেই কিতাব, সুন্নাহ ও বিশুদ্ধ বক্তব্যের বাইরে কথা বলেননি। অতঃপর (সেগুলোতে না পেলে) এর উপর ক্বিয়াস করেছেন’।[13] শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,وَمَنْ ظَنَّ بِأَبِي حَنِيفَةَ أَوْ غَيْرِهِ مِنْ أَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ أَنَّهُمْ يَتَعَمَّدُونَ مُخَالَفَةَ الْحَدِيثِ الصَّحِيحِ لِقِيَاسِ أَوْ غَيْرِهِ فَقَدْ أَخْطَأَ عَلَيْهِمْ وَتَكَلَّمَ إمَّا بِظَنِّ وَإِمَّا بِهَوَى فَهَذَا أَبُو حَنِيفَةَ يَعْمَلُ بِحَدِيثِ التوضي بِالنَّبِيذِ فِي السَّفَرِ مُخَالَفَةً لِلْقِيَاسِ وَبِحَدِيثِ الْقَهْقَهَةِ فِي الصَّلَاةِ مَعَ مُخَالَفَتِهِ لِلْقِيَاسِ؛ لِاعْتِقَادِهِ صِحَّتَهُمَا وَإِنْ كَانَ أَئِمَّةُ الْحَدِيثِ لَمْ يُصَحِّحُوهُمَا. ‘যে ব্যক্তি আবু হানীফা বা মুসলিমদের অন্য কোনো ইমামের ব্যাপারে ধারণা করে যে, তারা ক্বিয়াসের কারণে বা অন্য কোনো কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে ছহীহ হাদীছের বিরোধিতা করেন, সে ব্যক্তি তাদের ব্যাপারে ভুল কথা বলে এবং ধারণাপ্রসূত বা প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলে। এই ধরুন আবু হানীফা, যিনি ক্বিয়াসের বিরোধিতা করে সফর অবস্থায় ‘নাবীয’[14] দ্বারা ওযূর হাদীছের উপর আমল করেছেন। অনুরূপভাবে ছালাতের অট্টহাসির হাদীছের উপর আমল করেছেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে, এ হাদীছ দু’টি ছহীহ; যদিও মুহাদ্দিছগণ হাদীছ দু’টিকে ছহীহ বলেননি’।[15]
ইবনুল ক্বাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,وَأَصْحَابُ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُ اللَّهُ مُجْمِعُونَ عَلَى أَنَّ مَذْهَبَ أَبِي حَنِيفَةَ أَنَّ ضَعِيفَ الْحَدِيثِ عِنْدَهُ أَوْلَى مِنْ الْقِيَاسِ وَالرَّأْيِ، وَعَلَى ذَلِكَ بَنَى مَذْهَبَهُ ‘আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর অনুসারীগণ ইজমা পোষণ করেছেন যে, আবু হানীফার মাযহাব হচ্ছে, তার নিকট ক্বিয়াস ও ব্যক্তিমতের চেয়ে দুর্বল হাদীছ ভালো। এর উপরেই তিনি তার মাযহাবের ভিত্তি রচনা করেছেন’।[16] ইবনু আবিল ইয হানাফী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
وَالْوَاجِب أَن يُقَال لمن قَالَ إِن ابا حنيفَة خَالف سيد الْمُرْسلين هَذَا القَوْل كذب وبهتان وَسَب لهَذَا الإِمَام الْجَلِيل يسْتَحق قَائِله الردع والزجر عَن هَذِه الْمقَالة الْبَاطِلَة إِن أَرَادَ بِهِ أَنه خَالفه عَن قَصده وَإِن أَرَادَ بِهِ أَنه خَالفه عَن تَأْوِيل أَو ذمّ القَوْل وَلم يذكر قَائِله فَهُوَ هَين كَمَا يُوجد فِي كَلَام الْمُخْتَلِفين فِي مسَائِل الِاجْتِهَاد... فمخالفة النَّص إِذا كَانَت عَن قصد فَهِيَ كفر وَإِن كَانَت عَن إجتهاد فَهِيَ من الْخَطَأ المغفور فَلَا يجوز أَن يُقَال عَن أبي حنيفَة وَلَا عَمَّن دونه من أهل الْعلم فِيمَا يُوجد من أَقْوَاله مُخَالفا للنَّص أَنه خَالف الرَّسُول قصدا بل إِمَّا أَن يُقَال إِن النَّص لم يبلغهُ أَو لم يظْهر لَهُ دَلِيل على ذَلِك الحكم أَو عَارضه عِنْده دَلِيل آخر أَو غير ذَلِك من الْأَعْذَار
‘যে ব্যক্তি বলে, আবু হানীফা রাসূলগণ আলাইহিমুস সালাম-এর সরদারের বিরোধিতা করেছেন, তাকে একথা বলা ওয়াজিব যে, (তার) এই বক্তব্য এই মহামতি ইমামের উপর মিথ্যা অপবাদ ও গালি। এই মিথ্যা অপবাদ থেকে তাকে বিরত রাখা যরূরী। বিশেষ করে ঐ ব্যক্তি যদি মনে করে যে, তিনি (আবু হানীফা) ইচ্ছাকৃতভাবে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিরোধিতা করেছেন। তবে, এর দ্বারা যদি তার উদ্দেশ্য হয় যে, ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইমাম আবু হানীফার (কোনো কোনো ক্ষেত্রে) এমন বিরোধিতা হয়ে গেছে, তাহলে সেটা কিছুটা হালকা। আর এমনটা তো ইজতেহাদী মাসআলাতে অন্যদেরও হয়ে থাকে। ...ইচ্ছাকৃতভাবে কুরআন-হাদীছের বিরোধিতা করলে তা হবে কুফরী। আর ইজতেহাদ বশতঃ হয়ে গেলে তা ক্ষমাযোগ্য ভুল হিসাবে গণ্য হবে। অতএব, ইমাম আবু হানীফা হোক বা অন্য কোনো আলেম হোক, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিরোধিতা করেছেন এমন কথা বলা জায়েয নেই। বরং বলতে হবে, হয়তোবা তার কাছে দলীল পৌঁছেনি অথবা তার কাছে দলীল স্পষ্ট হয়নি বা বাহ্যতঃ বিরোধপূর্ণ অন্য কোনো দলীল তার কাছে আছে বা অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে’।[17]
আবু হামযা আস-সুক্কারী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি আবু হানীফাকে বলতে শুনেছি, ‘রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সনদ সহকারে যখন ছহীহ হাদীছ আসে, তখন সেটাকেই আমরা গ্রহণ করি; সেটাকে আমরা ডিঙ্গিয়ে যাই না’।[18] ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর এ বক্তব্য স্পষ্ট প্রমাণ করে, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা কিছু ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে, তার সবটার প্রতিই তিনি ঈমান এনেছেন, সত্যায়ন করেছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এ ব্যাপারে কোন্টা মুতাওয়াতির আর কোন্টা আহাদ তার কোনো তোয়াক্কা তিনি করেননি। অতএব, ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর নিকটে গ্রহণযোগ্য সব ধরনের হাদীছ দ্বারাই আক্বীদার বিষয়গুলো সাব্যস্ত হয়েছে। কেনইবা হবে না, তিনি নিজেই তো বলেছেন,إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ ‘যখন কোন হাদীছ ছহীহ প্রমাণিত হবে, তখন (জেনো যে,) সেটাই আমার মাযহাব’।[19] তিনি তো একথাও বলেছেন যে, ‘দাজ্জাল ও ইয়া’জূজ-মা’জূজের আবির্ভাব, পশ্চিম দিগন্ত থেকে সূর্যোদয়, আসমান থেকে ঈসা আলাইহিস সালাম-এর অবতরণ এবং ক্বিয়ামতের সমস্ত আলামত, যেগুলো ছহীহ হাদীছে এসেছে, সবগুলোই হক্ব এবং ঘটবে’।[20] তাহলে ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর অনুসরণের নাম নিয়ে যারা আজ আক্বীদা প্রমাণ করতে গিয়ে হাদীছকে দুই ভাগ করে এক ভাগ গ্রহণ করেন আর অন্য ভাগ পরিত্যাগ করেন, তারা কোথায় আর ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ কোথায়?! এমকি তার বিখ্যাত দুই শিষ্য আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ ইবনুল হাসানও রাহিমাহুমাল্লাহ তাদের উস্তাদের অনুসৃত এ নীতিই গ্রহণ করেছিলেন। আবু ইউসুফ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,وَقَدْ أَمَرَكَ اللَّهُ أَنْ تُؤْمِنَ بِكُلِّ مَا أَتَى بِهِ نَبِيُّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘নবী যা কিছু নিয়ে এসেছেন, তার সবটুকুর প্রতি ঈমান আনতে আল্লাহ আপনাকে আদেশ করেছেন...’।[21] মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান রাহিমাহুল্লাহ আল্লাহর কিছু গুণ সম্পর্কিত কয়েকটি হাদীছের পরে বলেন,إِنَّ هَذِهِ الْأَحَادِيثَ قَدْ رَوَتْهَا الثِّقَاتُ، فَنَحْنُ نَرْوِيهَا وَنُؤْمِنُ بِهَا وَلَا نُفَسِّرُهَا ‘এই হাদীছগুলো ‘ছিক্বাহ’ বা নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীগণ বর্ণনা করেছেন। অতএব, আমরাও সেগুলো বর্ণনা করি এবং বিশ্বাস করি। এগুলোর অপব্যাখ্যা করি না’।[22] সালাফে ছালেহীনের মূলনীতিও ছিলো এটাই এবং এটাই হক্ব। কেননা মুতাওয়াতির ও আহাদ-এর মধ্যে পার্থক্য করা একটি বিদ‘আত, যা পরবর্তীতে ইসলামে প্রবেশ করেছে।
অনুরূপভাবে কুরআন-হাদীছের পাশাপাশি ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর আক্বীদা ও আমল গ্রহণের আরেকটি উৎস হলো, স্বভাবজাত প্রকৃতি। যেমন তিনি মহান আল্লাহর ঊর্ধ্বে অবস্থানের বিষয়টি প্রমাণ করতে গিয়ে স্বভাবজাত প্রকৃতিকে ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন,وَاللهُ تَعَالَى يُدْعَى مِنْ أَعْلَى لَا مِنْ أَسْفَلَ لَيْسَ مِنْ وَصْفِ الرُّبُوْبِيَّةِ وَالْأُلُوْهِيَّةِ فِيْ شَيْءٍ ‘মহান আল্লাহকে উপরে ভেবেই ডাকা হয়; নীচের দিকে ভেবে নয়। কারণ নিমেণ অবস্থান কোনোভাবেই রব ও মা‘বূদের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না’।[23]
প্রিয় পাঠক! আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের নিকট আক্বীদার উৎস হচ্ছে, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ এবং এতদুভয়ের সমর্থক হিসাবে স্বভাবজাত প্রকৃতি। অতএব, আক্বীদা ও আমলের উৎসের ক্ষেত্রে অন্য সালাফে ছালেহীনের যে নীতি, ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এরও সেই একই নীতি। আল্লামা মু‘আল্লিমী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,مَنْ تَدَبَّرَ الْقُرْآنَ وَتَصَفَّحَ السُّنَّةَ وَالتَّأْرِيْخَ عَلِمَ يَقِيْناً أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ بَيْنَ يَدَيِ السَّلَفِ مَأْخَذٌ يَأْخُذُوْنَ مِنْهُ عَقَائِدَهُمْ غَيْرُ الْمَأْخَذَيْنِ السَّلَفِيَّيْنِ، وَأَنَّهُمْ كَانُوْا بِغَايَةِ الثِّقَةِ بِهِمَا وَالرَّغْبَةِ عَمَّا عَدَاهُمَا، وَإِلَى ذَلِكَ دَعَاهُمْ الشَّرْعُ حَتَّى لَا تَكَادُ تَخْلُوْ آيَةٌ مِنْ آيَاتِ الْقُرْآنِ مِنَ الْحَضِّ عَلَى ذَلِكَ... وَهَذَا قَوْلُ السَّلَفِيِّيْنَ فِيْ عَقِيْدَةِ السَّلَفِ، وَيُوَافِقُهُمْ عَلَيْهِ أَكَابِرُ النُّظَّارِ ‘যিনি কুরআন গবেষণা করেন এবং হাদীছ ও ইতিহাস ঘাঁটাঘাটি করেন, তিনি নিশ্চিতভাবে জানতে পারেন যে, সালাফে ছালেহীনের নিকট কুরআন-হাদীছ ছাড়া আক্বীদা গ্রহণের আর কোনো উৎস ছিলো না। এদু’টোর প্রতি তাদের আস্থা ছিলো অটুট এবং এর বাইরে অন্য কিছু থেকে তারা ছিলেন বিমুখ। মূলতঃ শরী‘আত তাদেরকে এপথে আহবান করেছে। পবিত্র কুরআনের প্রায় প্রত্যেকটি আয়াতেই এ ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। ...সালাফে ছালেহীনের আক্বীদার ব্যাপারে পূর্বসূরী আলেমগণের বক্তব্যও এটা। বড় বড় গবেষকগণও তাদের সমর্থক’।[24]
অতএব, ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর নিকট পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছই ছিলো আক্বীদা ও আমলের উৎস। কিন্তু এখানে একটা প্রশ্ন এসে যায়, তা হলো, তাহলে কেন হানাফীদেরকে ‘আহলুর রায়’ বলা হয়?
উত্তরে বলা যায়, প্রথমতঃ ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর অনুসরণের দাবীদার সবাই একশ্রেণীর নয়। ফলে তাদের সবাই ইমামের মত সমআমল-আক্বীদায় বিশ্বাসী নয়। দ্বিতীয়তঃ সকল ইমাম ক্বিয়াসের প্রয়োগ করলেও রায়-ক্বিয়াসের ক্ষেত্রে হানাফীরা অন্যদের তুলনায় বেশী প্রসিদ্ধি অর্জন করেছেন বলে হানাফীদেরকে ‘আহলুর রায়’ বলা হয়। হানাফীদের বেশী বেশী রায়-ক্বিয়াসের আশ্রয় নেওয়ার কয়েকটি কারণ হচ্ছে, (ক) হাদীছ গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা এমন কিছু শর্ত দিয়েছে, যা অন্যরা দেয়নি। যেমন: বিপরীতমুখী হাদীছের ক্ষেত্রে ফক্বীহ বর্ণনাকারীর হাদীছকে প্রাধান্য দেওয়া। ফলে তাদের হাতে হাদীছের সংখ্যা কম হয়ে যায় এবং ক্বিয়াসের আশ্রয় নেয়। (খ) শরী‘আতের প্রতিষ্ঠিত কোনো মূলনীতির পরিপন্থী কোনো হাদীছকে তারা আমলে নেয় না। (গ) ব্যাপক কষ্টসাধ্য বিষয়ের ক্ষেত্রে তারা আহাদ হাদীছকে মানে না।[25] উল্লেখ্য, বিশুদ্ধ ক্বিয়াসের ব্যবহার দোষের কিছু নয়। অশুদ্ধ ক্বিয়াসের প্রয়োগ ঘটালে সেটাই দোষণীয়।
ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ-এর আক্বীদা ও আমলের উৎস হোক আমাদেরও আক্বীদা-আমলের উৎস। তাহলে যাবতীয় বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
(চলবে)
[1]. এই শিরোনামের অধিকাংশ তথ্য ‘উছূলুদ্দীন ইনদাল ইমাম আবী হানীফা’ বইয়ের ১৪৭ থেকে ১৫৭ পৃষ্ঠার আলোকে প্রণীত।
[2]. ইবনু তাইমিয়াহ, দার্উ তা‘আরুযিল আক্বলি ওয়ান নাক্বল, (তাহক্বীক্ব: মুহাম্মাদ রশাদ সালেম, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সু‘ঊদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রিয়ায, ২য় প্রকাশ: ১৪১১ হি./১৯৯১ খৃ.), ১/২৭।
[3]. মাক্বরীযী, আল-মাওয়া‘এয ওয়াল ই‘তিবার বিযিকরিল খিতাতি ওয়াল আছার, (দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরূত, ১ম প্রকাশ: ১৪১৮ হি.), ৪/১৮৮।
[4]. ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, আল-ফিকহুল আকবার (বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা), (আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স, প্রকাশকাল: ১৪৩৫ হি./২০১৪ খৃ.), পৃঃ ২৩৮।
[5]. আল-ইনতিক্বা, পৃঃ ১৪২।
[6]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪৩।
[7]. মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদের হানাফী, আল-জাওয়াহিরুল মুযিয়্যাহ ফী ত্ববাক্বাতিল হানাফিয়্যাহ, (মীর মুহাম্মাদ কুতুবখানা, করাচী, তা. বি.), ২/৪৭৩।
[8]. শা‘রাবী, আল-মীযানুল কুবরা, (তা.বি), ১/৭১।
[9]. উকূদুল জিমান ফী মানাক্বিবিল ইমামিল আ‘যম আবী হানীফা আন-নু‘মান, (বাদশা আব্দুল আযীয বিশ্ববিদ্যালয়, তা.বি), পৃঃ ১৭৮।
[10]. ইবনে হাযম, আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম, (তাহক্বীক্ব: আহমাদ শাকের, দারুল আফাক্ব আল-জাদীদাহ, বৈরূত, তা. বি.), ৭/৫৪।
[11]. ইবনে আদী, আল-কামেল ফী যু‘আফাইর রিজাল, (তাহক্বীক্ব: আদেল আহমাদ ও আলী মুহাম্মাদ, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরূত, ১ম প্রকাশ: ১৪১৮ হি./১৯৯৭ খৃ.), ৮/২৪১।
[12]. আল-ইনতিক্বা, পৃঃ ১৪২।
[13]. মান্না‘ আল-কাত্তান, তারীখুশ তাশরী‘ আল-ইসলামী, (মাকতাবাতু ওয়াহবাহ, ৫ম প্রকাশ: ১৪২২ হি./২০০১ খৃ.), পৃঃ ১৪২।
[14]. খেজুর, কিশমিশ বা অন্য কোনো শস্যদানা পানিতে ভিজালে যে পানীয় প্রস্ত্তত হয়, তা-ই হচ্ছে নাবীয। এটা হালাল হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে, তিন দিনের বেশী সময় ভিজিয়ে রাখা যাবে না এবং মাদকতা সৃষ্টি হওয়া চলবে না।
[15]. মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়াহ, ২০/৩০৫।
[16]. ইবনুল ক্বাইয়িম, এ‘লামুল মুওয়াক্বে‘ঈন আন রবিবল আলামীন, (তাহক্বীক্ব: মুহাম্মাদ আব্দুস সালাম, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১ম প্রকাশ: ১৪১১ হি./১৯৯১ খৃ.), ১/৬১।
[17]. ইবনু আবিল ইয, আল-ইত্তিবা‘, (তাহক্বীক্ব: মুহাম্মাদ আতাউল্লাহ ও আছেম ইবন আব্দুল্লাহ, আলামুল কুতুব, লেবানন, ২য় প্রকাশ: ১৪০৫ হি.), পৃঃ ২৮-২৯।
[18]. আল-জাওয়াহিরুল মুযিয়্যাহ, ২/২৪৯।
[19]. হাশিয়া ইবনু আবেদীন, ১/৬৮।
[20]. আবু হানীফা, আল-ফিক্বহুল আকবার, (মাকতাবাতুল ফুরক্বান, আরব আমিরাত, ১ম প্রকাশ: ১৪১৯ হি./১৯৯৯ খৃ.), পৃঃ ৭২।
[21]. ক্বওওয়ামুস সুন্নাহ, আল-হুজ্জাহ ফী বায়ানিল মাহাজ্জাহ, (তাহক্বীক্ব: মুহাম্মাদ ইবন রবী‘ আল-মাদখালী, দারুর রায়াহ, রিয়াদ, ২য় প্রকাশ: ১৪১৯ হি./১৯৯৯ খৃ.), ১/১২৪-১২৫।
[22]. লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, (তাহক্বীক্ব: আহমাদ ইবন সা‘দ আল-গামেদী, দারু ত্বইবাহ, সঊদী আরব, ৮ম প্রকাশ: ১৪২৩ হি./২০০৩ খৃ.), ৩/৪৮০।
[23]. আল-ফিক্বহুল আকবার, পৃঃ ১৩৫।
[24]. আব্দুর রহমান আল-মু‘আল্লিমী, আল-ক্বয়েদ ইলা তাছহীহিল আক্বাইদ, (তাহক্বীক্ব: মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আল-আলাবানী, আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৩য় প্রকাশ: ১৪০৪ হি./১৯৮৪ খৃ), পৃঃ ১৩৫।
[25]. নিমণবর্ণিত লিঙ্ক ব্রাউজ করম্নন: https://www.islamweb.net/ar/fatwa/44126/